নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় তিনটা ক্যাটাগরি যদি হিসেব করি তাহলে আমাদের কলোণীতে কেবলি একজন ই স্যার্ ছিলো ৷ স্যার লিখে কেউ কোন কিছু শোভাকলোণীতে পাঠালে সেই পার্সেল কোনদিন ভুল ঠিকানায় যাবে তা ও ছিলো অবিশ্বাস্য ৷ কেউ পত্রিকা না নিলেও কেবলি স্যার নিয়মিত নিতো ৷ সমস্যা হলো পত্রিকা গায়েব হয়ে যাতো ৷
.
হকার কলোণীতে ঢুকার আগেই দুই একজন তাকে সাইকেল থেকে নামিয়ে আমরা দিয়ে আসবো বলে, মসজিদের বারান্দায় বসে পত্রিকা পড়তেছে ৷ পড়া শেষ হলে তা আরেকজন ঘরে নিয়ে বিনোদন পাতা মুখস্ত করে আবার ফিরিয়ে দিয়ে গেছে ৷
.
সন্ধ্যায় স্যার বের হতো পত্রিকার খোঁজ করতে ৷ একদিন দেখলাম একজন জয়া আহসানের ছবি কেটে রেখে পত্রিকা ফিরিয়ে দিয়ে গেছে ৷ তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হলো ৷ কেউ স্বীকার করেনি ৷
.
রাগে ক্ষোভে আমি নিজেই হকারকে বলে দিলাম সামনের মাস থেকে আমার বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেতে ৷ একমাস গেলো ৷ বিল রেখে গেছে ৷ পত্রিকার এজেন্ট আবার বন্ধুর বাবা ৷ দুই মাস গেলো আরেকটা বিল যোগ করে দিয়ে গেলো ৷ বিল এগিয়ে বাবা, চাচা, মামা, এলাকাবাসী যারা পড়েছে তাদের সবাইকে ঠেলে দিলাম ৷ কেউ পরিশোধ করতে রাজী হয় না ৷ আর কি করার কোন রকমে পরিশোধ করে নুরুল কবির স্যার ই ভরসা ৷
.
তখন এক মাসের পত্রিকার টাকায় দুই মাস গরুর দুধ রোজ নিয়ে খাওয়া যেতো ৷ তা ই করলাম ৷
.
বলতে ভুলে গেছি, হকার তার কাঁচা হাতে পেন্সিল দিয়ে স্যার লিখে পত্রিকা কোন গাছের দুই ডালের ফাঁকে রেখে গেলে সেটা আবার সন্ধ্যা বেলায় মালিকের কাছে চলে যেতো,
.
একদিন স্যারের পত্রিকা আসেনি ৷ আমরা সবাই টেনশনে পরে গেলাম ৷ একপ্রকার পত্রিকার এজেন্ট ঘেরাও করা হবে মর্মে টানটান উত্তেজনা ৷ ইতোমধ্যে এলাকার সরব কন্ঠ দাঁড়িয়ে পিছনে হাত সামনে আরেক হাতের তর্জনি উঁচিয়ে এক প্রকার বিদ্রোহী ভাব নিয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছে ৷ জাতি একদিনে কতটুকু পিছিয়ে গেলো সেটার হিসেব কষতে হিসাব বিজ্ঞানের ছাত্রকে দেওয়া হলো ৷
.
ও ভাইরে ভাই ৷ একদিন স্যারের বাসায় চোর ঢুকেছিলো ৷ সব নিয়ে গেলো ৷ কিন্তু ব্যাগ থেকে পত্রিকাটা বাহির করে টেবিলের উপর রেখে দিয়ে গেছে ৷ সকালে উঠে দেখে টেবিলের উপ্রে পত্রিকাটা ছাড়া ঘরে আর কিছু নাই ৷
.
আমি তো জানতাম সমকাল বলেন কিংবা নয়াদিগন্ত এগুলো মনে হয় স্যারের পত্রিকা ৷ সম্পাদকমন্ডলি দিয়ে উনি এগুলো পরিচালনা করেন ৷
.
কোন এক গতকালে চবিতে মারামারি হয়েছে, স্যারের পত্রিকায় পরের দিন আসেনি বলে স্যারের প্রতি খুব ক্ষোভ রাগ হয়েছিলো ৷
.
স্যার বাসা চেঞ্জ করলো ৷ বহুত বছর পর একদিন স্যারের সাথে দেখা ৷ বগল দাবা করে পত্রিকা নিয়ে কোথাও যাচ্ছেন ৷ সেদিন স্যার থেকে পত্রিকা নিয়ে বিনোদন পাতায় গিয়ে দেখি আবারও জয়া আহসান ৷ কিছু বুঝে উঠার আগেই স্যার বললো, পত্রিকার কিন্তু ষোল পাতার ৷
.
এরপরে যতবার স্যারকে দেখেছি হাতে ব্যাগে পত্রিকা থাকবেই ৷ একদিন ছোট বাসে দেখা ৷ ঠাসাঠাসি করে উঠে সেখানে এককোণে গুটিসুটি মেরে বসে পত্রিকা পড়তেছেন ৷
.
শেষ পাতা দেখা যাচ্ছে ৷ ৪৫ তম বয়সে জয়া ৷ ভক্তদের অভিনন্দন ৷ ছবি চোরাদের কেনো অভিনন্দন দিলেন না ভাবতে ভাবতে চোখ মেলে দেখি স্যার নেই ৷
.
একদিন, বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন জয়া আহসান এই কথাটা শুনার পর বাবা বললো, এটা আমরাও শুনতাম!
.
সত্যি বলতে, জয়া আহসান জানিয়েছেন তার বয়স মাত্র ৩৭ বছর, আমি ভাবছিলাম ১৭! আমার বাবা ভাবে ৪৭ আমার দাদা ভাবতো ৫৭!
.
বাংলার শিক্ষক ছিলেন স্যার, একদিন বললাম, 'জয়া আহসান হলো কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত প্রবন্ধ যৌবনের গানের সারমর্ম!' সেদিন কান যে মলে দিয়েছিলো এখনো ব্যাথা করছে ৷
.
করোনার কারণে যখন এসব মানুষদের হাতে পত্রিকা পৌঁছেনি জানিনা তাদের মনের অবস্থা কি হয়েছিলো ৷ পত্রিকা শিল্প টিকে থাকার পিছনে কারিগর ওরা ৷ অগোচরের পরিবার ৷ ওদের হাতে জরুরী পত্রিকা পৌঁছে দিন ৷ নাহলে দম আটকে মরে যাবে ৷
২| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা পড়া না জানা এক মাস্টার ভাই আছে আমাদের পাড়ায় গ্রামে
৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: বর্তমানে দেশে পত্রিকার অবস্থা ভালো না। খুব করুন অবস্থা তাদের। অবশ্য দুই একটা পত্রিকা ছাড়া করোনার আগেই করুন অবস্থা ছিলো। আর এখন করোনা এসে পত্রিকার অবস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে। প্রায় সব পত্রিকা থেকেই লোকজন ছাটাই হচ্ছে।
৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অনলাইনে পত্রিকা পড়তেও এখন টাকা দিতে হবে !!
দেশ ভালোই এগিয়ে যাচ্ছে !!!
৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মেয়েদের বয়স পত্রিকায় ছাপানো ঠিক না। এটা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতির পরিপন্থি। এই প্রশ্ন সাংবাদিকদের জয়াকে জিজ্ঞাসা করা টাই এক ধরনের ধৃষ্টতা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
তারেক ফাহিম বলেছেন: