বেচারা নিউটন বলেই ইতিহাসে এমন খ্যাপানি!
বিজ্ঞানী হলে কি এমন জগরঢব হতে হবে? ক্যালকুলাসের মত খটমটে তত্ত্ব তার মাথায় ঢুকে থাকলো এগারো বছর। মাশাল্লাহ কি চুল। কিন্তু সেই চুলে জট কিছুতেই খোলে না। ডাক্তার বললেন, বাবু, কয়দিন বাগানে গিয়ে বসো।
চায়ের কাপ নিয়ে বসন্তের দখিনায় চা খাবেন অমনি ধপ করে ডাঁসা বিলাতি আপেল মাথায় পতিত হল। তালুর সাথে আপেল ঢুস খেতেই পঁই পঁই করে মধ্যাকর্ষনের নিয়ম বের হলো। বন্ধুরা বললো সংসার করে ফেল, নিটু। পাদ্রীর মেয়েটা ধর্ম মানে টানে, আর সুচিত্রা(!) কাট।
মধ্যাকর্ষ বাদ দিয়ে এখন সংসারী হ!
পরের ঘটনা অনেকেই জানে। নিউটন চক নিয়ে প্রেমের সূত্র বের করলেন। ১+১=২ সুতরাং সংসার দরকার আছে। মেয়ে আসলো। বেশ এডভান্সড মেয়ে। রয়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীর বউ হতে চায়। কথা বলতে বলতে মেয়েটা দেখলো এই জ্ঞানবাউল তার চোখের দিকে চেয়ে। আমি নিশ্চিত ঐ লোক তখন আলোর কণিকা তরঙ্গ দেখছিলেন। তাকিয়ে থাকতে থাকতে এমনই হয়ে গেল মন যে মেয়েটা দেখলো তার হাত মুঠো করে ধরে ফেলেছে। হয়তো সিনেমা ভেবে গদগদও হয়ে গেল তার মন। কিন্তু দেশলাইয়ের কাঠিটা সহসা তার আঙুলে ধরিয়ে টানতে যেতেই সম্বিত ফিরে আসে নায়িকার।
স্যরি ম্যাডাম, আমি চুরুট মনে করে ভুল করে আঙুলে আগুন দিয়েছি। ক্ষমা করবেন। মেয়েটি উঠে যাবার আগে বললো, রসো, তোমার কথা বলছি বাপকে। বিয়ে না ঘণ্টা হবে। বিজ্ঞানের দুনিয়াকে ক্ষমা কতজনই করতে জানে।
আমি আবার বিজ্ঞানের ছাত্র। তারপরও রমণীর চোখ যতটা ভাললাগে নিউটন টিউটন অতটা ভাল লাগে না। হাতের উপর হাত না রেখে সুন্দরী মেয়েটিকে পুড়িয়ে দেয়া আমার অন্তরে লাগলো। আপনি কি করতেন বলেন?
সে দিন বসুন্ধরার সিঁড়ি দিয়ে উঠতে দেখলাম পরিচিত মুখ। কেমন আছে জিজ্ঞেস করেই বললো, তর্পন, হকিংস বলসে বেহেস্ত দোজখ নাই। এখন কি হবে আমাদের? আমি বললাম যারা মানবে তারা দোজখে যাবে। পূন্য করলে বেহেস্তে যাবে। আর যারা মানবে না কোথাও যাবে না। ব্যাস!
হকিংস কি বেশি জানে?
আমাদের চাইতে বেশিই জানে। কিন্তু বেহেস্ত থাকার পিছনে একটা রোম্যান্টিক স্বপ্ন আছেই। সব মুসলমান একদিন বেহেস্তে যাবে। গেলে হীরায় খচিত সুনয়না সব নর্তকী আসবে। হকিংস ভাল ভাল কাজ করেছে কিন্তু একদিন ব্যাটা পস্তাবেই।
আমি বললাম, মিনারা, সারাজীবন দেখলাম তোর কাল চোখের, এখন চোখ নীল হলো কেমন করে?
কনট্যাক্ট লেন্সের উত্তরটা যে খোঁচা সে বুঝে যায়। ফুডকোর্টে বসে নীল চোখের কথা তুলতেই আমি বলে ফেলেছিলাম নিউটনের কথা। বললাম জানিস, পুস্তকে পড়লাম মানুষের চোখ হলো চারশ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার মত।
হোয়াট ইজ পিক্সেল? মেগা পিক্সেল?
এটা কগনিশান সাইন্সে অলরেডি উঠে এসেছে।
এসব পিক্সেলের তত্ব আর জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা যেই শুরু করলাম অমনি ব্যস্ততার অজুহাতে সে অন্য দিকে পা বাড়ালো।
পিক্সেল শব্দটা বলার উদ্দেশ্য না। কিন্তু আমার মাথা আসলো আসলে যে ভাবে ক্যামেরার মেগাপিক্সেল বাড়ছে।
সবচেয়ে বেশি মেগাপিক্সেল ক্যামেরা কত হবে?
মানুষের চোখের রেটিনা হলো তার ফিল্ম। সেটা কিন্তু অত হাই রেজুলেশন না। কেউ বলে মাত্র পাঁচ মেগাপিক্সেল। কিন্তু চোখ ভিডিও ক্যামেরার মত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারপাশের ছবি নিয়ে জোড়া দিয়ে একটা বড় ছবি বানায়। সেটা ৩২৪ মেগাপিক্সেল। যদি কেউ চোখের বল ঘুরিয়ে এপাশ থেকে ওপাশ দেখে তাহলে পুরো ছবিটা মাথায় আসে ৫৭৬ মেগাপিক্সেলের। সুতরাং যদি ৫৭৬ মেগাপিক্সেলের বেশি রেজুলেশনের ক্যামেরা আসলে লাভ নেই। থাকলেও সেটা পুরো দৃশ্যকে একবারে দেখাতে পারা যাবে না। চোখের লেন্সটা ভাল হলেও তার ক্লিয়ার দেখার ক্ষমতা শুধু মাঝখানে চারপাশে ফেইড ফেইড লাগে। আর যারা আরো বিজ্ঞ তাদের জ্ঞাতার্থে এর আইএসও হলো মাত্র ৮০০। অন্ধকার বাড়লে তাই মানুষ অন্ধ হয়ে যায়।