![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“এতোক্ষন অপেক্ষা করবা” ?
“করি ! আমার না যেতে ইচ্ছা করছে না । তুমি আসে পাশে আছো এটা ভাবতেই আমার খুব ভাল লাগছে” ।
কথাটা শুনেই শ্রাবণী চোখে পানি চলে আসে । ভাগ্য ভাল যে ফোনে কথা বলছে । তা না হলে অপু চোখের জল দেখে ফেলত ।
শ্রাবণী বলল “শোন প্রোগ্রাম কথন শেষ হয় ঠিক নাই । এতোক্ষন বসে থাকার কোন মানে নাই । তুমি চলে যাও” ।
“থাকি না ? আমার তো অসুবিধা হচ্ছে না” ।
“শোন যা বলছি কর । দেখতে চেয়েছিলে দেখেছ । এখন যাও” । কথাটা নিজের কাছেই খুব কঠিন শোনাল । শ্রাবণীর খারাপ লাগল । তারপর গলা একটু নরম করে বলল “বাসায় যাও প্লিজ । তুমি সারা রাত জার্নি করে এসেছ । তোমার বিশ্রামের দরকার আছে । আর তোমাকে এভাবে অপেক্ষা করতে দেখলে আমার খারাপ লাগবে । তুমি কি চাও আমার খারাপ লাগুক” ?
“না চাই না তো” ।
“তাহলে যাও সোনাপাখি । আমি কাল দেখা করবো” ।
“করবে তো” ?
“হুম করবো” ।
“আচ্ছা যাচ্ছি তাহলে । কাল দেখা করবা কিন্তু । আই লাভ ইউ” ।
“আই লাভ ইউ টু” ।
অপু ফোন কেটে দিল ।
ফোন রাখার পর শ্রাবণীর একটু খারাপই লাগছিল । বারবার অপুর ঐ অকুতিটা কানে বাজতে ছিল ।
থাকি না ? তুমি আসেপাশে আছো ভাবতেই ভাল লাগছে ।
কিন্তু খামোখা এতোটা সময় ওকে অপেক্ষা করানোর কি কোন মানে আছে ? এমনিতেও যথেষ্ট কষ্ট করে ও এসেছে । শ্রাবণী জানতোও না যে অপু আসবে । কয়দিন ধরেই ওদের অফিস প্রোগ্রামের কথা চলছিল ।
অপু যখন শুনলো বলল “তুমি কি বোরকা পরে যাবা” ?
“না” ।
“ না কেন” ?
“এমপি আসবে । বস বলেছে আমাকে দিয়ে এমপিকে ফুল দেওয়াবে” ।
“তার মানে সেজে গুজে যেতে বলছে” ।
“ হুম” । শ্রাবণী হাসে ।
অপু মন খারাপ করে বলল “তারমানে সবাই তোমাকে দেখবে আর আমি তোমাকে দেখতে পাবো না” ?
“না সোনাপাখি তুমি দেখতে পাবে না” ।
“না এটা হবে না । তুমি যাবে না” ।
অপুর কথা শুনে শ্রাবণী হেসে ফেলল । বলল “না গেলে আমার চাকরি থাকবে না বুঝছো” ?
যদিও চেহারা দেখা যাচ্ছে না তবুও শ্রাবণী খুব ভাল করে বুঝতে পারছে অপুর মন খারাপ হয়ে গেছে । অন্য কোন মানুষ ওর দিকে তাকাক এটা ও সহ্যই করতে পারে না । তার উপর সাজলে তো কথাই নাই ।
আজ সকালে যখন ও তৈরি হচ্ছিল আয়নায় নিজেকে দেখে ওর একটু মন খারাপই হল । অপু যদি ওকে এখন দেখতো কত খুশিই না হত ! বেচারা কত মত খারাপ করে । দুতিন মাস পর একবার আসে । একবার দেখা হয় তবুও তখন ও বোরকা পরে থাকে । বেচারা ঠিক মত দেখতেও পারে না ।
অবশ্য শ্রাবণীর কিছু করারও নাই । বোরকা ছাড়া বের হবার উপায়ও নাই । বাসায় হাজারটা কৈফত দিতে হয় । আজ একটা সুযোগ এসেছে কিন্তু অপু নেই ।
কাল রাতেও অপু ফোন দিয়ে সব কিছু জিঞ্জেস করছে । কখন প্রোগাম ! কখন পৌছাবা ! কার সাথে যাবা ইত্যাদি ইত্যাদি । তখন শ্রাবণীর মনে হয়েছিল অপু আসতে পারছে না এই জন্য এই সব কিছুর মাঝে একটু শান্তনা খুজতে চাচ্ছে ।
ও যখন প্রোগ্রামে পৌছেসে । বারান্দায় থেকে রুমে ঢুকতে যাবে তখন ফোন বেজে উঠল ।
অপুর ফোল । “বল” ।
“চলে এসেছ” ?
“হুম” ।
“বারান্দায়” ?
“হুম” ।
“রুমে ঢুকবে” ?
“হুম” । এই উত্তর দিয়ে শ্রাবণী একটু চমকালো । “মানে ? তুমি কোথায়” ?
অপু হাসল । বলল “পিছনে ঘুরো” ।
শ্রাবণী পিছনে ঘুরে তাকাল । অল্প কয়েক হাত দুরে অপু দাড়িয়ে আছে । মুখে একচিলতে হাসি । শ্রাবণী কিছুক্ষন কোন কথাই বলতে পারল না । এই ছেলেটাকি পাগল নাকি !
শ্রাবণী হঠাৎ লক্ষ্য করল অদ্ভুদ এক ভাল লাগা ওর ছাড়া দেহ মনে ছড়িয়ে পড়েছে । ওকে দেখে কি যে ভাল লাগছে ! অনেক ক্ষন পর শ্রাবণী বলল “তুমি” ?
“কি করবো বল ? তুমি বোরকা ছাড়া বাইরে আসবে সবাই তোমাকে দেখবে তোমার হাসি দেখবে আর আমি তোমাকে দেখবো না তা তো হয় না , তা তো হবে না” ।
“তাই বলে এই টুকু দেখার জন্য তুমি এতো দুর থেকে এতো কষ্ট করে আসবে” ?
“টিয়াপাখি তোমাকে এক পলক দেখার জন্য আমি কি করতে পারি তুমি ভাবতেও পারবে না” ।
শ্রাবণী কিছু বলতে পারে না । কেবল এই পাগল ছেলেটার দিকে তাকিয় থাকল । শ্রাবণীর মনে হল এখন যদি অপুর সরাসরি কথা বলা যেত !
কিন্তু উপায় নেই । চারিপাশে সব পরিচিত লোকজনে ভর্তি । ওর সাথে সরাসরি কথা বলার কোন উপায়ই নাই । যে কেউ দেখে ফেলতে পারে । ফোনেই কথা বলতে হবে ।
অবশ্য অপুকে এতেই খুশি মনে হচ্ছে । ও কি মুগ্ধ চোখেই না তাকিয়ে আছে ।
মাঝে মাঝে শ্রাবণীর মনে হয় ও তো এতোটা সুন্দর না কিন্তু তবুও অপু ওকে এভাবে কেন দেখে ! অপুর চাহনী দেখলে বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা কাঁপুনীর সৃষ্টি হয় ! কি দেখে ও অমন করে !!
“কি দেখছো ওমন করে ? আমার লজ্জা লাগছে” । শ্রাবণীর সত্যি সত্যি লজ্জা লাগছিল ।
“তোমাকে দেখছি । মনে হচ্ছে স্বর্গের কোন দেবী পৃথিবীতে নেমে এসেছে” ।
শ্রাবণীর গালটা যেন আরো একটু লাল হয়ে উঠল । বলল “আচ্ছা ঠিক আছে অনেক দেখেছ এখন যাও । আমার প্রোগ্রাম এখনই আরাম্ভ হয়ে যাবে । তুমি বাসায় যাও । বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নাও গিয়ে” ।
“আর একটু থাকো না । তোমাকে আর একটু দেখি” ।
কিন্তু আর থাকা সম্ভব হল না । শ্রাবণীর এক কলিক এসে ওকে নিয়ে গেল । যাওয়ার পথে বারবার ও ফিরে তাকাচ্ছিল । অপু ওখানেই দাড়িয়ে আছে । এক ভাবে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে ।
শ্রাবণী ফোন করে আবার ওকে । “অপু তুমি বাসায় যাও আমায় অনেক দেরি হবে” ।
“হোক । আমি অপেক্ষা করি । এতোক্ষন অপেক্ষা করবা” ?
“করি । তুমি আসেপাশে আছো এটা ভাবতেই আমার ভাল লাগছে” ।
প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে প্রায় দুপুর গড়িয়ে গেল । শ্রাবণী বেশ ক্লান্ত হয়ে বের হল অফিস থেকে । এখন একটু ফোন দেওয়া যাক অপু কে ।
“প্রোগ্রাম শেষ” ?
“হুম” ।
“খুব ক্লান্ত” ?
“হুম” ।
“ আমিও খানিকটা । আমিতো ভেবেছিলাম তোমার প্রোগ্রাম হয়তো আর শেষই হবে না । আর হয়তো দেখাও হবে না” ।
“মানে ? তুমি যাও নি” ?
অবাক বিশ্ময়ে শ্রাবণী অপুকে দেখল । ঠিক ওর সামনেই দাড়িয়ে আছে ।
“তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ? সেই সকাল থেকে তুমি এখানে আমার জন্য দাড়িয়ে আছে” ?
অপু বোকার মত হাসল ।
“কি করবো তোমাকে আরো একবার দেখতে ইচ্ছা করল যে” ।
“তোমাকে না থাপড়ানো দরকার । একবার না দেখলে তখন । এভাবে চার পাঁচ ঘন্টা এখানে বসে থাকার কোন মানে আছে” ? শ্রাবণী খুব রাগ করতে চাইল অপুর উপর । কিন্তু পারল না । এরকম একটা পাগলের উপর কি রাগ করা যায় ?
শ্রাবণী লক্ষ্য করল ওর চোখ দুটো সিক্ত হয়ে উঠেছে । যেকোন সময় জল গড়িয়ে পড়বে ।
ও আবার বলল “বল!! সকালবেলাই না দেখলে ? আবার দেখার কি আছে । এতোক্ষন অপেক্ষা করার কি কোন মানে আছে” ?
অপু আবার হাসল । বলল “তোমাকে বলিনি টিয়াপাখি যে তোমাকে একটা বার দেখার জন্য আমি কি যে করতে পারি তা তুমি ভাবতেও পারবে না । এইটুকু অপেক্ষা তো কোন ব্যপারই না” ।
অপু একভাবে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে । সেই মুগ্ধ চোখে ।
টুপ করে শ্রাবণীর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল ।
ও আর আটকানোর চেষ্টা করল না ।
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩২
অপু তানভীর বলেছেন: গল্পটা লিখতে আমারও বেশ ভাল লেগেছে । কারন গল্পটা মোটামুটি সত্য ।
২| ২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:২৫
মাহবু১৫৪ বলেছেন: ২য় ভাল লাগা
ভালবাসা ! :!> :!>
গল্প ভাল হয়েছে।
তবে একটা শেষটা আরো জমিয়ে তোলা যেত।
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ । গল্পটা মোটামুটি সত্য ঘটনা থেকে লেখা । এই জন্য খুব জমাতে পারলাম না । সরি ।
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৮
মাহবু১৫৪ বলেছেন: তাই নাকি!
তাহলে তো এটা গল্প নয়, একদম বাস্তব। তা গল্পের নায়ক কি আপনি?
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৫১
অপু তানভীর বলেছেন: পুরোপুরি না । একটু কল্পনার মিশ্রন আছে ।
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৮
ঈষাম বলেছেন: ভালো হয়েছে! ++
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৪৩
শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: আপনার নামও তো দেখি অপু। আপনেই নায়ক নাকি?
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৫২
অপু তানভীর বলেছেন: ভাই আমার অন্য গল্পগুলা পড়ে দেখেন প্রায় সব গুলাতেই নাম অপু রয়েছে ।
৬| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৪৩
আমি তানভীর বলেছেন: গল্পটা পড়ার সময় ভাবছিলাম আমারও যদি এমন একটা শ্রাবণী থাকত সত্য কাহিনী জেনে ভাল লাগলো
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: বানিয়ে ফেলুন ।
কাহিনী সত্য তবে একটু কল্পনার সংমিশ্রন আছে ।
৭| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৫৬
আজব কবি বলেছেন: অপু ভাই , এক সময়ের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো নাড়া দিয়ে উঠল , এক সময়ের পাগলামি এখন শুধুই স্মৃতি, মানুষ বড্ড বদলে যায় স্বার্থপরের মত
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: হয়তো বদলে যায় কিন্তু অতো ভাবতে গেলে কি জীবন চলে । এগিয়ে চলেন দেখবেন আবার নতুন করে সব কিছু শুরু হয়েছে ।
৮| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১:৫৪
দুঃখ বিলাসি বলেছেন: প্লাস ও লাইক।
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৯| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৩:১৫
পড়শী বলেছেন: সত্যি ঘটনাগুলো গল্পের চেয়ে অনেক বেশি ভাল লাগে। +++
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:২০
অপু তানভীর বলেছেন: সত্যিই তাই ।
১০| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ ভোর ৪:৪৫
মাজহার অপু বলেছেন: ওরে ভাই, নায়ক মিলছে, নায়িকাও মিলছে, তথাপি ঘটনা ঘটে নাই
আমার নামটা ব্যাবহার করলেন, ভালো লাগছে! কিন্তু একবার অনুমতিও নিলেন না .। কি আর করা , ভালো নাম ব্যাবহার তো করবেন-ই। আপনার আগে সত্যজিৎ রায়, বিভুতিভুষন বন্দ্যোপাধ্যায় এরা ও ব্যাবহার করছে, কেও অনুমতি নিলো না্,.। আফসোস .।।
বি দ্রঃ এটি একটি পক্ষপাতদুষ্ট ভালো লাগা পোস্ট.।
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:২০
অপু তানভীর বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে মজা পেলাম ।
১১| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ সকাল ৮:৪৭
ফারিয়া বলেছেন: হুমম!
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:২২
অপু তানভীর বলেছেন: ????
১২| ২৫ শে মার্চ, ২০১২ সকাল ৮:৫৯
রাফা বলেছেন: আর একটু থাকি... এই একটু থাকা যদি কখনও শেষ না হোতো তাহোলে কতনা মধুর হোতো জিবনটা।
ভালো লাগা রইল,ধন্যবাদ।
২৫ শে মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:২২
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:২১
নীল-দর্পণ বলেছেন: ভাল লাগল বেশ