নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

শনিবারের চিঠিঃ পর্ব পাঁচ (ধারাবাহিক সাপ্তাহিক কলাম)

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৯



.
১।
.
"লেখালিখিতে কি কোন আনন্দ আছে? আমি জানি না। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত যে, লেখালিখির জন্য কঠিন বাধ্যবাধকতা আছে, কিন্তু এই বাধ্যবাধকতা কোথা থেকে আসে, তাও আমার জানা নেই ... নানাভাবে আপনি এ ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠতে পারেন। যেমন, এটা সত্য যে - দিনের নির্ধারিত ক' পাতা লিখে উঠতে না পারলে আপনি যারপরনাই উদ্বিগ্ন হবেন। এবং লিখতে পারলে একধরনের দায়মুক্তি ঘটেছে বলে মনে করবেন, এবং তা হয়ে উঠবে দিনের সুখের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ... কিন্তু এই পদক্ষেপ খুবই নিষ্ফলা, অবাস্তব, আত্মরতিমূলক, আর তা মানুষকে নিঃসঙ্গ করে তোলে। প্রতিদিন সকালে টেবিলে বসে নির্দিষ্ট সংখ্যক সাদা কাগজের ওপর খসখস করে কলম টানার কি অর্থ আছে? দিনের বাকি সময়ের ওপর এর কোন শুভ প্রতিক্রিয়া আছে কি?"
(ক্লদ বোঁ ফো'র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মিশেল ফুঁকো)
.
২।
.
"...আসলে আমরা খাব, পরব, বেঁচে থাকবো, এই রকম কোথা ছিল - আমরা যে বিশ্বের আদি কারন অনুসন্ধান করি, ইচ্ছেপূর্বক খুব শক্ত একটা ছন্দ বানিয়ে তারই মধ্যে খুব শক্ত একটা ভাব ব্যক্ত করবার প্রয়াস করি, আবার তার মধ্যে পদে পদে মিল থাকা চাই, আপাদমস্তক ঋণে নিমগ্ন হয়েও মাসে মাসে ঘরের কড়ি খরচ করে সাধনা বের কড়ি, এর কি আবশ্যক ছিল? ওদিকে নারায়ণ সিং দেখো ঘি দিয়ে আটা দিয়ে বেশ মোটামোটা রুটি বানিয়ে তার সঙ্গে দধি সংযোগ করে আনন্দমনে ভোজন - পূর্বক দু - এক ছিলিম তামাক টেনে দুপুর বেলাটা কেমন স্বচ্ছন্দে নিদ্রা দিচ্ছে এবং সকালে বিকালে সামান্য দু - চারটে কাজ করে রাত্রে অকাতরে বিশ্রাম লাভ করছে। জীবনটা যে ব্যারথ হল, বিফল হল, এমন কখনো তার স্বপ্নেও মনে হয় না - পৃথিবীর যে যথেষ্ট দ্রুত বেগে উন্নতি হচ্ছে না সে জন্যে সে নিজেকে কখনো দায়িক করে না। জীবনের সফলতা কথাটার কোন মানে নেই - প্রকৃতির একমাত্র আদেশ হচ্ছে 'বেঁচে থাকো'। নারায়ণ সিং সেই আদেশটির প্রতি লক্ষ রেখেই নিশ্চিন্ত আছে। আর যে হতভাগার বক্ষের মধ্যে মন - নামক একটা প্রাণী গর্ত খুঁড়ে বাসা করেছে তার আর বিশ্রাম নেই, কর্তব্যের শেষ নেই, মনের সন্তোষ নেই; তার পক্ষে কিছুই যথেষ্ট নয়, তার চতুর্দিকবর্তী অবস্থার সঙ্গে সমস্ত সামঞ্জস্য নষ্ট হয়ে গেছে..."
.
(রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্রাবলীর ৯৯ নং চিঠি। ১৮৯৩)
.
৩।
.
