#Tour_de_falls_and_cascade
সায়মনের স্ট্যাটাস দেখেই মনটা জানি কেমন করে উঠলো, দেখলাম সায়মন ততক্ষনে ৬টা টিকিট কেনা শেষ, এটা দেখে মন আরো ছটফট করতে লাগলো, ফেবুতে ওকে আমার জন্য ও একটা টিকিট করতে বললাম। ১৫ দিন আগেই ঈদের ছুটিতে বান্দরবন থেকে আসলাম তাই পকেটের অবস্থা ও ভাল না। আমি আবার যতবার কোথাও যাবার কথা ভাবসি সেখানে যাবার জন্য টাকা কখনই বড় ফেক্টর হতে পারে নাই, সেই সময়টাতে টাকা আল্লাহ এ ব্যাবস্থা করে দেন।
যাইহোক আমার টিকিট কাটাও শেষ, আমরা চিটাগাং রোড থেকে রাত ১১.৩০ এর গারিতে করে মিরাসরাই যাব। ১১.৩০ এর গারি আসল ১ টার ও কিছু আগে। আমরা ছিলাম ৯ জন। সবাই নতুন ছিল আমার জন্য দুইএক জন ছারা।সবার সাথে ঘুরে কেমন লাগলো তা আস্তে আস্তে শেয়ার করব।
রাস্তায় মুটামুটি লেভের এর জ্যাম থাকায় আমাদের বাস থেকে নামতে সময় লাগলো সকাল ৭.০০ টা। আমরা বড়তাকিয়া বাজারে নামলাম, বড়তাকিয়া বাজার মিরাসরাই থেকে ১-২ কি:মি এর পথ। আমরা বড়তাকিয়া বাজারে নেমে রাস্তা পার হয়ে বাজারে ডুকলাম চা নাস্তা সব সেরে খৈইয়াছরা যাবার জন্য একটা নসিমন ঠিক করলাম ১৫০ টাকা দিয়ে। রাস্তা মুটামুটি ভালই বলা চলে। ২০ মিনিট এর মধ্যেই আমরা আমাদের গন্তব্যে চলে আসলাম।
***************************************** খৈইয়াছরার দিকে*************************
এখান থেকেই আমাদের হাটার ট্রেইল শুরু করব। প্রায় ৪০ মিনিট হাটার পর আমারা পৌছে গেলাম খৈইয়াছরার ১ স্টেপ এর নিচে। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে নিলাম তখন আবার শুরু হল গুরি গুরি বৃষ্টি, এখন আমাদের যেহেতু পাহারের চুড়ার দিকে এগুতে হবে তাই বৃষ্টিটা আমাদের কাছে সমস্যা ই মোনে হল।সবাই নিজনিজ জিনিস গুলো পলিথিনে মুরে নিলাম।
খৈইয়াছরার ২,৩,ও ৪ নাম্বার স্টেপ দেখতে হলে একটু হিল ক্লাইম্বিং করতে হবে। মুটামুটি খারা পাহার রশি থাকার কারনে কোন সমস্যা ছারা একে একে সবাই উঠে গেলাম। যেহেতু একটু বৃষ্টি হয়েছিল তাই আমরা খুব সাবধানে প্রতিটা পা ফেলছিলাম। যে আগে আগে হাটছে আবার পিছনের জনকে আওয়াজ দিচ্ছে সামনে অনেক পিচ্ছিল ডানে অথবা বায়ে পা রাখুন, আবার একজন আরেক জনকে পারাপারে সহায়তা করা, কোথাও উঠতে না পারলে টেনে তোলা। এক কথায় অসাধারন এক বন্ধন। যাকে বলে ডুয়েল সারভাইবাল।
এই ভাবেই আমরা একে অন্যের সাহায্য সহজোগিতার মাধ্যমে সব গুলো স্টেপ শেষ করে নিছে নেমে আসলাম। আসাধারন এক ট্রেইল ছিল।
******************************খৈইয়াছরা ঝোরনার কোন এক স্টেপ ***************
যখন নিচে নেমে আসলাম তখন চোখ কপালে উঠার অবস্থা, ভেবেছিলাম খৈইয়াছরার সব গুলা স্টেপ শেষ করে নিচের স্টেপ এ এসে শরিরটা এক্টু ঝরনার পানিতে রাখব। কিন্তু নেমেই যেন মনটা খারাপ হয়ে গেল, এজেনো এক পিকনিক স্পট, যার যেখানে খুশি রান্না করছে আর ময়লা আবর্জনা ভিবিন্ন জায়গায় ফেলে রাখছে। চিপস, বিস্কিট এর পলিথিনের তো কোন অবাব ই নেই ।এসব দেখে কি আর মনকে ভাল রাখা যায়!!!!
