নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে দুটি কথা =
অসাম্প্রদায়িক চেতনার নামে বিস্তর মানুষকে গলাবাজি করতে শুনি, কিন্তু, বাস্তবে খুব কমই দেখেছি যাঁরা এ বিশেষ গুণটি হৃদয়ে ধারণ ও লালন করেন। আমার প্রয়াত বাবা কিভাবে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিজের জীবনে চর্চা করতেন তা নিয়ে দুটো কথা আপনাদের সাথে সহভাগ করতে চাই।
একাত্তরের যুদ্ধকালীন আমাদের পাশের গ্রামে (মোজাফ্ফরাবাদ) লুটপাট হয়েছিল একবার। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই গ্রামটা মূলতঃ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। আমাদের এক গরিব প্রতিবেশী সেখান থেকে একটা খাসি নিয়ে এলেন। দ্রুতই খবরটা আমার বাবার কানে এলো। বাবা তাঁকে আমাদের বাড়িতে ডেকে পাঠালেন। প্রতিবেশীর কাছে তিনি জানতে চাইলেন ছাগল লুটে আনার কারন কি? তিনি সদুত্তর দিতে পারলেন না। বাবা তাকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দিলেন ওই গ্রামের যেখানে যে অবস্থায় ছাগলটা পাওয়া গেছে সেখানে সেভাবে যেন ছেড়ে দিয়ে আসেন। প্রতিবেশী তাই করেছিলেন। আমার বাবা পুরোনো দিনের শিক্ষিত মানুষ, এবং সে সাথে, সরকারি চাকুরী করতেন বলে স্থানীয়রা খুব সম্মান জানাতেন তাঁকে। আমার কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক বড়ো দৃষ্টান্ত এটি, আমার বাবা যা শুধু হৃদয়ে ধারণই করতেন না, বাস্তব জীবনেও চর্চা করতেন।
আমাদের বাড়িতে আরেকটা বিষয় আমরা নিয়মিতই দেখেছি। বাবা জীবিত থাকাকালে কুরবানীর সময় তাঁর সনাতন ধর্মীয় বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীদের জন্য সবসময়ই আলাদা করে একটা খাসি জবাই দিতেন। মুসলমান প্রতিবেশীদের পাশাপাশি তাঁদেরকেও এ বিশেষ দিনে আমাদের বাড়িতে দাওয়াত দিতেন। আমি মনে করি অসাম্প্রদায়িক চেতনার এও আরেক বড়ো দৃষ্টান্ত। একইসাথে, নিজ ধর্মের প্রতিও প্রবল শ্রদ্ধা ছিল তাঁর। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কখনো কাযা করতেন না; হারাম হালালও মেনে চলতেন, যে কারণে আমাদের পুরো পরিবারকে সবসময় আর্থিক চাপে থাকতে হতো। অভাব-অনটনের মাঝেই আমরা বেড়ে উঠেছি। আমার পরিষ্কার মনে পড়ে, রোজার দিনে ইফতারের আগে আগে ফুটপাতে বসা বরফওয়ালার কাছ থেকে আমরা বরফের খন্ড কিনে আনতাম।
যা বলছিলাম, আজকাল অসাম্প্রদায়িক চেতনার নামে মানুষকে কেবলই গলাবাজি করতে শুনি। কাজ দিয়ে প্রমান দেখাতে খুব কম মানুষই চান। কেউকেউ আবার নিজেকে অসাম্প্রদায়িক প্রমান করতে গিয়ে এমনসব উদ্ভট কান্ড ঘটিয়ে বসেন যা একান্তই হাস্যকর। আমার তো মনে হয় না, সনাতন ধর্মের কেউ নিজেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনাধারী প্রমান দেবার জন্য মুসলমানদের মসজিদে গিয়ে নামাজের উদ্বোধন বা আজান দেওয়ার প্রয়োজন আছে, বা ইসলাম ধর্মের অনুসারী কেউ গিয়ে হিন্দুদের পূজা উদ্বোধনের প্রয়োজন আছে।
এ লেখার মূল উদ্দেশ্য অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার দুয়েকটি বাস্তব উদাহরণ পাঠকের কাছে তুলে ধরা। জানিনা কতটা পেরেছি?
ML Gani/ [email protected]
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
মরুর ধুলি বলেছেন: আপনার মরহুম বাবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা রইল।
আমি তার জন্য দু’য়া করি আল্লাহ ওনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ আসনে আসিন করুন।
আপনার বাবার সময়ের মানুষগুলোর চিন্তা চেতনা ছিল সুন্দর যার অভাব বর্তমানে প্রকট।
অসাম্প্রদায়িক হতে গিয়ে আপনার বাবা বা তার সময়ের মানুষগুলো নিজের ধর্মীয় আদর্শকে বিকিয়ে দেননি।
অথচ আজকের তথাকথিত নামধারী অসাম্প্রদায়ীকতা ফেরি করে বেড়ানেওয়ালাদের কাজকর্ম দেখে মনে হয় অসাম্প্রদায়িকতা মানে হলো নিজের ধর্ম ও আদর্শকে বিকিয়ে দিয়ে বিজাতীর কোলে লুটে পড়া।
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশের মানুষ গুলোর সমস্যা আছে। সবার চিন্তা ভাবনা আলাদা। তারা মুখে এক কথা বলে, কাজ করে অন্য রকম।
প্রতিবছর পূজার সময় আমাদের দেশে কোথাও না কোথাও মূর্তি ভাঙ্গা হয়। আমাদের গোড়ায় গন্ডগোল। শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত নয়। মানুষ গুলো উন্নত নয়।
৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
লেখার মুল উদ্দেশ্য কি নিজের ঢোল বাজানো?
