নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
দুই মহিলার ঝগড়া শুরু হওয়ার দুই মিনিটের মাথায় দর্শক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে,
.
শুয়ে ছিলাম ৷ 'খানকির ঘরের খানকি' শুনার পর উঠতে গিয়ে দেখি লুঙ্গীর গিট্টু লুজ হয়ে আছে, বিনোদন চলে যাইতেছে সেটা নতুন করে গিট্টু মারার টাইম নাই, হাত দিয়ে পেটের সাথে চেপে ধরে আমিও দৌড়াচ্ছি ৷
.
প্রতিপক্ষের মহিলার মাথা থেকে শাড়ির আঁচল পরে গেছে, সেটা কোমরে বেঁধে নিয়েছে টাইট করে তবে সামান্য পেটিকোট দেখা যাচ্ছে ৷ এখন তাকে প্রকৃত খেলোয়ার মনে হচ্ছে ৷
.
অপরপক্ষও কম যায় না, সে লম্বা লিকলিকে হওয়ায় পেঙ্গুইনের মতো লাফাচ্ছে ৷ ওর গালিতে আর্ট আছে ৷ চুমুদির ভাই চুমুদি, তোর মতো বেইশ্যা আমারে খাংকি বলোস্!
.
ও কদুর আব্বা ৷ কই তুমি ৷ রাখো তোমার ঘাস কাটা ৷ দৌড়ায় আহো ৷ তোমার বেডীরে হাআআংকি বলছে, রাখি মনুর ভাব ৷ কাছাকাছি চলে আসছে হেতী...!
.
মোবাইলটা ব্লাউজের ভিতরে গুঁজে রেখে, ঘরের ভিতরে ঢুকে আর আসে ৷ পরে অাবিষ্কার করলাম চুলায় তরকারি দিয়ে ঝগড়া করতে নামছে ৷ একবার মশল্লা দিয়ে এসে দুটো গালি দিয়ে আবার গেছে লবণ দিতে, আরেকবার আগুনের তাপ কমিয়ে এসেছে ৷
.
মেয়েটা গালির ফাঁকে মুখে পাউডার মেখে এসে মা সীমানা ক্রস করলে তারে এক প্রকার আড়কোলে করে এসে বাসায় রাখার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে ৷ আর কপালের উপর চলে আসা চুল ঠিক করতেছে বার বার ৷ তাকে হেব্বী লাগছে ৷
.
আমরাও জানি কখন এগিয়ে গিয়ে আগুনে পানি ঢালতে হবে ৷ আপাতত দেখতে থাকি পূর্ণ দৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি, হাংকি পাংকি ৷
.
সোনামনিদের জন্য এগুলো এক প্রকার বালঅ্ শিক্ষা ৷ এগুলো তারা মুখস্ত করে গজলের মতো করে গেয়ে থাকে ৷
.
ইতিমধ্যে কদুর বাপ চলে আসছে ৷ তার মুরোদ জেগে উঠেছে ৷ সে ঘাস কাটার কাচি নিয়ে নেমে পড়েছে কিন্তু সাহস করে নিজের বাউন্ডারি ক্রস করতে পারতেছে না, যখন ই তাকে কেউ পিছন থেকে টেনে ধরলো সে বাউন্ডারি ক্রস করবেই এমন আপ্রাণ গতিতে কসরত করতে থাকলো, এমন সময় চুপিসারে মে বি মেয়েকে বলছে, টাইট করে টেনে ধর্, ছুটে গেলেও বাউন্ডারিতে গিয়ে পরমু ৷
.
জামাইয়ের কাছ থেকে সাহস পেয়ে বউ ঠিকি বাউন্ডারি ক্রস করার এক পর্যায়ে বহুল কাঙ্খিত চুলাচুলি শুরু হয়ে গেছে ৷ হেঁচকা টানের এক পর্যায়ে দুই মহিলা ই মাটিতে পরে গড়াগড়ি খেতে লাগলো এমন সময় আমরাও বুঝেছি আমাদের এগিয়ে যাওয়া এখন সামাজিক দায়িত্ব ৷
.
সবকিছু তো বলা যায় না ৷ ধরে নেন্ ঘন্টাব্যাপী ঝগড়া চলেছে ৷ প্রায় সময় চলে ৷ তারপর শুরু হবে সালিশ নালিশ ৷
.
সালিশে মুরুব্বি মাতব্বররা এসেছে সবাই ৷ সেই মহিলাও যে সকালে শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে নেমেছিলো, এখন ইয়া বড় গোমটা টেনে ঠিক্ দরজার কোণে এসে দাঁড়িয়েছে ৷
.
ঘোমটা আরেকটু টেনে ছোট ছোট আওয়াজে মিন্ মিন্ করে সবাইকে সালাম দিলো, সবাই জোরেশোরে তার জগড়ার মতো করে উত্তর নিলো ৷ তার স্বামী কাচির বদলে লম্বা টর্চ লাইট নিয়ে এসেছে, সালিশ শেষে বাজারে যাবে ৷
.
