নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ল্যাতিন অ্যামেরিকার বিখ্যাততম কবি পাবলো নেরুদার ১১৮ তম জন্মদিনে, তার দুটো অনুবাদ কবিতা

১২ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:০০



(আজ কবি পাবলো নেরুদার ১১৮তম জন্মদিন। তার স্মরণে ওনার দুটো কবিতা, আমার অনুবাদে। পেঙ্গুইন ক্লাসিকসের করা ইংরেজি অনুবাদ হতে বাংলা অনুবাদ। কবিতাদুটো ২০১৪ সালে অনুবাদ করা।)
.
কবিতা ১ঃ
নক্ষত্র পতনের রাত ( To Night I can write/puedo escribir los versos...)
.
আজরাতে, আমি লিখতে পারি তুমুল বেদনাবিধুর পংতিমালা।
.
লিখতে পারি, যেমন ধরো, ‘বিস্ফোরিত রাত্রি যখন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ছিটকে ছড়িয়ে পড়লো,
নীলাভ তারাগুলো তখন দূরে দাঁড়িয়ে কাঁপছিল তিরতির করে’।
.
নিশুতি রাতের বাতাস আকাশ ঘিরে পাক খায় আর গান গায়।
.
আজ রাতে, আমি লিখতে পারি নীল নীল দুঃখের পংতিমালা।
তাকে ভালবাসতাম আমি, সেও বাসত ভালো, আমায়, হয়তোবা, কখনো।
.
গহীন রাতের মত আমি আঁকড়ে ধরতাম তার পেলব কোমল হাত
প্রশস্ত আকাশকে সাক্ষী রেখে চুমোয় চুমোয় ভরিয়ে দিতাম তার মুখ।
.
সে ভালবাসত আমায়, আমিও বাসতাম ভালো, তাকে, হয়তোবা, কখনো
সৃষ্টির আদিকাল থেকে, কেউ কি তার সমুদ্রের মত গভীর দৃষ্টিকে উপেক্ষা করতে পেরেছে?
.
আজ রাতে, আমি লিখতে পারি হৃদয় নিংড়ানো কষ্টের পংতিমালা।
এই ভেবে, যে সে আর আমার পাশে নেই। এই ভেবে, যে আমি তাকে হারিয়েছি।
.
নিস্তব্ধ রাতের প্রগাঢ় হুংকার, তার অনুপস্থিতিতে, বুকে চেপে বসেছে পাথরের মত।
হৃদয়ে শিশিরের মত টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে এক একটি দুঃখস্নাত শব্দ।
.
আমার প্রেমে সে শক্তি ছিল না যে তাকে ধরে রাখে
চোখের সামনে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে এই রাত, অথচ সে আমার পাশে নেই।
.
এইতো, দূরে কেউ গান গাইছে, দূরে, বহুদূরে।
আর আমার আত্মা ধুঁকে মরছে, কারণ সে আমার পাশে নেই।
.
আমার দৃষ্টি তাকে উন্মত্তের মত খোঁজে দশদিকে,
অথচ আমার হৃদয় বেদনার রঙ্গে নীল, কারণ সে আমার পাশে নেই।
.
সেই রাতগুলির মত আজকের এ রাতও আকাশ নক্ষত্র ভরা
কিন্তু, আমরা, আগের মত নেই আর।
.
এখন আর তাকে ভালোবাসিনা, নিশ্চিত আমি, কিন্তু কি তীব্রভাবেই না ভালবাসতাম তাকে!
আমার কান্নাজড়িত কণ্ঠ, দখনে বাতাসে ভেসে যদি তার কাছে পৌঁছুতো!
.
আরেকজনার। সে এখন আরেকজনার। উষ্ণ চুম্বনের রাত্রিগুলোর মতই সে অতীত এখন-
তার কিন্নরী কণ্ঠ, সোনারঙ্গা শরীর, তার অতল গভীর দু’চোখ।
.
আমি তাকে বাসি না আর ভালো- নিশ্চিত জানি, নাকি বাসি এখনও?
ভালোবাসা যদি ক্ষণকালের হয়, ভুলে যাওয়াটা এত দীর্ঘ কেন?
.
কারণ, এই রাতের মতই আমি জড়িয়ে ছিলাম তার হাত
তাকে হারিয়ে, আমার আত্মা আজ মৃতপ্রায়।
.
যদিও এটাই শেষ যন্ত্রণা, যা সে আমায় দিয়ে যাচ্ছে,
এবং এই শেষ পংতি, যা আমি তাকে নিয়ে রচে চলেছি।
.
কবিতা ২ঃ
স্মৃতির খাতা অথবা কবিতার পাতা (Memories)
.

