-‘এই রনি , এত বেলা করে কেও ঘুমায় না কি? ওঠো আরে নয়টা বেজে গেছে, ক্লাসে যাবে না ।’
-‘উঁ হু ডিস্টারব করো না তো নীলা, ঘুমাতে দাও প্লিজ।,
-‘ওঠো , না হলে কিন্তু খবর আছে বললাম ।’
প্রচন্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে বসল রনি । বলল, ‘আমার চশমা কোথায় ?’
-‘ঐতো টেবিলের উপরে ।’
-‘দাও তো...’
-‘পারবনা নিজের কাজ নিজে কর।’
রনি আপন মনে গজগজ করতে লাগল । কদিন ধরে তার চোখের সমস্যাটা বেড়েছে । আগে চশমা লাগত না এখন না দিলে সবকিছু ঝাপসা দেখে । চশমার আকারটাও কেমন যেন, চোখে দিলে মনে হয বয়স ১০ বছর বেড়ে গেছে, কেমন যেন বুড়োটে ভাব চলে আসে । আবশ্য এর একটা সুবিধা আছে ইউনিভার্টিতে সবাই সালাম দেয় । মাঝে মাঝে সে চশমা খুলে খালি চোখে দেখতে থাকে । সব কিছু কেমন যেন মত শ্যাডোর লাগে । মনে হয় শ্যাডো ওয়ার্ল্ড ।
সকালের নাস্তা শেষ করে ক্যাম্পাসের পথে রওনা দেয় । রানি ফিজিক্সের ছাত্র প্রথম বর্ষ । তার কাছে বেশ ভালই লাগে এই বিষয়টা । আহা কি মজায় আছেনা এই Subject এর ভেতর ।
ডিপার্টমেন্টের সামনে ওর ফ্র্রেন্ড সার্কেলের সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় রনি আসলে তাকে দেখে ফুয়াদ বলল, ‘ওরে দেখ কে এসেছেন আমাদের সম্মানিত মুরব্বী, বুইড়া বাবা । প্লিজ ওয়েলকাম হিম।’
-‘ওই বান্দর চুপ এত ফটরামি করিস ক্যান্?’
-‘দোস্ত নীলা ভাবী কেমন আছে?’
-‘তোকে না বলেছি নীলার সাথে ভাবী লাগাবি না, ও আমার হবু বৌ , এখনো আমাদের বিয়ে হয়নি । বিয়ের পর যতখুশি ভাবী ভাবী করিস । তার পর নিশা কি খবর, তোর আসেকান আসে নাই ?’
-‘নারে ও পায়ে ব্যাথা পেয়েছে তাই আসবে না ।’
-‘কখনও শুনেছিস মজনু বা রোমিওর পায়ে ব্যাথা হয়েছিল?’
-‘দ্যাখ আর কোন কথা বলবিনা এমনি মনটা খারাপ।’
ফুয়াদ আবার ও বলে উঠল ‘চল পারমানবিক (প্রামাণিক) সারের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে, চল ।’
ওদের ক্লাসে একটা নতুন মেয়ে এসেছে । নাম কণা দেখতে বেশ মিষ্টি। ওকে পটানোর জন্য ছেলেদের লাইন লেগে গেছে । সবাই একটা এক্সট্রা কেয়ারফুল তার প্রতি, তাকে দেখাতে চায় যে সেই সবর্সেরা । কিন্তু বেচারা রনি নিবির্কার । নীলার কড়া নিষেধ কোন মেয়ের সাথে প্রেম করা যাবেনা । রনি সবকিছু অমান্য করতে পারবে, কিন্তু নীলা ....তা কখনোই সম্ভব নয়, কারণ সে নীলাকে ভালবাসে জান প্রাণ সবকিছু দিয়েই ভালবাসে কোন ভাবেই তাকে হারাতে রাজি নয় সে।
ফুয়াদ ও রনি ক্লাশ শেষ করেই আবার সেই আড্ডার স্থানে যথারীতি ফুয়াদ তার জ্বালাময়ী ভাষণ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যে কোন সময় শুরু হয়ে যেতে পারে; অবশেষে শুরু করল ।
-‘রনি তোর ভাগ্যটা খুব ভাল রে দোস্ত ।’
-‘কেন? আমি আবার কি করেছি?’
