somewhere in... blog

দা বদারসাম ম্যান ঃ মুভি পোস্ট

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




জনাব বাট্রান্ড রাসেল বলেছিলেন , 'যেসব কারনে আমি খ্রিষ্টান না তার মধ্যে একটা হল, স্বর্গ সেই জায়গা না যেখানে আমি চিরকাল কাটাতে চাই'। এই মুভির পরিচালক জনাব ইয়েনস লিয়েন (Jens Lien) ও সম্ভবত এই লাইনের লোক।


সিনেমার শুরুতে দেখা যায় নায়ক (Trond Fausa Aurvaag) এক সাবওয়ে ট্রেন ষ্টেশন এ দাড়ায় আছে, স্ট্রেসড, মাথা আউলায় যাচ্ছে তার, ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে। তার পেছনে এক কাপল অসম্ভব বিচ্ছিরি ভাবে কিস করতেসে। দেখেই বেখাপ্পা লাগে, উইথ ইন ওয়ান সেকেন্ড। মানে এসব কি? এইটা কি ধরনের কিস? ওদের এই কর্মকাণ্ড দেইখা নায়ক আরও উত্তেজিত, এক লাফে ট্রেনের নীচে। যাহ্‌ স্লা ...

পরের সিনে দেখা যায় নায়ক একটা বাসে করে কোথাও যাচ্ছে। লাস্ট স্টপেজে তাকে নেমে যেতে হল। এক লোক তাকে রিসিভ করে কাল্পনিক এক শহরে নিয়ে গেল এবং তাকে তার ফ্ল্যাটের চাবি , চাকরির নিয়োগপত্র ধরায় দিল। ফ্রেন্ডলি বস, অফিসের সবাই খুব ভাল ব্যবহার করে , তেমন কোন কাজ কর্ম নাই। কয়দিন পরেই সে সুন্দরী এক বান্ধবী (Petronella Barker) কে নিয়ে এক ফ্ল্যাটে উঠে গেল। সব কিছু খুব সুন্দর সাজান গোছানো। এক ধাক্কায় লাইফ সেট আর কি :p চারদিকে শুধু সুখ আর সুখ...

কিন্তু তার মনে হল কোথায় যেন কি একটা ঘাপলা আছে। যতই সে মদ খায়, সে মাতাল হয় না, কিছুই সেরকম মজা লাগে না , এমন কি সেক্সও না। বস কিছু বলে না। বান্ধবিও সালা কোন পেইন দেয় না। কি আজব কি আজব?? টেস্ট লেস , অডরলেস ...

কিছুদিন পর এই বিরামহীন সুখ তার আর ভাল লাগে না। অসহ্য লাগে সব কিছু। বোরিং, বিরক্তিকর এক ঘেয়ে , একই প্যাঁচাল , একই জোক শুনতে শুনতে সে ক্লান্ত। সব কিছু তার কাছে কেমন যেন ফেইক মনে হয়। সে একবার চেষ্টা করে যে বাসে করে সে আসছে সেই বাসে করে ফেরত যেতে। কিন্তু সে বাসের ট্র্যাক ফলো করে গিয়ে দেখে কিছুদুর যাবার পর আর কোন রাস্তা নেই। তারপর সে বোরিং লাইফকে হালকা এক্সাইটিং করার জন্য গোপনে সে আরেকটা প্রেম করে। কিন্তু হায় সে আবিস্কার করে এই মেয়ে (Birgitte Larsen) তার আগের বান্ধবির চাইতে কম বোরিং না। তার ২য় প্রেমের খবর শুনেও তার ১ম বান্ধবির কোন রাগ দুঃখ দেখা যায় না।

এই পারফেক্ট জীবন আর সহ্য করতে না পেরে বেচারা সাবওয়ে ষ্টেশন এ যায় সুইসাইড করতে। তারপর অদ্ভুত প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসাহীন চুম্বন দৃশ্য দেখে সে ঝাপ দেয় ট্রেনের নীচে। ফলাফল ভয়াবহ!! কারন ট্রেনের নিচে সে ভর্তা হয়ে যায়, বাট দেয়ার ইজ নো ওয়ে টু ডাই।। ভাঙ্গাচুরা অবস্থায় সে ফেরত আসে, আর ঠিক তখনই তার বান্ধবী তাকে বলে ' ইয়েই তুমি আসছ? চল আমরা বেড়াতে যাই' !! লে হালুয়া ...

তো যাইহোক , এক পর্যায়ে সে রিয়েল ওয়ার্ল্ড এ ফিরে আসার একটা রাস্তা খুজে পায়। দেয়ালের ছোট্ট একটা ছিদ্র, ওপাশ থেকে অসম্ভব সুন্দর মিউজিক এবং আলো আসে। তাই দেখে ডেস্পারেট একটা চেষ্টা চালায় সে। হাতুড়ী শাবল ইত্যাদি নিয়ে। গর্ত খুঁড়ে সে চলে আসে রিয়েল ওয়ার্ল্ড আর কাছাকাছি।।



সিনেমা খুবই সুন্দর ভাবে নির্মিত, মানে পরিচালনা অভিনয়, মিউজিক , লোকেশন সব কিছুই বেশ ভাল্লাগসে। কিছু কিছু জায়গায় হাসি আটকানো মুশকিল। কাস্টিং হইসে অসাধারন, মানে নায়কের চরিত্রের সাথে এর চাইতে মানানসই চেহারা আর হইতে পারে না। মোটামুটি ওয়ান ম্যান শো। তার কর্মকাণ্ড চলাফেরা , প্রতিটা মুভমেন্ট ইন্টারেস্টিং। বাকিরা সবাই সাপোর্টিং।। নরওয়ের মুভি। কোন ক্যাটাগরিতে ফেলা মুশকিল। ডার্ক কমেডি বলা যায়। মুক্তিকাল ২০০৬। দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় ঘণ্টা।

একটাই নেগেটিভ পয়েন্ট আমি বলব । সবকিছু এত subtle যে সিনেমার ঘটনা প্রবাহ, টার্ন এন্ড টুইস্ট বোঝা মুশকিল। আমার বুঝতে টাইম লাগসে। আপনাদের হয়ত এত টাইম লাগবে না। আর সব চাইতে বড় সমস্যা হইল, স্বর্গের যদি এই অবস্থা হয় তাইলে তো বিশাল টেনশন রে ভাই!!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৯
৪৫৬ বার পঠিত
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার সাজিদ কমেন্ট অফ রাখায় এখানে লিখছি (সাময়িক)

লিখেছেন মিরোরডডল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৫


সাজিদের বিদায় পোষ্ট দেখলাম, কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখায় ভাবলাম এখানেই লিখে যাই।

জানিনা কি বলবো, হয়তো এটাই দেখা বাকি ছিলো।
চলে যাবার কারণ জানিনা কিন্তু অনুমান করতে পারছি।
Man! you shouldn't leave.

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


আজকাল মানুষ চেনা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে তা বুঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এই কথা আরো বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কখনো বিদায় বলতে নাই

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



ব্লগে কিছুদিন ধরে অনিয়মিত হওয়ায় কখন কি ঘটে জানি না।
কিছুক্ষণ আগে মিররডলের একটা পোস্টে জানতে পারলাম , ব্লগার আমি সাজিদ ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছেন । তার সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×