
আমি পত্রিকা খুব একটা পড়ি না (জাফর ইকাবালীয় ভাব হয়ে গেল নাকি?)। যেদিন সময় পাই প্রথম আলোতে গিয়ে আলোচিত কোন টপিকের কীওয়ার্ড লিখে সার্চ দেই। একসাথে পুরা ঘটনাপ্রবাহ পড়ে নেই। এরকম একটা সার্চ দিলাম আজ "ফজলে নূর তাপস" লিখে। গেল হপ্তায় নাকি তার উপর হামলা হয়েছে, তাও আবার যেন তেন নয়, পুরোনো শত্রু ---সেই মুজীব হামলার ফেরার আসামীদের ছেলে মেয়েদের কাজ নাকি? হুম। এদের ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। বড্ড বেড়েছে।
সার্চ রেজাল্টের সামারীঃ
২১-১০-২০০৯: আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুষ্কৃতকারীরা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায়।...এতে তাপসসহ ১৩ জন আহত হন।
২২-১০-২০০৯: তাপসের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা
২৪-১০-২০০৯: "বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: সাংসদ তাপস.....এ ঘটনায় তিনি অক্ষত থাকলেও মোট ১৩ জন আহত হন।"
তিন দিনের মাথায় তাপস সাহেব আহত খাতা থেকে অক্ষত খাতায় চলে গেলেন? সাধারনত আহত খাতা থেকে লোকে প্রথমে আশংকাজনক পরে নিহত খাতায় যায়। এবার একটু অন্য রকম দেখলাম(!?)।
একই দিনে আরেকটা মজার লেখা আছে। লেখার উপরে আবার লাল কালিতে লেখা "নাশকতা"। লিখেছেন এ জেড এম আবদুল আলী।অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। আমার ধারনা ভদ্রলোক খুবই উচু লেভেলের রসিক, কিংবা উন্মাদ। তিনি লিখেছেনঃ
"যারা তাপসকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল, তারা ভালোই জানে যে বঙ্গবন্ধুর পরিবারটি হচ্ছে সেই ফিনিক্স পাখির মতো, যে পাখির ভস্ম থেকে আবার আরেকটিপাখি জন্ম নেয়।
........লক্ষণীয় হচ্ছে, বাংলাদেশে দুটি বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি দলের কোনো নেতার ওপর কখনো কোনো রকম হামলা হয়নি। তারা এক ধরনের ইমিউনিটির মধ্যে রাজনীতি করে যাচ্ছে। কে তাদের ইমিউনিটি দিচ্ছে, তাও হয়তো বলা যায়।......এ ধরনের অদ্ভুত জিঘাংসা ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, বিরোধী দলের কারও কারও এই বোমা হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
...আওয়ামী লীগের কিছু কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মধ্যে নিত্যদিন মারামারি, টেন্ডারবাজি এই ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধন জোগাচ্ছে। অবিলম্বে আওয়ামী লীগ যদি দলের মধ্যকার এসব অপকর্মকারীকে সামলাতে না পারে তবে নেতাদের জীবনাশঙ্কা আরও বাড়বে।"
মুরুব্বী খারাপ বলেন নাই। তবে আগা মাথা লেজ খুজে পাওয়া একটু কঠিন

৩১-১০-২০০৯; মেহনাজ রশিদ আরও চার দিনের রিমান্ডে।
"বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ফাঁসির আসামি কর্নেল আবদুর রশিদের মেয়ে খন্দকার মেহনাজ রশিদ। আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান, মেহনাজের দুগ্ধপোষ্য শিশুর কথা উল্লেখ করার সঙ্গে সঙ্গেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তুমুল হইচই ও চিত্কার করে এর প্রতিবাদ করতে থাকেন। তাঁরা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেলে রাসেল ও সাংসদ তাপস শিশু ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় তাপস খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলেন। তখন শিশুর বিষয়টি হত্যাকারীদের মাথায় আসেনি। মেহনাজ এক হত্যাকারীরই মেয়ে। তাপসের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় মেহনাজের সম্পৃক্ততা রয়েছে।"
হুম। কর্নেল রশিদ যেহেতু শিশু রাসেলের উপর কোন মায় মমতা দেখায় নাই, সুতরাং বাংলাদেশের কোন আদালত উনার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনির জন্য মানবিকতা দেখাবে না। হুম। আরে ভাই, সাপের বাচ্চাতো সাপই হয়। তাহলে সাপের বাচ্চা দেখা মাত্র কচুকাটা করলে কেমন হয়? গনতান্ত্রিক দেশের জন্য এটা কি খুব বেশী খারাপ হয়ে যায়? নাহ! তা কেন, জাতির পিতার ফ্যামিলির উপরে হাত তুলেছে যে, তার ১৪তম প্রজন্ম পর্যন্ত লানির্যাট (ইদুর মারা ওষুধ) খাইয়ে মারা উচিত। আপনি কি মনে করেন? লানির্যাট নাকি হারপিক...কোনটা ভাল হবে? কর্নেল রশিদদের দুগ্ধপোষ্য নাতির মুখে দুই চামচ হারপিক তুলে দিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। কবে আবার এই ছেলে বড় হয়ে, কি না কি মতলব করে জাতির জনকের বংশধরদের বিনাশ করে। তার আগেই শেষ করে দিলে কেমন হয়, মামলা ডিসমিস।
আমরা কি জাতি হিসেবে জংলীই থেকে যাব?
অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?