নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তালিকা তৈরী করা:
“Lists bring order to the chaotic universe.”
Austin Kleon তার “Keep Going” বইতে উপরের বাক্যটি বলেছেন। লিস্ট বলতে তিনি কাজ, চিন্তা, পড়া, লেখা, আঁকা, আনন্দের কারণ, দুঃখের কারণ ইত্যাদি লিস্ট বুঝিয়েছেন।
লিস্ট মানুষকে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, পরিষ্কার চিন্তা করতে সাহায্য করে।
লিস্ট মাথা থেকে আইডিয়াগুলো বের করে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং মেন্টাল স্পেস ক্লিয়ার করে।
যখন কাজের চাপে হতভম্ব হতে হয় বা কোন কারণে মন বিক্ষিপ্ত থাকে, অস্থির লাগে, মনে হয় যেন জীবনটা স্টাক হয়ে আছে তখন একটা কলম ও কাগজ হাতে নেন, আরজেন্টলি যেগুলো করা দরকার সেগুলোর তালিকা করেন। এবার সবচেয়ে যেটা আগে করা দরকার সেটা দিয়ে কাজ শুরু করেন।
লিস্ট বা তালিকা করার মহত্ত্ব হচ্ছে এটা চিন্তা ক্লিয়ার করে, অস্থিরতার কারণ ও প্রতিকার খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় যে অবস্থা মাথার ভিতর বিরাজ করছিল, কাগজে তা লেখার কারণে তা মাথা থেকে সামনে এসে পড়ে। যেটাকে এট-এ-গ্লান্স দেখা যায়। মাথার ভিতর যা জট পাকিয়ে থাকে তা খাতায় লেখার পর পরিষ্কার হয়। চিন্তা করতে সুবিধা হয়। জট খুলে যায়।
লিস্ট শুধু “কাজ” এর হবে এমন কোনো কথা নেই।
To do list, To read list, To watch list, To buy list, To call list, To draw list ইত্যাদি হতে পারে।
লিওনার্দ দা ভিঞ্চির একটা লিস্ট ছিল- To Learn List.
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ লিস্ট হতে পারে “সমস্যার লিস্ট”। অর্থাৎ আপনি বর্তমানে ব্যক্তি জীবন, পেশাগত জীবন ও সামাজিক জীবনে যেসব সমস্যা ফেস করছেন সেগুলোর লিস্ট।
সমস্যার পরিষ্কার তালিকাটা সামনে থাকলে সমাধান খুঁজে বের করা সহজ হবে। বা সমাধানের পথে এট লিস্ট যাত্রা শুরু করতে পারবেন।
Paper Prayer এর ব্যাপারে হয়ত শুনে থাকবেন। যখন কিছু করার নাই, স্টাক ও ডিপ্রেসড ফিল হচ্ছে। মেক এ লিস্ট অফ What are you thankful for, Where you need help.
POMODORO টেকনিক:
যে কোন জটিল বা বোরিং কাজ করার জন্য এই টেকনিক খুব কার্যকরী।
টেকনিকটা হলো যে কাজটা করতে চান সেটা স্থির করুন। এরপর মোবাইলে টাইমার সেট করে ২৫ মিনিট কাজটা করে যান। এরপর ব্রেক নেন ৫ বা ১০ মিনিটের। আবার ২৫ মিনিট কাজ করুন। এভাবে যে কয়টা স্লট করতে পারেন করতে থাকেন। বেশি অস্থির থাকলে বা মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হলে ২৫ মিনিটের পরিবর্তে আপনি টাইমার ১০, ১৫ বা ২০ মিনিট ইচ্ছামত সেট করতে পারেন। ২৫ মিনিটের বেশিও সেট করতে পারেন।
যারা মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন না তাদের জন্য এই টেকনিকটা অত্যন্ত কার্যকরী।
অনেকেই আছেন কোনো বই-ই পড়তে পারেন না। কিছুক্ষণ পড়ার পর বা দুই এক পেজ পড়ার পর ভাল লাগে না। বা সব সময় হুমায়ুন আহমেদ পড়ে এসেছেন বা ফিকশন পড়ে এসেছেন, কিন্তু নন ফিকশন পড়তে পারেন না। তারা এই টেকনিক ফলো করতে পারেন।
ধরেন কার্ল মাক্স এর কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো পড়বেন। ধরেন এটা জটিল বই। এসব বই পড়ার ক্ষেত্রে বোরিং লাগলে একটানা পড়বেন না। ২০ মিনিটে ৪ পেজ পড়েন। তারপর ১০ মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার ২০ মিনিট পড়েন। এভাবে পাঁচটা স্লট পড়তে পারলেই দেখবেন পড়া আগাচ্ছে।
এই টেকনিকটার আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এটা মোটিভেশন বুস্ট করে। দেখবেন অনেকের কথা শুনে বা ইউটিউবে ভিডিও দেখে আমরা খুব মোটিভেটেড হই, কিন্তু সে মোটিভেশন দুই-এক দিন পর থাকে না। মোটিভেশন ধরে রাখার কার্যকরী কৌশল হচ্ছে কাজ শুরু করা। যে কোন কাজ শুরু করলেই ঐ কাজ করার মোটিভেশন কনস্টান্ট থাকে।
তো আপনি প্রথমে যে কাজের তালিকা করেছেন তা সম্পন্ন করতে পোমোডোরো টেকনিক ফলো করতে পারেন।
পারেটো প্রিন্সিপাল বা ৮০/২০ রুল:
যে কোন কাজের ক্ষেত্রে-
৮০ পারসেন্ট আউটপুট নির্ভর করে ২০ পারসেন্ট ইনপুট এর উপর।
বাকি ২০ পারসেন্ট আউটপুট আসে ৮০ পারসেন্ট ইনপুট থেকে।
ধরেন, একটা কোম্পানির ১০০ টা প্রোডাক্ট আছে। এই কোম্পানি প্রতিমাসে প্রোডাক্ট বিক্রি করে যদি ১০০ টাকা লাভ করে তাহলে মোটামুটি ধরা যায়, ২০ টা প্রোডাক্ট বিক্রি করে তারা ৮০ টাকা লাভ করেছে। বাকি ২০ টাকা লাভ করেছে ৮০ টা প্রোডাক্ট বিক্রি করে।
আপনি যদি একদিনে ১০ ঘন্টা পড়েন তাহলে যা শিখবেন ধরা যায় তার ৮০% শিখেছেন ২ ঘন্টায় আর বাকি ২০% শিখেছেন ৮ ঘন্টায়।
তো যে কোন কাজ করার সময় পারেটো প্রিন্সিপাল মাথায় রাখা জরুরি। একটু খেয়াল করলে বের করতে পারবেন কাজের কোন অংশে বেশি মনোযোগ দিলে বা বেশি শ্রম দিলে তার ৮০% সম্পন্ন হবে।
কাজ করার সময় পোমোডোরো টেকনিক ও পারেটো প্রিন্সিপাল মাথায় রাখলে কাজ করা সহজ হবে। আউটপুট ও ভালো পাওয়া যাবে।
.
এই লেখাটিআমার নিউজলেটার থেকে নেওয়া। আমার লেখা পড়তে নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।
©somewhere in net ltd.