নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'একে করে গোলমাল, সবে কষ্ট পায়।'
- শ্রদ্ধেয় দেড় ব্যাটারি স্যার।
একুশ বছর আগের কথা। বৃত্তি নিয়ে দেশের এক সরকারি অফিস হতে আমি নগর পরিকল্পনায় মাস্টার্স করতে নেদারল্যান্ডে গিয়েছিলাম। সেটাই আমার প্রথম দেশের বাইরে যাওয়া। প্ল্যানেও এর আগে কখনো চড়িনি।
সে সময় দেশের অন্য একাধিক অফিস হতেও আরো ছয়-সাতজন গিয়েছিলেন আমার সাথে। 'প্রথানুযায়ী' প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাও সাথে ছিলেন। ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, নগরপরিকল্পনা, স্থাপত্য, নালা-খনন, ঘাস-চাষ, ইত্যাদি যে বিষয়েই সরকারি ট্রেইনিং হউক না কেন তাঁদের কয়েকজনকে তো থাকতেই হয়।
সেবার আমরা যারা গিয়েছিলাম তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশ জিওলজিক্যাল সার্ভে অফিসের এক নবীন অফিসারও ছিলেন। তিনি একাডেমিকেলি আমার দুই বছরের সিনিয়র। তাঁর এক ভাই এমপি ছিলেন। তাই, দেশে ফিরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার সুযোগ পান। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এতটাই প্রভাবশালী যে যে কোন মুহূর্তে ভিসি'র পদ দখল করে নিলেও অবাক হবো না।
আমাদের সময়ে নেদারল্যান্ডে বাংলাদেশ হতে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে গেলে আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক ছিলো না। কিন্তু, আমাদের পরের ব্যাচ থেকে তা বাধ্যতামূলক করা হয়। এর পেছনের কারণটি আপনাদের জানাতে চাই।
প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার একজন নিয়মিত ক্লাস করতেন। অপরজন ট্রেইনিংয়ের বিষয়টা খুব হালকাভাবে নিয়েছিলেন। অনেকটা প্রকাশ্যেই তিনি বলতেন, তিনি পড়তে আসেননি, এসেছেন ইউরোপ দেখতে। তাছাড়া, তাঁর ইংরেজিজ্ঞান ছিল অতি দুর্বল। বলা চলে, কোর্সের কোন আলোচনা বা প্রেজেন্টেশনে ভাষাজ্ঞানের অভাবে তিনি একপ্রকার কথাই বলতে পারতেন না। তাই, পড়াশোনা শেষে তাঁকে কেবল 'এটেন্ডেড' সনদ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম তারা তো আর সেখানে কে পড়তে গেছেন, বা কে বেড়াতে গেছেন তা জানেনা। তারা মনে করেছে ইংরেজিতে দুর্বলতার কারণেই এ বাংলাদেশির এই করুন অবস্থা। তারপর থেকেই বাংলাদেশী আবেদনকারীদের জন্য ইংরেজি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করলো তারা।
এ প্রসঙ্গে আমাদের চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের এক বিখ্যাত স্যার (দেড় বেটারী স্যার বলে আমরা ডাকতাম, মূল নামটা মনে পড়ছে না)-এর একটা বাণী মনে পড়ছে। তিনি বলতেন, 'একে করে গোলমাল, সবে কষ্ট পায়।' অর্থাৎ, ছাত্রদের কেউ একজন দুষ্টামি করলেও সাজা কিন্তু সবাইকে পেতে হয়। কারণ, দুষ্টামি কে করেছে তাকে অনেকসময় সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায় না। প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদ'ও এই স্যারের হাতে সাজা ভোগ করেছিলেন। (আমার কথা আর না বলি!)
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: যত জানি, তত অবাঁক হই।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৪
আমি সাজিদ বলেছেন: ইংরেজি জ্ঞান আমাদের ৮০% গ্রাজুয়েটেরই দুর্বল। আমারও বোধকরি। যদিও আমার পড়াশুনায় প্রচুর ইংরেজি ভাইভা দিতে হয়েছে, তবুও। সরকারি টাকায় ইউরোপ ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারটা বড় করে বলাটা উচিত হয়নি সেই লোকের।