নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি বিজ্ঞানকে।। তাই বিজ্ঞান নিয়ে সকল পোষ্ট করার চেষ্টা করি।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে, হবে হবেই দেখা, দেখা হবে বিজয়ে।।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলন তথা গন জাগরনে অনেক কাল আগে থেকেই ভাষ্কর্য গুরূত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছে ভাষ্কর্য। বিভিন্ন সময়ে কলের নিরব সাক্ষি হয়ে আছে এসব ভাষ্কর্য। দেশের বিভিন্ন শহরে ছরিয়ে আছে এসব ভাষ্কর্য এমনকি বাংলাদেশের বাইরে, বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলেও রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধের এসব ভাস্কর্য।
# মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্যের তালিকা:--
নাম---------------------------ভাষ্কর ----------------------------------অবস্থান
১. অপরাজেয় বাংলা------ ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ------ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২. রাজু ভাষ্কর্য-------------ভাস্বর শ্যামল চৌধুরী --------------ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
৩. সংশপ্তক----------------হামিদুজ্জামান খান----------------- জাহাঙ্গীরনগর- বিশ্ববিদ্যালয়
৪. স্বোপার্জিত স্বাধিনতা---শামীম সিকদার-------------------- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৫. শাবাস বাংলাদেশ------নিতুন কুণ্ডুর-------------------------রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
৬. চেতনা ৭১-------------মোবারক হোসেন নৃপল ------------শাবি প্রবি
৭. বিজয় ৭১ -------------শিল্পী শ্যামল চৌধুরীর ------------বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে
৮. জাগ্রত চৌরঙ্গী---------আবদুর রাজ্জাক---------------------জয়দেবপুর চৌরাস্তা
৯. অদম্য বাংলা-----------গোপাল চন্দ্র পাল-------------------খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়




১। অপরাজেয় বাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে বন্দুক কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা তিন নারী-পুরুষের ভাস্কর্য যেটি সর্বসত্মরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সেটি 'অপরাজেয় বাংলা'। এর তিনটি মূর্তির একটির ডান হাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তযোদ্ধা বদরম্নল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অপর মূর্তির মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। আর নারী মূর্তির মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ।১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরি করা শুরু হয়। এর কাজ শেষ হয় ১৯৭৯ সালে। ৬ ফুট বেদীর উপর নির্মিত এর উচচতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট।১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পূর্ণোদ্যমে অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ শুরম্ন হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। তবে অপরাজেয় বাংলার কাছে ভাস্করের নাম খচিত কোন শিলালিপি নেই। স্বাধীনতার এ প্রতীক তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন গুণী শিল্পী ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনের বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি যেন অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার গান গাইছে। এ ভাস্কর্যে সব শ্রেণীর যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে।



২। রাজু ভাস্কর্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সি প্রাঙ্গনে অবস্থিত - সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য - ঢাকার একটি অন্যতম প্রধান ভাস্কর্য নিদর্শন।

১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল চলাকালে সন্ত্রাসীরা গুলি করলে মিছিলের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের-এর কেন্দ্রীয় নেতা মঈন হোসেন রাজু নিহত হন। রাজুসহ সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের সকল শহীদের স্মরণে নির্মিত এই ভাস্কর্য ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ. কে. আজাদ চৌধুরী উদ্বোধন করেন। এই ভাস্কর্য নিমার্ণে জড়িত শিল্পীরা ছিলেন ভাস্বর শ্যামল চৌধুরী ও সহযোগী গোপাল পাল। নির্মাণ ও স্থাপনের অর্থায়নে ছিলেন - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আতাউদ্দিন খান (আতা খান) ও মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির সভাপতি, লায়ন নজরুল ইসলাম খান বাদল। ভাস্কর্যটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।



৩। জাগ্রত চৌরঙ্গী
মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের অসামান্য আত্মত্যাগের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য। ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক জাগ্রত চৌরঙ্গীর ভাস্কর। এটি ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত এটিই প্রথম ভাস্কর্য। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চের আন্দোলন ছিল মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। আর এই প্রতিরোধযুদ্ধে শহীদ হুরমত উল্যা ও অন্য শহীদদের অবদান এবং আত্মত্যাগকে জাতির চেতনায় সমুন্নত রাখতে জয়দেবপুর চৌরাস্তার সড়কদ্বীপে স্থাপন করা হয় দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যকর্ম জাগ্রত চৌরঙ্গী।