এই সব আর সয্য হবে না তাই খৈইয়াছরা থেকে রওনা দিলাম ৪০-৫০ মিনিট হাটার পর আবারও চলে আসলাম সেইখানে যেখানে নসিমন আমাদের নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। নসিমন গাড়িকে ফোন করা হল গাড়ির ছেলেটা বেশ ভাল সময় মত। চলেও আসল। আমরা আবার বড়তাকিয়া তে চলে আসলাম। খৈইয়াছরার মিশন এখানেই শেষ করে আমরা এইবার যাব সহস্র ধারা ২ ঝরনা ও ডেম লেক দেখার জন্য।
সহস্র ধারা ২ ঝরনা ও ডেম লেক:
বড়তাকিয়া বাজার এর রাস্তা পার হয়ে আমরা এখন যাব ছোটদারোগার হাট এ জন্য আমাদের কোন একটা যানবাহন দরকার, আমরা সবাই রাস্তায় দারিয়ে আছি গাড়ির জন্য বড়তাকিয়া থেকে ছোটদারোগার হাত প্রায় ১০ কি:মি। অনেক ক্ষন অপেক্ষার পর একটা বাস পেলাম বাসে অনেক লোক তাই আমাদের কে দারিয়ে যেতে হবে ভাড়া ১০ টাকা করে জন প্রতি। বাস একটু এগুতে না এগুতেই স্টপ। রাস্তায় অনেক দীর্ঘ জ্যাম আমরা সিধান্ত নিলাম হাটব কিন্তু সিধান্ত নিয়েই চুপ কেও হাটছে না অবশেষে রিয়াদ ভাই বাস থেকে নেমে হাটা শুরু করল, তার পিছন পিছন আমি আর বাপ্পি ভাই দিলাম হাটা, আর বাকিরাও ততক্ষনে হাটা শুরু করল। কিছুক্ষণ হাটার পর জানতে পারলাম রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনার কারনে এই অবস্থা। আমরা হাটতে হাটতে ৬ কি:মি এর মত হেটে যেখানে দুর্ঘটনা সেখানে চলে আসলাম এসে দেখি দুইটা কারগো মুখামুখি ক্লেস খাইসে। কেও মারা গিয়েছিল কিনা তা জানতে পারি নাই। আবার শুরু করলাম হাটা। করা রোদে অবস্থা খারাপ হবার উপায় তার উপর আবার পীচ ডালা পথ। আমি রিয়াদ ভাই একটা পুরির দোকানে ডুকলাম সবাই পুরি চিপস পানি এই সব খেয়ে একাটু রেস্ট নিয়ে আবার হাটার জন্য রেডি হচ্ছি। এমন সময় আমাদের মুসা ইব্রাহিম বলে ও আর গাড়ি ছারা যাবে না সেটা এখন যত সময় ই লাগুক। আমরা ওকে রাস্তায় পাঠালাম ৫ মিনিটের মধ্যে ও একটা পিকাপ ভ্যান ঠিক করল আমরা তারাতারি করে গাড়িতে চরে বসলাম। আমরা যেখান থেকে গাড়িতে উঠলাম এখান থেকে ছোটদারোগার হাট প্রায় ৪ কি:মি। ছোটদারোগার হাটের আগের যেই যায়গা সেটার নাম বড় দারগার হাট।
আমরা জনপ্রতি ১০ টাকা করে দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আবার হাটা শুরু করলাম।
