প্রশ্ন: পৃথিবীর চেয়ে ওজনে ভারী কী?
উত্তর: ‘তুলনা’ কবিতায় কবি শেখ ফজলল করীম ভারী জিনিস প্রসঙ্গে জ্ঞানী ব্যক্তির উক্তি চমৎকারভাবে উল্লেখ করেছেন। স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয়, বিশাল আকারের এই পৃথিবী বুঝি ওজনে অনেক ভারী। কিন্তু জ্ঞানী লোকের বিশ্লেষণে, প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর চেয়ে ওজনে ভারী জিনিসও রয়েছে। তা হলো নিষ্পাপ মানুষকে মিথ্যা দোষারোপ করা। কারণ, নিষ্পাপ ব্যক্তি সমাজ ও দেশের গৌরব। অকারণে কাউকে কষ্ট দিলে, বিনা দোষে কাউকে দোষী করে শাস্তি দিলে যে পাপ হয়, সেই পাপের অপরাধ পৃথিবীর ওজনের চেয়ে অনেক বেশি ভারী হয়ে মানব সমাজকে কলুষিত করে। তাই নিষ্পাপ মানুষকে কখনো দোষ দেওয়া উচিত নয়।
প্রশ্ন: আগুনের চেয়ে কার উত্তাপ বেশি?
উত্তর: আগুন প্রচণ্ড তাপশক্তির অধিকারী। আগুনের উত্তাপ স্বাভাবিকভাবেই ভয়ংকর। আগুনের লেলিহান শিখায় সবকিছু মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিন্তু ঈর্ষার উত্তাপ, আগুনের তাপশক্তির চেয়েও বেশি। ঈর্ষার যন্ত্রণা আগুনে পুড়ে যাওয়ার চেয়েও কষ্টকর। ঈর্ষান্বিত ব্যক্তি মনে কখনো সুখ-শান্তি পায় না। অন্যের সুখে সে কষ্ট পায়। ঈর্ষা আগুনের চেয়ে ভয়ানক এবং ভয়ংকর। ঈর্ষার তীব্রতা মানুষের মানবিক গুণাবলি ধ্বংস করে দেয়। কাজেই আগুনের চেয়ে ঈর্ষার উত্তাপ বেশি।
প্রশ্ন: পাথরের চেয়ে শক্ত কী?
উত্তর: আমরা জানি, এই বিশ্বে পাথরের চেয়ে শক্ত আর কোনো কিছু নেই। কিন্তু ‘তুলনা’ কবিতায় শেখ ফজলল করীম জ্ঞানী ব্যক্তির উক্তির মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, পাথরের চেয়েও দৃঢ়, অটল ও শক্ত হলো সৃষ্টিকর্তার প্রতি অনুগত হূদয়। সর্ব শক্তিমান আল্লাহর প্রতি অনুগত ও ভক্ত ব্যক্তি কখনো অন্যায় কাজ করে না। অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে তার হূদয় সব সময় দৃঢ়, অনঢ় ও অটল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, যা পাথরের চেয়েও কঠিন। সময় বিশেষে পাথর ভাঙা যায়, কিন্তু স্রষ্টার প্রতি অনুগত হূদয় সর্বদাই অনঢ় ও অটল থাকে।
প্রশ্ন: বরফের চেয়ে শীতল কি কিছু আছে? সেটি কী?
উত্তর: জগতের সবচেয়ে শীতল বস্তু হলো বরফ। কিন্তু বরফের চেয়েও শীতল বস্তু আছে। কবি শেখ ফজলল করীম ‘তুলনা’ কবিতায় জ্ঞানী ব্যক্তির উক্তির মধ্য দিয়ে বরফের চেয়েও শীতল বস্তুর সন্ধান দিয়েছেন। সেটি হলো আত্মীয়স্বজনবিমুখ ব্যক্তির চরিত্র। যে মানুষ নিজের আত্মীয়স্বজনের প্রতি বিমুখ, তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ হতে পারে না। সে কারও ভালোবাসা পায় না। আর ভালোবাসাহীন মানুষের হূদয় বরফের চেয়েও ঠান্ডা ও শীতল।
প্রশ্ন: সাগরের চেয়ে ধনবান কে?
উত্তর: অল্পে তুষ্ট ব্যক্তি সাগরের চেয়ে ধনবান। হাসিখুশি ও সন্তুষ্ট হূদয়ে যে মানুষ সবার সঙ্গে মেলামেশা করে সে সবার প্রিয়পাত্র হয়, সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে। ভালোবাসে। সবার ভালোবাসা মানুষের অমূল্য সম্পদ। এই সম্পদ সাগরের মূল্যবান রত্ন-মুক্তার চেয়েও দামি। তাই অল্পতে তৃপ্ত ব্যক্তিই এই জগতে সাগরের চেয়ে ধনবান।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




