দৈনিক খোলা কাগজের বাংলা ওয়াশ বিভাগে আজকে প্রকাশিত রম্য ৷

২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৪

গফের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, উপায়ন্তর না দেখে রুশ মিগ-৩৫ ফাইভ-জি যুদ্ধবিমান নিয়ে রওনা হয়ে গেলাম ৷ যদিও ভ্লাদিমির পুতিন সাহেব প্রথমে বিমান ধার দিতে রাজি হতে চাচ্ছিলেন না ৷ তবুও মানবতা বলে একটা কথা আছে ৷ একটি প্রেমের এমন সমাপ্তি হলে তা বিশ্বের জন্য হবে এক লজ্জাকর অধ্যায় ৷ হতে পারে এই বিয়ে আটকিয়ে ফলাও করে প্রচার করে আসন্ন নোবেল শান্তি পুরস্কার রাশিয়ার থলিতে যোগও হতে পারে ৷
.
ঝামেলা হলো সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তাদের রাডারগুলো আপডেট দিয়েছে ৷ যাওয়ার আগে একটি শান্তি চুক্তি করে নিলে মন্দ হবে না ৷ যদিও আমেরিকার সাথে শান্তি চুক্তি করতে গেলে তারা প্রেমের ইতিহাসে নাম লেখানোর জন্য উল্টো দ্য লকহিড এফ-১১ যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দিতে পারে যা রাডার ফাঁকি দিতে কোন অংশে কম যায়না, অতুলনীয় ৷
.
যদিও ‘স্টেলথ মোড’ প্রযুক্তিযুক্ত যুদ্ধবিমানগুলো হাতে গোনা তবে আমরা যেহুতু মিয়া বিবি দুইজন মুসলিম সুতরাং ইরানের কাহার এফ-৩১৩ নিলে আরেকটু আরামে যেতে পারতাম যদিও ৷ একটা ধর্মীয় আবহ থাকতো ৷ যাই হোক গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে নিয়ে কথা সুতরাং এতো আরাম দিয়ে কি আর হবে!
.
শুনেছি আমাদের একটা ইউনিক ড্রোন আছে যা রাডার ফাঁকি না দিতে পারলেও মেয়ের বাবার চোখ অবশ্যই ফাঁকি দিতে পারবে বলে মনে হয় ৷
.
যাই হোক, বিমানে উঠে মনে হলো ফাস্ট গিয়ারে পা দিলাম ৷ ঘাপলা লাগলো! আগে জানতাম গাড়িতে গিয়ার টিয়ার থাকে এখন দেখি বিমানেও......! এ আমি কোথায় উঠলাম!
.
গিয়ার আরো বাড়ালাম উপরে 'কুচ কুচ হোতা হ্যায়' বাজছে ৷ আমিও কল্পনায় হারিয়ে যাচ্ছি ৷ চবির সুনামী গার্ডেনে শাহরুখ খানের মতো দুহাত ছড়িয়ে এক হাটু গুঁজে বসলাম ৷ আবেগে গুনগুন করে 'টুম্পা চে আয়ে, ইয়ু মুজকো বায়ে' গাওয়া শুরু করলাম তারপর মনে পড়লো গফের নামতো টুম্পা না ৷
.
এটা কি হলো! গানের সুরে অভিনয়ের সাথে তাল মিলিয়ে দুহাত দুদিকে ছাড়িয়ে দিতে গিয়ে দেখি, হাত থেকে হ্যান্ডেল ছেড়ে দেওয়ায় বিমান নোয়াখালির উপর ঘুরপাক খেতে খেতে প্রায় বরিশালে এসে থামলো ৷
.
মনে পরলো বরিশালের পেয়ারা মেয়েদের কি চেহারা ৷ চিন্তা করছি এখানে থেকে যাবো কি না! কিসের গফ কিসের বফ! পাশ থেকে কে যেনো এসে বললো, 'মনু বিমানে তেল দিছো না দিবা?'
.
মনে হলো এখানের মেয়েরা সুবিধার না দ্রুত পা দিয়ে আবারো গিয়ার চাপ দিলাম ৷ বিমান উপরে উঠছে ৷ উড়ছে তো উড়ছে ৷ স্টিয়ারিংয়ে প্রেশার দিলাম! মনে হলো গিয়ার ছিঁড়ে যাচ্ছে ৷ সবদিকে গন্ডগোল ৷
.
রাগে অভিমানে পা দিয়ে আরো জোরে চাপ দিলাম সাথে সাথে ট্রিট ট্রিট করে গিয়ার ছিঁড়ে গেলো! ভাবছি ভেঙ্গে যাওয়ার কথা ছিঁড়ে গেলো কেমনে!
.
যাই হোক নিশ্চিত মৃত্যু.... ওদিকে গফের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এদিকে আমার জীবন সংকটাপন্ন 'ভেঙ্গে গেলো, ভেঙ্গে গেলো, ভেঙ্গে গেলো সবি, হয়তো জীবন বুঝি কাঁচেরও ছবি ৷'
.
তবুও রাগ ক্ষোভ যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে ভাঙ্গা গিয়ার উপ্রে ফেলতে গিয়ে দেখি ঘুম ভেঙ্গে গেছে ৷ কাথার ছিদ্রে পা থাকায়, ঘুম থেকে জেগে দেখি পায়ের চাপে ছেঁড়া কাঁথা আরো ছিঁড়ে চৌচির ৷'

১ টি +০/-০