নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি বিজ্ঞানকে।। তাই বিজ্ঞান নিয়ে সকল পোষ্ট করার চেষ্টা করি।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে, হবে হবেই দেখা, দেখা হবে বিজয়ে।।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাইফেল রোটি আওরাত--মুক্তিকালীন লেখা একমাত্র উপন্যাস।।।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:০২


রাইফেল রোটি আওরাত হচ্ছে আনোয়ার পাশার লেখা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি উপন্যাস। এটিই একমাত্র উপন্যাস যেটি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে লেখা হয়। যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী বাহিনী রাইফেলের মুখে আমাদের অস্তিত্ব হরণ করে, রোটি অর্থাৎ আমাদের খাদ্যের যোগানে বাধার সৃষ্টি করে এবং আওরাত হচ্ছে সেই ৩ লক্ষ মা বোন যাদের সম্ভ্রম কেড়ে নেয় সেই হানাদার বাহিনী। রাইফেল রোটি আওরাত বলতে লেখক এটিই বুঝাতে চেয়েছেন। রাইফেল রোটি আওরাত বইটির রচনাকাল হচ্ছে ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাস।
১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তানিদের হাতে শহিদ হন আনোয়ার পাশা। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে দাড়িয়েও তিনি লিখে গেছেন এই অসামান্য বইটি নতুন প্রজন্মের জন্য। এটি আমাদের ঐতিহাসিক দলিল বললেও ভুল বলা হবে না। পৃথিবীতে এ রকম নজির আর কি আছে? আর কাউকে কি নিজের জীবন দিয়ে লিখতে হয়েছে জাতীয় জীবনের করুণ-কঠিন ট্র্যাজিক আখ্যান?
একাত্তরের এপ্রিলে লেখা শুরু, শেষ জুনে। কিন্তু ওই এপ্রিলেই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন স্বাধীনতা আসন্ন। তাই মৃত্যুর আগে উপন্যাসের শেষ বাক্যে লেখেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অভয়বাণী: ‘মা ভৈ’। ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশ যে মৃত্যুর বিভীষিকায় ডুবেছিল, তার ভেতরে রক্ত, লাশ আর নরক সমান ভয়াবহতার মধ্যে আনোয়ার পাশা লিখছেন ওই মৃত্যুরই আখ্যান। এটি ২৫ মার্চের পরের তিন দিনের গল্প। এই গল্প ইতিহাস, এই গল্প একাত্তরের রক্তের ডাক। এই কাহিনী শত্রু-কবলিত বাংলাদেশের মুক্তির সাহসী প্রতিজ্ঞা।
বইটির মূল কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র:--
১.সুদীপ্ত শাহিন যিনি বইটির মূল চরিত্রে আছেন। তার যুদ্ধকালীন সময়ের কথা বলা আছে বইটিতে।
২.মীনাক্ষি যিনি সুদীপ্ত শাহিনের স্ত্রী।
৩.মহীউদ্দিন ফিরোজ সুদীপ্ত শাহিনের বন্ধু, তারও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে বইটিতে।
৪. মহীউদ্দিন ফিরোজের স্ত্রী, হামিদা নামক এক ছাত্রী, রাজাকার মালেক সাহেব, রাজাকার মাসুদুর রহমান, নাজিম, সমাজ সেবী বুলা, পাকিস্তানী মিলিটারি বাহিনী সহ আরো অনেকে উক্ত গল্পের চরিত্রে আছেন।
৫.এছাড়াও অনেক বুদ্ধিজীবী যেমন, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ড: গোবিন্দ চন্দ্র দেব, বঙ্গবন্ধু সহ আরো অনেককে উপস্থাপিত করা হয়।

বইটিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানী বাহিনী কর্তৃক নির্যাতনের করুন বেদনা সম্পর্কে সরাসরি জানতে পারি। ২৫ মার্চ ভয়াল কাল রাত্রিতে যে হত্যা যজ্ঞ চালানো হয় সেই ঘটনা এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের গর্জে উঠা সর্ম্পেকেও বলা হয়েছে। এ শুধে একাত্তরে মানুষের আর্তনাদের চিত্র নয় এতে রয়েছে দীপ্ত যৌবনের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। এ গল্পের নায়ক সুদীপ্ত যেন প্রতি বাঙ্গালির আশা-আকাঙ্ক্ষা, সংকল্প প্রত্যয়ের প্রতীক। একাত্তরের মার্চের ভয়াবহ দিনগুলি এবং এপ্রিলের প্রথমার্ধের কালো দিন গুলির মর্মান্তিক অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। আজ যদি আমরা জানতে চাই ওই ভয়াবহ দুর্যোগে কীভাবে বেঁচে ছিল জাতির আত্মা, কীভাবে রক্তনদী সাঁতরে অজস্র মৃত্যু পেরিয়ে বিজয়ের পাড়ে পৌঁছবার জেদ দানা বেঁধেছিল, তাহলে রাইফেল রোটি আওরাত-এর থেকে বেশি আর কে তা জানাবে? এ কেবল লাঞ্ছিত বাংলার হাহাকার নয়, তার রুখে দাঁড়ানোরও দলিল। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশ কটি উপন্যাস আছে আমাদের, লেখা হবে আরও অনেক। কিন্তু রাইফেল রোটি আওরাত অনন্য। এই গল্পের শক্তি এতই তীব্রতর যে হাজার বছর পরেও বাঙালী জাতি সত্ত্বার পরিচয় পাওয়া যাবে বইটি থেকে।
লেখকঃ- দীপংকর চক্রবর্ত্তী B-) :) :) B-)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.