অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে ডঃ ইউনূস দেশটাকে আমেরিকা বানিয়েই ছাড়বে, কিন্তু বাংলার জনগণ কোনদিনও তা বরদাস্ত করবে না, রক্ত যখন দিয়েছি প্রয়োজনে রক্ত আরও দিবো কিন্তু কোন মতেই এই এই দেশকে আমেরিকা হতে দেওয়া হবে না, বঙ্গদেশ বঙ্গদেশই থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
ফান বাদ- যা বলতে চাচ্ছি তা হলো দেশের মানুষজন খুবই অস্থির প্রকৃতির, অল্পতেই আগ পিছ না ভেবে ভয়ানক রিয়্যাক্ট করে এত প্রতিক্রিয়াশীল এক জাতি নিয়ে ডঃ ইউনূস কিভাবে এই দেশটাকে নতুন করে গড়ে তুলবে তা ভেবে আমি কূল পাই না। অবশ্য আমি আগেও বলেছি; অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আমার খুব একটা উচ্চাশা নেই, কারণ তিনি (ডঃ ইউনূস) রাজনীতির লোক নন-- তাছাড়া উপদেষ্টাগণও একেবারে আনকোরা অরাজনৈতিক লোক, এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ থেকে উঠে এসে হুট করেই দেশ পরিচালনার মত গুরু দায়িত্ব পেয়ে গিয়েছেন, পূর্বেও এদের একে অপরের সাথে একসঙ্গে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা নেই, আর যা হবার হয়েছেও তাই কোন চেইন অব কমান্ড নেই, যে যার মত করে কাজ করে যাচ্ছে,বিশৃঙ্খলা সর্বত্রই। কিন্তু তবুও এই সরকারের প্রতি আমার তেমন কোন অভিযোগ নেই, আমি বসে আছি রাজনৈতিকভাবে কোন দল ক্ষমতায় আসে এবং তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করে তা দেখতে, আর যতক্ষণ পর্যন্ত তা না হয় ততক্ষণ বসে বসে পাবলিকের রিঅ্যাকশন দেখি। পাবলিকের হাউকাউ দেখতে হেব্বি মজা!!
আমি দীর্ঘদিন ধরে আশায় ছিলাম আওয়ামী সরকারের পতনের পর নতুন কোন সরকার ক্ষমতায় এলে সে সরকারের প্রতি দেশের জনগণ কি ধরণের আচারণ করে তা দেখার জন্য, এবং যা ভেবেছিলাম ঠিক তা'ই ঘটছে-- মানে. অস্থির জনগণ আওয়ামী সরকার ছেড়ে এখন ইউনূস সরকারের পিছনে লেগেছে। যদিও ইউনূস সরকারের প্রতি জনগণের বিরুপ মনোভাবটা এখনো আওয়ামী সরকারকে ছাড়িয়ে যায়নি কিন্তু ছাড়াতে কতক্ষণ? একসময় যারা শেখ হাসিনাকে গালাগলি করতো সেই তরাই এখন আবার ডঃ ইউনূস এর বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে, নানা কথার ফুলঝুড়ি ফুটাচ্ছে, দেশ নিয়ে এরা এতটাই চিন্তিত যে রাতে বালিশের নিচে মাথা রেখে ঘুমায়। আসলে নেগেটিভিটি মিশে রয়েছে আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, এত বিশাল নেগেটিভ মানিসকতার জনগোষ্ঠী নিয়ে কোন জাতি বেশিদূর এগুতে পারার কথা নয় (শেষ পর্যন্ত আমি নিজেও কিন্তু নেগেটিভ হয়ে গেলাম) LMAO ।
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, রাজনীতিবিদ বা ক্ষমতাসীনদের গালাগলি করে একটা শ্রেণী মনে প্রশ্বান্তি অনুভব করে, তা যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন তাদের কাজ হচ্ছে- ক্ষমতাসীন দলের প্রধাণ থেকে শুরু করে অন্যন্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গকে গালাগলি করে মনে শান্তি অনুভব করা, নিজেদের যাবতীয় ব্যর্থতা, দুঃখ-কষ্টের দায়ভার এরা সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়ে মনে বেহেশতি প্রশান্তি অনুভব করে, যাকে বলে আজাইড়া সমালোচনা করে টাইম পাস এবং গালাগলি করে মনে শান্তি আনুভব। আসলে এসব করে এরা মূলত নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চায় অথবা ভুলে থাকতে চায় অথবা নিজেদের দায় এড়াতে চায়।
এরা মনে করে সারাদিন সরকারকে গালিগালাজ করা, ক্ষমতাসীনদের ভুল ধরাই হচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার একমাত্র যোগ্যতা অথচ এরা জানেই না সমালোচনা করা হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সহজতম একটি কাজ আর এই সহজতম কাজটি করেই এরা মনে করে বিশাল হাতি ঘোড়া মেরে ফেললাম, দেশ একেবারে উদ্ধার করে ছাড়লাম।
আর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রতিপক্ষের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেয়াটা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন একটা কাজ।
শেখ হাসিনা দেশটাকে ভারত বানিয়ে ফেললো বা ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিলো এসব শুনতে শুনতে কান ঝালাপাল হয়ে গেছে বিগত ১০ বছরে আর এখন শুনতে হবে, ডঃ ইউনূস দেশটাকে আমেরিকা বানিয়ে ফেললো বা আমেরিকার কাছে দেশ বিক্রি করে দিলো.. ইত্যাদি।
আরেক শ্রেণী রয়েছে যারা সবসময় সরকারের সমালোচনা বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যারা আছেন তাদের পিছনে লেগে থেকে বা তাদের গালাগলি করে নিজেদের এলিট এলিট মনে করে, এই দুই শ্রেণীরই মূল কাজ হচ্ছে হুদাই আজাইড়া প্যাঁচাল আর হাউকাউ করে টাইম পাস করা, যথাযথ সমালোচনা করা তাদের উদ্দ্যেশ্য নয় বা তাদের সে সক্ষমতাও নেই। প্রকৃত অর্থেই এরা কোন সমাধাণ চায় না, আসলে এই দুটি শ্রেণীই হচ্ছে হুজুগে বাঙালীর মূল ভার্সন, আমি এদের খুব ভালো করেই চিনি। আমি যদি একজন সমাজ বিজ্ঞানী অথবা সাইকিয়াট্রিক হতাম তাহলে এই বিষয়গুলোকে খুব ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারতাম, কিন্তু আমার সে যোগ্যতা নেই।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