দেখা যায়, নিজেদের সৃজনশীলতার পীড়ায় বড় আক্রান্ত ছিলেন, প্রাচ্য - পাশ্চাত্যের দুই মহারথী; রবীন্দ্রনাথ, আর মিশেল ফুঁকো। মুরাকামির আত্মজৈবনিক "হোয়াট আই টক অ্যাবাউট, হোয়েন আই টক অ্যাবাউট রানিং" - পড়লে দেখবেন, মুরাকামি আরও নিস্পৃহ ভাষায় বলছেন, তিনি লেখা শুরু করেন, কারন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানে যে সবকিছু নতুন করে গড়ে তুলবার প্রয়াসে অমানবিক পরিশ্রম, যার সূত্রে জাপান আজ সেন্ট পারসেন্ট কর্পোরেট একটা দেশ, সেই কর্পোরেট লাইফস্টাইল থেকে পালানোর জন্য। প্রথম উপন্যাসটি বের হল, সমালোচকদের প্রশংসা কুড়োলো, তিনি তার জ্যাজ মিউজিক বার বিক্রি করে দিয়ে শুরু করলেন পুরোদমে লেখা। লেখালিখির সঙ্গে শরীর সুস্থ রাখবার জন্যে শুরু করলেন ম্যারাথন দৌড়। সব মিলিয়ে তিনি ইতিহাসের সেরা রানিং নভেলিস্ট, খুব সম্ভবত।
.
৪।
.
এ বছরের জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আমি লিখবার জন্য মুডের ধরনা দেয়া বাদ দিয়েছি। অর্থাৎ, মুডের অপেক্ষায় না থেকে প্রতিদিনই লিখছি, খুব রেয়ার কিছু কেইস বাদ দিয়ে, আলহামদুলিল্লাহ। প্রথম তিনমাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি লিখেছি বাদ আসর থেকে এশার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ, বিকেল থেকে নিয়ে সন্ধ্যা, এবং রাতের প্রথম অংশ। আমার প্রকাশিতব্য উপন্যাস শহরনামার চূড়ান্ত ভার্শন প্রস্তুত করেছি এই শিডিউলে। তারপর, অক্টোবর থেকে লিখছি ফজরের পর আর না ঘুমিয়ে। কারন, খেয়াল করেছি, যেদিন কোন মেহমান আসেন, বা যেদিন আমার কোথাও দাওয়াত থাকে, সেদিন আর বিকেল - সন্ধ্যায় লিখতে বসা হয় না। কাজেই, এমন একটা সময়ে লেখার শিডিউলকে ফিক্স করা দরকার ছিল, যখন লেখা মিস যাওয়ার সুযোগ নেই। একমাত্র কাকডাকা ভোর ছাড়া সে সুযোগ হয় না আর কখনো।
.
লেখা, আমার জন্য ধ্যানমগ্ন এক প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন যাবত আগে কাগজে কলমে লিখে তারপর ল্যাপটপে টাইপ করতাম। মনের আবেগ অনুভূতি হাতের কলম হয়ে গড়িয়ে পড়তো লেখার খাতায়। সেখান থেকে সরাসরি ল্যাপটপে শিফট করতে একটু সময় লেগেছে, কিন্তু এখন এভাবেই আমি হ্যাপি। যদিও, গল্প যখন লিখি, তখন এখনও আগে কাগজে কলমে লিখে তারপর টাইপ করি।
.
যাই হোক, যা বলছিলাম, যখন লিখি, তখন আমি এক ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। যেমন, আজ আমার পাঁচ চ্যাপ্টারের নভেলা সরীসৃপতন্ত্রের চতুর্থ চ্যাপ্টারের মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে থামলাম। আমার নভেলার মুখ্যচরিত্র মোকাম মাহামুদ এখন পল্টনের একটা দোকানে শাটারের পেছনে আশ্রয় নিয়েছে। এরশাদশাহীর শেষ দিনগুলোর ঘটনা চিত্রায়িত করছি। পুলিশ ধামাধাম লাথি দিচ্ছে দোকানের শাটারে, সরকার বিরোধী মিছিল করা দুষ্কৃতিকারীর খোঁজে। মধ্যবিত্ত, ভীরু মোকামের অস্তিত্ব সংকটটুকু অনুভব করবার মতো একাগ্রতা যে মুহূর্তে হারিয়ে ফেলেছি আজকের জন্য, টের পাওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই আজকের মতো লেখা থামিয়ে দিলাম। তারমধ্যে প্রায় সাতশো শব্দ লেখা হয়ে গেছে। এখন লিখছি শনিবারের নিয়মিত এই কলাম।
.
যা হোক, লেখালিখির ব্যাপারটা আমার জন্যে পেছনের ডটগুলো কানেক্ট করবার মতো একটা বিষয়। জীবনের নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকের যে আমি বা আপনি, চিন্তা করে দেখুন, আমরা কিন্তু বিচ্ছিন্ন কোন সত্ত্বা নই। প্রতিনিয়ত অনেকগুলো ঘটনার যোগে সংযোগে আজকের আমি বা আপনি। আমার জীবনের সেই ডটগুলোকে খুঁজে পেতে যত্ন করে রাখার জন্য আমি লিখি।
.
একটা উদাহরন দিই। আমার রিকশা যখনই টিটিপাড়া পার করে মানিকনগর বিশ্বরোড দিয়ে চলে, তখন খুব কশরত করলে একটা মসজিদের মিনার দেখা যায়, গোপীবাগ রেলগেটের পাশের। যতবার আমার রিকশা বিশ্বরোডের ওপর দিয়ে যায়, ততবার আমি লাফঝাঁপ দিয়ে ঐ মসজিদের মিনারটা দেখার চেষ্টা করি। আমার সঙ্গে রিকশায় যে থাকে, তাকে কখনো আমি বোঝাতে পারি না, এই রাস্তা দিয়ে পার হবার সময় এই নির্দিষ্ট মসজিদের মিনারটা দেখা এতো গুরুত্বপূর্ণ কেন আমার জন্য।
.
আমরা যখন ২০১৭ - ১৮ সালে গোপীবাগে ভূতের মতো অন্ধকার, আলো আসে না, দিনের বেলাতেও লাইট জ্বালিয়ে রাখা লাগে, এমন এক বাড়িতে ভাড়া থাকতাম, আমার বরাদ্দ রুমের জানালা দিয়ে তাকালে অদূরে কেবল এই মসজিদের মিনারটাই দেখা যেত, খুব সরু একটা এঙ্গেল থেকে। আমার আকাশ বিলাস ছিল ঐ সরু দৃষ্টিপাতের জায়গাটুকুই।
.
আজ যখন আমি মুক্ত একটা পরিবেশে বিচরন করি, যখন আমার খাটে শুয়ে আমি পূর্ণিমার জোছনা, এবং সূর্যোদয় দেখতে পারি, দেখতে পারি ঝুম বরষা, এবং কালবোশেখীর তাণ্ডব, আমি ভুলতে পারি না সে সাইনটাকে, যা আমার দেশলাইয়ের বাক্সের মতো অন্ধকার ভাড়া ফ্ল্যাটে ছিল মুক্তির একমাত্র চিহ্ন। যা আমাকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দিত, নিজের এমন একটা ভবিষ্যতের জন্য পরিশ্রম করতে হবে, যাতে আমি আরও বৃহৎ পরিসরে তাকাতে পারি আকাশের দিকে।
.
এই মসজিদের মিনার, আমার জীবনের একটা ডট। এরকম আরও অসংখ্য, অগনিত ডটকে রেজিস্ত্রার করে রাখবার জন্য আমার লেখা।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: লেখালেখিতে আনন্দ আছে দায়মুক্তিও আছে, হতাশা আছে, বেদনা আছে, সুখ-দুঃখ অনেক অনেক কিছু মিলে মিশে থাকে।
লেখালেখিতে টাইম ফিক্সট নাই যখন মনে যেটা আসে লিখে ফেলি।++++++

