(যদি অনেক টাকা থাকতো, সারাটা জীবন ঘুরে ঘুরে পার করতাম।
আমরা এলাকা এবং ভার্সিটির ৭/৮ জন বন্ধু। দেশের ৬৪টা জেলা ঘুরে দেখার সংকল্প নিয়ে গত চার বছর ধরে সেমিস্টারের ফাকে, ঈদের ছুটিতে ছুটে যাচ্ছি দেশের বিভিন্ন জেলায়। যার সর্বশেষ রাঙামাটি।)
পরিকল্পনা হল ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্রগ্রাম হয়ে রাঙামাটি যাব। যাত্রার দিনের ৪ দিন আগে কমলাপুর গিয়ে দেখি পরবর্তী ৭ দিনের কোন আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট নেই। হালকা পাতলা ঘুষ দেখিয়ে বা ই-টিকেটিং কোন ভাবেই ৬টা টিকেট পেলাম না। রাঙামাটি যাব বলেছি যাবই। নির্ধারিত দিনে ৩ ঘন্টা আগেই চলে গেলাম কমলাপুর। টার্গেট তুর্না-নিশিথার পাওয়ার কার মাস্টারের রুম। আর তা না হলে স্ট্যান্ডিং টিকেটে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চট্রগ্রাম। ষ্টেশন গিয়ে দেখি ট্রেন এখনও আসে নাই, বা কখন আসবে কেউ জানে না। এর মধ্যে আর একটা গ্রুপ দেখলাম মেইল ট্রেনের টিকেট কেটে চিটাগাং যাচ্ছে। মেইল ট্রেন সম্পর্কে কারোই তেমন ভাল অভিজ্ঞতা ছিল না, যা ছিল তা অতি ভয়ংকর। সিদ্ধান্ত নিলাম মেইল ট্রেন যেহেতু এক ঘণ্টা আগে ছেড়ে যাবে, তো আমরা আগে মেইল ট্রেন দেখি। না পারলে আন্তনগরতো আছেই। রেলের কর্মচারী, যাত্রী, তথ্যকেন্দ্র এক এক জায়গা থেকে এক এক রকম তথ্য পেয়ে বিভ্রান্ত হয়ে প্লাটফর্মে গিয়া দেখি মেইল ট্রেন "চট্রলা এক্সপ্রেস" দাঁড়ানো। একটা কামরাও খালি নাই। এর মধ্যে আবার দুই চারটা কামরা খাবার ঘর, আনসার এরা দখল করে নিজের মতো ভাড়া দিচ্ছে। আমরা একটা কামরা দেখলাম যেটা প্রায় পুড়াটাই খালি। কামরার নাম খাবার ঘর। জোড়া সীট মুখোমুখি, মাঝে একটা টেবিল। এই কামরায় শর্ত হল টিকেটের বাহিরে এদের কাছ থেকে ৬০ টাকা করে খাবার কিনে খেতে হবে (২পিস রুটি, ২টা টিকা) একটা খাবার, একটা সীট। ৭৫ টাকা করে মেইল ট্রেনের টিকেট কেটে উঠে পড়লাম ঐ কামরায়। ভাগ্য ভালো বলতে হবে আমাদের বা তাদেরও, কারন আমরা ছাড়াও আরও তিনটা গ্রুপ ছিল ঐ কামরায়। সবাই মিলে হৈচৈ করতে করতে, গান গেয়ে, কার্ড খেলে কাটিয়ে দিতে লাগলাম আমাদের প্রথম রাত।
সকালে চিটাগাং ষ্টেশন নেমে লোকাল বাস ধরে চলে গেলাম অক্সিজেন। অক্সিজেন থেকে রাঙ্গামাটির বাস। বি আর টি সি ১১৫ টাকা ও অন্যান্য বাস ৮৫ টাকা। চড়লাম রাঙ্গামাটির বাসে, গন্তব্য রিজার্ভ বাজার, গড়িয়ে চললো আমাদের প্রথম দিন। বাস রাঙামাটিতে প্রবেশের পর চারদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশে আমরা অভিভূত। মুগ্ধ চোখে বাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে রইলাম সবাই। উঁচু নিচু পাহাড়ি সড়ক। কোথাও বাস ফুল গিয়ারে টেনে তোলতে হচ্ছে, আবার কোথাও এমনেতেই গাড়ি নেমে যাচ্ছে। ডানদিকে যদি পরে পাঁচতলা সমান উঁচু পাহাড়, বামদিকে তখন ঠিক তেমনই নিচু খাদ। মুগ্ধতার রেশ না কাটতেই ভর দুপুরে বাস নিয়ে আসলো রিজার্ভ বাজার।
রিজার্ভ বাজারে অনেক হোটেল। দুই একটা বাদ দিলে সবই মধ্যম মানের। আমরা উঠলাম কাপ্তাই লেকের কোল ঘেঁষে "হোটেল লেকভিউ"তে। বড় বড় দুইটা বেডের এক রুম, ভাড়া ৯০০ টাকা। হোটেলের ছাদে উঠে আবার মুগ্ধতার পালা। পাশেই কাপ্তাই লেক, আর লেকের ওপাশেই খুব নিচ দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ। মনে হয় যেন হাত বাড়ালেই ধরা যাবে।
সারাটা বিকাল ঘুরলাম কাপ্তাই লেকে, স্থানীয় বাজারে। রাতে গেলাম লংগাডু। এক পরিচিত জনের সাথে দেখা করলাম, আড্ডা দিলাম তাদের কমলা বাগানে। রাতে হোটেলে ফিরে ছাদে উঠে মাঝরাত পর্যন্ত গান গেলাম। সাথে যোগ দিল আশেপাশের দুই ছাদ থেকে কয়েকজন। শেষ হতে লাগলো আমাদের দ্বিতীয় রাত।
দ্বিতীয় দিন সকাল। ৮টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম হোটেল সংলগ্ন মসজিদ ঘাটে। আগের দিন রাতে ঠিক করা নৌকা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেখানেই। নৌকার প্যাকেজ সাতটা স্পট ঘুরিয়ে বিকালে নামিয়ে দিয়ে যাবে এখানে। মাঝারি সাইজের ট্রলার, ভাড়া- ১৩০০ টাকা।
রাজ বনবিহার, চাকমা রাজার বাড়ি, পেদা টিং টিং, সুবলং ঝরনা, টুকটুক রিসোর্ট, চাং পাং এবং ঝুলন্ত ব্রিজ। বোঁটে উঠার পর জানতে পারলাম পেদা টিং টিং এখন বন্ধ। তবে বোঁট নিয়ে পাশদিয়ে ঘুরে আসা যায়। আর টুকটুক রিসোর্টের মালিকানা পরিবর্তন হয়ে এর নাম হয়েছে এখন জুমঘর।
বোট ছাড়লাম রাজ বন বিহারের দিকে। রাজ বনবিহার বৌদ্ধদের একটি পবিত্র যায়গা। জুতা বাহিরে রেখে ঘুরতে হয় সম্পূর্ণ যায়গা। বেশ কয়েকটা প্রার্থনালয় আছে ভিতরে। এখানে সংরক্ষিত আছে বুদ্ধগুরু সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের দেহ। মৃত দেহটা মেডিসিনের মাধ্যমে সংরক্ষিত আছে একটা সচ্ছ কাঁচের কফিনে। আর পাশেই অলংকৃত চেয়ারে বসে আছে থাইল্যান্ড থেকে করে আনা তাঁর মূর্তি, যেন স্বয়ং জীবিত বনভান্তে। রাজ বিহারের পুরাটা যায়গাই খুব পরিস্কার আর সাজানো, যেন মনে হয় নেপাল অথবা চীন চলে গেছি। আর চারদিকে বাদরের ছড়াছড়ি। তবে এরা খুব ভদ্র, সহজে মিশে যায় খাবার পেলে।
রাজ বিহার থেকে বের হয়ে বোটে চড়ে চাকমা রাজার রাজবাড়ী। এখানে আছে রাজার ব্যবহৃত বাড়ি, রানী তাতু রায় ও মহামান্যবর স্বর্গীয় রাজা নলিনাক্ষ রায়ের ভাস্কর্য। আর আছে শ্রদ্ধেয় রাজগুরু ভদন্ত অগ্রবংশ মহাথের পবিত্র সমাধি।
সূর্য মাথার উপর নিয়ে বোট এখন চলছে সুবলং ঝরনার পথে। সুবলং ঝরনা। ঘাটে বোট রেখে জনপ্রতি ১০ টাকা করে টিকেট কেটে ঝরনার কাছে যেতে হয়। প্রায় ৫০ মিটার উপর থেকে পানি পরে বলে ঝরনার নিচে দাঁড়ালে মনে হয় পানি কম। ঝরনার আশেপাশের পাহাড়গুলাতে ঘুরাঘুরির পর ঝরনার ঠাণ্ডা শীতল পানিতে গোছল।
আবার বেরিয়ে পড়লাম বোট নিয়ে। পথে পড়লো জুমঘর। এটা একটা পাহাড়ি রেস্টুরেন্ট। এখানে একটু দাড়িয়ে বোট নিয়ে চলতে লাগলাম পরবর্তী গন্তব্ব্যের দিকে। লেকের সবুজ পানিকে আরও সবুজ করেছে কোল ঘেঁষা পাহাড়। দেখে মনে হচ্ছে লেকের বুক থেকেই জন্ম পাহাড় গুলোর। উপরে চলছে মেঘের সাথে সূর্যের লুকচুরি খেলা। বোটের ছাদে বসেই মুগ্ধ চোখে দেখছি চারদিক, পালাক্রমে চলছে বোট চালানো আর ছবি তোলা। এর মধ্যেই এক পশলা বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেলো সবাইকে। কিছুদূর এগিয়ে এক পাহাড়ের কোনায় বোট ভিড়িয়ে কয়েকজন নেমে পড়লাম কাপ্তাই লেকের জলে। কিছুক্ষন চললো কাপ্তাইয়ে বুকে দাপাদাপি।
সকাল থেকে ঘুরাঘুরি, সাতারের পর সত্যিই সকলে খুব ক্ষুধার্ত। বোট ভিরালাম চাংপাং রেস্টুরেন্টে। আশেপাশের মধ্যে খাবারের একটাই যায়গা এই চাংপাং। এখানে খাবারের দাম আসলেই বেশি। তবে রেস্টুরেন্টের পরিবেশ আর তাদের স্ব-ঘোষিত (যা চাংপাং ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না) খাবার "ব্যাম্বো চিকেন" খাবারের দামটা অনেকটা ভুলিয়ে দিল। সবজি, ডাল আর ব্যাম্বো চিকেন দিয়ে ৬জন ভাত খেলাম, বিল হল ১১৮০ টাকা।
ভরপেটে আবার হারিয়ে গেলাম প্রকৃতির মাঝে। বোট চলছে এখন ঝুলন্ত ব্রিজের উদ্দেশে। ঝুলন্ত ব্রিজে গিয়ে কিছুটা হতাশ সবাই। বর্ষার কারনে পানি ব্রিজ ছুইছুই। তাই ছবিতে দেখা কল্পনার সাথে পুড়োটা মিললো না। তাও বা কম কিসে। ব্রিজে নৌকার ঘাট ব্যাবহার ও নামার জন্য জনপ্রতি টিকেট কাটতে ১০ টাকা করে ২টা। ব্রিজের দুই পাশেই পাহাড়। পাহাড়ের উপর দাড়িয়ে দেখা যায় গাঁড় সবুজ পানির শান্ত কাপ্তাই লেক। ব্রিজ আর পাহাড়ে ঘুরেই পার করলাম বিকালের অনেকটা সময়। সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরতে হবে বোট নিয়ে। ফেরার পথে পড়ন্ত বিকেল আর ডুবন্ত সূর্য লাল আভা ছড়িয়ে দিল চারিদিকে। স্থানীয় মার্কেটে ঘুরে পার করলাম সন্ধার পর বাকিটা সময়। কেউ কিনলো পাহাড়ি পোশাক, কেউ শাল, কেউবা আবার ব্যাগ। রাতে হোটেলে ফিরে দেখি ছাদে বার-বি কিউ পার্টি হচ্ছে। আমরা অত বিলাশিতায় গেলাম না। কার্ড খেলে, গান গেয়ে, ঘুমিয়ে পার করে দিলাম আমাদের তৃতীয় রাত।
তৃতীয় দিন সকাল। দুই রাতের হোটেল বিল আর টিপস সহ ১৯০০ টাকা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম যারযার ব্যাগ নিয়ে। সকালে কাপ্তাই বাঁধ দেখার পরিকল্পনা পরিবর্তন হল। বাসে চড়ে সোজা চলে এলাম চিটাগাঙের অক্সিজেনে। মাঝে রাঙ্গামাটি থেকে বের হবার সময় বাস চেক হল। দুই জন সেনাবাহিনীর সদস্য বাসে উঠে চেক করল প্যান্টের পকেট থেকে ব্যাগের পকেট সবখানে। অক্সিজেন নেমে ১০ নাম্বার বাসে চড়ে সোজা চলে গেলাম সি-বীচ।
সি-বীচ নেমে আর একবার মুগ্ধ হলাম সাগর দেখে। কিন্তু সমস্যায় পড়লাম থাকার হোটেল নিয়ে। বীচের আশেপাশে প্রশাসনিক কারনে কোন আবাসিক হোটেল নেই।যাও একটা হোটেল হয়েছে, কিন্তু ওটার উদ্বোধন হবে ১ তারিখ মানে ৪ দিন পর। ব্যাগ নিয়ে চলে গেলাম ইপিজেড, হোটেলের আশায়। সেখানে হোটেল আছে একটা। ৬ জনের থাকতে খরচ পরবে ৪০০ টাকা করে ২৪০০ টাকা। উপায় নেই, চলে গেলাম আগ্রাবাদ। সেখানে বেশ কয়েকটা হোটেল দেখে উঠে পড়লাম "হোটেল দুবাই"এ। ২ রুম ৬ বেড, ভাড়া ৭০০ টাকা।
ফ্রেস হয়ে সন্ধায় আবার পতেঙ্গা। গোসল করার প্রস্তুতি নিয়ে গেলাম সবাই। কিন্তু সি-বীচ গিয়ে অবাক হলাম, হলাম আতংকিত। দুপুরে দেখে যাওয়া প্রায় ১০০ মিটার বীচ পেরিয়ে পানি এখন পাথরের ধারে। কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টে ৩ নাম্বার সতর্ক সংকেতে পানিতে গোসল করেছি, কিন্তু পানির এতো ভয়ংকর রুপ আগে দেখিনি। পানিতে নামলে টেনে নিয়ে মারবে না, মারবে পাথরের গায়ে আছড়িয়ে। কি আর করা, পাথরে বসে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখলাম, পাথর পানির সংঘর্ষে ভিজলাম, শুনলাম ঢেউয়ের আক্রোশ গর্জন। পার করে দিলাম চতুর্থ রাতের অনেকটা।
হোটেলের পাঁচতলার বারান্দায় দাঁড়ালে দেখা যায় আগ্রাবাদ চৌরাস্থা। মাঝরাতেও সড়কগুলো ব্যাস্ত গাড়ি আর কন্টেইনারের পারাপারে। রুম দুইটা হওয়াতে শয়তানির মাত্রা বেড়ে গেলো এবং তা থামল জানালার গ্লাস ভাঙ্গা আর একজনের হাত কাটার মধ্য দিয়ে।
চতুর্থ দিন সকালে চার বেডের রুমটা ছেড়ে দুই বেডের রুমে ব্যাগ রেখে চললাম পতেঙ্গার উদ্দেশে।
এবার গোসল করতে হবেই, কিন্তু বীচে গিয়ে আবার মন খারাপ হয়ে গেলো সবার। পানি সেই পাথর পর্যন্তই, তবে রাতের সেই ঢেউ বা গর্জন বিন্দুমাত্রও নেই। পাথরের উপর হাটতে লাগলাম, আর চলতে থাকল ফটোসেশন। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই পানি নামতে শুরু করলো, আর দুই ঘণ্টার ভিতর সেই ১০০ মিটার বীচ। পানি একেবারেই নিরব, আর হেটে চলে যাওয়া যায় বহুদূর পর্যন্ত। সাগরে কিছুক্ষন দাপাদাপির পর কাপড় চেঞ্জ করে নেভাল। নেভালে পাশ ছাড়া ভিতরে ঢুকতে দেয় না তবে আশপাশে ঘুরা যায়। সবুজে ঘেরা নেভালের পাশে কাটালাম কিছুক্ষন। বীচের বার্মিজ মার্কেটে ঘুরে কিনলাম আচার, শুঁটকি। বিকেলের শুরুতেই ধরলাম হোটেলের পথ। স্থানীয় একজনের সুত্রে খবর পেলাম আজ ঢাকা যাওয়ার কোন মেইল ট্রেন নেই। রাত ১১.৩০ এর তুর্না-নিশিথাই ভরসা। হোটেলে ফিরে ফ্রেস হয়ে হোটেল ছেড়ে দিলাম। আগ্রাবাদ থেকে রিক্সায় করে চলে গেলাম ষ্টেশন। ষ্টেশন নেমেই প্রথমেই গেলাম রাতের খাবার খাওয়ার জন্য "হোটেল গুলিস্থান"এ।
ষ্টেশনের রোডের বিপরীতে এই খাবার হোটেলটিতে গো মাংসের একটা স্পেশাল আইটেম পাওয়া যায়। "গরুর কালাভুনা" দাম- ৮০ টাকা। আমরা এর আগে যতবার চিটাগাং হয়ে ঢাকা ফিরেছি, ততবারই এই হোটেলে ঢুকেছি কালাভুনার জন্য।
রাতের খাবার শেষে ষ্টেশনে গিয়ে অবাক হলাম মেইল ট্রেন দেখে। অবাকের মাত্রাটা দ্বিগুণ হলো সেই খাবারের কেবিনটা দেখে। একই চুক্তিতে একই কামরার একই সীটে বসে জনপ্রতি ৭৫ টাকার টিকেট আর ৬০ টাকার নাস্তার বিনিময়ে আমরা বিদায় জানালাম চিটাগাংকে।
ট্রেন চলছে, তাঁর সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে হৈচৈ, কার্ড খেলা, গান্ গাওয়া। মিটার গেজের লাইন ধরে ফেনী, লাকসাম, কুমিল্লা হয়ে ঢাকার পথে এগিয়ে চলছে ট্রেন। এদিকে শেষ হতে চলছে আমাদের পঞ্চম বা শেষ রাত।
সকালে কমলাপুর নেমে চায়ের দোকানে বসে হিসাব নিকাশ। (ট্যুরে খরচ হয় এক হাতে, আর প্রয়োজন মত ২০০/৫০০ টাকা করে নেওয়া হয় সবার কাছ ঠেকে) চা খেতে খেতে আমাদের ট্যুর সরকার ঘোষণা দিল এবারের ট্যুরে জনপ্রতি সরকারি খরচ হয়েছে ২১৩৮ টাকা করে। হিসাবের কাগজে চোখ বুলিয়ে সবাই একত্বতা ঘোষণা করলাম সরকারের সাথে। দোকান থেকে বেড়িয়ে সবাই মিশে যেতে লাগলাম এই পরিচিত ঢাকায়। কেউ মিরপুর, কেউ রামপুরা, কেউ মানিকনগর, কেউবা আবার নন্দীপাড়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৫