![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-আপনার সমস্যা কি ?
-আমার ?
চেহারায় খানিকটা বোকা বোকা ভাব আনার চেষ্টা করলাম । খুব বেশি লাভ হল বলে মনে হল না । কারন রাশিনের চেহারাটা কঠিনই রয়ে গেল । রাশিন আবার বলল
-হ্যা, আপনার সমস্যা কি ?
-আমার কোন সমস্যা নেই তো ।
-সমস্যা নেই তাহলে বেল বাজাচ্ছেন কেন ?
-আশ্চর্য বেল বাজাবো না কেন ? বেল না বাজালে দরজা খুলবে কে ? আমার বাড়ির লোককে জানাতে হবে না যে আমি এসেছি ।
-ওয়েল, আপনাদের বেল বাজান । আমাদের ফ্লাটের কলিংবেল বাজাচ্ছেন কেন ?
আমি আবার বোকার মত হাসার চেষ্টা করলাম ।
-আপনাদের বেল বাজাচ্ছিলাম বুঝি এতোক্ষন ?
-শুনুন ঢং করবেন না । আপনি খুব ভাল করেই জানেন যে কার বেল বাজাচ্ছিলেন !
-বিশ্বাস করুন আমি ঠিক বুঝতে পারি নি । আসলে সাততলা বিল্ডিং ১৪টা ফ্লাট । ১৪টা ফ্লাটের ১৪টা কলিংবেল । কিভাবে বুঝবো বলুন ?
-আমার সাথে ফাজলামো করবেন না । আপনারা থাকেন তিন তালায় আর আমরা থাকি পাঁচ তলায় । আপনি কচি খোকা না যে ভুল করে বেল বাজাবেন ।
আমি আবার হাসলাম ।
-দেখুন যখন নেমেই এসেছেন আর রাগ করে ভাল কি ? একটু দরজা খুলে দেন প্লিজ ।
রাশিন গম্ভীর মুখে গেটটা খুলে দিল । আমি আবার হাসলাম । কিন্তু রাশিন গম্ভীর হয়েই রইল ।
এই মেয়েটা এতো কঠিন কেন ? একটু হাসলে কি বা ক্ষতি হয় ! এতো সুন্দর চেহারা মেয়েটার , শুধু কেবল একটু হাসি মুখে থাকলেই হল ! চেহারাটা আরো সুন্দর লাগবে ।
কিন্তু না । সবসময় কেবল মুখটা গম্ভীর হয়েই থাকা ।
একদিন সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম । রাশিন ঐদিন বিকেলবেলা ছাদে এসেছিল । মুখ যথারীতি গম্ভীর । আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম
-আচ্ছা আপনি সব সময় এমন গম্ভীর হয়ে কেন থাকেন ?
গম্ভীর রাশিন আরো গম্ভীর ভাবে বলল
-সেটা আপনার সমস্যা হবায় কথা না । আর আমি কেমন থাকবো সেটা আমার বিষয় ।
বাবারে কি কঠিন জবাব ! আমিও ছাড়ার পাত্র নই । বললাম
-না এটা আপনার একার বিষয় না ।
-মানে ?
তাই তো ! মানে কি ? এই প্রশ্নের জবাব কেমনে দেই ?
আমি বললাম
-দেখুন এই মানে বোঝাতে গেলে লম্বা লেকচার দিতে হবে । দিবো ?
রাশিন কঠিন চোখে তাকিয়ে রইল । কিন্তু চলে গেল না । এটা একটা আশার কথা । আমি বললাম
-দেখুন আমাদের ধর্মে আছে প্রতিবেশি দের পাশে থাকতে । সুখে দুঃখে তাদের খোজ খবর নিতে । এখন আপনি আমার প্রতিবেশি । আর আপনি ভাল নেই । আমার দায়িত্ব আপনার খোজ খবর নেওয়া । আপনার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা ।
-দেখুন মিস্টার অপু আপনাকে আমার সমস্যা নিয়ে ভাবতে হবে না । আমি আমার নিজের সমস্যা নিজে দেখবো ।
আবারও সেই কঠিন গলার জবাব । আমি বুঝি না এতো সুন্দর মেয়েটা এতো কঠিনতা পায় কোথা থেকে ?
-তাহলে আপনার আব্বার সাথে কথা বলছেন না কেন ? তাকে বলুন আপনি আপনার নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করতে চান, তার ইচ্ছায় নয় ।
রাশিন তীব্র চোখে তাকিয়ে রইল আমার দিকে ! কিছু বলার জন্য মুখ খুলল কিন্তু কিছু না বলেই চলে গেল ।
হায়রে রাশিন !! কেবল আমার সাথেই পারো, আর কারো সাথে তো পারো না ।
কিন্তু কয়দিন পরই একটা সুসংবাদ পেলাম । রাশিনের সাথে যার বিয়ে হবার কথা ছিল সে নাকি আর বিয়ে করবে না । তার মানে ওর বিয়ে ভেঙ্গে গেছে ! ওয়াও!!