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই। অনেকদিন পর। যাহোক, লেখালিখি বলতে আমি খুচরো ব্লগের পোস্ট মিন করি নি এখানে। রবীন্দ্রনাথ, ফুঁকো, বা মুরাকামির ষ্ট্যাণ্ডার্ডকে ষ্ট্যাণ্ডার্ড ধরে বলেছি।

২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার আত্মকথা ও অন্যান্য রেফারেন্স। 'শহরনামা'-র শহর কেবল ঢাকা শহর না কি এর বাইরেও বিস্তৃত?

লেখালেখি যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ। এই দিক বিবেচনায় রবীন্দ্রনাথের মতো লেখকদের লেখার পরিমাণ বিস্ময়কর।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:১০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শুকরিয়া। আমার শহরনামার প্লট মূলত ৯০ - ২০১৮'র ঢাকা। ঢাকার বাহির হতেও মানুষের এ শহরে এসে স্যাটল করবার গল্প ব্যাকড্রপে আছে। ওটা মূল থিম নয়। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টকর্মের দিকে আমিও বিস্ময় নিয়ে তাকাই। তবে যুগে যুগে সৃষ্টকর্মের বড়ত্ব, বা ব্যাপকতার মাপকাঠী বদলায়। রবীন্দ্রনাথ যেমন মহাকাব্য রচনাকে মহৎ সাহিত্যসৃষ্টির মাপকাঠী হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন না, একইভাবে আমরা আমাদের সময়ে রবীন্দ্রনাথের মত এমন বহুমুখী প্রতিভাকে আর কাম্য মাপকাঠী হিসেবে বিবেচনা করি না, সৃজনশীলতার প্রেক্ষিতে। অর্থাৎ, আশা করি না একজন লেখক একই সঙ্গে অসাধারণ কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক ও গীতিকার হবেন। আমরা সেলিব্রেট করি ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার, ফিল্মমেকারদের মহত্ত্ব, ভিন্নভিন্ন ভাবে।

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫৭

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: জনাবের লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত না হয়ে পাড়লাম না। সেই কোন আমলে (২০১৭/১৮) ব্লগে শেষ লিখাটা লিখছি, এরপর একদম বিচ্ছিন্ন। বেকার জীবনের চিপায় পড়ে আশপাশের কর্পোরেটদের বিষদংশনে যেভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম, তাতে ভাবনা ছিল কিভাবে কিছুতে নিযুক্ত হওয়া যায় ! দেখি ব্লগে আবার লেখালেখি শুরু করা যায় কিনা।

আপনার লেখায় হাত রয়েছে এবং আপনি তাতে শ্রম দিচ্ছেন। এ দুটি বিষয় যদি একটানা চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে " কর্পোরেট লেখক" :-B বনে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। লেখালেখি থেকে প্রথম প্রথম কোনভাবেই অর্থ উৎপাদনের সম্ভাবনা না থাকায়, অধিকাংশ "হবু সম্ভাবনাময় লেখক" হতাশাগ্রস্থ হয়ে তাল হারিয়ে বিষমভাবে আছাড় খেয়ে যান্ত্রিক জীবনের বাস্তবতায় নিজেকে বিসর্জন করে। এই হতাশাকে জয় করাই লেখকের মূল চ্যালেঞ্জ। দেখি আপনি চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন কিনা। (তাই বলে এটা ভাবার কারণ নেই যে নোবেল পাবার পূর্বে সমস্ত সময় বেকার হয়ে কাটিয়ে দিতে হবে।)

আপনার বয়সটা কত জানতে পারি কি ?