-‘দ্যাখ কণা বারবার তোর আর হাসছে ।’
আসলেই তো মেয়েটা বারবার রনির দিকে তাকাচ্ছে মাঝে –মাঝে মুচকি হাসছে । রনি এর আগেও এ ব্যাপারটা লক্ষ করেছে কিন্তু পাত্তা দেয়নি । কিন্তু একি সে (কণা) তার দিকেই এগিয়ে আসছে । কেন আসছে? তার সাথে কি ? সে তো কোন মেয়ের সাথে কথায় বলেনা ।
-‘আমি কি এখানে বসতে পারি?’
-‘বসুন, কিন্তু কেন?’
-‘আপনারা এখানে আড্ডা দিচ্ছেন ভাবলাম আমিও যায়, শরীক হই আপনাদের সাথে ।’
-‘ফুয়াদ তোরা গল্প কর আমি উঠি ।’
-‘আমি তো আপনার সাথে কথা বলতে এসেছি।’
-‘আমার সাথে আবার কি কথা ? আমি কারও সাথে কথা বলিনা।’
-‘বলেন না বলবেন। আচ্ছা আপনি এমন কেন?’
-‘আমি এমনই।’
-‘আমাকে স্পেশাল থিউরি অব রিলেটিভিটির নোট টা দিবেন, প্লিজ ।’
-‘না দেবনা । যান এখান থেকে ।,
বলে কণা উঠে চলে যাচ্ছিল এসময় রনি আবার তাকে ডাকল, -‘এই যে শুনুন। আপনি?’
-‘কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন?’
-‘আসলে আমি ... সরি । আপনার সাথে এমন আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। কাল নোটটা নিয়েন ।’
‘আপনি আসলেই অন্যরকম । অন্যরকম সাহেব আমাকে তুমি করে বলেন।’
-‘তাহলে তুমি এখন যাও।’
রনি আজ যে কাজটা করল সেটা কি ঠিক? নীলা যদি জেনে যায় তাহলে কি হবে? সে যে নীলাকে কথা দিয়েছে । তার দুচোখ ক্লান্তিতে ভরে আসছে। মনে হচ্ছে এই সিঁড়ির ওপরেই ঘুমিয়ে পড়বে । ফুয়াদ তার এ অবস্থা দেখে বলল, ‘দোস্ত কি হয়সে তোর? এমন করসিস ক্যান ? অ্যাই ...’
-‘না কিছু না শরীর টা খারাপ করছ্ তুই থাক আমি বাড়ি যায়।’
রনির কাছে চশমা পরেও চারপাশটা ঝাপশা লাগছে, মাথার মধ্যে কেমন যেন করছে । মনে হচ্ছে যে পড়ে যাবে সিড়ির রেলিং টা ধরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে। সে স্বাভাবিক হল । বাসায় গিয়ে দেখল মা সোফায় আধশুয়া অবস্থায় বসে পত্রিকা পড়ছে। ইনার বয়স প্রায় ৫০ তার পরেও চশমার প্রয়োজন হয়না এবং অতিরিক্ত বুদ্ধিবান মহিলা । রনি তার মাকে অত্যান্ত ভালবাসে । তার বাবা মারা গেছে সে যখন এস এস সি পরীক্ষা শেষ করে কলেজে ভর্ত্তি হবে সে সময়। তার বাবা ছিলেন অসম্ভব সুন্দর এবং সুপুরুষ এবং ছেলের সাথে মিশতেন বন্ধুর মত। রনির ছোট চাচা ইকরামুল হকের মেয়েই নীলা । ছোটতেই এদের বিয়ে ঠিক হয়। তখন থেকেই নীলা ও রনির মধ্যে একটা গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । নীলা রনির চেয়ে বছর তিনেকের ছোট ছিল ।
রনি নিজের রুমে গিযে ফ্রেস হয়ে কেবল শুয়েছে এমন সময় নীলা আসলো। আজ যে সবুজ রঙ্গের শাড়ি পড়েছে। সবুজ শাড়িতে তাকে অপ্সরির মত লাগছে। অবশ্য রনির ধারনা সে যে পোষাকই পরুক না কেন তাতেই তাকে মানিয়ে যায়। সে বলল, ‘কি মিস্টার ? খুব টায়ার্ড নাকি?’
