somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইনি সুরক্ষা ও প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকলে সকল ফেরাউনই সাধারন মানুষ থেকে অধম। (উপলব্ধি - ৭ )।

১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ছবি - bing.com

ফেরাউন - এই নামটি শোনেননি এমন মানুষ সারা দুনিয়ায় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।যদিও ফেরাউন কোন একক ব্যক্তির নাম নয়। যুগ যুগ ধরে প্রাচীন গণপ্রজাতন্ত্রী মিসরকে রাজত্ব করা শাসকদের নাম ফেরাউন।তবে সাধারনভাবে ফেরাউন বললে যা মনে আসে তা হলো,একটি দেশের দীর্ঘদিনের শাসক যে ছলে-বলে-কৌশলে দেশকে শাসন-শোষণ করে। আমাদের দেশে কেউ কারো প্রতি জুলম কিংবা অবিচার করলে নির্যাতনকারীকে ফেরাউন’র সঙ্গে তুলনা করা হয়। কারো ঔদ্ধত্য প্রকাশ পেলে কিংবা কারো দীর্ঘমেয়াদী স্বৈরাচারী শাসনকে বুঝাতেও ফেরাউনের উদাহরন দেয়া হয়।

স্বৈরাচার হল এমন একটি সরকার ব্যবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি-একজন শাসক-সমস্ত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সামরিক ক্ষমতা ধারণ-প্রয়োগ করে। স্বৈরাচারী শাসনের কোন সময়সীমা নেই বা সাধারনত সীমাহীন সময়ের জন্য হয় এবং কোন আইনি বা আইনী সীমাবদ্ধতার অধীনও নয়। বেশিরভাগ স্বৈরাচারী শাসক নিরঙ্কুশ পারিবারিক সুবিধাভোগী ও গণতন্ত্র-রাজতন্ত্রের আকারে কিংবা সমারিক একনায়কতন্ত্রে বিদ্যমান হয়।

এশিয়া-আফ্রিকা-দক্ষিণ আমেরিকা তথা উন্নয়নশীল দেশসমুহে বিভিন্ন ধরনের স্বৈরাচারী শাসন দেখা যায় কিংবা স্বৈরাচারী শাসক রয়েছে।যারা কেউ হয় সামরিক স্বৈরাচার,আবার কেউ হয় গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট স্বৈরাচার, কম্বোডিয়ার পুঁজিবাদী স্বৈরাচার, মিয়ানমারের সামরিক স্বৈরাচার, শ্রীলংকার পারিবারিক স্বৈরাচার এবং বাংলাদেশে কোটাধারী গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার।





ছবি -

** বাংলাদেশ** - কোটাধারী গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা - বাংলাদেশে কোটা প্রথা'র সবচেয়ে বড় ও বেশী সুবিধাভোগী শেখা হাসিনা। কোটা প্রথার সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশেও আমরা গণতন্ত্রকে "নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর একনায়কত্বে" তথা স্বৈরাচার পর্যবসিত হতে দেখেছি, সম্প্রতি যাহার পতন হয়েছে ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে।ক্ষমতা ধরে রাখতে স্বৈরাচারী কায়দায় চরম বলপ্রয়োগ করে যিনি সহস্রাধিক মানুষ হত্যা করেন এবং তাহার সহযোগী হিসাবে পুলিশ-বিডিআর-সেনাবাহিনী-আইন-আদালতকে দেশের জনগনের বিপক্ষে দাড় করিয়ে দিয়েছিলেন। পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী প্রধান স্বৈরাচার সরকারের আদেশ মেনে জনগনের উপর আরো অধিক বলপ্রয়োগে অস্বীকার করলে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর শাসনকে সফলভাবে চ্যালেঞ্জ করায় গত ৫ আগস্ট ২০২৪ হাসিনা রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। যার ফলে অবসান হয় তাহার একটানা ১৫ বছর ৭ মাস সহ ২১ বছরের আওয়ামী শাসনের এবং দেশ মুক্তি পায় দেশের সবর্শেষ ফেরাউন তথা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন থেকে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী সময়ের স্বৈরাচারী শাসক লৌহমানবী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৬ শে জুলাই তথা পাঁচই আগস্ট পদত্যাগ করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যাবার পর থেকেই শেখ হাসিনা কোথায় ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’ বা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন সে বিষয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়। এদিকে সেদিনই ভারতের প্রশাসকরা জানিয়েছিলেন সামান্য সময়ের জন্য তিনি ভারতে থাকবেন। তারপর তিনি উড়াল দেবেন বৃটেন তথা ইংল্যান্ডের লক্ষ্যে। একদিকে ইংল্যান্ড তাহাকে আশ্রয় দিতে রাজী হয়নি এবং অন্যদিকে পূর্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমেরিকার ভিসাও আমেরিকা দ্রুতগতিতে বাতিল করার কারনে তাদের পদাংক অনুসরন করার কারনে পুরো ইউরোপ-কানাডা কিংবা পুরো উন্নত বিশ্বেই মহামহিমের যাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। তারপর শুনা যায় সৌদি আরব কিংবা বেলারুশের কথা। ইত্যবসরে এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, " আইনি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকার ফলে দেশ থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা তথা স্বৈরাচারী ফেরাউন এখন সাধারন সাধারন মানুষ থেকেও অধম"।