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৫
এমএলজি বলেছেন: এ লেখার মূল উদ্দেশ্য অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার দুয়েকটি বাস্তব উদাহরণ পাঠকের কাছে তুলে ধরা। জানিনা কতটা পেরেছি?
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৩:১৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যখন আপনি একটা সম্প্রদায়ের লোক বলে দাবি করেন,তখন অসম্প্রদায়িক হবেন কিভাবে।এটা একটা গালভরা বুলি।যদি আপনি নিজেকে মানুষ বলে দাবি করেন তখন অসম্প্রদায়ি ।।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর অসম্প্রদায়িক এক কথা না।আমার ধারনা।
৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১৩
এমেরিকা বলেছেন: আপনার বাবা যে কাজ করেছে - খুবই স্বাভাবিক কাজ। এর মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কিছু নেই। আমার বাবা বা আমার ক্ষমতায় থাকলেও তাই করতাম, হোক সেই ছাগল কোন হিন্দু বা মুসলিমের। অন্যায় দেখলে তার প্রতিবাদ বা প্রতিকার করাই তো মানুষের স্বাভাবিক ফিতরাত।
একাত্তরে হানাদারেরা লুঙ্গি খুলে চেক করত হিন্দু নির্ণয়ের জন্য নয়। তারা মুসলিমদেরকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছিল - আমরা তোমাদের ক্ষতি হয় - এরকম কিছু করবনা। কিন্তু তারপর তারা কি করেছিল, সবাই জানে। কাজেই সাম্প্রদায়িক চেতনা বলুন, উত্তেজনা বলুন বা বিভক্তি বলুন - এগুলো সবই লোক দেখানো ফাঁকিবাজি।
প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক চেতনা বুঝতে হলে সীরাত স্টাডি করুন। রাসূলের (স) জীবনী পড়ুন। মদিনা সনদ পড়ুন।
৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৮
স্থিতধী বলেছেন: আপনার বাবা কুরবানীর সময় খাসি জবাই দিয়ে সনাতন ধর্মের বন্ধুদের বাড়িতে দাওয়াত দিতেন তাইতো? এবং তারাও সে দাওয়াত রক্ষা করে আপনাদের বাড়ীতে পদধূলি দিয়ে ঈদের আনন্দে শরীক হতেন, তাই না ? এবার ঘটনা টিকে উল্টে দেন; হিন্দুদের কোন ধর্মীয় উৎসবে তাঁরা আপানাকে দাওয়াত করলো এবং খাসির মাংসই খেতে দিলো । আপনিও সে দাওয়াত রক্ষা করলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে মাংস খেয়ে নিলেন যদিও আপনি জানেন হয়তোবা সে খাসিটি হিন্দু কোন দেব-দেবীর নামে বলি করা হয়েছিলো। পারস্পরিক ধর্মীয় উৎসবে এই দাওয়াত দেওয়া ও তা রক্ষা করা কে যদি আপনি ঠিক মনে করেন; তাহলে ঠিক আছে, বুঝলাম আপনি অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা করছেন।
কিন্তু আপনি যদি এভাবে হিন্দুদের কোন দাওয়াত রক্ষা করেন , এ সমাজের ধর্মান্ধরা আপনাকে সমালোচনায় কচুকাটা করবে, এভাবে হিন্দুদের উৎসবের দাওয়াত রক্ষা অনৈসলামিক জানাবে। দেব-দেবীর নামে বলি হওয়া মাংস মুখে তুলেছেন বলে অভিসম্পাত করবে, কেউ কেউ সাকিবের মতো আপনার গলা কাটতে চাইবে। আপনাদের বাড়িতে হিন্দুরা দাওয়াত রক্ষা করতে এসেছিলো যদিও বা তাঁরা জানতেন হয়তো আপনারা একটি গরুও সেবার কোরবানী দিয়েছেন যেটা কিনা তাঁদের ধর্মে সম্মানীয় পশু। তবু তাঁরা দাওয়াত রক্ষা করেছেন। যদি কজন হিন্দু গরু কোরবানী করার জন্য আপনাদের সেই দাওয়াত রক্ষায় অস্বীকৃতি জানান তবে তাঁরাও অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার ছিলেন না। আপনিও যদি মনে করেন, হিন্দুরা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের দাওয়াতে এলে তা ঠিক আছে কিন্তু মুসলমানেরা হিন্দুদের উৎসবের দাওয়াত রক্ষা করলে তা ঠিক হবেনা তবে এমন এক তরফা অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা নিয়ে কিছু বলার নাই ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৬
রাকু হাসান বলেছেন:
কে কালীপূজা উদ্বোধন করেছে কে? সাকিব!! সে করেনি ,সে নিজে ,এবং আয়োজকরা বিষয়টি নিশ্চিত করছে।যাক আপনার বাবার ঘটনা ভাল লাগার জন্য লাইকড।