-‘হু ।’
-‘তোমাকে এখন কিছু কথা বলব তুমি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবে।’
-‘আচ্ছা’
-‘তুমি কণা নামের কাওকে চেন? তার সাথে কথা বলেছ?’
-‘হ্যাঁ’
-‘কেন? আমি না তোমাকে নিষেধ করেছি তার পরেও কেন তুমি একাজ করলে?
-‘আর করবনা ।’
-‘ঐ মেয়েকে যে তুমি নোট দিতে চেয়েছ, ও টাও দিবেনা।’
এরকম কথা শুনলে রনি আগে চমকে যেত, কিন্তু এখন আর চমকায় না । কেমন করে যেন মেয়েটা সব কিছু জেনে নেয়। এক কথায় রনির সাথে যা ঘটে সব সে বলতে পারে । কিন্তু কিভাবে সেটা রনি এখনও জানতে পারেনি।
প্রামানিক সার ক্লাসে সূত্রটি প্রতিপাদন করছেন । স্যারটা খুব ছটফটে ধরনের পড়ানোর ভঙ্গিটাও অসাধারণ কণার এই স্যারটিকে খুব পছন্দ। যে স্যারের সব ক্লাসেই খুব মনোযোগী থাকে কিন্ত আজ তার কিযে হয়েছে সে কোন ভাবেই ক্লাসে মন বসোতে পারছেনা । বারবার চোখ চলে যাচ্ছে পাশে বসে থাকা রনির দিকে । একনজরে সে তাকিয়ে আছে রনির দিকে। আচ্ছা ছেলেটার মধ্যে কি আছে? যা অন্য ছেলের মধ্যে নেই। তার গাম্ভীযের কারনেই তাকে এত বেশি ভাল লাগে । কণা মনে মনে তাকে অনেক পছন্দ করে । কিন্ত কিভাবে জনাবে তাকে তার মনের ভাব ? মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফাটেনা । অবশ্য কণা নীলার কথা জানে; নীলার সাথে বিয়ে হবে তো কি হয়েছে ? কণার তাকেই চায় । কখন যে ক্লাশ শেষ হয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি ‘এই যে কণা ।’ রনির গলা শুনে সে চমকে তাকল।
-‘এই নাও তোমার নোট । আজকেই ফেরত দিবে বুঝলা ?
-‘হু’
-‘আচ্ছা তুমি থাক, আমি লাইব্রেরীর দিকে যাব ।’
-‘আমিও যাব।
-‘তাই! Ok চল তাহলে ।’
কণাকে খুব অস্থির লাগছে তার ধারনায় ছিলনা যে রনি তাকে নোট দিবে; তার সাথে কথা বলবে, আজ সে মহা খুশী । আচ্ছা , এই খুশির দিনে সেকি তাকে তার মনের মধ্যে যে লুকানো ভালবাসা আছে তার কথা জানাবে? হাঁ আজই মেক্ষম সুযোগ আজ রনিকে তার ভালবাসার কথা জানাবেই জানাবে। সে রনির দিকে তাকাতেও পারছেনা কেমন লজ্জা লাগছে তার । অনেক সাহস করে অবশেষে তার সাথে কথা বলল,
-‘আমাকে আপনার কেমন লাগে?’
-‘মানে!’
-‘মানে আমার সম্পর্কে আপনার ধারনা কেমন?’
-‘তুমি খুব মেধাবী সুন্দরী এবং ভদ্র একটা মেয়ে ।’
-‘এই পর্যন্তই আর কিছুনা?’
-‘আর কি?’
-‘জানেন আপনাকে আমি খুব পছন্দ করি।’
-‘কি?’
-‘জানিনা আপনাকে দেখলেই আমার কেমন যেন মনে হয় খুব কাছে পেতে ইচ্ছা করে। সব সময় আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছ । মনে আপনাকে আমি গভীর থেকে ফিল করি ।’
-‘কি বলছ এসব?,
-‘আমি আপনাকে ভালোবাসি, আই লাভ ইউ।,
রনি প্রায় এক হাজার ভোল্ট এর শক খেল এই মেয়ের কি মাথা খারাপ । তার সবকিছু জেনেও সে এরকম একটা প্রস্তাব দিল কিভাবে? নীলার কাছে কি জবাব দিবে রনি।
-‘কি হল কথা বলছেন না কেন? প্লিজ কিছু বলেন?’
-‘আমি বাড়ি যাব।’
বলেই রনি দ্রুতপায়ে চলতে লাগল । তার চেহারাটা পুরোপুরি বিদ্ধস্ত । রনির মা তাকে দেখে আঁতকে উঠলেন বললেন,
-‘কি হয়েছে তোর ?’
-‘কিছু হয়নি মা,’
-‘কিছু তো হয়েছে বল আমাকে ।’
-‘না তেমন কিছু না ।’ বলে নিজের ঘরে গিয়ে দেখে নীলা বসে আছে। তার চোখ মুখ দিয়ে যেন আগুন ঝরে পড়ছে । সে বলল ‘তুমি আমাকে খুব তাড়াতাড়ি হারাতে যাচ্ছ । আমাকে দেওয়া কথার বর খেলাপ করেছ। আমি তোমাকে ঘৃণা করি । আই হেট ইউ ।’ বলেই সে কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । রনি তো পাথরের মুর্তি হয়ে গেছে। কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা ।
কণার কেমন যেন লাগছে রনিকে কি এসব কথা বল ঠিক হয়েছে। নাহ রনিকে সরি বলার দরকার কিন্তু ক্যাম্পাসতো বন্ধ । তার কাছে অবশ্য রনির বাসার ঠিকানা আছে। একবার গেলে হয়।
কণার বুক ধক-ধক করছে সে রনির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কলিং বেল টেপার কিছুক্ষণ পর দরজা খুলল, সে দেখল তার সামনে তার স্কুলের নিশাত ম্যাডাম দাঁড়িয়ে । যে ম্যাডাম তার প্রিয় শিক্ষকদের একজন। কণা তার পা ছুঁয়ে সালাম করল বলল,
-‘ম্যাডাম আমাকে চিনতে পেরেছেন? আমি কণা ।’
-‘হাঁ পেরেছি । তোমাকে চিনবোনা । এতদিন পর দেখা ।’
-‘দিন নয় ম্যাডাম বছর।’
-‘এসো ভেতরে এসো ।’
কণা মুগ্ধ চোখে ম্যাডামের বাড়ির ভেতর দেখছে । অসাধারণ সাজসজ্জা ছোট বাড়ি কিন্তু এত নিঁখুত ভাবে সাজানো ।
-‘কি দেখছো মা?’
-‘আপনার সাজানো বাড়িটা দেখছি ।’
-‘তা এতদিন পর কি মনে করে ? আর আমার বাসার ঠিকানা পেলে কোথায়।’
-‘আসলে আমি জানতম না এটা আপনার বাড়ি।’
-‘মানে ?’
-‘আমি রনির বাড়িতে এসেছিলাম কিন্তু ভাগ্যগুনে আপনাকে পেয়ে গেলাম ।’
-‘তুমি রনিকে চেন ? ওতো আমার ছেলে ।’
-‘কি বলেন? আমারা তো একই ক্লাসে পড়ি, ওনার সাথে আমার কিছু কথা আছে একটু ডেকে দিন না প্লিজ ।’
-‘রনিতো বাসায় নেই ।’
-‘ম্যাডাম নীলা কোথায়? ওকে যে দেখছিনা?’
ম্যাডাম একটু চমকে গেলেন। বললেন,
-‘নীলা! তুমি নীলাকে চেন?’
-‘না শুনেছি নীলার সাথে নাকি রনির বিয়ে ঠিক হয়ে আছে, কিছুদিন পরেই ওদের নাকি বিয়ে হবে ।’
ম্যাডামের চোখমুখ কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে । তিনি একটা দীঘশ্বাস ফেলে বললেন ‘ছেলেটার মাথাটা এখনও ঠিক হলোনা । আসলে ব্যাপারটা তা না ।’
-‘কি বলছেন ? ম্যাডাম প্লিজ খুলে বলুন ।’
-‘একটা বিশাল ঘটনা আছে । নীলা ওর চাচতো বোন ওরা তিন বছরের ছোট বড়। ছোট থেকেই একে অপরকে খুব পছন্দ করতো । আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে ওদের বিয়ে দেব।’
-‘তারপর...’
