জলডাকাতদের আস্তানা উঠে গেল মেঘালয়ের হাওয়ার
শাসানি শুনে সেই থেকে
মৌন নৌকাগুলো, ওদের শ্যালো খুলে নেয়া হয়েছে
যেন কুয়াশার শাদা থান পন্ড করে দিয়েছে ওদের
বিদ্যাসাগরীয় অভিলাষ
কয়েকটি লঞ্চ শুধু ন্যুব্জ ঘোড়ার মত ঝিমাতে ঝিমাতে
কাঠমিস্ত্রীদের সমালোচনা শুনছে
এখনও তুমি চোখের ওপর থেকে সরিয়ে দিচ্ছ কচুরি দাম
এখনও বুঝতে চাইছ শোকগ্রস্ত হবার কী কারণ ঘটেছে
পাতাঝরানো জারুল গাছটির
আমার নতুন পুলওভারটিও তোমায় জিজ্ঞাসু করে তুলছে!
ছোট্ট খাড়ি, তোমার উদ্যম এখনও মেশে নি বঙ্গোপসাগরে
বিভিন্ন পুস্তক থেকে দু-দশ পৃষ্ঠা পড়ে শোনালেও
তুমি বুঝবে না সুদূর মেরুতে রাত্রি কী অর্থ বহন করে, কেনইবা
সূর্য সেখান থেকে পালিয়ে তোমার দৃষ্টিসীমায়
টমাটো হয়ে ফুটতে চায়!
আমাকে বিষণ্ণ দেখে তুমি জিজ্ঞেস করবে না
সিন্ধুঘোটকের চর্বি গলতে শুরু করেছে কি না
তোমার ঘাটে ঘাটে বলিরেখার মত স্পষ্ট হচ্ছে শ্যাওলা
স্রোতশিলাগুলো থিতিয়ে যাবার পর থেকেই তোমাকে
ঘুমিয়ে যেতে বলছি, গান গাইছি
আর তুমি হাততালি দিচ্ছ বাতিল ওয়াগনের চাকায়
লতিয়ে ওঠা কাঁটাঝোপের সাফল্যে!
ঘুমাও, দূরের মাঠে আগুন জ্বালিয়ে
তরুণদের প্রেমের গল্প জমে ওঠার আগেই ঘুমিয়ে পড়
ঐ আগুন পোহাবার পক্ষে তোমার হাত যথেষ্ট দীর্ঘ নয়
তাছাড়া তোমার দাঁতও শিরশির করবে
আমলকিগুলোর টসটসে হাবভাবে
চিটাগুড় আর আলকাতরায় মাখামাখি নদী আর বন্দর
ওদেরও মাথা ভারি হয়ে আছে সপ্তডিঙার বিরহে
স্রোতস্বিনী -- মা-বাবার বকাঝকা শুনতে শুনতে শুকিয়ে যাওয়া
মধ্যবিত্তের আইবুড়ো মেয়ে
যেন বুধবার বিকেলের গৃহগামী ব্যস্ততায় হারিয়ে গেছে
ওর নতুন দুলজোড়া
যেন ওর অপরাধ অশ্রুপাতেরও যোগ্য নয় -- তোমার
অভিযোগের আগেই
ভগ্ন বন্দর তার গুমোট গুদামগুলোতে
তালাবদ্ধ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে
তোমার তলদেশ আবার লালায়িত
ধানচারার গোড়ার অংশ কামড়ে ধরার আশায়
প্রাদেশিক সীমারেখার মত প্রকট হয়ে উঠছে গোপাট -- মুখর হয়ে উঠছে
ভিতরের লাটভিয়া এস্তোনিয়াগুলো
চারদিকে শামুকেরই দেশপ্রেম আজ
দেশান্তরিত মৎস্যসমাজ
হৈ হৈ হাঁসের ডামাডোলে খুব আর্ত বোধ করছে
একটি জলঢোঁড়া
১৯৯৩
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১৩