ছোটদারোগার হাটে নেমে বা দিক ৪০ সেকেন্ড হাটলেই ডান দিকে পিচ ডালাই করা একটা রাস্তা ওই রাস্তা ধরে আমাদের সোজা এক রাস্তা ধরে হাটতে শুরু করলাম।ডানে বায়ে অনেক রাস্তাঘাট আছে কিন্তু
২.আমরা সোজা পথ দরেই হাটব। ১:৩০ ঘন্টা হাটার পর আমরা সহস্র ধারা বাধ প্রকল্প এর একটা ঘর দেখতে পেলাম, অনেক আগ্রহ নিয়ে কাছেও গেলাম গিয়ে দেখি ঘর খানা ফাকা কোন অফিস ছিল বলে মনে হয় না। অ হে আরেকটা কথা বলে রাখি এখানে আপনি চাইলে সিএনজি নিয়েও আসতে পারবেন। আমরা হাটতে ভালবাসি কারন আমরা ট্রাভেলার। হাটার ফলে পুরো গ্রামের পরিবেশ, লোকজনের আচার ব্যাবহার সম্পরকে একটা ভাল ধারনা পাওয়া যায়।
******************************************* ডেম লেক****************************************
সহস্র ধারা প্রকল্পের অফিস ঘরের ঠিক একটু সামনে থেকেই অনেক গুলো সিরি উপরের দিকে উঠে গেসে। সবার আগে যে সিরি গুলো শেষ করে সামনে দারিয়ে আছে সে খুব জোরে জোরে চিল্লাচ্ছে। আমিও তারা তারি উঠলাম। উঠে দেখি এক সবুজ পানির লেক বিশাল আকাশ আর সবুজে ঘেরা লেকটা এত দারুন দেখাচ্ছিল যে কি আর বলব, তারা তারি করে কাদ থেকে ব্যাগ নামিয়ে দিলাম পানিতে এক ঝাপ। আহ কি জে শান্তি বলে বুজাতে পারব না।অনেক ক্ষন লাফালাফির পর সবাই আবার রেডি হচ্ছি সহস্র ধারা ২ এর দিকে, লেকের ঠিক বাম দিক দিয়ে চলে গেছে রাস্তাটি, অসাধারন এক ভিউ। হটাত সায়মনের মাথায় কেরা উঠল ও এখানে হেমক টানাবে, যেই কথা সেই কাজ। হেমক টানার পর সবাই ফটোশেসন শেষও করলাম

***********************আকাশ আর সবুজে ঘেরা পথ*************************
আমরা ৭ জন দিলাম হাটা আনিক, নাবিল আরো দুই জন খারা রাস্তা ঝরনার দিকে নেমে জাওয়ায় ওরা আর সামনে এগুবে নাহ। রিয়াদ ভাই ততক্ষনে খারা রাস্তা নেমে ঝরনার দিকে চলে গেসে, বাপ্পি ভাই এর হাতে ক্যামেরা তাই আমি আর সায়মন তাকে নিচে নামতে হেল্প করলাম উনিও সেই লেভেলের স্লিপ করে নেমে গেলেন তারপর আমিও নামলাম সায়মন ও নেমে গেলো।
*****************************সহস্র ধারা-২********************************
চারদিকে এত নিরব ছিল যে ঝরনাটার সৌন্দর্য আরো বারিয়ে দিল কয়েক গুন। রিয়াদ ভাই তার ব্যাগ রেখে ঝরনার নিচে চলে গেলো।বাপ্পি ভাই সমানে রিয়াদ ভাই এর ছবি নিচ্ছে। হটাত এদিক ওদিক তাকাতেই আমি ঝরনার উপর রংধনু দেখতে পেলাম।
************************* রংধনুতে আমরা***********
পুরা ব্যাপারটাই অন্যেরকমের ছিল। সবাই অনেক ফটোশেসন এখানেও সারলাম, এখন এখান থেকে যেতে হবে সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, যেহেতু খারা ডালু রাস্তা আমাদের এখন উঠতে হবে তাই গাছের লতা দিয়ে একটা সাপোর্ট বানালাম, রিয়াদ ভাই দেখি খারাপ রাস্তাটুকু উঠেগেসে।আমি বাপ্পি ভাই কে একটু হেল্প করাতে কোন সমস্যা ছারা সেও উঠে গেল, জামেলায় পরলাম সায়মন কে নিয়ে হটাত অর পেশিতে টান লাগায় ও আনেকটা পথ উঠে আবার নিচের দিকে পরতে শুরু করল, আমি অকে গাছের লতা ধরতে বললাম অ তাই করল সাথে সাথে আমি আমার গলা থেকে গামছা বের করে গামছা দিয়ে অকে টেনে তুলি। তারপর আবার হাটা শুরু। সবাইকে একসাথে নিয়ে আমরা ছোটদারোগার হাট পৌছালাম, তারপর সবাই পিয়াজু আর ছোলা খেলাম ১০ টাকায় ৫ টা পিয়াজু আর ছোলা চিন্তাই করা যায় না।খাওয়া এখানেই শেষ।
ছোটদারোগার হাট থেকে যাব সিতাকুন্ড। রাতে আমরা সিতাকুন্ড থাকব। ছোটদারোগার হাট থেকে সিতাকুন্ড প্রায় ৪-৫ কি:মি। একটা পিকাপ ভ্যান এ করে আমরা সিতাকুন্ড পৌছালাম ততক্ষনে সন্ধা হয়ে গেলো। এখন আমরা মুটামুটি সবাই ক্লান্ত আমাদের রাতে একটা থাকার ব্যাবস্থা করা লাগবে, আমরা দুই গ্রুপে হোটেল খুজতে লাগলাম, অবশেষে সাইমুন নামের একটা হোটেল এ উঠলাম ৩ টা সিংগেল আর ১ টা ডাবল রুম ভাড়া ৯০০ টাকা। প্রতিটা রুমেই বাথরুম ছিল তবে এতো চিপা যে মুটাসুটা হইলে জামেলায় পরতে পারেন। রিয়াদ ভাই এক রুমে, বাপ্পি ভাই আর অনিক একটায়, সায়মন ও রিয়াদ ভাই এর মত একলা ল্যাটাইব, আমি+ ২ নং মুসা আর আপন তিন জন এক কামরায়

খাবার শেষে সবাই রুমে ডুকলাম রাত ১০ টার কিছু পরে,যে যে যার রুমে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। হটাত সায়মন বলল ২৯ খেলবে আমারও ক্লান্তি চলে গেলে রিয়াদ ভাইকে অফার করার সাথে সাথে সেও রাজি, বাপ্পি ভাই কে ডাকলাম সেও আলসেমি করলও নাহ। সবাই খেলার জন্য রেডি
কিন্তু কার্ড নাই। বাপ্পি ভাই বলল অনিক এর কাছে কার্ড আছে অর কাছ থেকে কার্ড নিয়ে শুরু হল খেলা ১২.৩০ পর্যন্ত খেলা চলল আমি আর সায়মন গেম খেলাম সায়মন খেলা শেষ না করেই চলে গেলে অনিক কে নিয়েই গেম খাবার কাজ টা শেষ করি

***************************** বাঘবিয়ানিতে আমরা***************************
আমরা এখন যাব নাপিত্তাছরা, বাঘবিয়ানি, বান্ধরখুম দেখার জন্য। সব গুলা ঝরনা এক ট্রেইলে।
আমরা সিতাকুন্ড থেকে বাসে করে ( ঢাকার দিকে) নয়দুয়ারি আসলাম, ভাড়া ১৫ করে ছিল ঠিক মনে পরছে না। রাস্তা পার হয়ে একটা চায়ের দোকান আছে নাম তার শহিদ, খুব ই ভাল চা ভানায়। আমরা তার দোকানেই চা নাস্তা করে হাটা শুরু করব।নাস্তা করতে আমাদের বেশ ভালই সময় লাগল কারন আমারা ছিলাম ৬ জন আর তার রুটি বানানোর কেপাসিটি একটাই, তাই একটা রুটি খাবার পর আমাদের অনেক্ষন অপেক্ষা করতে হত।কোনরকমে খাবার সেরে রওনা দিলাম নাপিত্তাছরা ট্রেইল এর দিকে। নাপিত্তাছরায় যেতে মেইন সড়ক থেকে সময় লাগে ৪০ মিনিটের মত তার পর ঝিরি ধরে আর ২০ মিনিট হাটলে পরবে নাপিত্তাছরা। নাপিত্তাছরা পৌছানর ঠিক মিনিট তিন আগে অনিক তার কেমেরা নিয়ে ধপাস করে পানিতে পরে গেলে ভাগ্যে ক্রমে তার কেমেরা অক্ষতই থেকে যায়। অনিকের সব কিছু ঠিকঠাক করে এক্টু হেটেই আমরা ধারালাম নাপিত্তাছরা এর নিচে।এর মাজে কয়েক টা সেল্ফি ও নেয়া হল। এবার আমরা বান্ধরখুম এর দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সামান্য খারা একটু পাহার পরবে নাপিত্তাছরা ঝরনা থেকে উঠতে গেলে। আর বাকি পথ ঝিরি দিয়ে হাটতে হবে। অনেক টা পথ হাটার পর ডানে একটা রাস্তা ( বান্ধরখুম) আর বায়ে ( বাঘবিয়ানি)।
******বান্ধরখুম ঝরনা*****
আমরা যেহেতু বান্ধরখুম যাব তাই ডানে দিলাম হাটা। নাপিত্তাছরা ঝরনা থেকে ৩০ মিনিট এর মত লাগবে বান্ধরখুম যেতে।পথ টা কিছু কিছু জায়গায় অনেক পিচ্ছিল ছিল, সবাই একে অন্যকে সতর্ক করে দিচ্ছে রাস্তা সম্পরকে।একে অন্যের উপর নিরবর করে আমরা বান্ধরখুম পৌছে গেলাম।অসাধারন এক ঝরনা, ব্যাগ রেখে চলে গেলাম ঝরনার নিচে, অনেক ক্ষন ঝরনায় গা বাসিয়ে খোলা আকাশে তাকিয়ে নিজেকে অনেক শুখি মানুষ মোনে হচ্ছিল।এইখানেও ফটোশেসন শেষে করে, এইবার রওনা দিলাম আরেক গন্তব্য বাঘবিয়ানির দিকে। ১৫ মিনিট হেটে চলে আসলাম সেই তিন রাস্তার সামনে এখন আমরা ডান দিকে চলে যাব বাঘবিয়ানির উদ্দেশে।
***********************বান্ধরখুম রোমাঞ্চকর ট্রেল***************************************
আমাদের আরো ২৫ মিনিট হাটতে হবে এই তিন রাস্তার মাথা থেকে। এই ঝিরি টা অসাধারন যদিও একটু পিচ্ছিল। যখন আমরা বাঘবিয়ানি তে পৌছালাম তখন মনে হল যেন কোন গুহার বিতরে প্রবেশ করলাম। সবাই অনেক ক্ষন নিরবে বসে এর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম তার পর ঝরনায় আবারও গোসল দিলাম। তারপর আবার এক রাস্তা ধরেই ফিরলাম। আমার চোখের সামনেই মুসার পরে যাওয়ার সেই সিন আহ কিঁজে চমতকার ছিল, পুলাডায় কথাই বলতে পারছিল না। একটু পর আবার হাটাও শুরু করল। কিছুক্ষণ পর আমরা আবার তিন রাস্তায় চলে আসলাম। এইখান থেকে আমরা ডানে মোর নিয়ে একদম সোজা আগের রাস্তায় হাটা শুরু করলাম। টোটাল ৪ ঘন্টার এক রোমাঞ্চকর ট্রেল ছিল। আমরা নয়দুয়ারি থেকে যাব সিতাকুন্ড ইকো পার্ক।
নয়দুয়ারি থেকে সিতাকুন্ড প্রায় ১০ কি:মি পথ, আমরা যে কোন একটা যানবাহন পেলেই সেটাতে করেই ইকো পার্ক যাব। অনেক ক্ষন দারিয়ে থেকেও কোন গাড়ি পাচ্ছি না, হাত দিয়ে অনেক ইশারা করেও একটা ট্রাক থামাতে পারলাম না। অনেক ক্ষন পর একটা বাস পেলাম হেল্পার আমাদের সবার কাদে ব্যাগ দেখে গাড়ির ছাদে যেত বলল, আমরাও আর দেরি না করে ছাদে চরলাম, আমি বাপ্পি ভাই আর অনিক বাসের সামনে দিকে রিয়াদ ভাই আর সায়মন মাঝে, আপন আর মুসা পিছনের দিকে বসল। আমরা সামনে বসার কারনে গোড়া চালানোর ফ্লেভার পেলাম

ইকো পার্ক আমরা দেখব সহস্র ধারা আর সুপ্ত ধারা ঝরনা।
ইকো পার্কে প্রবেশ করতে হলে টিকিট কাটা লাগবে, যদিও টিকিট এর মূল্য ১০ লিখা আমাদের কাছে ২০ রাখলো বলল কিনা আগে সরকারি ছিল এখন প্রাইভেট তাই ১০ টাকা বেশী। টিকিট কাটা শেষ রওনা দিলাম সহস্র ধারা ঝরনা দেখার জন্য, ১০০০ ফিট উপরে উঠতে হবে পাহারি রাস্তা থেকে পিচ ডালা রাস্তায় হাটাটা কেন যানি অসয্য লাগছিল, রাস্তা যেন আর শেষ হতে চাচ্ছে না। ৫০ মিনিট আপহিল হাটার পর এইবার আমাদের ডাউন হিল নামতে হবে তার পর আবার ঝিরি ধরে হাটতে হবে আরো ২৫ মিনিট। চাইলে ৪০০ টাকা খরচ করলে সিএনজি দিয়ে যাওয়া যাবে তখন শুধু কস্ট করে নিচে আর ঝিরি হাটলেই ঝরনা।এই ঝরনাতে আমরা চার জন গেলাম আমি, রিয়াদ ভাই, সায়মন আর বাপ্পি ভাই। অনেক ক্ষন ঝরনার পাশে বসে থাকলাম তারপর আবারো ঝরনার পানিতে গা বিজিয়ে নিলাম। এবার আবার আগের রাস্তা দরেই চলে আসলাম। আপ হিল থেকে ডাউন হিল নামার সময় বুজেছিলাম উঠার সময় ভালই পেরা হবে ঠিকই পেরা খেত
৪.ঠিকই পেরা খেতে হবে। দুই তিন বার রেস্ট নিয়ে উপরে উঠে গেলাম।
এখন আমরা যাব সুপ্তধারা।
