যুদ্ধের সিনেমা দেখতে অনেকেই ভালোবাসেন। তবে বেশিরভাগ সিনেমাই থাকে স্থলযুদ্ধের। বন্দুক, গোলা, ট্যাংক, গ্রেনেড ইত্যাদির। আজকে দুইটা ন্যাভাল ফাইটের মুভি নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হল। যুদ্ধ নিয়ে প্রিয় সিনেমার তালিকা করলে আমি এ দুটোকে রাখব। দুইটা সিনেমাই সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত। এবং দুইটাই কোরিয়ান।
১।The Admiral-Roaring Currents (2014)
IMDb লিংক
যদিও ২০১৪ সালে রিলিজ পেয়েছে কিন্তু এই সিনেমার গল্পটা অনেক অনেক আগের। সাহস আর ট্যাকটিক্স এর গল্প। ষোড়শ শতাব্দীর বিখ্যাত জাপানীজ আগ্রাসনের সময়ের। জাপানীজরা নিজদের গৃহযুদ্ধ শেষে কোরিয়া আক্রমণে সর্বশক্তি লাগিয়েছে। জলে-স্থলে সবদিকে পর্যদস্তু করে রাজধানীর দিকে এগুচ্ছে। এদিকে কিংবদন্তী এডমিরাল Yi Sun-Shin সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে কয়েদমুক্ত হয়ে আবার নৌবাহিনীর দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু তার সুবিশাল বাহিনী এখন মাত্র ১৩ টি জাহাজের !! এই ১৩ টি জাহাজ নিয়ে কি জাপানী হানাদারদের ৩৩০ জাহাজের বিশাল নৌবহরের সাথে পাল্লা দেওয়া সম্ভব ? এদিকে সরকার থেকে বারবার আদেশ দেওয়া হচ্ছে “ বাদ দেন নৌ-যুদ্ধের, ১৩ জাহাজ নিয়ে কিইবা করবেন ? তারচেয়ে এখনো যা লোকজন আছে সবাইকে নিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিন, স্থলসীমা রক্ষায় সাহায্য করুন !” সাথে আবার ইন্দন যোগাচ্ছে জাপানীজ গুপ্তচরেরা, মনোবল কমে যাওয়ায় পালাতে লাগল নাবিকেরা সব।
ঝানু এডমিরাল কি করলেন ? সত্যিই কি মাত্র ১৩ টি জাহাজ নিয়ে এই বিশাল প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা সম্ভব ? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কিভাবে আপনি গল্পের জালে ফেঁসে যাবেন নিজেও বুঝবেন না। মন্তমুগ্ধের মত দেখবেন শুধু ! Admiral Yi Sun-Shin এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচিত মুখ Choi Min-sik. বরাবরের মতই চরিত্রে একদম মিশে গিয়েছেন। দেখে মনে হয় আসলেই শত যুদ্ধজয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, স্থিত-ধী একজন এডমিরালকে দেখছি।
২।Northern Limit Line (2015)
IMDb লিংক
এই সিনেমার গল্পটা অবশ্য বলতে গেলে কিছুদিন আগের। এই ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপ ফুটবলের ডামাডোলে ঘটে যাওয়া এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের উপর ভিত্তি করে সিনেমাটা নির্মিত। ইয়েলো সী-তে দুই কোরিয়ার মাঝে বিবাদপূর্ণ জলসীমায় একটা রেখা টানা আছে, এটাই
Northern Limit Line নামে পরিচিত। নর্থ কোরিয়া বরাবরের মতই সীমান্তরেখায় এসে হম্বি-তম্বি করছে, হুমকি দিচ্ছে কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়ে ইমেজ সংকটের ভয়ে কোন সংঘাত চায়না বলে সতর্ক থাকলেও পালটা দিচ্ছেনা। কোরিয়ান আর্মি-নেভীর স্নায়ুচাপের তীব্রতা তখন সর্বোচ্চ সীমায়। না পারে সইতে, না পারে কিছু করতে। সারাদেশ যখন ফুটবল নিয়ে মত্ত তখনই উত্তর কোরিয়ানরা লিমিট লাইন ক্রস করল। আক্রমণ করে বসল দক্ষিণ কোরিয়ান পেট্রোল বোট। খুব একটা পরিচিত মুখ কাউকে না পেলেও সিনেমাটা অনেক উপভোগ্য।
সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। আমাদের রক্তার্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে অনেক সিনেমা থাকলেও এরকম সরাসরি যুদ্ধের বোধহয় কোন সিনেমা নেই। আফসোস। দীপ নেভার আগে নামে একটা সিনেমার খুব নাম শুনেছিলাম, সেটাও রিলিজ পায়নি।
যাইহোক, হ্যাপী মুভি ওয়াচিং !

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩০