![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে নেওয়ার লাইসেন্স। দাবির ঢেউ এতটাই উত্তাল যে, মনে হয় এই দেশটা আর যমুনার বাঁধ নয়, যেন এক বিশাল 'দাবির রাজ্য' , যেখানে ন্যায্যতা নয়, গলার জোরই বিচার।
তাই পরামর্শ সহজ—'জাতীয় দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি সংস্থা' গঠন করো, নচেৎ একদিন দেখা যাবে ঢাকা শহরের প্রতিটা মোড়ে একটি করে চায়ের দোকান এবং একটি করে অবরোধ। সারা দেশে ছাত্ররা ক্লাস বাদ দিয়ে আন্দোলন করে, কেউ বিশ্ববিদ্যালয় চায়, কেউ ভিসির পদত্যাগ। অথচ পাঠ্যসূচি দেখে মনে হয়, এরা যেন 'গণতান্ত্রিক দাবিদাওয়ার চর্চা ১০১' নামক নতুন কোন কোর্সে ভর্তি হয়েছে। শিক্ষার মান নিয়ে এদের যতটা না মাথাব্যথা, তার চেয়ে বেশি উদ্বেগ আছে কে কার আগে মাইক ধরবে তা নিয়ে।
দাবির বিষয়েও বৈচিত্র্য আছে। কেউ চায় কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বায়ত্তশাসন, আর কেউ সরাসরি রাষ্ট্রপতি হতে চায়। একটা কলেজ, যার র্যাঙ্কিং ঢাকার শেষ মাথায় ঝুলছে, সেটিও রাস্তায় নেমে চেঁচায়—"আমরা বিশ্ববিদ্যালয় হবো!" কে যেন বলে, “তোমরা আগে কলেজ হও, তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখো।” কিন্তু এই দেশে কে কাকে শোনে?
একটা কথা ঠিক—এই দাবিদাওয়ার চর্চা সবাই চায়, কিন্তু কেউই চায় না নিজেকে তার যোগ্য করে তুলতে। দাবির পূর্বশর্ত হলো যোগ্যতা, কিন্তু সেটা তো আর দেয়ালে লেখা নেই, তাই পাত্তা দেয় কে?
তাই প্রস্তাব একটাই—একটা কেন্দ্রীয় সংস্থা হওয়া দরকার, যেখানে প্রত্যেক দাবিদারকে আগে আবেদন করতে হবে। রাস্তায় নামা যাবে না, ফেসবুকে ‘লাইভ’ চালানো যাবে না, মিডিয়ায় কান্নাকাটি চলবে না। আগে দাবি নিবন্ধন করো, তারপর শুনানি হবে। যে দাবি শুনেই বোঝা যায় রাষ্ট্র দেউলিয়া করে ছাড়বে—সেটা সরাসরি কাউন্সেলিং বিভাগে পাঠাও। প্রয়োজনে বোঝাও—"ভাই, আপনি যে চাচ্ছেন সবাইকে চিরতরে চাকরি দিতে হবে—এটা সম্ভব না, কারণ রাষ্ট্রব্যবস্থা জাদুর বাক্স নয়।"
আর যে দাবি যৌক্তিক—যেমন সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো বা নিরাপদ সড়ক—সেটা সরকারের কাছে পৌঁছাবে। তবে সিদ্ধান্ত তিন মাস বা ছয় মাসের মধ্যে আসবে—এই শর্তে।
এই সংস্থার প্রধান হবেন একজন 'ন্যায়পাল' —নাম শুনলেই বোঝা যায় তিনি দুর্নীতিমুক্ত দেবদূত, যিনি সরকারের ফাইলে আটকে থাকা জনগণের বেদনা নিয়ে ভাবেন। তাঁর অধীনে থাকবে তিনটি বিভাগ: যাচাই-বাছাই, আইন, আর কাউন্সেলিং—যেখানে শোকাহত ছাত্রকে বলা হবে, “ভাই, হাসপাতালের ডাক্তার না থাকায় আপনার বন্ধুটি মারা গেছেন—এটা ভয়ংকর ঘটনা, কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে গণমানুষকে শাস্তি দিলে আপনি নিজের দাবি দুর্বল করছেন।”
এ সংস্থা হবে না অন্য সরকারি সংস্থার মতো, যেখানে ‘ফাইল চলে না, ফাইল ঘোরে’। এটি হবে 'সংকট ব্যবস্থাপনা টিম' —প্রজাতন্ত্রের 'ফায়ার ব্রিগেড', যারা দাবি আগুন লাগার আগে পানি ছিটাবে। তবে কিছু দাবি অকর্মযোগ্য—একজন ছাত্রের মৃত্যুতে তাঁর বন্ধুরা রাস্তায় নামে, বাস পোড়ায়। হ্যাঁ, আমরা সবাই কষ্ট পাই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এমন দাবির ফলাফল কী? কাউকে ফিরিয়ে আনা যায় না, আর আন্দোলন করে আরেকজন মরলে লাভ কার?
কাউন্সেলিং দরকার। হ্যাঁ, মানসিক স্বাস্থ্য, আবেগ ব্যবস্থাপনা, শোকের প্রক্রিয়া—এসবও 'নীতি'র অংশ হওয়া উচিত। দাবিদাওয়া মানেই গ্ল্যামার নয়, সেটা সমাজে ভারসাম্য রাখার দায়িত্বও বটে। আর সবথেকে ভয়াবহ দাবির উৎস হচ্ছে 'রাজনীতি' । রাজনৈতিক দাবিগুলো যদি রাজনৈতিকভাবে না মীমাংসিত হয়, তাহলে একসময় দেখা যাবে, ছাত্রদের ভিসি পদত্যাগ চাই, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চাই, আর নেতাদের দাবি হবে—“আমাকে আগামী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করো, না হলে দেশ অচল !”
তাই আজকের প্রস্তাব একটা সামাজিক প্রতিরোধ—দাবি জানাবে সবাই, কিন্তু শর্ত সবার জন্য এক:
১. দাবি আগে সংস্থায় জমা দাও
২. সংস্থা যাচাই করবে
৩. কোনো দাবি রাস্তায় না, রিপোর্ট টেবিলে
৪. আর সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে যাও আদালতে—খুলে দেখো সংবিধান
জাতি হিসেবে আমরা যদি প্রত্যেক ছোটো ও বড়ো আকাঙ্ক্ষাকে যুক্তির ছাঁকনি দিয়ে ফেলতে না পারি, তাহলে একসময় আমাদের সত্যিকারের দাবি হারিয়ে যাবে হ্যান্ডমাইক আর ব্যানারের নিচে।
তাই সময় এসেছে 'একটা বুদ্ধির সংস্থা' গঠনের—যেটা না স্রেফ সরকারী, না বিরোধী, বরং নাগরিক বুদ্ধিমত্তার সংহত রূপ। কারণ এই দেশে সমস্যা শুধু দাবি নয়, সমস্যাটা হলো— দাবি জানাতে গিয়ে বিবেক হারিয়ে ফেলি।
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ১৫ বছরের চাপা অসন্তোষ! কিছুটা ইন্ধন সাথে আহম্মকি !
২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার একটা পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে। ওটা আপনি মুছেছেন?
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মুছে দেয়া পোষ্টের বিষয়বস্তু আমার গতানুগতিক লেখার সাথে যায় না। তাই সরিয়ে ফেলেছি।
৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:৫৩
যামিনী সুধা বলেছেন:
নৈরাজ্যবাদী Gen-Z ( জল্লাদ জেনারেশন )। সব ছাত্রকে ক্রিমিনালে পরিণত করেছে আমেরিকান ক্যু
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যখন একজন স্বৈরশাসক ভয় দেখিয়ে সবাই কে দমন করে এবং তারপর উহার পতন হয় তখন মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়৷
৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি কি শিক্ষকতা পেশায় আছেন?
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দুই বছর কলেজে পড়ায়েছিলাম।
৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:১৮
কামাল১৮ বলেছেন: কলেজে পড়িয়ে ছাত্রদের সাথে গেছেন আন্দোলন করতে।মাদ্রাসা থেকে লেখাপড়া করেছেন মনে হয়।আজকাল অনেকেই মাদ্রাসা থেকে পাশ করে ভারসিটিতে ভর্তি হয়।
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৩১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মাদরাসায় পড়ার সুযোগ হয় নি। আন্দোলনের সময় শিক্ষকতা পেশায় জড়িত ছিলাম না।
আপনার ক্রিমিনাল নেত্রী মাদরাসা থেকে ভার্সিটি এডমিশন দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি সবচেয়ে বড়ো জংগী !
৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭
কামাল১৮ বলেছেন: আপনি কলেজে কি পড়িয়েছেন।আমাকে আজও ঠিকমতো বুঝতে পারলেন না।আমি জীবনেও আওয়ামী লীগ করিনি।কেবল আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র সমর্থন করি।আমার পছন্দ কমিউনিষ্ট পার্টি।
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনাকে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি বহু আগেই। কমিউনিস্ট দল করলে কি শেখ হাসিনাকে সাপোর্ট করা যায় না? আম্লিকের একটা বড়ো অংশ কমিউনিস্ট মানসিকতার। বাম দলগুলোকে আম্লিকের ল্যাস্পেন্সার বলা হয়।
ভালো থাকবেন৷
৭| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০১
আমি সাজিদ বলেছেন:
ভালো লিখেছেন। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও ভঙুর প্রতিষ্ঠানের কারনেও এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা জাতি হিসেবে আবেগের বশে চলি, মাথায় তুলতেও সময় কম নেই আবার মাটিতে আছড়ে ফেলি মুহূর্তেই। এর সাথে যোগ হয়েছে সামাজিক অস্থিরতা, শিক্ষা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গতি ও সমন্বয়হীনতা। আমাদের অবিশ্বাসের পারদ এত বেশী আমরা ট্রাস্ট ইন দ্যা প্রসেস বাদ দিয়ে বরং ওয়ান ম্যান শোতে বিশ্বাসী। হাসিনার আমলে যারা ইলেকশন ও গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া বলে জপ করতেন, তারা এখন কলাম লিখছেন, নির্বাচনই গণতন্ত্রের লক্ষ্য নয়। কেউ কাউকে বিশ্বাস করি না,একে অন্যের সাথে সমন্বয় নাই। এত আনপ্রেডিক্টেবল একটা সিচুয়েশন এখন। আসলে কখনই তেমন করে স্টাবিলিটি ছিল না দেশে।
আমি আরও ভয় পাচ্ছি। একটু বয়সে ছোটদের মাথায় তুলে দেশ চালানোর ভার দিয়ে বয়স্কদের ডায়াপার পড়ানোর উদ্দেশ্য ও হুমকি নিয়ে। এমনেই পিআরের জন্য মিডিয়াগুলো জেনজিদের ব্ল্যাংক চেক দিয়ে দিয়েছে। যেখানে ওদের নানা মতের মানুষের সাথে মিশে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেওয়ার কথা, সেখানে ওরা মিডিয়ার হাইপে ওভারকনফিডেন্ট হয়ে ভুল না করে বসে! শয়তানরা তো কু পরামর্শের জন্য অভিভাবক সেজে ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছেই।
এছাড়া গোটা জাতির একটা বিশাল অংশ মেতে আছে ফোন, সোসাল মিডিয়ার ওভার কনসামশন স্যালো থিংকিং এ। বিগত দশ পনেরো বছর ধরেই দেখছিই। ইতিহাস, সাহিত্য, বিজ্ঞান যদি ফেসবুকেই জানা যেত তাহলে তো আর প্রতিষ্ঠান ও প্রসেস বলে কিছু থাকতো না।
আল্লাহ ভালো জানেন। দেশ কোন দিকে যায়। দেশকে ভালোবাসি।
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৩০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বহুদিনের চাপা ক্ষোভ জড়িত এর সাথে।
৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: যখন একজন স্বৈরশাসক ভয় দেখিয়ে সবাই কে দমন করে এবং তারপর উহার পতন হয় তখন মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়৷
দেশে কিছু হলেই, আপনি আওয়ামীলীগের দিকে আঙ্গুল তোলেন কেন?
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৩০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কারণ আপনার নেত্রী সবাইকে ভয় দেখিয়ে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিলো।
৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:২২
নতুন বলেছেন: বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে নেওয়ার লাইসেন্স। দাবির ঢেউ এতটাই উত্তাল যে, মনে হয় এই দেশটা আর যমুনার বাঁধ নয়, যেন এক বিশাল 'দাবির রাজ্য' , যেখানে ন্যায্যতা নয়, গলার জোরই বিচার।
ঢোল আর বাঙ্গালী পিডানির উপরে রাখতে হয়।
সবাই বেশি স্বাধিনতা পাইয়া গেছে মনে হয়। মানুষের অসুবিধা করে রাস্তা ব্লক করে অন্যায় আবদার নিয়ে আসছে।
আর আপা তো বলেই দিছেন যে ঝামেলা করতে, তারাও সকল দলে মিশে গিয়ে ঝামেলা বাড়াতে কাজ করে যাবে নিরন্তর।
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:৩০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ভালো বলেছেন। বাঙালিকে পিডানির উপর রাখতে হবে।
১০| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: কারণ আপনার নেত্রী সবাইকে ভয় দেখিয়ে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিলো।
কিভাবে বঞ্চিত করলো? মানুষকে খেতে দেয়নি? বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস দেয়নি? ঘর থেকে বের হতে দেয়নি? লেখাপড়া করতে দেয়নি? বেড়াতে যেতে দেয়নি? বিয়েসাদি করতে দেয়নি? সহবাস করতে দেয়নি?
২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:২৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সবই করিয়েছেন কিন্তু ভুল ভাবে৷
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:১২
লুধুয়া বলেছেন: নূতন স্বাধীনতা।