কুরআন দাবী করছে যে –
আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, কেউ কি আছে উপদেশ গ্রহণের?(আল-কোরআন)
সাধারণ যুক্তিও বলে স্রষ্টার বিধান সহজ হওয়াই যৌক্তিক। ’সহজ’ কথাটির অনেক অর্থ হতে পারে।কুরআন অবশ্য পরিস্কার করে বলেনি যে সহজ বলতে কেমন সহজ হওয়া।যেমন:
১. অল্প কিছু ব্যখ্যা করলে বোঝা যায়
২. গবেষকদের জন্য সহজ
৩. সর্বসাধারনের জন্য এত সহজ যে ব্যখ্যা ছাড়া বোঝা যায়
কুরআন যদি স্রষ্টার হয় তবে তৃতীয় প্রকারের সহজ হওয়া যৌক্তিক।কুরআনের আরেকটি নাম ফুরকান তথা সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বলতে নিশ্চয়ই এ অর্থ বোঝানোর কথা যে, যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠি যে যু্ক্তিই দেখাক না কেন, কুরআনের যুক্তির কাছে তার কোনটিই টিকবে না।মানবরচিত সকল আদর্শের ভূল দিকগুলো সু্স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিবে। এভাবে সত্য আদর্শ ও মিথ্যা আদর্শের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য নির্ণয় করবে কুরআন।
যদি কুরআন ব্যখ্যা নির্ভর হয় অর্থ্যাৎ কারো কর্তৃক ব্যখ্যা না করলে যদি একা একা বোঝা সম্ভব না হয় তাহলে কুরআন দ্বারা সাধারণ মানুষ কিভাবে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করবে।যার কাছে ব্যখ্যা শুনে বুঝতে যাবেন তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ব্যখ্যা করবেন এবং আপনি তার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিত হবেন এটাই স্বাভাবিক, নয় কি? মুসলমানেরা হাজারও দলে, মতে বিভক্ত।কুরআন যদি সত্য মিথ্যার পার্থকারী হয়,তা তো এমন সহজ হওয়া উচিত যে একজন রাখালও তা কারো কর্তৃক ব্যখ্যা ছাড়া এবং তিনি কুরআনের মানদন্ডে বিচার করবেন যে কোন দল সঠিক আর কোন দল বেঠিক।
আপনি যে বক্তার বক্তব্য শুনছেন তিনি আপনাকে বিভ্রান্ত করছে নাকি সঠিক কথা বলছে তা আপনি কুরআনের মানদন্ডে বিচার করবেন এবং যাচাই-বাছাই করবেন- এটাই যৌক্তিক। বাস্তবে কি এটা সম্ভব?কুরআন সর্বসাধারণের দ্বারা বোঝার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো হল:
১. কুরআন মাতৃভাষায় নয়
২. সর্বশ্রেনীর মানুষ লেখা-পড়া জানে না
৩. কুরআন বাস্তবে এতটা সহজ নয়।
সৃষ্টিকর্তা যদি মানুষকে তার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করে থাকেন এবং তার বিধান দেয়ার ইচ্ছাই করে থাকেন, তাহলে তিনি কি পারতেন না যে-
১. সকল মানুষের জন্য একটি মাত্র ভাষা সৃষ্টি করবেন
২. সর্বশ্রেণীর মানুষই পড়তে সক্ষম হবে সে ব্যবস্থা করতে
৩. তার বিধান এত সহজ হবে যে সর্বসাধারন বুঝতে পারবে নিমিষেই
৪. অথবা তিনি যে কোন ভাবেই হোক তিনি এমন ব্যবস্থা করবেন যে পৃথিবীর সকল মানুষ জানবে তার দেয়া বিধান কোনটি এবং সেগুলো কি কি? তার বিধান জানানোর জন্য যে স্রষ্টাকে পুস্তকের মুখাপেক্ষি হতে হবে এমন অক্ষম আমার স্রষ্টা নন।
না মানা অপরাধ হতে পারে,তবে আগে জানতে হবে স্রষ্টা আদৌ বিধান দিয়েছেন কিনা, দিলে সেটা কোনটি।
কুরআন যদি স্রষ্টা প্রদত্ত বিধান হত তাহলে স্রষ্টার বিধান যে মানের হওয়ার কথা এবং তার পক্ষে যেরুপ শক্ত প্রমান থাকার কথা তার কোনটিই নেই, বরং স্রষ্টার বিধান না হওয়ার পক্ষে বহু প্রমান আছে যার কয়েকটি আমার কিছু পোষ্টে আলোচনা করেছি যার কোনটিই এ পর্যন্ত কেউ খন্ডন করতে পারেনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২১