নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
আমার দাদী তার দুই নাতনীর জন্য পঁয়ত্রিশটা করে সত্তরটা নকশী কাঁথা সেলাই করে তা নিয়ে নাতনীর মুখ দেখতে গিয়েছিলো,
.
একটা কাঁথা সেলাই করতে দুই থেকে তিনদিন লাগে সুতরাং একশ চল্লিশ দিন টানা উনি নকশী কাঁথার মাঠে ছিলেন,
.
আমার আকীকার কথা মনে নেই তবে এটা মনে আছে আমার নানার স্বপ্ন ছিলো দুই নাতীকে দুটো স্বর্ণের আংটি দিবে তা তিনি শেষ পর্যন্ত টাকা ধার করে বানিয়ে দিয়েছিলেন!
.
আমার যতটুকু মনে পড়ে আমার দাদা নানা সবাই জীবন সংগ্রাম করতেন, দাদাকে বাবা একটা লাল চার্জ লাইটের কথা লিখে কুয়েতে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তাৎকালীন এমন লাইট বিলাসিতা ছিলো কিন্তু দাদা তা পাঠিয়ে ফিরতি চিঠিতে শ্যুটকি মাছ আর বেগুন পাঠাতে বলেছিলেন,
.
কেন জানি মনে হয় হঠাৎ করে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে তা আশি নব্বই দশকে যাদের জন্ম তারা ছাড়া কেউ টের পাইনি!
.
আমাদেরও গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ, ক্ষেত ভরা ধান ছিলো কিন্তু এর বাহিরে কারো তেমন কিছু ছিলো না!
.
জমিদারের হয়তো দুই জোড়া বাটা সু ছিলো নতুবা লেদারের ব্যাগের ভিত্রে সেট করা একটি রেডিও,
.
হঠাৎ করে মানুষের ভোগ ক্ষমতা বেড়ে গেছে সাথে অভাবও, মানুষ অলস হতে শুরু করলো সাথে চৌকসও,
.
আমার এখনো চোখে ভাসে সাহেবদের প্যান্টগুলো বেল্টের চাপে ভাজ হয়ে আছে! শার্ট বাতাসে ওড়নার মতো দোল খাচ্ছে!
.
আম জাম বট গাছের আড়ালে কত সাহেবদের প্রাকৃতিক টানে ছুটে যেতে দেখেছি! এই তো সেদিন,
.
আফিসের গান শুনার জন্য এই আমরা দশ টাকা দিয়ে ক্যাসেট ভাড়া করে আনতাম,
.
ফুজি ফিল্মের রিলে ছত্রিশটা ছবি উঠানো যেতো, বিশটা নিজেরা তুলে বাকী ষোলটা বিক্রী করে দিতাম!
.
চোর বলে কেউ ভুলে ডাক দিলে কয়েকশো মানুষ ধর্ ধর্ করে তেড়ে যেতো!
.
তেমন কিছু ছিলো না আমাদের ছোট বেলায় কিন্তু যা সবার ছিলো তা হলো এক বুক হৃদয়!
.
আমরা যারা চবিতে থাকতাম তারা ভুলেও জোবরা এলাকার কোন মানুষের উপ্রে হাত তুলতাম না কারণ তাদের সকালে গালি দিলে বিকেলে কয়কশো মানুষ লাঠি সোঠা নিয়ে তেড়ে আসতো,
.
যেদিন নামাজ পড়তাম না লুকিয়ে থাকতাম, না পড়ে যাবি কই! দরজার চৌকাঠ নাড়িয়ে ফেলতো সালাত! সালাত! করে,
.
একবার চোখ উঠছিলো, এতো মানুষ দেখতে আসছিলো যে পরের দিনে এলাকায় লাল চোখের মেলা বসে গিয়েছিলো,
.
কেউ ভুলে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলে মনে হতো পুরো এলাকার মাথা ভনভন করে দুলছে!
.
একবার এলাকায় কে জেনো এক্সিডেক্ট করেছিলো পুরো রাস্তায় অভ্যর্থনা মিছিল, রাজার মতো সে এলাকায় ঢুকছে, সবার মুখে হায়! হাসান! হায়! হাসান!
.
তখনকার কইজ্জাও দেখার মতো ছিলো,
.
গুণে গুণে বলতে পারতাম পঞ্চাশ ঘরে দুইশ বায়ান্ন জন মেম্বার তিনজন অতিথি আছে,
.
কারো মামা হলে সে এলাকার মামা, দাদা হলে এলাকার দাদা, জামাই হলে তো এলাকার জামাই!
.
অমুক বাড়ি মেহমান সবার কাছে তার কি সম্মান!!!
.
মুরুব্বিদের সালাম দিতে দিতে কাহিল হইয়া যাইতাম! একবার কোন এক মুরুব্বিকে ভুলে সালাম না দিয়ে সামনে দিয়ে চলে গেছিলাম পরে আবার বাসায় কি রেখে আসছি ভান করে ফিরতি পথে সালাম দিয়ে আসলাম,
.
সাইকেল থেকে কতবার মুরুব্বিদের দেখে ছোটদের নেমে যেতে দেখেছি!
.
সেই যুগে টাকা পয়সা ট্যাব টিভি ফ্যান ফ্রিজ তেমন কিছু ছিলো না! খোদার কসম!
.
অভাব ছিলো টের পাইনি কখনো! এরপরেও সুখ ছিলো! বড্ড সুখ!
.
আড্ডা দিতে ইচ্ছে মসজিদের সামনে গিয়ে বসতাম ওখানে সপ সময় দুই চারজন আড্ডা দেওয়ার জন্য স্ট্যান্ড বাই থাকতো!
.
ফেলে আসা জীবন! রেজাল্ট দিলে এলাকা খবর হয়ে যেতো, মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি চাই, না খাওয়ালে রক্ষা নাই,
.
এতো অভাবেও কোন খাবারের আয়োজন করলে পঞ্চাশ পরিবারে একটু একটু করে যেতো!
.
ভাইরে, আজ সব আছে! ঘরে ঘরে সব কিছু, নাই বলতে কেবলি আগের মতো অভাব নেই তবুও যেনো কোন কিছু আগের মতো নেই!
.
এমন অবস্থা, এলাকাতে কে আছে কে নেই সেই খবর এখন কারো কাছে নেই! একদিন এখানে সবাই আমাকে চিনতো ইদানিং আমি কাউকে চিনছি না! তারাও আমাকে!
.
সবকিছু কেমন জেনো হিসাবের ভিত্রে চলে গেছে! একান্ত না পারলে 'শালা'মলাইকুম' বলে গালি দেয় না শান্তি বর্ষিত করে বুঝিনা!
.
আমি আবার ফিরে যেতে চাই, যেখানে এই চোর বললে ধর্ ধর্ করে একশ মানুষ দৌড়াচ্ছে এমন এক সমাজে....!
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৬
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সালাম দিতে হবে সুন্দর উচ্চারনে সুন্দর ভঙ্গিতে।
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৬
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: আব্দুর রব শরীফ ভাই... ফেসবুকে রেগুলার এক্টিভ। দুর্ভাগ্য আমাদের ওনাকে সামুতে পাওয়া যায় না।
লেখা সুন্দর।
৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: সেই সমাজ আর খুজে পাবেন না। সব কিছু বদলে যায়। এটাই নিয়ম।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫
অনুভব সাহা বলেছেন: আপনি কি এখনো প্রতিউত্তর করতে পারেন না?
প্রথম পেজে ৬টা পোস্ট আপনার। একটু রয়ে সয়ে পোস্ট করলে ভালো হয় না?