সবকিছু টুকে রাখি মাথার খাতায়,
ঘাসের ডগায় আলোর নাচন, দরকারি-বেদরকারি ঘটন–অঘটন,
রাস্তার দু’পাশ, বাড়িঘর – যেখানে যেমন,
লাফ দিয়ে টানটান শুয়ে পড়া সর্পিল রেলপথ থেকে নিয়ে
কষ্টের কারুকার্যমণ্ডিত মুখ,
বেদনার বেদনভরা মুখোশ –
সবকিছু!
.
যদি বাদ পড়ে একটি লাল গোলাপের ঝাড়, কবিতায়,
যদি নিশির মতন নিকষ কিছুকে কাব্যিকতায়-
গুলিয়ে ফেলি, বলি খরগোসের মতন সাদা!
যদি বর্ণনের সময় বাদ পড়ে যায় একটি দেয়ালও,
কেঁচে গণ্ডূষে শুরু করি সবকিছু পুনরায়-
জলকণা, সোঁদা গন্ধওয়ালা মাটি, মাটির বুকে ঘাস, পাতা,
রমণী, কেশ, অথবা একেকটি ইট- দেয়ালের বুকে গাঁথা,
অথবা আমায় বিদ্ধ করেছিল যে ফুলের কাঁটা,
অথবা খুব গতিময় কিছু!
.
সৌখিন লেবাস চাপিয়ে
ধান খেয়ে গান গেয়ে পৃথিবীতে চড়ে ফেরা দু’ঠেঙে প্রাণীসকল-
সদয় হও কবির প্রতি!
(কেননা কবির কবিতা তোমার গল্পও বলে)
.
এই মনে রাখা-রাখির ব্যাপারে কি অপটুই না ছিলাম আমি!
দিনরাত্রি ছেনেছুনে দিনমান,
হাতে থাকতো কেবল ধোঁয়াশার তেলেভাজা নুড়িপাথর।
অথবা একদমই অপ্রয়োজনীয় কিছু খণ্ডচিত্র।
যেমন ধরো-
কুয়াশায় আচ্ছন্ন কিছু সুঘ্রাণ,
অথবা সুঘ্রাণ মাখা কুয়াশা!
কিংবা কোন মানবীর দেহ,
যার পেলব ত্বক আমার অধরস্পর্শে
কেঁপে কেঁপে উঠেছিল ঘুমকুমারীর মত-
এসব!
.
কখন? কোথায়? কিভাবে?
দিনক্ষণের ঠিকুজী কুলুজী জানতে চেয়ে বিব্রত কোরোনাকো বাপু!
হয়তো এমন কোন পথের কথা বলবো- যার কোন পথিক নেই,
হয়তো বলবো এমন কোন দেশের কথা- যাতে কেউ বাস করেনি কখনো,
হয়তো এমন কিছু সত্য বলবো- যা তোমাদের অভিধানে অসত্য নয়, বরং মিথ্যা!
তোমাদের ঠিকবেঠিকের বেরসিক দাঁড়িপাল্লার প্রেষণে
আমার কবিতার খাতায় ভোরের ছবি আঁকার সুযোগ হয় নি কোনদিন।
এখানে কেবল রাতের রাজত্ব,
যেখানে আমার স্বপ্নেরা
জোনাকের মত ওড়ে,
আর আঁধারের বুকে আলো দেয়!

ছবিসুত্রঃ [link|https://l.facebook.com/l.php?u=https://mymodernmet.com/george-digalakis-surreal-nature-photography/?fbclid=IwAR08LDk8PC0CE6F0KW1anGo2tVK6UuOliGHTYeFXJ1wGPZbaoK1lcWADG3c&h=AT00gerBFUVV9YfbQfY-gmVUtb1OXooCmhksL9YOQ9jvfN4uMZrDYgwnjKMF-kssC9YxIcV0g0UB6hW1_5i-oXzf4DZK8rAB__suCjAawRl-PtHPGnOf-_cIo6BBGtw2SBY&__tn__=R]-R&c[0]=AT3V985hc8Kfcy9Q_hswZQ6sgbZ8sgadjN6jjbg6x7AUNEzQGHM696KWqIciqRQ45ukpcGmTzSwWvX9hsRpyEaAhZ0RBygxgBMRDB2Pr0et4HKRdtbt1DXCIK9CsZ4jdHjZDq4F8rKsPXflV1nryBdNsCp0jjofIOGk8C4h-bhlUp-CWU58|view this link]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অনুবাদ বেশ ভালো হয়েছে!
ধন্যবাদ নেরুদা'কে অনুবাদ
করার জন্য।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ নূরু ভাই। খোদা আপনাকে তার রহমতের ছায়ায় মুড়ে নিন ওপারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.