বিকেল বেলা আবার রাশিনের সাথে দেখা হল । আজকেও মুখ গম্ভীর । আমি কাছে গিয়ে বললাম
-আজকে অন্তত একটু হাসি মুখ করা উচিৎ
আবার সেই কঠিন দৃষ্টি !
আমি যাবো কই !!
কিন্তু না । কঠিনতা খানিকতা নমনীয় হয়ে এল । রাশিনকে বললাম
-তাহলে বাবার সাথে কথা বলেছেন ?
-নাহ !
-তাহলে? কিভাবে বিয়ে ভাঙ্গল ?
রাশিন আমার দিকে তাকালো কিরকম এক দৃষ্টিতে ।
-আপনি আমার এতো খবর কিভাবে পান?
-আগে বলেন কিভাবে হল?
-ঐ লোকটার সাথে আমি কথা বলে ছিলাম সরাসরি ।
- কি বললেন?
-বললাম যে আপনাকে আমার পছন্দ নয় । আমি এ বিয়েতে রাজি নই !
-তারপর কি হল?
- কি হল জানি না । তবে আর হয়নি কিছু ।
-আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
রাশিন কোন কথা বলল না । কিন্তু ওর ভাব দেখে মনে হল যে চাচ্ছে না আমি তাকে কিছু জিজ্ঞেস করি । আমি কিছু জানতে চাইলাম না।
এই মেয়েটা এমন কেন করে ? মেয়েটা কি বুঝতে পারে না যে আমি ওকে কি পরিমান পছন্দ করি । আমি যতদুর জানি মেয়েরা এসব আগে থেকেই বুঝতে পারে...।
অথবা ও হয়তো আগে থেকেই বুঝতে পেরেছে এই জন্যই এমন করছে ।
রাশিন বলল
-আচ্ছা এবার বলেন । আমার কথা গুলো আপনাকে কে বলে বলুন তো ?
-কেন ? কেন জানতে চাচ্ছেন ?
-আমার জানতে হবে কে আমার ব্যাপারে আপনাকে তথ্য দেয় ।
-কেন তাকে প্যাদানী দিবেন ?
-না । তবে আপনি যেন আর কোন খবর না পান সে ব্যবস্থা করবো ।
-দেখুন পছন্দের মানুষ গুলোর খোজ খবর ম্যানেজ করা ই যায় । আপনি যত চেষ্টাই করেন না কেন আমি ...
রাশিন সামনে কেন জানি আর কথা বলতে পারি না । কেবল তাকিয়েই থাকি ওর দিকে । কিছুক্ষন পর রাশিন চলে যায় ।
কি করে যে বলি মেয়েটাকে বুঝতে পারছি না ।
কদিন পর রাশিনের সাথে নিউ মার্কেটে দেখা । হাতে একগাদা ব্যাগ । আজ দেখলাম মুখটা একটু স্বাভাবিক । আসলে জগতে সব মেয়েরাই শপিং করতে ভালবাসে । আমার মনে হল এতো শপিং করেছে বলেই রাশিনের মুখটা একটু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে ।
আমি সামনে গিয়ে বললাম
-একি এতো শপিং ?
রাশিন কিছু বলল না । তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল ওর চেহারা দেখে মনে হল না যে ও খুব বেশি বিরক্ত ।
বললাম
-বাসায় যাবেন?
-হুম ।
-আমিও যাবো । আপনার সাথে আসবো?
আমি ভেবেছিলাম রাশিন হয়তো মুখের উপর না করবে না । কিন্তু আমার ধারনা ঠিক হল না । রাশিন বলল
-আপনি আগে চলে যান । আামর এখনও কাজ আছে ।
-অপেক্ষা করি ।
-জি না । কোন দরকার নাই ।
-আরে আমার কোন কাজ নাই । আমি অপেক্ষা করি ।
-আপনি কেন বুঝতে পারছেন না যে আপনার সাথে আমার রিক্সার চড়া সম্ভব না । আপনি চলে যান ।
মনটা একটু খারাপই হল । একটু রিক্সার চড়লে কি বা এমন হবে ?
আমি চলে আসি । মনে মনে বলি এই মেয়ের কাছে আর যাবো না । যাবো না ।
কিন্তু হয় না । ঐদিন বিকেল বেলাতেই আবার ওর সাথে দেখা হয়ে যায় । ছাদে ।
তবে আজকে ওর কাছে যাই না । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে ও নিজেই এল আমার কাছে । বলল
-কি ব্যপার চুপ কেন আজ?