ছবি- bonikbarta.net

শেখ হাসিনার দ্বিতীয়বার পর্যায় তথা ২০০৯ - ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগের শাসনের দানবিক রাষ্ট্রের কারিকরগণ-
লিংক - Click This Link

শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের ২০০৯-২০২৪ সালের একটানা ১৫ বছর ৭ মাস শাসনে বাংলাদেশকে যারা দানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তথা শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারী শাসক হিসাবে গড়ে তুলেছে তাহার কারিগররা বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, বিরোধী মত দমন, সংবিধানকে সংশোধন, ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতে সুশাসনের অভাব, তিনবারের বিতর্কিত নির্বাচন, ব্যাপক মাত্রায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে এবং নিজেরা লাভবান হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি থেকে শুরু করে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান, সচিব, গভর্নর, ব্যবসায়ী, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের নামও। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাবার সাথে সাথে স্বৈরশাসকের সেইসব দোসররাও এখন পদ্ত্যাগ করে কিংবা পালিয়ে থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছেন জনরোষ থেকে। যদিও ইতিমধ্যে তাদের কেউ কেউ ধরা পড়েছেন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।

ছবিতে ছোট ছোট কিছু সহযোগী স্বৈরাচার






সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক

১। Bangladesh’s Leader Resigns and Flees Country After Protests - লিংক -
Click This Link
২। Sheikh Hasina: The pro-democracy icon who became an autocrat - বিবিসি - লিংক
https://www.bbc.com/news/articles/cg3ee303yxpo
৩। হাসিনার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছে যেসব কারণ । লিংক -
Click This Link





ছবি - straitstimes.com

** শ্রীলংকা ** - পারিবারিক স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে

গোতাবায়া রাজাপাকস - তীব্র অর্থনৈতিক সংকট শ্রীলংকার দু'কোটি ২০ লাখ মানুষের জীবনে উলট-পালট ঘটিয়ে দিয়েছে ২০২২ সালে। যার ফলে পারিবারিক স্বৈরাচার শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকস পদত্যাগ করেন এবং অর্থনীতির অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য মৌলিক সরবরাহের তীব্র ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার কবলে পড়েছে।

শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধে বিজয়ের পর রাজাপাকশাদের পরিবারকে দেশে একসময় বীর হিসেবে বন্দনা করেছে অনেকে কিন্তু এখন তারা শ্রীলংকার সবচেয়ে ধিক্কৃত এবং সমালোচিত পরিবার-ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। কীভাবে এরকম ঘটলো? কীভাবে উত্থান হয়েছিল রাজাপাকশাদের পরিবার?

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর অর্থনীতির দেশ শ্রীলঙ্কা, যেখানে মাথাপিছু জিডিপি চার হাজার ডলারের বেশি। শ্রীলঙ্কার ৯৫ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত, তাদের শিক্ষাব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গণমুখী। তাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থাও দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। শ্রীলঙ্কান তামিল টাইগারদের ওপর সরকারি বাহিনীর বিজয়ের মাধ্যমে ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চলা গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর বিশ্বের কাছে একুশ শতকের সফল অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ধারণ করছিল দেশটি। তবে রাজাপাকশাদের পরিবারের হঠকারী সিদ্ধান্তে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব থেকে শিক্ষণীয় হলো, '' রাজাপক্ষে পরিবার ভোটের রাজনীতিকে যেভাবে ‘পারিবারিক একনায়কত্বে’ পর্যবসিত করেছে, সেটা একটা সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশকেও গভীর সংকটের গিরিখাতে নিক্ষেপ করতে পারে''। পারিবারিক একনায়কত্বের সাথে সাথে দেশটির এ দেউলিয়াত্ব ডেকে এনেছে করোনা মহামারি, কয়েক বছর ধরে সরকারের উল্টোপাল্টা নানা প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের হিড়িক এবং রাতারাতি কৃষি খাতে ‘অর্গানিক ফার্মিং’ চালুর জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের হঠকারী সিদ্ধান্ত।

১। Sri Lanka political dynasty ends as Rajapaksa quits - লিংক - https://www.bbc.com/news/world-asia-62160227
২। শ্রীলংকা: রাজাপাকশারা বীর যুদ্ধনায়ক থেকে যেভাবে ভিলেনে পরিণত হলেন। লিংক - https://www.bbc.com/bengali/news-61496178
৩। শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক ধস পারিবারিক একনায়কত্বের ফসল - লিংক - https://www.prothomalo.com/opinion/column/

** পাকিস্তান ** - সামরিক স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ




ছবি - bing.com

পারভেজ মোশাররফ - পাকিস্তানী সামরিক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ বিশ্বাস করতেন যে তিনি একটি স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারবেন। যার পরিণতিতে মোশাররফ ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করেন কিন্তু ২০০৮ সালে অভিশংসনের হুমকির মুখে অপমানজনকভাবে পদত্যাগ করেন। পারভেজ মোশাররফ, পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের এক সময়ের সামরিক শাসক, যিনি আমেরিকায় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর আল কায়েদার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের অভিযানে সমালোচনামূলক সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু পশ্চিমা বিরোধী আবেগে ভরা দেশে দেশে ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখলের পর জেনারেল পারভেজ মোশাররফ নিজেকে পাকিস্তানের "প্রধান নির্বাহী" ঘোষণা করেন। পরবর্তী দশকে তিনি নিজেকে কামাল আতাতুর্ক, নেপোলিয়ন বোনাপার্ট এবং আব্রাহাম লিঙ্কন সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক নেতার সাথে তুলনা করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে তিনি পাকিস্তানের ত্রাণকর্তা, এবং বজায় রেখেছিলেন যে কেবল তার সামরিক পদ্ধতিই দেশকে একটি স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ধার করতে পারে। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে' যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিলেন তিনি এবং ক্ষমতা ত্যাগের পর এই সামরিক শাসক দীর্ঘ রোগভোগের পর দুবাইয়ে মারা যান ।


১।Pervez Musharraf, president of Pakistan, লিংক - Click This Link
২। ‘I Too Am a Human’: The Political Psychology of Pakistan’s Former President General Pervez Musharraf ,লিংক - Click This Link
৩। Pervez Musharraf, president of Pakistan - লিংক Click This Link


** ফিলিপাইন ** - দুষ্ট স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস





ছবি - origins.osu.edu

ফার্দিনান্দ মার্কোস - ফিলিপাইনের একজন বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি। তিনি অত্যন্ত মেরুকরণকারী এবং ফিলিপাইনি প্রেসিডেন্সির ইতিহাসে খুব কম লোকই এই দিক থেকে তার সমকক্ষ হতে পেরেছে। কেউ বলছেন তিনি দেশের সর্বকালের সেরা প্রেসিডেন্ট, আবার কেউ বলছেন দুষ্ট স্বৈরশাসক তিনি। কিন্তু এটা ঠিক যে, সে ছিল ফিলিপাইনের স্ট্রংম্যান। তিনি কি আসলেই দুষ্ট স্বৈরশাসক ছিলেন যা মিডিয়া দাবি করে কিংবা জনগন বলে?

১৯৬৫ সাল থেকে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফার্দিনান্দ মার্কোস। ১৯৭২ সালে সামরিক আইন ঘোষণার পরে, তিনি ফিলিপাইনের সংবিধান স্থগিত ও পুনর্লিখন করেছিলেন। নাগরিক স্বাধীনতা হ্রাস করেছিলেন ও নির্বাহী শাখায় এবং তার নিকটতম মিত্রদের মধ্যে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেছিলেন। মার্কোস হাজার হাজার বিরোধীদের গ্রেপ্তার করেছিলেন এবং হাজার হাজার নির্যাতন হত্যা করেছিল যার ফলে জনগন তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিল। ফলে মার্কোস এবং তার পরিবার ক্ষমতা ত্যাগ করতে এবং ফিলিপাইন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।

১। The People Power Revolution, Philippines 1986 - লিংক - Click This Link
১। 18 Intriguing Facts You Might Not Know About Ferdinand Marcos লিংক - Click This Link
৩। Ferdinand Marcos, ruler of Philippines - লিংক - Click This Link