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। যদি আমার লেখা আপনাকে পুনরায় লেখায় ফিরতে আগ্রহী করে, খুশী হব।

যা হোক, একটানা যারা লেখে, তাদের প্রলিফিক রাইটার বলা বাঞ্ছনীয়। কর্পোরেট লেখক, আমার মতে, তাদের বলা চলে, যারা মোটিভেশনাল বইপত্র লেখেন, অথবা তারা, যারা প্রকাশকের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে যা চাওয়া হয় তাই লেখেন। সে অর্থে আমি কর্পোরেট লেখক নই। আমার প্রথম বই বের হয়েছে ২০১৪ সালে। সে থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছয়। রিপ্রিন্ট একটি। আমাকে শুরু থেকে কখনো সায়েন্স ফিকশান, কখনো ছোটদের লেখা, কখনো বিশেষ বিশেষ বই অনুবাদ করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমি তার একটা অনুরোধও রাখি নি। নিজের মন যে দিকে টেনেছে সেদিকেই কলম ছুটিয়েছি।

লেখালিখি, বা অন্য যেকোনো সৃজনশীল কাজে আপনি সিরিয়াস, তার একটা প্রমাণ হল, আপনি নিজের ক্যারিয়ারকে উক্ত সৃজনশীল কাজকে কেন্দ্র করে সাজাবেন। আমিও সো ফার সেই চেষ্টাই করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা আমাকে আর্থিকভাবে নির্ভার করেছে আলহামদুলিল্লাহ। কাজেই, লিখে কিছু অর্থকড়ির প্রাপ্তি আকাঙ্খিত হলেও, যদি লেখার মাধ্যমে অর্থ - যশ নাও আসে, তবুও সাহিত্যচর্চা ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি।

মুরাকামি যে বয়সে নিজের জ্যাজ বার বিক্রি করে দিয়ে তার দ্বিতীয় উপন্যাস লেখায় মনোনিবেশ করেছিলেন, আমার ঠিক সেই বয়স, এখন।

শুভকামনা।

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৩৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বর্তমানে সব মিলিয়ে আপনি ভালো আছেন সেটাই বড় কথা।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমি ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। ভালো থাকা ব্যাপারটা আপেক্ষিক, যদিও। আরনেস্ট হেমিংওয়ে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরও আত্মহত্যা করেছিলেন। পার্থিব কোন অভাবে ছিল না তার। কেন? সে উত্তর আপনার আমার কাছে নেই।

৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আগের পর্বগুলো থেকে এ লেখাটাকে একটু ব্যতিক্রমী মনে হলেও, আমি এক কথায় বলবো চমৎকার!
উদ্ধৃতিগুলোও চমৎকার; পাঠকের ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। মিশেল ফুঁকো কর্তৃক ক্লদ বোঁ ফো'র সাক্ষাৎকার, রবীন্দ্রনাথের চ্ছিন্নপত্রাবলীর ৯৯ নং চিঠি, মুরাকামি'র ব্যবসায়ী থেকে 'রানিং নভেলিস্ট' হিসেবে রূপান্তরের পটভূমি, আর সর্বোপরি আপনার সেই গোপীবাগের অন্ধকারাচ্ছন্ন বাসা থেকে জানালার এক চিলতে ফাঁক দিয়ে মসজিদের মিনার দেখার স্মৃতি এবং আপনার জীবনে সে স্মৃতির প্রভাব, ইত্যাদি পাঠ করার পর পাঠক সমৃদ্ধ হবে, তারাও তাদের আপন জীবনের বিচ্ছিন্ন 'ডট'গুলোকে সংযোজন করে একটা সুখপাঠ্য স্মৃতিকথা লিখতে উৎসাহিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

শিরোনামটাতে বোধহয় একটু সংশোধনী'র প্রয়োজন রয়েছে। এ পোস্টটা "পর্ব পাঁচ" না হয়ে "পর্ব ছয়" হবে, কারণ এর আগের পর্বটা 'পর্ব পাঁচ' ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.