somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (শেষ পর্ব)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রকৃতির নিয়মেই মানুষের মৃত্যু হবে আর মৃত্যু হলে তার মৃত্যু দেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা হয়। কিন্তু এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কিন্তু স্থান এবং জাতী ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব ১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রথার সাথে। চলুন তাহলে পরিচিত হয়ে নেওয়া যাক ১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সাথে,



০৫) শবদাহঃ
মৃত দেহ পোড়ানোর প্রথা বর্তমান আধুনিক যুগেও বহুল প্রচলিত রয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বি বাদেও খ্রীষ্ট ধর্মালম্বিদের মাঝে এই প্রথার প্রচল দেখা যায়। এই পদ্ধতিতে কাঠ দিয়ে মঞ্চ তৈরি করে মৃত দেহকে পোড়ানো হয়। আর পোড়ানো মৃত দেহর ছাই একটি পাত্রে করে রেখে দেওয়া হয় মৃত ব্যাক্তির আত্মীয় সজনদের কাছে। অনেক ক্ষেত্রেই মৃত ব্যাক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় তার ছাই কোথায় বিসর্জন দেওয়া হবে, সেই ইচ্ছা নিকট আত্মীয়দের কাছে বলে যান। সনাতন ধর্মালম্বিরা সাধারনত মৃত ব্যাক্তির দেহ পোড়ানো ছাই গঙ্গা নদীতে বা অন্য কোন জলাশয়ে বিসর্জন করেন। আর খ্রীষ্টিয় ধর্মালম্বিদের মধ্যে এই ইচ্ছা কিঞ্চিৎ ভিন্ন রকম হয়। যেমনঃ মহাশুন্যে বিসর্জন দেওয়া, পাহাড়ের উপর থেকে বাতাসে উড়িয়ে দেওয়া অথবা ভবিষ্যত প্রজন্মকে তার দেহ পোড়ানো ছাই সংরক্ষনে রাখতে বলা ইত্যাদি ইত্যাদি।



০৪) Strangulation:
Strangulation বা শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করা, এই পদ্ধতি এক আজব আর অমানবিক পদ্ধতি। সতীদাহ প্রথার মত এই প্রথাও বর্তমান বিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত এক পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রচলিত ছিল ফিজিতে। তারা বিশ্বাস করত কোন ব্যাক্তি মারা গেলে তার আত্মাকে যেন একা রাখা না হয়। তাই তার কাছের এবং সব থেকে প্রিয় ব্যাক্তিকেও তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হত, মানে তাকে শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করা হত। আর এক্ষেত্রে মৃত ব্যাক্তির সব থেকে প্রিয় এবং নিকট আত্মীয় নির্বাচিত হত। ফলে মৃত্যুর পরে দুজনে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে। শ্বাসরুদ্ধ করে মৃত্যু বরন করাকে সব থেকে কম কষ্টের পদ্ধতি হওয়ায় এই পদ্ধতিকে ব্যাবহার করা হত।



০৩) নর মাংস ভক্ষণ প্রথাঃ
আরেকটি উদ্ভট এবন অমানবিক প্রথা এই নর মাংস ভক্ষণ প্রথা। কোন ব্যাক্তি মারা গেলে তার পরিবারের লোকেরা মৃত ব্যাক্তির মাংস রান্না করে তা দিয়ে উৎসব পালন করত। তারা বিশ্বাস করত এর ফলে মৃত ব্যাক্তির আত্মা আমৃত্যু পর্যন্ত তাদের সাথেই থাকবে। এই পদ্ধতি চালু ছিল গিনি এবং ব্রাজিলের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিশেষজ্ঞদের মতে যে জাতী গোষ্টি বনে জঙ্গলে বসবাস করত আর তাদের খাওয়ার মত শাক সবজি বলতে কিছুই থাকত না তাদের মধ্যে এই প্রথার বহুল প্রচলন ছিল।



০২) আকাশ সমাধিঃ
এই আকাশ সমাধির সব ছবি যদি সামুতে আপলোড করি তাহলে আমার ব্লক খাবার একটা সম্ভাবনা আছে মনে হয়। তাই নিরাপদে থাকতে এই আকাশ সমাধি নিয়ে লেখার ছবি এখানে দিলাম না। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমার লেখা "তিব্বতিদের আকাশ সমাধি" লেখাটি পড়তে পারেন। এখানে আমি ছবি সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।



০১) সীতাদাহ প্রথাঃ
এই প্রথার সব থেকে বেশি প্রচলন ছিল সনাতন ধর্মালম্বিদের মধ্যে, এছাড়াও আরো কিছু জাতি গোষ্ঠির মধ্যে এই প্রথার প্রচলন ছিল। এই প্রথায়, কোন ব্যাক্তি যদি মারা যেত তাহলে তার বিধবা স্ত্রীকে বাধ্য করা হত তার মৃত স্বামীর মৃত দেহর সাথে নিজেকে পুড়িয়ে মারতে। যদিও বর্তমানে এই প্রথার প্রচলন আর নেই, আর এই প্রথা কে বন্ধো করেছিলেন জানেন কি? এই প্রথা বন্ধের প্রথম দাবি তোলেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। আর আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে উনি সর্বপ্রথম কোন হিন্দু যিনি তার ছেলেকে বিধবার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে এই প্রথা নিষিদ্ধ হলেও ভারতের গ্রাম অঞ্চলে মাঝে মধ্যে একটি দুটি সতিদাহর ঘটনার কথা আজও শোনা যায়। বিষেশজ্ঞরা মনে করেন, মূলত এই প্রথা চালু হবার কারন ছিল বিধবাকে দেখার কেউ থাকত না, আর একা একা কোন নারীর অধিকার নেই বেঁচে থাকার এই চিন্তা ধারার জন্য অথবা মৃত ব্যাক্তির সম্পত্তির লোভে নিকট আত্মীয়রা বেশি আগ্রহী ছিল। যা হোক বর্তমানে এই প্রথা আর চালু নেই, তা না হলে ভারতে নারীদের যে কি অবস্থা হত তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।

পূর্বের পর্বঃ ১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (১ম পর্ব)

বিঃদ্রঃ জ্ঞান কারো ধরা বাঁধা জিনিষ না। আপনি যদি নিজের মনে করে লেখাটি কপি মারতে চান, তা করার অনুমতি রইল। শুধু লেখকের নাম উল্লেখ করবেন। কেননা লেখক তার অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে এরকম লিখেন। লেখাটির লেখকঃ "জানা অজানার পথিক"
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×