somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা

১১ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যাপারটা এমন না যে, আজ মা দিবস বলে আমি এইটা লিখছি।আসলে আমি জানতাম না আজ মা দিবস,লেখাটা লিখব বলে ঠিক করেছিলাম গত কালকে, আমার মার সাথে ফোনে কথা বলার পর থেকে মনে হয়েছিলো, নিজের ভিতরের এই প্রতিক্রিয়াটা লিখে রাখা দরকার। আজ সকালে ফেসবুকে দেখলাম কেউ মার ছবি দিয়েছে, কেউ মা কে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা লিখেছে, তখন আমি চিন্তা করেছিলাম,লেখাটা ফেসবুকেই লিখে দিব, দিলাম না, কারন আমার মা ফেসবুক তো দুরের কথা মুঠোফোন পর্যন্ত ব্যাবহার এ পারদর্শী না।লেখাটা লিখলে অন্তত পোষ্ট করে মা কে পাঠান যাবে,তাই অনেক দ্বিধাদন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে লিখতে বসলাম।
ছোটবেলা থেকে অভিভাবক হিসেবে শুধু মা কে দেখেছি, দেখেছি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রুটিন মেনে কাজ করে যেতে, আমার মা কর্মব্যাস্ত,আমি মা ভক্ত ছেলে বরাবর,আমার সবকিছুতেই মার ছাপ আছে,তারপরও আমি তার মত হতে পারিনি যেমন, একটা শরীরের ছায়ার আকৃতি শরীরের মত হলেও তা শরীর হয় না। মার ইচ্ছা ছিলো আমি আজীবন মার কাছে থাকি, কিন্তু শিক্ষাজীবন শেষ করে নিজের বাড়ি, আমার চিরচেনা শহর ছাড়তে হল,মা বলেছিল ‘কি দরকার যাওয়ার?দেখনা,এইখানে কিছু করা যায় কিনা?’। ঐখানে কিছুই করা যায়নি, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়,এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিলো মনের ভেতর, আমি বুঝতে পেড়েছিলাম, আমার আর একেবারে ফেরা হবে না , আমি মার কাছে থেকে দূরে চলে যাচ্ছি, হলোও তাই, প্রথমে একটু দূরে,তারপর আরও দুরে,জানি না আর কতদুরে যেতে হবে।
গতকালকে ফোন দিলাম মাকে ছুটির দিন দেখে, মা ফোন ধরে বলল ‘আমি কলেজে ব্যাস্ত, সন্ধ্যার পরে ফোন দে’। সন্ধ্যায় ফোন দিলাম,কথায় কথায় মা বলল যে তার মন খারাপ, কারন জানতে চেয়ে জানলাম,তার আগামী মাস থেকে অবসর শুরু, শুনে আমারও মনটা খারাপ হয়ে গেল, মা দুঃখ করে বলল ‘তুই ঢাকাতে থাকলে তোর বাড়িতে গিয়ে থাকতাম’, আমি বললাম ‘ব্যাপার না, তুমি এখানে চলে আসো’, মাও বলল ‘হা তাই করব,আমি তোর ঐখানে চলে আসবো।’ এই পর্যন্তই।
আমি ভালো করে জানি মা কোনদিন আসবে না এইখানে, এও জানি আমি যদি ঢাকাতে থাকতাম মা আমার বাড়িতেও থাকত না, আমি জানি মা কোনদিন তার নিজের হাতে গড়া ‘আমাদের বাড়িটা’ ছেড়ে কোথাও যাবেনা।নিজের ভেতরে একটা অপরাধবোধ জন্ম নিয়েছিলো সেইদিন,তাই মা কে শুধু বলতে চেয়েছিলাম,
‘আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে,
এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া।
মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের’

-১১/০৫/২০১৪,কাজাং।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:০৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঢাকায় শান্তিতে বসবাসের জায়গাগুলো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৪






ঢাকায় শান্তিতে বসবাস করা যায় যেসব এলাকা: একটি বাস্তবভিত্তিক পর্যালোচনা

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী শহর, জনসংখ্যা ও যানজটের দিক থেকে অন্যতম ব্যস্ততম নগরী হলেও এখানকার কিছু কিছু এলাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হেজেমনি, কাউন্টার-হেজেমনি ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৪


একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে নিঃশব্দ অথচ গভীর যুদ্ধ চলে তার ইন্টেলেকচুয়াল সেক্টরে। গোলা-বারুদের বদলে এখানে অস্ত্র হয় কলম, টকশো, নাটক, পাঠ্যবই, এবং ইউটিউব। বাংলাদেশে এই হেজেমনি বহুদিন ছিল প্রথম আলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে দলীয় সরকার কখনই জনগণের সরকার হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৫



সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলেও আওয়ামী লীগ সেটা স্বীকার করলো না। সেজন্য তারা বাকশাল নামে একদলীয় শাসন শুরু করে ছিল। কিন্তু সেনা বিদ্রোহে তাদের বাকশালী শাসনের অবসান ঘটে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রস্থান-পথ কঠিন হয়ে গেছে মুহাম্মদ ইউনূসের

লিখেছেন কবির য়াহমদ্্, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ২:২৪



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (৮ই আগস্ট ২০২৪ থেকে চলমান...) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা ছাড়ার পথ কঠিন হয়ে গেছে।

এমনিতেই তার পদ ছাড়ার প্রবল অনাগ্রহ, তার ওপর আছে ক্ষমতা গ্রহণের পরের মাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃষ্টি ঝরছে সারাদিন

লিখেছেন সামিয়া, ৩১ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৪



ইচ্ছা ছিল প্রথম আষাঢ়ে ছাদে যাবো
বৃষ্টি দেখতে,
যাওয়া হয় নাই।
বৃষ্টি তো আর ক্যালেন্ডার দেখে আসে না।
সে কখনো মাসের আগেভাগেই দরজায় কড়া নাড়ে,
আবার কখনো হুট করে হাওয়ায়
হালকা জলছবি আঁকে।

বৃষ্টি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×