** মিশর **- আধুনিক যুগের ফেরাউনের তথা সামরিক স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ হোসনি এল সায়েদ মুবারক





ছবি - bing.com

মুহাম্মদ হোসনি এল সায়েদ মুবারক - মিশরের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ হোসনি এল সায়েদ মুবারক, যাকে আধুনিক যুগের ফেরাউনের সাথে তুলনা করা হয়। যিনি ১৯৮১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মিশরের চতুর্থ রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১১ সালে আরব বিশ্বের জনপ্রিয় অস্থিরতার কারণে ক্ষমতাচ্যুত হন, যাকে আরব বসন্ত বলা হয়। মুবারক একজন মিশরীয় রাজনীতিবিদ এবং সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন যিনি ২০১১ সালে মিসরীয় বিপ্লবের সময় ১৮ দিনের বিক্ষোভের পর মোবারক পদত্যাগ করেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সুপ্রিম কাউন্সিলের কাছে কর্তৃত্ব হস্তান্তর করেছেন।

১। Hosni Mubarak - https://en.wikipedia.org/wiki/Hosni_Mubarak#:
২। The complicated legacy of Egypt's Hosni Mubarak লিংক - Click This Link
৩। Hosni Mubarak, Egyptian Leader Ousted in Arab Spring, Dies at 91- লিংক - Click This Link


** ইন্দোনেশিয়া ** - সামরিক কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট সুহার্তো





ছবি - cbc.ca

সুহার্তো - প্রেসিডেন্ট সুহার্তো ছিলেন একজন সেনা কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতা যিনি ১৯৬৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তার তিন দশকের নিরবচ্ছিন্ন শাসন ইন্দোনেশিয়াকে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়েছে যেমন দিয়াছিল ঠিক তেমনি তার কর্তৃত্ববাদী শাসনের ফলে শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক মন্দা এবং তার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির শিকার হয়েছিল।

সুহার্তো ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি (১৯৬৭-৯৮)। সুহার্তো প্রাথমিকভাবে ডাচ ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, কিন্তু জাপানি বিজয়ের পরে (১৯৪২) তিনি জাপানি-স্পনসরিত প্রতিরক্ষা কর্পসে যোগ দেন। জাপানের আত্মসমর্পণের পর তিনি ওলন্দাজদের কাছ থেকে স্বাধীনতা প্রত্যাশী গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে ইন্দোনেশিয়া স্বাধীন হলে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল ছিলেন। একজন শক্তিশালী কমিউনিস্ট বিরোধী, তিনি ১৯৬৫ সালে সারা দেশে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীদের নির্মম শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা বলে কথিত একটি প্রচেষ্টা চূর্ণ করেছিলেন যা প্রায় ১০,০০,০০০ লোককে হত্যা করেছিল। তিনি ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি সুকর্ণকে পদচ্যুত করেন এবং ১৯৬৭ সালে নিজেই রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বারবার বিরোধিতা ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে তিনি পূর্ব তিমুরের সাবেক পর্তুগিজ উপনিবেশকে নৃশংসভাবে দখল করে নেন। একটি মারাত্মক অর্থনৈতিক মন্দা তার সরকারের দুর্নীতির দিকে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং এর ফলে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল যা ৩১ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে ১৯৯৮ সালে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু অভিযোগ রয়েছে।

১। Suharto - president of Indonesia লিংক - https://www.britannica.com/biography/Suharto
২। Suharto Dies at 86; Indonesian Dictator Brought Order and Bloodshed - লিংক -https://www.nytimes.com/2008/01/28/world/asia/28suharto.html
৩। Suharto summary - লিংক - https://www.britannica.com/summary/Suharto

একজন সাধারন শাসক কেন এবং কিভাবে ধীরে ধীরে স্বৈরশাসক হিসাবে গড়ে উঠে?

এর কারন খুজতে গেলে প্রথমেই যা দেখা যায় তা হলো, ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথে সাথে তাদের চারিপাশে একটি সুবিধাভোগী তথা এলিট শ্রেণীর অবস্থান যারা তাহার নিকট থেকে নানা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে নানা উপায়ে তাহার শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সাহায্য করে। আর এসব কাজে আইন-শাসন-বিচার বিভাগ সহ প্রশাসনের মোটামুটি সবাই যখন জড়িয়ে পড়ে তখনই স্বৈরশাসক পূর্ণতা লাভ করে এবং জনগনের নিকট থেকে দূরে সরে যায় । একটা সময় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগন যখন রুখে দাড়ায় তখন গণআন্দোলন-গণবিক্ষোভের মুখে তাদের পতন হয় এবং দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আর এসবই হয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলির নিষ্ক্রিয়তা এবং জনগনের ক্ষোভের কারনে।

