সুদানে এখন সরকার ২টি; যেকোন ১টি, কিংবা উভয়ের হাতে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে মাছির মতো, নিজেদের বাসস্হান হারাচ্ছে, বেঁচে থাকার শেষ সম্বলও হারাচ্ছে। জেনারেল আবদেল-ফাতাহ বুরহান ও জেনারেল মোহাম্মদ দেগালো দেশবাসীকে নিজেদের সেবা দিয়ে চলেছেন; ফলাফল: ১৬ হাজার নিহত, ৪০ হাজার আহত, ১ কোটী ঘরবাড়ী ফেলে পালিয়েছে, হাজার হাজার নারী দেহ বিক্রি করে সন্তানদের মুখে খাবার দেয়ার চেষ্টা করছে।
এখন, সুদানের যেসব লোকজনের মাথায় সামান্য মগজ আছে ও পকেটে সামান্য টাকা আছে, তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। যারা পালাতে পারেনি, তারা শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে গিয়ে লতাপাতা দিয়ে পাখীর মতো বাসা তৈরি করে, রিলিফের খাবারের খোঁজে সারাদিন ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা এই ২ সরকারকে বাদ দিয়ে নিজেদের চেষ্টায়, নিজেদের সমাজের জন্য কি কি করতে পারে?
ধরে নিলাম, সুদানে এখন জনগণের করার কিছু করার কিছু নেই! তাদেরকে যুদ্ধ শেষ হওয়া অবধি অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে যখন পাকী বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো, সাধারণ মানুষ কোনভাবে সমাজকে সাহায্য করেছিলো কিনা?
১৯৭১ সালে, আমাদের জাতির বড় অংশ সামান্য পরিমাণ হলেও অন্যদের ও মুক্তিবাহিনীকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন, বড় অংশ সাপোর্ট করেছিলেন ও কোনভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। আফ্রিকার মানুষের একটা গুণ হলো, গৃহযুদ্ধ ও এই ধরণের বিশাল বিপদের মাঝে অন্যদের সাহায্য করে না, পারলে, সুযোগ মতো অন্যদের ক্ষতি করে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে, গোত্রীয় হত্যাকান্ড চালায়।
বাংলাদেশের বেলায়, অবস্হা অত খারাপ নয়; তবে, শেখ হাসিনা ১ ভার্চুয়াল প্রতিপক্ষের ( বিএনপি-জামাত ) বিপক্ষে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন; উনার সেনা বাহিনীতে আছে দেশের বাহিনীগুলো ও উনার দল। যুদ্ধেলিপ্ত শক্তিশালী বাহিনী যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে, শেখ হাসিনার বাহিনীর লোকজন সেসব সুযোগ নিচ্ছে; ফলে, জনগণের জন্য তেমন কিছু থাকছে না। তবে, অবস্হা সুদান থেকে আলাদা; এখানে জনগণ নিজেরা নিজেদের সাহায্য করার জন্য কিছু করার সুযোগ আছে। তা'ছাড়া আমাদের দেশ, পীর আওলিয়ার দেশ, ভালো কিছু একটা ঘটবে?