-‘ওদের দুজনকে ডেকে বললাম তোমাদের বিয়ে দেব তোমরা কি রাজি? ছোট মানুষতো লজ্জায় দুজনেরই মুখ রাঙ্গা হয়ে গেল তার পর থেকে ওরা আসলেই একে অপরকে গভীর ভালবাসতে শুরু করল ।’
-‘থামলেন কেন ? বলুন।’
-‘বলছি, দেখতে দেখতে ওরা দুজন বড় হল । প্রায় বছর তিনেক আগের কথা রনি এস এস সি পরীক্ষা শেষ করছে। নীলার ক্লাস এইটের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে। এমন সময় একটা রোড এক্সিডেন্টে নীলা মারা যায় ।
কণা পুরাপরি একটা চমক খায় । এসব সে কি শুনছে । ম্যাডাম আবার শুরু করলেন, ‘তারপর রনির মাথায় কি যে হল জানিনা । তার কাছে মনে হতে লাগলো নীলা মরেনি বেঁচে আছে। এবং সে তাকে দেখতে পাই । একা একা তার সাথে কথা বলে । তার কাছে নীলা মৃত নয় জীবিত । কত ডক্তার দেখালাম কোন কাজ হলনা, সে কেবল বলত নীলা মরেব কেন সে তো আমার পাশেই থাকে। ডাক্তার বলল যে , নীলার মৃত্যুতে রনি অনেক বড় মাপের একটা শক পেয়েছে যা সামলে উঠা সহজে সম্ভব নয় । ওর সাব কনসাস মাইন্ড একটা নীলাকে তৈরি করে নিয়েছে যার কোন অস্তিত্ব নাই । নীলা রনির একটা অংশ । রনি যা জানে নীলাও তা জানে ।’
-‘সরি ম্যাডাম আসলে আমিতো জানিনা । জানলে আপনাকে কষ্ট দিতাম না ।ম্যাডাম আমাকে যদি অনুমতি দেন আমি ও রনির ব্যাপারে একটু চেষ্টা করে দেখতে পারি যদি কিছু করা যায় ।’
-‘কি করবা ?’
-‘সেটা পরে জানবেন। শুধু জেনে রাখুন আমি রনিকে অনেক পছন্দ করি ।’
-‘শুধু তাই আর কিছু না?’
-‘পছন্দের চেয়েও অনেক বেশি ।’
রনির আজ প্রচন্ড মাথা ধরেছে। চোখেও সমস্যাটাও বেড়েছে । মাথার মধ্যে কেবল ফিবোনাক্কি সিরিজ টা ঘুরছে ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, ১৪৪,... না আর যাওয়া যাচ্ছে না। বাসায় ফিরে নিজের ঘরে ঢুকতেই রীতিমত একটা চমক খেল সে বলল ,
-‘কণা তুমি , এখানে কি করছ ?’
-‘আমি কণা নই , আমি নীলা ।’
-‘কি বলছ তুমি , এসব?’
-‘ভাল করে দেখ আমি কি নীলার মত নই? দেখ নীলা হাসলে যেমন বা গালে ঢোল পড়ত আমারও পড়ে । আমার ঠোঁটের নিচে তিল আছে নীলারও ছিল মনে কর আমিই তোমার বাস্তব নীলা।’
রনি দেখল আসলেই তো মেয়েটা নীলার মত । হাসিটাও তার মত । আরে এতো নীলা কণা নয় এই মেয়েই নীলা, রনির নীলা । রনি বলল, ‘নীলা তুমি কি জান আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি ।’
-‘জানি আমিও তোমাকে প্রচন্ড ভালবাসি ।’
=0=
--------------------------------------------------------------------
উৎসর্গ- হুমায়ুন আহমেদ স্যার কে।
--------------------------------------------------------------------
সংশোধিত ও পুনরায় প্রকাশিত। মুল পোস্ট এখানে ।
সত্ত্ব -আহমেদ সজীব আমান
আমার আরও কয়েকটি গল্পঃ
গল্প- নীলার কান্না
~~~ছোটগল্প 'চিঠি'~~~
গল্প- শেষ পরীক্ষা
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৫