-না আসলে আল্লাহর নাম নিচ্ছে তো তাই!
-মানে?
রাশিন আমার কথা বুঝতে পারল না ।
-আচ্ছা আপনি জানেন আল্লাহ ইব্রাহিম (আ)কে দশটি কাজের নির্দেশ দিয়ে ছিলেন ।
-আপনি কি বলছেন এসব?
আমি বললাম
-তার মধ্যে দুটি কাজ আমি করি ।
-কি কাজ?
-প্রথমটা হল মিথ্যা না বলা । আমি মিথ্যা কথা বলি না ।
-আর দ্বিতীয়তা?
-২য় নির্দেশটা হল প্রতিবেশীকে ভালবাসা...............।
এই কথাটা বলে আমি রাশিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম । দেখলাম রাশিনও আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে একভাবে ।
কতক্ষন তাকিয়েছিলাম জানি না, এক সময় রাশিন চোখ সরিয়ে নিল ।
এই প্রথম আমি ওর চোখে নমনীয় একটা ভাব দেখতে পেলাম । বললাম
-আমি সত্যিই আমার প্রতিবেশী কে ভালাবাসি । কিন্তু.......ঐ প্রতিবেশী এটা বুঝেও না বোঝার ভান করে । আমাকে পছন্দ না এটা বলে দিলেই হয়ে যায় । কিন্তু না।
রাশিন অনেকক্ষন চুপ থাকার পর বলল
-ঐ প্রতিবেশীরটো অনেক সমস্যা থাকতে পারে ! পারে না?
-পারে । পারবে না কেন ?
-অপু সাহেব আমি যাই । আর মিছেমিছি আলেয়ার পিছে লাভ নাই । আমার বাবার বিরুদ্ধ যাবা ক্ষমতা আমর নাই । আমি এমনিতেও কষ্টে আছি । আর বাড়তি কষ্টে নিজেকে জড়াতে চাই না । ভাল থাকবেন ।
রাশিন চলে গেল ।
আমি দাড়িয়েই রইলাম । রাশিন আমার কাছ থেকে দুরেই চলে গেল । ওর নিরব অপারগটা আমার কাছে জানিয়ে দিয়ে গেল যে আলেয়ার পিছনে ঘুরে আর লাভ নাই ।
সত্যি বোধহয় লাভ নাই ।
আমি ছাদের একটা পাশে দাড়িয়েই রইলাম । একা ।
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৫১
অপু তানভীর বলেছেন:
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৫৭
গৌরীসেনের কর্মচারী বলেছেন: তারপর ??
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:১২
অপু তানভীর বলেছেন: মোটামুটি এখানেই শেষ !!
৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:২০
গৌরীসেনের কর্মচারী বলেছেন:
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:২২
অপু তানভীর বলেছেন:
৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:৪৪
রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন:
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন: কি হইল??
৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:৪৫
দিকদর্শন বলেছেন: রাশিন নামে আমার এক খুব পরিচিত একটি নাম আছে। কেন জানিনা, চরিত্র ও অনেকটা মিল রয়েছে। ধন্যবাদ...ছোট গল্পের জন্য। তবে ছোট গল্পের আবেগটা আরও বাড়ালে ভাল হত।
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন:
৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩৪
আমি তুমি আমরা বলেছেন: এই গল্পটা অন্যরকম। বাস্তবতার সাথে মিল রেখে ফিনিশিং দিলেন বলে প্লাস।
০৫ ই জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: Thnxx.
৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৪৯
জানালার বাইরে বলেছেন:
+++
০৫ ই জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:১৮
অপু তানভীর বলেছেন:
৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:০৮
রাশান শাহরিয়ান নিপুন বলেছেন: পার্ট টু বের হবে নাকি?? কাহিনীডা হইল কি??
০৫ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৪১
অপু তানভীর বলেছেন: না মনে হয় !! এখানেই শেষ !!
৯| ০৮ ই জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৫৩
বিকেল বলেছেন: বাস্তবধর্মী পরিসমাপ্তির জন্য +++++...
০৮ ই জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৫৬
অপু তানভীর বলেছেন:
১০| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:১৮
অহন_৮০ বলেছেন: ভালো হইছে
১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩৩
অপু তানভীর বলেছেন:
১১| ০১ লা আগস্ট, ২০১২ ভোর ৪:১১
একজন আরমান বলেছেন: কষ্ট পাইলাম।
০১ লা আগস্ট, ২০১২ সকাল ৯:৩৫
অপু তানভীর বলেছেন: কষ্ট পাবার কিছু নাই !! স্রেফ একটা গল্প এটা !!
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪
sumon2015 বলেছেন: শেষ.........................
ভাল লাগলো......।