somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরূপ সৌন্দর্যের আধার হালিশহর সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোঃ জাহিদ হোসেন, চবিঃ
শহর থেকে সামান্য দূরে। রেল লাইন পেড়িয়ে বাঁধের ধার পর্যন্ত পশ্চিম দিকে চলে গিয়েছে বেশ কিছু সরু পাঁকা রাস্তা। এর পরেই সমুদ্র উপকূল। স্থানীয় লোকেরা একে বলে সাগর পাড়। প্রথমে চারপাশে নিস্তব্দতার অনুভূতি। একটু পর হঠাৎ যেন এক দমকা হাওয়া এসে আপনাকে ছুঁয়ে গেল। আর কিছুক্ষণ আগের দৃশ্যটাও কেমন যেন বদলে গেল মনে হল। এমনি পরিবেশ পাবেন হালিশহর সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়াতে এলে।


আসতে পারেন এখানে বছরের যে কোনো সময়। তবে সাধারণত শীত আর গ্রীষ্মে বেড়াতে এলে এই সমুদ্র উপকূলটা অনেক উপভোগ করতে পারবেন। গ্রীষ্মে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যটা যেমন সুন্দর শীতেও তেমন সুন্দর। তবে এই সমুদ্র উপকূলকে শীতে পাবেন গ্রীষ্মের চেয়ে একটু আলাদা রূপে।

এখানে সমুদ্রের আগে বন্যা প্রতিরোধক একটা বাঁধ রয়েছে। আর এর আগে বাঁধের সাথে লাগানো রয়েছে একটি হাইওয়ে রোড যা চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে এসে সোজা উত্তর দিকে গিয়ে মিশেছে ফৌজদার হাট পর্যন্ত। চোখে পড়বে বাঁধের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল বড় বড় ঝাও গাছের সারি। তার সাথে আবার রয়েছে হাইওয়ে রোডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরও ছোট বড় বিভিন্ন গাছের সারি। হঠাৎ করে দেখলে মনে হতে পারে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের ছবির মত চওড়া রাস্তাগুলোর মতই কোন রাস্তা। হাইওয়ে রোডটি বাঁধের সাথে লাগানো থাকলেও রাস্তা আর রোডের মাঝে নিরাপত্তা রেলিং রয়েছে। রোডের পূর্ব পাশ জুড়ে দেখা যাবে বিস্তৃত সবুজ ধান ক্ষেত। কিছুক্ষণ পর পর রোডের উপর দিয়ে ছুটে চলছে দুই একটা বড় বড় মালবাহী গাড়ী। বাঁধ থেকে সমুদ্রের দিকে যেতে যেতে অনেকগুলো ছোট-বড় মাছের ঘের দেখতে পাবেন। সেই সাথে দেখতে পাবেন ছোট ছোট নারকেল গাছের সারিও। এর কোথাও বা সারির মাঝখানে ছোট ছোট বাঁশ-ছনের তৈরী পাহারা ঘর রয়েছে।

সৈকতের দিকে যতই যেতে থাকবেন ততই বালি আর কোথাও কোথাও জমে থাকা জোয়ারের পানির সন্ধান পাবেন। তবে তখন ভাটা থাকতে হবে। হঠাৎ করে সৈকতের ছোট ছোট গর্তেও পড়ে যেতে পারেন। তাই একটু দেখে হাঁটবেন। হাঁটতে হাঁটতে অনেক ছোট বড় ঝিনুকের সন্ধান পাবেন। সকাল বেলা বাঁধের ধারে পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে চারদিক। দুপুরে অল্পক্ষণের জন্য তীব্র গরম। তবে তা ভয় পাবার মত তেমন দাবাদহ নয়।

বিকেলটা খুবই স্নিগ্ধ ও পবিত্রতায় ভরা মনে হবে চারপাশ। যতই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসবে ততই মেঘ মুক্ত আকাশে টক টকে লাল সূর্যটা হেলিয়ে যেতে দেখা যাবে সমুদ্রের বুকে। মনে হতে পারে একবারে আস্ত একটা ডিমের কুসুম। আর সেই কুসুমের আলোতে সাগরটাও যেন লাল-হলুদ রঙে রূপ ধারণ করবে। হঠাৎ আকাশে দেখা পেতে পারেন ঘরে ফিরতি ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ন্ত পাখির দল। এছাড়াও সাগর থেকে ভেসে আসা সোঁ সোঁ শব্দ তো মাতিয়ে রাখবেই আপনাকে। তাই আর দেরী কেন আজই একবার ঘুরে আসুন না এমন অপরূপ সৌন্দর্যের আধার হালিশহর সমুদ্র উপকূল থেকে।

যাতায়ত ব্যবস্থা
চট্রগ্রামে এসে দেওয়ানহাট এ আসবেন। সেখান থেকে সোজা পশ্চিম দিকের রোড ধরে হালিশহর নয়াবাজার হয়ে যে কোন যানবাহন দিয়ে চলে আসতে পারেন এই উপকূলে। অথবা অলংকার থেকে রিক্সা বা অন্য কোন গাড়ী দিয়ে সাগরিকা হয়ে উপকূলটির জেলেপাড়ার দিকে চলে আসতে পারেন খুব সহজেই। হালিশহর সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি উত্তর দিকেই জেলে পাড়া অবস্থিত। প্রায় এক থেকে দেড় মাইলের পথ হবে। হেঁটে ও সেখানে যেতে পারেন হালিশহর থেকে।

খাবারের ব্যবস্থা
খাবারের কথা বলতে গেলে তেমন কোন উন্নত মানের খাবার এখানে পাবেন না। কারন এখনো পর্যন্ত এখানে তেমন কোন রেস্টুরেন্ট বা ভাল হোটেল গড়ে উঠেনি। তবে বাঁধের পাশে থাকা ছোট ছোট দোকানগুলোতে হালকা ও শুকনা জাতীয় বিভিন্ন ফাস্ট ফুড পাবেন।

বিনোদনের ব্যবস্থা
অবসর সময় কাটানোর জন্য শুক্রবারে প্রচুর দর্শনার্থী আসে। আর ওই সময় অনেকটা ছোটখাটো একটা মেলার মত পরিবেশ পেতে পারেন এখানে। উত্তর দিকে কিছু দূরে রয়েছে রয়েছে কেওড়া বন। কেওড়া গাছগুলোর শ্বাসমূল মাটির উপরের দিকে উঠে থাকে। দেখতে দারুন লাগবে আপনার থেকে।

হোটেল বা থাকার ব্যবস্থা
এখানে রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। দিনে এসে আপনাকে দিনেই চলে যেতে হবে। তবে সন্ধ্যার পরও পর্যন্ত আপনি সেখানে থেকে সমুদ্র উপকূলের ডুবন্ত সূর্য আর উড়ন্ত ফিরতি পাখির অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
[email protected]

সাম্প্রতি লিখাটি অন্য একজন চুরি করার কারণে আমি নিজে আবার পোস্ট করার জন্য আবার বাধ্য হলাম


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×