নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
ছবিতে, আজিজ গাজী রবী
ছোট বেলার অনেক স্মৃতিময় ক্যারেক্টার থাকে তার মধ্যে কখনো ভোলা যাবে না এমন একটি চরিত্রের নাম রবি,
.
চবি শোভাকলোণীতে আমাদের বন্ধু রবি আস্তে কথা বললেও মনে হতো বক্তব্য চলছে ৷
.
তার থেকে সব সময় টাকা থাকতো, এমন কোন ঈদ কোরবান নেই যে সে খেলনার দোকান দিতো না,
.
এমন হয়েছে তাকে ঈদের সেমাই চিনি খাওয়ার জন্য ডাকতেছে সে খেলনা বিক্রী শেষ না হওয়ার কারণে আসতে পারে নি ৷
.
ঈদ গা শেষ হলে পাড়ার রাস্তার মোড়ে বসে যেতো, ছোট বেলায় দেখা সমবয়সীদের মধ্যে সে ই সেরা উদ্যোক্তা,
.
শিশু অবস্থা থেকে সে ছোট খাট এমন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে বিবিএ এমবিএ ৷ আচার, পিস্তল, পুতুল, বেলুন, চিপস থেকে শুরু করে লটারী...!
.
তার লটারীতে সব সময় বলতো ঘড়ি পাবো কিন্তু দিনশেষে কেবলি দুই টাকা দিয়ে এক টাকার চকলেট ই পেতাম ৷
.
একবার আমরা ঘড়ি পাওয়ার আশায় সব লটারী কিনেও সেখানে কোন ঘড়ির দেখা পেলাম না, তার মতে, ছোট্ট টোকেন হয়তো আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে পরে গেছে কোথাও ৷
.
পরের কোরবানে সে দেয়াল ঘড়ি আবারো লটারীতে, কয়েক মাস পর তার বাসায় গিয়ে দেখি সেই ঘড়ি তার ঘরের দেয়ালে ই ঝুলছে ৷
.
ফেসবুকে সে ফ্রেন্ড রিকু পাঠানোর পর বুঝতে পারলাম তার আসল নাম আজিজ গাজী, তার আইডি দেখার পর আমি ফিরে গেলাম সেই বাল্যকালে, যেখানে আমাদের সবার ঈদের বকশীশ তার পকেটে যেতো ৷
.
কখনো তাকে কারো সাথে রাগ করে কথা বলতে দেখিনি ৷ খোঁচা দিলেও হাসতো, মারলেও... মনে কোন ধরণের প্যাঁচ ছিলো না ৷
.
সবার সাথে নিজ থেকে কথা বলতো, যেনো সবাই তার ঘরের মানুষ, আপন ভাই ৷ জীবনের প্রয়োজনে এলাকা থেকে দূরে সরে গেলেও আবার ফিরে আসলে সবার সাথে দেখা করে ফিরতো,
.
তার বিক্রী করা খেলনায় আমাদের শৈশব হয়ে উঠতো রঙ্গীন ৷ আমাদের একটা গ্যাং ছিলো তার খেলনা চুরি করার জন্য ৷
.
তার সজাগ দৃষ্টি থাকতো সব সময় সেই শিশু গ্যাংয়ের উপর, তবুও আমরা সুন্দর করে বসে পাছার নীচ দিয়ে তার খেলনা পাচার করতাম কিন্তু বেঁচা বিক্রী শেষ হলে আবার বন্ধুত্ব ৷
.
সে এখন প্রবাসী, তার প্রেরণায় পরবর্তিতে আমরাও এলাকায় দোকান দিয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে লাগলাম কিন্তু আমাদের শরম করতো, এলাকার ছোট ভাইকে পাটি বিছানো দোকানে বসিয়ে দিয়ে, সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম ৷
.
কিন্তু দিনশেষে আমরা লসে থাকলেও তার ই জয়জয়কার ৷ সে আমাদের ছোট বেলার কোটিপতি, এতো অল্প বয়সে মসজিদে প্লাস্টিকের টুপি দান করে আমাদের চোখে সে হয়ে উঠেছিলো দানবীর ৷
.
সেই টুপি মাথায় দিয়ে নামায পড়ে ভুলে মাথায় করে বাসায় নিয়ে আসলে সে আবার খোঁজ করে মসজিদে দিয়ে আসতো,
.
এগুলো সত্যি তখন বিশাল সামাজিক সম্পত্তি ছিলো ৷ সে ছিলো ব্যতিক্রম ৷ আমরা সবাই শার্ট প্যান্ট পাঞ্জাবী পরিধান করে নামাযে গেলেও আজিজ গাজী চকচকে লুঙ্গী, পাঞ্জাবী, মাথায় লাল ফুলের সাদা পট্টি বেঁধে, কড়া আতর মেখে ঈদ গায়ে যেতো...!
.
ওকে দেখে আমরা মজা পেতাম, টিপ্পুনি কাটতাম, তখন নিজেদের ওর চেয়ে স্মার্ট মনে হলেও এখন স্মৃতির মানসপটে আমাদের চেয়ে ওকেই স্মার্ট মনে হয় ৷ সে ছিলো অন্যরকম ৷ স্রোতের বিপরীত ৷
.
আমাদের সমবয়সীরা বড় হয়ে মনে হয় তাকে খুব বেশী মিস্ করি ৷ এই মানুষগুলোকে কখনো ভোলা যাবে না ৷ আপনি জীবনে অনেক বড় কিছু হলেও দিনশেষে নীড়ে ফিরে রবীদের খোঁজ করার মধ্যে জীবন খুঁজে পাবো ৷
.
ভালো থাকুক আমাদের জীবনের রবীরা, সূর্য হয়ে জ্বলজ্বল করুক ৷
২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২৩
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ভালো থাকুক চিরদিন ৷
২| ২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬
আমি সাজিদ বলেছেন: দারুন লিখেছেন৷ সাবলীল।
২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২৪
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আমার বন্ধু সাজিদ ছিলো, সে ও সাজিদ ৷
৩| ২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার লেখা ।
৪| ২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৫৬
আলোকরশ্মি22 বলেছেন: খুব ভালো লাগলো
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আজিজ গাজী ভালো থাকুক।