somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পোশাকের বর্ণ পরিবর্তন করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনুরূপ করা হলো কোন উদ্দেশ্যে? X((X((X((

২৬ শে জুন, ২০১২ রাত ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজকে দুপুরে টেলিভিশনে খবর দেখছিলাম, খবরে সংবাদ উপস্থাপন করা হচ্ছিলো গতকালই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন লেফট্যানেন্ট জেনারেল ইকবাল করিম ভুইঁয়া এবং আজকে তাকে জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়েছে। সেই উপলক্ষ্যে আজ নতুন সেনাপ্রধানকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেনারেলের ব্যাজ পড়িয়ে দেন নৌবাহিনীর প্রধান ও বিমানবাহিনীর প্রধান। এই বিষয়ে টিভি রিপোর্টটা শুরু হওয়া মাত্র মোটামুটি বড় ধরনের একটা ধাক্কা খেলাম। টিভিতে এ কোন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদেরকে দেখছি! গাঢ় সবুজ রঙের ইউনিফর্ম পড়া সেনা কর্মকর্তাদের আর যাই হোক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলে এক ঝটকাতেই মনে হয় নি। কারণ, ঠিক এই রকম রঙের একই ধাঁচের ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় এতোদিন দেখে এসেছিলাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদেরকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার বলতেই এতোদিন বুঝতাম চিরচেনা খাকি রঙের ঐতিহ্যবাহী দাপ্তরিক পোশাক পরিহিত কর্মকর্তাদেরকে। কিন্তু আজ হঠাৎ কোন মন্ত্রবলে এতোদিনের চিরচেনা সেই খাকি রঙটা উধাও হয়ে তার পরিবর্তে গাঢ় সবুজ রঙের ইউনিফর্মের আগমন ঘটলো?
নেট ঘেটে জানতে পারলাম যে সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনবাহিনীর পোশাকের বর্ণ এবং বৈচিত্র্য পরিবর্তন হয়েছে। আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দুই ধরনের পোশাক পড়তো। একটা হলো যুদ্ধকালীন সামরিক পোশাক বা কমব্যাট ইউনিফর্ম এবং আরেকটা হলো সেরিমনিয়াল ড্রেস বা আনুষ্ঠানিক পোশাক। এতোদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কোন ওয়ার্কিং ড্রেস বা দাপ্তরিক পোশাক ছিলো না, যার কারণে যে কোন আবহাওয়াতেই সেনা সদস্যদেরকে ভারী কমব্যাট ইউনিফর্ম পড়ে কাজ করতে হতো। সেটা পরিবর্তন হয়ে এখন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তিন ধরনের পোশাক পড়বেন। একটা হলো যুদ্ধকালীন সামরিক পোশাক বা কমব্যাট ইউনিফর্ম (যেটা পরিবর্তন করার সাহস কেউ করে নি), দাপ্তরিক পোশাক বা ওয়ার্কিং ড্রেস এবং আনুষ্ঠানিক পোশাক বা সেরিমনিয়াল ড্রেস। এর মধ্যে নতুন সংযোজন করা দাপ্তরিক পোশাক হিসেবে গাঢ় সবুজ রংয়ের প্যান্ট, হালকা খাকি রঙের শার্ট এবং শীতকালের জন্য শার্টের ওপর গাঢ় সবুজ রঙের সোয়েটার নির্বাচন করা হয়েছে। সেই সাথে আনুষ্ঠানিক পোশাক হিসেবে আপাদমস্তক গাঢ় সবুজ রঙের পোশাকই মনোনয়ন করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র:

সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিবর্তন

সেনাবাহিনীর জন্য নতুন পোশাক

আসুন, কিছু ছবি দেখা যাক:

কমব্যাট ইউনিফর্ম বা যুদ্ধকালীন পোশাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী:







নব সংযোজিত ওয়ার্কিং ড্রেস বা দাপ্তরিক পোশাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী:
(এই ছবিগুলো গত ডিসেম্বরের শীতকালে তোলা বলে সেনা কর্মকর্তাদেরকে শার্টের উপর সোয়েটার পরিহিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে)