৪। সংশপ্তক

সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ নির্মিত হয়েছিল স্মারক ভাস্কর্য সংশপ্তক। এ ভাস্কর্যটির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যুদ্ধে শত্রুর আঘাতে এক হাত, এক পা হারিয়েও রাইফেল হাতে লড়ে যাচ্ছেন দেশমাতৃকার বীর সন্তান। যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় জেনেও লড়ে যান যে অকুতোভয় বীর সেই সংশপ্তক। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক পায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে ভাস্কর্যটি। এর ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান।



৫। সাবাস বাংলাদেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে নিতুন কুণ্ডুর তৈরি 'সাবাস বাংলাদেশ' নামের ভাস্কর্য দেখা যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক শিক্ষক-ছাত্র শহীদ হওয়ায় এর স্মৃতিকে চির অমস্নান করে রাখার জন্য উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করা হয় সিনেট ভবনের দক্ষিণে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রম্নয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উদ্যোগে শিল্পী নিতুন কুণ্ডুর উপস্থাপনায় নির্মাণ কাজ শুরম্ন হয়। নির্মাণ কাজ শেষে ফলক উন্মোচন করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। ভাস্কর্যটি দাঁড়িয়ে আছে ৪০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে, যেখানে রয়েছে দু'জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। একজন রাইফেল উঁচু করে দাঁড়িয়ে আর তার বাঁ বাহুটি মুষ্টিবদ্ধ করে জাগানো। অন্যজন রাইফেল হাতে দৌড়ের ভঙ্গিতে রয়েছে; যার পরনে প্যান্ট, মাথায় এলোমেলো চুলের প্রাচুর্য যা কিনা আধুনিক সভ্যতার প্রতীক। এ দু'জন মুক্তিযোদ্ধার পেছনে ৩৬ ফুট উঁচু একটি দেয়ালও দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালের উপরের দিকে রয়েছে একটি শূন্য বৃত্ত, যা দেখতে সূর্যের মতোই। ভাস্কর্যটির নিচের দিকে ডান ও বাম উভয়পাশে ৬ ফুট বাই ৫ ফুট উঁচু দু'টি ভিন্ন চিত্র খোদাই করা হয়েছে। ডানদিকের দেয়ালে রয়েছে দু'জন যুবক-যুবতী। যুবকের কাঁধে রাইফেল, মুখে কালো দাড়ি, কোমরে গামছা বাঁধা, যেন বাউল। আর যুবতীর হাতে একতারা। গাছের নিচে মহিলা বাউলের ডান হাত বাউলের বুকে বাম দিকের দেয়ালে রয়েছে মায়ের কোলে শিশু, দু'জন যুবতী একজনের হাতে পতাকা। পতাকার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে গেঞ্জিপরা এক কিশোর। শিল্পী নিতুন কুণ্ডু তার মনতুলি দিয়ে এমনভাবে ভাস্কর্যটি চিত্রিত করেছেন দেখলে মনে হয় যেন ১৯৭১ সালেরই অর্জিত স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি।




৬। অদম্য বাংলা

অদম্য বাংলা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ভাস্কর্য। এর স্থপতি শিল্পী গোপাল চন্দ্র পাল। ২০১১ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০১২ সালের জানুয়ারিতে তা শেষ হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যটির উচ্চতা ২৩ ফুট।

আধুনিক দৃষ্টিনন্দন ২৩ ফুট উচ্চতার মুক্তিযুদ্ধের এ ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। ভাস্কর্যটির মূল অংশে স্থাপিত হয়েছে একজন নারীসহ বলিষ্ঠ ও তেজোদীপ্ত চার মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি, যা বাঙালি জাতির শৌর্য-বীর্যের মূর্ত প্রতীক। ভাস্কর্যটি মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাকামী মানুষের তথা নারী-পুরুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের সম্মিলিত ভূমিকার প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। বেদির চারদিকের ম্যুরালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতি, বধ্যভূমির বর্বরতা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের চিত্র পোড়া মাটির ফলকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।


---------দীপংকর চক্রবর্ত্তী :)
অসংখ্য ধন্যবাদ উইকিপিডিয়াকে।।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৫

সাইলেন্ট পেইন বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক কিছু জানা হল।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০০

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: আমি কৃতার্থ।।।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

চমৎকার পোস্ট !!

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৫

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৩১

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: পোস্টে প্লাস।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০০

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: আমি কৃতার্থ।।।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:১১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। প্রিয়তে ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: ধন্যবাদ 8-| :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.