এসব স্বৈরশাসকদের পতন ঘটাতে কোন কৌশল সবচেয়ে বেশি কার্যকরী? সহিংস প্রতিবাদ নাকি অহিংস আন্দোলন? আর ক্ষমতা থেকে কোন রাজনীতিককে সরাতে এরকম বিক্ষোভ কত বড় হতে হবে? কত মানুষকে জড়ো করতে হবে? হার্ভার্ডের একজন গবেষক এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গবেষণা চালিয়েছেন বিগত কয়েক দশকে বিশ্বের দেশে দেশে যেসব গণআন্দোলন-গণবিক্ষোভ হয়েছে সেগুলোর ওপর। এই গবেষণার ভিত্তিতে তিনি বলছেন, কোন জনগোষ্ঠীর মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষও যদি গণবিক্ষোভে যোগ দেন, তাতেই তারা সফল হতে পারেন।

একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতা থেকে সরাতে কত মানুষকে রাস্তায় নামতে হয়?
লিংক - https://www.bbc.com/bengali/news-54255224

দুনিয়ার সকল স্বৈরশাসকই তাদের শেষ পরিণতি কি হবে তা জানে এবং তাদের সামনে উদাহরন হিসাবেও তাদের উত্তরসুরীরাও বিদ্যমান থাকার পরও কেন যুগে যুগে, দেশে-দেশে একজন সাধারন সাধারন শাসক স্বৈরশাসকে পরিবর্তীত হয় এ এক বিরাট রহস্য। তবে ন্যায়-অন্যায় ভুলে ক্ষমতার মোহে যখন শাসক অন্ধ হয়ে যায় এবং তার চারপাশে চাটুকারের দল এমনভাবে বেষ্ঠনী দিয়ে রাখে যার ফলে কখন যে সে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে স্বৈরশাসকে পরিণত হয় শাসক নিজেও জানেনা। এ যেন অনেকটা, "পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে'র " মত ।


====================================================
পূববর্তী পোস্ট

উপলব্ধি - ৬ Click This Link
উপলব্ধি - ৫ Click This Link
উপলব্ধি - ৪ Click This Link
উপলব্ধি - ৩ Click This Link
উপলব্ধি - ২ Click This Link
উপলব্ধি - ১ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম: ‘এ্যজ গুড এ্যজ ইট গেটস’

লিখেছেন মুনতাসির, ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৪৩



যারা নতুন ঢাকা শহরে এসেছেন, তাদের কাছে ট্রাফিক জ্যাম হয়তো একটা অসহ্য যন্ত্রণা মনে হতে পারে যেন সময় এখানে থমকে গেছে আর গাড়ি চলার কোনো অবস্থা নেই। কিন্তু যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতা এবং আবৃত্তি.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৯

কবিতা এবং আবৃত্তি.....

আমার কাছে লেখালেখির জগতে কবিতা লেখা হচ্ছে সব চাইতে কঠিন, যা লিখতে মেধার বিকল্প নাই। একজন সাহিত্যিক-উপন্যাসিক, প্রবন্ধকার যা লিখতে অনেক পৃষ্ঠা, কিম্বা একটা বইতে প্রকাশ করেন-... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবিই যখন না বলা অনেক কথা বলে দেয়। ( উপলব্ধি - ৮ )।

লিখেছেন মোহামমদ কামরুজজামান, ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৮


ছবি : পিআইডি

সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার চাহিদা অনুসারে (৮ আগস্ট ২০২৪) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধান উপদেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিন্ডিটি কার ⁉️

লিখেছেন সরকার পায়েল, ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

জাতিসংঘে এখন সদল বলে ইউনুস সাহেব l বেশ ঘটা করে ক্লিন্টন সাহেবের সাথে পরিচিতি অনুষ্ঠানে আন্দোলনের মাস্টার মাইন্ডদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন ইউনুস সাহেব l অমুক তমুক এই আন্দোলনের নেতৃত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যান চিরতরে বন্ধ হোক!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩২








ব্যান ব্যান গেমের জয়ী এ ব্লগে কারা আপনারা ভালোমতই জানেন সম্ভবত; এখানে বিভিন্ন ভাষায় অপমান-অপদস্তের যে কাউন্টার গেম চলে সেই প্যার্টানে ব্যানের লিস্টে অনেকজনের নাম থাকাটাই মনে হয় সঠিক। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

×