সেরেমনিয়াল ড্রেস বা আনুষ্ঠানিক পোশাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী:









(আগের আনুষ্ঠানিক পোশাকে বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের পুরস্কার বিতরণ)



(পরিবর্তিত নতুন আনুষ্ঠানিক পোশাকে বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের পুরস্কার বিতরণ)



(আগের ও বর্তমানের নতুন আনুষ্ঠানিক পোশাকে সদ্য বিদায়ী সাবেক সেনাপ্রধান মোহাম্মদ আব্দুল মুবীন)



এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাপ্তরিক ও আনুষ্ঠানিক পোশাক:






(ভালো করে খেয়াল করে দেখুন, এই ভারতীয় সেনা কর্মকর্তার শার্ট হালকা খাকি রঙের এবং প্যান্ট গাঢ় সবুজ রঙের, প্রায় কাছাকাছি যে বর্ণ সমন্বয়ের শার্ট-প্যান্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের জন্যেও দাপ্তরিক পোশাক হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে)



(হালকা রঙের খাকি শার্ট, গাঢ় সবুজ প্যান্ট)







এবার বাংলাদেশ ও ভারতের সাবেক ও বর্তমান সেনাপ্রধানদের কিছু গ্রুপ ছবি:










কিছু প্রশ্ন:

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে পোশাক এবং বর্ণ-বৈচিত্র্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে হঠাৎ সেটাতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন কি ছিলো?

দাপ্তরিক কাজের জন্য সেনা কর্মকর্তাদের যে আলাদা একটা পোশাকের প্রয়োজন সেটা না হয় মানলাম, কিন্তু তাই বলে সেই দাপ্তরিক পোশাকটা প্রতিবেশী একটা দেশের সেনাবাহিনীর দাপ্তরিক পোশাকের রঙের সাথে হুবুহু মিল রেখে মনোনীত করার উদ্দেশ্যটা কি? দাপ্তরিক পোশাকের বর্ণ হিসেবে এতোদিন থেকে চলে আসা আগের খাকি রঙটা ঠিক রাখলে কি খুব বেশী অসুবিধা দেখা দিতো?

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য আনুষ্ঠানিক পোশাক বা সেরেমনিয়াল ড্রেসের বর্ণ এবং ডিজাইন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেরেমনিয়াল ড্রেসের সাথে একেবারে পরতে পরতে মিল রেখে প্রনয়ন করার হেতুটা কি?




আমরা দেখেছিলাম বিডিআর হত্যাকান্ডের পর গোটা বাহিনীর নাম ও পোশাক পরিবর্তন করা হয়েছিলো, এবার সেনাবাহিনীর পোশাক পরিবর্তন করে প্রতিবেশী একটা দেশের (যে দেশটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের একমাত্র শত্র ও হুমকি হিসেবে গণ্য করা হয়) সেনাবাহিনীর পোশাকের সমান সমান করার প্রচেষ্টাটা আসলে কিসের ইঙ্গিত বহন করে?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:৪০
৪৫৬ বার পঠিত
৩৬টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার সাজিদ কমেন্ট অফ রাখায় এখানে লিখছি (সাময়িক)

লিখেছেন মিরোরডডল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৫


সাজিদের বিদায় পোষ্ট দেখলাম, কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখায় ভাবলাম এখানেই লিখে যাই।

জানিনা কি বলবো, হয়তো এটাই দেখা বাকি ছিলো।
চলে যাবার কারণ জানিনা কিন্তু অনুমান করতে পারছি।
Man! you shouldn't leave.

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


আজকাল মানুষ চেনা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে তা বুঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এই কথা আরো বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কখনো বিদায় বলতে নাই

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



ব্লগে কিছুদিন ধরে অনিয়মিত হওয়ায় কখন কি ঘটে জানি না।
কিছুক্ষণ আগে মিররডলের একটা পোস্টে জানতে পারলাম , ব্লগার আমি সাজিদ ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছেন । তার সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×