বিচারে কে জিতলো না জিতলো কিংবা মীমাংসা হলো কি না, সেটা আরেক দিন বলবো, ঘোমটা টানা মহিলাটি আজ সর্দি কাশির উপসর্গ নিয়ে মারা গেলো ৷
.
ভয়ে কেউ এগিয়ে আসছে না ৷ তার মিথর দেহ পরে আছে ৷ এলাকাবাসীও আগের মতো, কখন এগিয়ে আসতে হবে তারাই ভালো জানে ৷
.
পাশের ঘর থেকে ওম্মারে মা! আমার ভাবি, কত ঝগড়া করতাম বলে এগিয়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পরলো ৷ তারপর প্রায় একহাতে লাশের সৎকার করলো ৷ এক পর্যায়ে সবাই এগিয়ে এলো ৷
.
কিন্তু মারা যাওয়া মহিলাটির জন্য প্রতিপক্ষের কান্না যেনো থামছেই না ৷ আমি একটু এগিয়ে গিয়ে তার চোখ পরীক্ষা করলাম, টুপ টুপ করে জল পরছে ৷ এটা কেমনে সম্ভব ৷ কয়েকদিন আগে এরা ঝগড়া করে এক বেহাল দশা করতো,
.
মনে হলো তার লুডু খেলার পার্টনার হারিয়ে গেছে ৷
.
তার কান্নার পাশে দাঁড়িয়ে আমি লিটমাস্ টেস্ট করতেছি, এটা সত্যিকারের কান্না ৷ হৃদয় নিংড়ানো ৷ চোখের জলে শাড়ির আঁচল ভিজে ছোপছোপ হয়ে আছে, সেটা দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে সে আবার কাঁদতে বসেছে ৷
.
একজন খেলার সঙ্গী হারিয়ে যাওয়ার বেদনা কত নির্মম হতে পারে তাকে না দেখলে হয়তো কখনো জানা হতো না ৷
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪০
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সেটাই, এই মেঘ তো এই বৃষ্টি ৷
২| ৩০ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: ঝগড়া করা ভালো নয়। ঝগড়া করে শেষমেশ কিছুই পাওয়া যায় না।
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪১
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: পরে আরো লজ্জিত হতে হয় ৷
৩| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লাস্ট লাইনে এসে সব বলে দিলেন। আমাদের বাঙালিদের বিউটি এটাই- পরস্পরের সাথে খুনাখুনি করি, আবার পড়শির বিপদের নিজেরাই সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ি। রম্য মনে হলেও লেখাটায় গভীর একটা বার্তা আছে।
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: পরের গল্প আরো রোমান্টিক ৷ এই পরিবারের ছেলে ঐ পরিবারের মেয়ের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার করতেছে ৷
৪| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৯
আল-ইকরাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। এটাই বাস্তবতা। মানুষ বড়ই অদ্ভুত। একে অপরের প্রতি এখনই তীব্র ঘৃণা সঞ্চার হয়, আবার একটু পরেই অগনিত মমত্ববোধ তার মধ্যে কাজ করে। এই ভারসাম্যতা নিয়েই ছুটে চলে মানুষের জীবন নামক এক আজব গাড়ী।
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: তবুও জীবন যাচ্ছে চলে জীবনের নিয়মে ৷
৫| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:২১
বুরহানউদ্দীন শামস বলেছেন: গ্রাম্য ঝগড়া শুনতে ভালই লাগে, হাতাহাতি হওয়ার আগ পর্যন্ত..
আমার বাড়ির পাশের একটা পরিবারের সৌভাগ্যে রাতে ঝগড়া শুনে ঘুমাতে যায় আবার ভোরে ঝগড়া শুনে জেগে উঠি...
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: এক সময় প্রচুর ঝগড়া হতো এখন হামলা মামলা ৷
৬| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর গল্পের আড়ালে সুন্দর একটি বার্তা দিয়ে গেলেন। ভাল লেগেছে। + +।
৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৫
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা ৷
৭| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮
শায়মা বলেছেন: দুই শত্রুবাড়ির মেয়ে আর ছেলের পালিয়ে বিয়ে। এমন নিয়েই হয়ত সিনেমা হয় কেয়ামৎ সে কেয়ামৎ তাক.....
৮| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এটাই বাঙ্গালীদের সংস্কৃতি
যার সাথে সারাদিন ঝগড়া বিবাদ
সে দু দন্ড চোখের আড়াল হলেই
তার জন্য বুকের মঝে চিন রিনিয়ে
ওঠে এক অব্যাক্ত যন্ত্রণা। এর নাম
ভালোবাসা।
৯| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:৩৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মননশীল অভিব্যক্তি । পড়ে অভিভূত হলাম
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:৫৯
শায়মা বলেছেন: প্রথমদিকে ঝগড়া পড়ে হাসি পাচ্ছিলো, রাগও হচ্ছিলো। পরে বুঝা গেলো আসলেও তারা যা করে মন থেকেই হয়ত করে আর শিক্ষিত সমাজের মত হয়তো মনে পুষে রাখে না কোনো রাগ......