************************************* সুপ্তধারা**********************************
সহস্র ধারা থেকে সুপ্তধারা যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিট সমতল রাস্তা, সমতল রাস্তা থেকে শুধু অনেক গুলো সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলেই ঝরনা। যাতায়াত সহজ বলে এখানে অনেক লোক যায়। সুপ্তধারা বেশী ক্ষন থাকতে ইচ্ছে হল অনেক মানুষ থাকার কারনে। আমরা তারাতারি সুপ্তধারা থেকে রওনা দিলাম। ৭:০০ এর মধ্যে আমরা সিতাকুন্ড চলে আসলাম। রাত ৯.৩০ এ আমাদের গাড়ি ছারবে সিতাকুন্ড থেকে। সারাদিন পেটের ভিতর তেমন কিছু পরেনি, আমরা সিতাকুন্ড আপন রেস্তোরা তে গিয়ে রাতের খাবার খাব, গতকাল রাতে খাবার নিয়ে যা ঘটসে তাতে করে অন্য কোথাও গিয়ে আবার জামেলায় জরাইতে চাই না।সবাই ফ্রেশ হতে গেলাম ততক্ষনে মুসা খাবার অর্ডার করল।আমরা ফ্রেশ হয়ে বসতে না বসতেই খাবার চলে আসল। যেহেতু আমরা সবাই ক্ষুদার্থ তাই কিছু না বলেই খেতে শুরু করলাম। খাবারে যা ছিল- বেগুন ভরতা, পালংশাক, গরুর মাংস, মুরগির মাংস আর দারুন একটা ডাল ছিল সাথে।খাবার শেষে আমরা দই খেলাম তারপর এককাপ চা। ৮:৩০ এর দিকে খাবার হোটেল ত্যাগ করলাম। আমরা আগের দিন রাতেই TR ট্রাভেল এ টিকিট কেটেছিলাম ৪৮০ করে, আমরা আস্তে আস্তে টিকিট কাউন্টার চলে আসলাম তখন ঘরিতে সময় ৯:০০. আর ৩০ মিনিট পর ৯:৩০ এ গাড়ি আসার কথা থাকলেও গাড়ি আসল ১০:০০. রাস্তায় তখন গুরিগুরি বৃষ্টি হচ্ছিল আমাদের গারিতে উঠার জন্য দৌরে রাস্তা পার হতে হল।সারা গারিতে আমরা লোক হলাম ১৫ জন। যে যার যার খেয়াল খুশি মত সিট নিয়ে বসলাম। রাত ২:০০ দিকে আমরা সাইনবোর্ড নামলাম
আমাদের ট্রিপ শেষ হল : ১৭৫০ টাকায়
ট্রিপ টাইপ ছিল : মাঝারি রকমের ট্রেকিং
টোটাল হাটা লাগসে: ৫৫ কি:মি
ট্রিপ ছিল: তিন রাত দুই দিনের
যা যা ছিল ট্রিপ এর আকর্ষণ : খৈইয়াছড়া,সহস্র ধারা-২, ডেম লেক, নাপিত্তাছরা, বান্ধরখুম, বাঘবিয়ানি, সিতাকুন্ড ইকো পার্ক, সুপ্ত ধারা, সহস্র ধারা।
ভ্রমন ট্রেইল : ১ দিন:রাতের বাসে ঢাকা টু মিরাসরাই বড়তাকিয়া, বড়তাকিয়া টু খৈইয়াছড়া, খৈইয়াছড়া টু ছোটদারোগার হাট, ছোটদারোগার হাট টু ডেম লেক ও সহস্র ধারা-২, ডেম লেক টু সিতাকুন্ড
২ দিন: সিতাকুন্ড টু নয়দুয়ারি, নয়দুয়ারি টু নাপিত্তাছরা, বান্ধরখুম, বাঘবিয়ানি।
বাঘবিয়ানি টু নয়দুয়ারি, নয়দুয়ারি টু
সিতাকুন্ড ইকো পার্ক, সুপ্ত ধারা, সহস্র ধারা।