নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জেফকে নিয়ে তাঁরা ভীষণ গর্বিত এখন
আমাদের নিকটতম প্রতিবেশীর এক বন্ধু জানালেন, কেবল সপ্তাহখানেক আগে তাঁর একুশ বছর বয়সী ছেলে জেফ মা-বাবার বাসা ছেড়ে নিজ বাসায় উঠেছে। উঠেছে না বলে বলা ভালো, উঠতে হয়েছে। মানে, বাবা-মা এক প্রকার বাধ্য হয়েছেন তাকে বাসা থেকে তাড়াতে।
জেফ বছর তিনেক আগে হাইস্কুল (দ্বাদশ শ্রেণী) শেষ করে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি। কোন কাজও করছে না। শুধু খায়দায়, গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরে বেড়ায়, গান শোনে আর ঘুমায়। অনেক বলে কয়েও তাকে দিয়ে লেখাপড়া বা কাজ করানো সম্ভব হচ্ছিলো না।
প্রসঙ্গত বলে রাখি, কানাডায় ২১ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানদের পোষ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে, মা-বাবার স্বাস্থ্য বীমা বা এজাতীয় সুবিধাগুলো ২১ বছর বা তার কম বয়সী সন্তানরাও ভোগ করতে পারে; ২১ পার হলে আর নয়। ওর বয়স যেহেতু ২১ হয়ে গেছে, তাই, তার অসুখ-বিসুখ হলে শতভাগ পেমেন্ট দিয়েই ওষুধ কিনতে হয়, যা এদেশে খুবই ব্যয়সাধ্য। স্বাস্থ্যবীমা থাকলে কেবল ২০ শতাংশ বা তেমন কিছু দিতে হয়। এ কারণেই বাবা-মা জেফ'কে নিয়ে বেশি শংকিত হয়ে পড়েন। তার উপর বাবা-মা হিসেবে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা তো আছেই।
অবশেষে জেফ এর বাবা-মা এক পরিকল্পনা আঁটলেন। তারই অংশ হিসেবে জেফকে নিয়ে এক দুপুরে নিজেদের গাড়িতে বেরিয়ে পড়লেন তাঁরা। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে ঢুকলেন এক এপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে। বিল্ডিংয়ের ম্যানেজার তাঁদেরকে একটা এক বেডরুমের খালি এপার্টমেন্টে নিয়ে গেলেন। সেখানে ঢুকে তাঁরা এপার্টমেন্টের সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখলেন। এপার্টমেন্টটি সুসজ্জিত।
একপর্যায়ে জেফ এর বাবা জেফ এর হাতে এপার্টমেন্টের চাবি দিয়ে বললেন, 'এটি তোমার জন্য আমরা ভাড়া করেছি। প্রথম মাসের ভাড়াও দিয়ে দিয়েছি। তাই, তোমাকে ভাবতে হবে দ্বিতীয় মাসের ভাড়া নিয়ে। অস্থির হবার কিছু নেই, পুরো তিরিশ দিন তোমার হাতে আছে।'
জেফ যেন আকাশ থেকে পড়লো। ঘটনার আকস্মিকতায় সে হতবাক। এ অবস্থায়, ওর মা পাঁচশ ডলার ক্যাশ ছেলের হাতে গুঁজে দিয়ে বললেন, 'এক মাসের খাবার নিয়েও তোমাকে ভাবতে হবে না। এই টাকা দিয়ে সহজেই চলতে পারবে।' অনেকটা রোবটের মতো নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে জেফ টাকাটা গ্রহণ করলো। - -
জেফ নাকি ওর মা'কে আজ ফোনে জানিয়েছে, সে একটা সুপারশপে সপ্তাহে তিরিশ ঘন্টা করে কাজের একটা চাকুরী পেয়েছে। এছাড়া, আরো একটা চাকুরীর ইন্টারভিউ কলও পেয়েছে সে।
মাত্র দিন সাতেকের মধ্যেই ছেলের এতটা অগ্রগতি দেখে মা-বাবার আনন্দ উপচে পড়ছে। জেফকে নিয়ে তাঁরা ভীষণ গর্বিত এখন।
- সন্তানকে উপযুক্ত বয়সে বাস্তব জগতে ছেড়ে দিন; দেখবেন, ঠিকই জেফ এর মতো ঘুরে দাঁড়িয়েছে সে। বেকার সন্তানকে আগলে রাখা মানে তার নিজ পায়ে দাঁড়ানো প্রলম্বিত করা। ছাড়তে তো একদিন হবেই।
এম এল গনি/ কানাডা হতে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:৪০
নতুন বলেছেন: আমাদের দেশেও ভাদাইমা ছেলে নিয়ে এমন বিপদে পড়ে বাবা মা কিন্তু কিছুই করার থাকেনা।
ছেলে ভালো হইলে বাবা মা এমনটা করবে না। আর ছেলে আয় করতে পারলে নিজের মতন থাকতে চায় সেটাও তাদের কালচার।