somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তসলিমা যা লেখেন তিনি নিজেই তা বিশ্বাস করেন না : তসলিমার প্রাক্তন স্বামী বিচিন্তা সম্পাদক মিনার মাহমুদ ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তসলিমা নাসরিনের সাথে বিয়ে প্রসংগেঃ

তসলিমা নাসরিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলেন। রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সঙ্গে প্রেম ও পরে বিবাহ সূত্রে মাঝেমধ্যে আমাদের আড্ডায় এসেছে। অল্প কিছুদিনের জন্য আমার বিবাহিত স্ত্রীও ছিলেন।

দু’জনের দু’রকম দৃষ্টিভঙ্গি আর দু’রকম আদর্শগত দ্বন্দ্বের কারণেই আমাদের সংসার বেশি দিন টেকেনি। আপনাদের সংসার কতদিন স্থায়ী ছিল? সাত-আট মাস। যে বছর আমি দেশ ত্যাগ করি সে বছরই অর্থাৎ একানব্বইয়ের।

ফেব্রুয়ারির দিকে আমাদের বিয়ে হয় আর ডিসেম্বরে দেশ ত্যাগের সময় আমাদের সেপারেশন হয়। পরে বিদেশ থেকেই আমাদের ডিভোর্স হয়।

জনতার চোখঃ আদর্শগত দ্বন্দ্ব বলতে কি বোঝাতে চেয়েছেন?
মিনার মাহমুদঃ তার লেখালেখিসহ জীবন-যাপনের অনেক কিছুর সঙ্গে আমি একমত আবার অনেক কিছুর সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করেছি। তসলিমা নাসরিন নিয়মিত ‘বিচিন্তা’য় লিখতেন। বিচিন্তাতেই কাজ করতেন অম্লান দেওয়ান। বর্তমানে বাংলাদেশস্থ ফরাসি দূতাবাসে কর্মরত অম্লানের অভ্যাস ছিল খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লেখাপড়া করা। সে হঠাৎ তসলিমা নাসরিনের একটি লেখা আর ভারতের নারীবাদী লেখিকা সুকুমারী রায়ের একটি লেখা নিয়ে আসে। দুটো লেখা মিলিয়ে দেখা গেল তসলিমা নাসরিনের লেখাটি আর সুকুমারী রায়ের লেখা হুবহু এক। দাড়ি-কমাসহ। আকার-ইকারও কোন রকম বদলায়নি। এটাকে আমরা বলি চৌর্যবৃত্তি। তো তৎকালীন বিচিন্তায় তসলিমা নাসরিনের লেখাটি আর সুকুমারী রায়ের লেখা আমরা পাশাপাশি ছাপালাম। যা হয়- এখান থেকেই সাংসারিক ক্ষেত্রে আর আদর্শগত দিক থেকে আমাদের দ্বন্দ্বের সূচনা। আমি আসলে তখন বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি, আমি যখন সম্পাদক তখন সেখানে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে আমার দায়িত্বের এখতিয়ার অনেক বড়। এখতিয়ারই বলে যে, আমাকে লেখাটি ছাপাতে হবে।

অপরাধ যদি আমার ঘরে থাকে তবে আমি অন্যদের অপরাধ কিভাবে ছাপাবো। বিষয়টি তাকে বোঝাতে আমি ব্যর্থ হই। এটিকে সে অত্যন্ত অফেনসিভ হিসেবে নেয়। সে আমাকে বললো, আমি তার সঙ্গে শত্রুতা করেছি। আমি পাল্টা জবাবে বলেছিলাম, এটা রিয়েলিটি, তুমি নিজেই দেখ। তোমার নিজের লেখার পাবলিকেশন্স তারিখ আর সুকুমারী রায়ের লেখা ছাপা হয়েছে তিন-চার বছর আগে। চুরিটি ছিল খুবই কৌশলের চুরি-এটা প্রকাশিত না হলে কেউ জানতো না। পরে তসলিমা নাসরিনের প্রথম বই ‘নির্বাচিত কলামে’ও লেখাটি ছাপা হয়েছিল। যেদিন থেকে এ ঘটনা জানতে পারি সেদিন থেকে আমি তসলিমার লেখালেখির ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। কারণ, একটি মৌলিক লেখা যা অন্যের তা কাট-পেস্ট করার কোন মানে হয় না। মূলত সেই থেকেই আমাদের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

জনতার চোখঃ তসলিমার লেখালেখি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?


মিনার মাহমুদঃ প্রথম কথা, তসলিমা যা লেখেন তিনি নিজেই তা বিশ্বাস করেন না।
তার সঙ্গে বসবাসের সুবাদে এটা আমি জেনেছি। তিনি নারী স্বাধীনতা আর নারী মুক্তির কথা বলেন, কিন্তু নিজে ব্যক্তিগতভাবে যে ধরনের আচরণ করেন, তাতে আমার মনে হয়েছে তিনি নিজেই নিজের লেখা বিশ্বাস করেন না। তার কোন দিকটি আপনাকে এমন মন্তব্য করতে উৎসাহ জোগালো? নারীরা এ দেশে মুক্তি পাক, নারীরা স্বাধীনতা পাক, তিনি জরায়ুর স্বাধীনতা চান, এটা চাইতেই পারেন। তার নিজের জরায়ুর স্বাধীনতা চাওয়া নিজের ব্যাপার। কিন্তু কথায় ও কাজের তো মিল থাকতে হবে। আমি বাইরে ধূমপান বিরোধী কথা বলছি, আর ঘরে ফিরে সমানে ধূমপান করছি। এটা কি স্ববিরোধী নয়।

তার সঙ্গে বসবাসের ফলে আমি এমন স্ববিরোধী নানা আচরণ খেয়াল করেছি। ও নিজেই আসলে নিজের লেখা বিশ্বাস করে না। মানুষ কিভাবে বিশ্বাস করবে। তার লেখালেখির বিষয়ে আমি খুব একটা শ্রদ্ধাশীল নই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×