বাংলাদেশ স্বাধীন হবার ৪২ বছর পর হলেও আমরা স্বাধীনতার বুকে আঁকা কলংক তিলক মুছে ফেলার সফল উদ্যোগ শুরু করতে পেরেছি। দেশের প্রচলিত আইনে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মিরপুরের কসাই হিসেবে খ্যাত কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করতে পেরেছি। এর মধ্য দিয়ে আমাদের দ্বিতীয় বিজয়ের পথ সূচিত হলো। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী যারা ইতোমধ্যে ফাঁসির দন্ড মাথায় নিয়ে অপেক্ষা করছে তাদের মৃত্যুদন্ডও কার্যকর করা সম্ভব হবে এবং সেদিন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে কলংকমুক্ত হবে। আমাদের সেই দিন অতি নিকটে, অপেক্ষার প্রহর গুণছি আমরা সেই দিনের।
অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীরা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা-- এই কথাটা শ্লোগানের মাধ্যমে মানুষের মুখে মুখে উঠে এলেও কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হবার পর পাকিস্তান পার্লামেন্টে তার জন্য শোক প্রস্তাব এই কথাটি আর একবার প্রমাণ করে দিল।
এই পার্লামেন্টে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করায় নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়। কাদের মোল্লার জন্য পাকিস্তানীদের এই মায়াকান্না আরও একটি বিষয় প্রমাণ করে দিল। কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়ে যাবার পর আমি কিছু কিছু লোককে এ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতে দেখেছি। তাদেরকে বলতে শুনেছি যে, কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়নি। তাকে কৌশলে পাচার করে দিয়ে অন্য কাউকে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আজ যখন পাকিস্তান পার্লামেন্ট কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে মায়াকান্না শুরু করেছে তখন ঐ ব্যক্তিরাই বলছে যে, যেহেতু পাকিস্তান পার্লামেন্ট কাদের মোল্লাকে নিয়ে কথা বলছে তাহলে অরিজিনাল কাদের মোল্লারই ফাঁসি হয়েছে। অর্থাৎ কসাই কাদের মোল্লাকেই যে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে তার বিশ্বাসযোগ্য সার্টিফিকেটটা তাদেরকে দিয়েছে পাকিস্তান পার্লামেন্ট ।
জানিনা, এরপর অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় যাখন কার্যকর করা হবে তখন এসব লোকদের কি অবস্থা হবে ? কারণ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক ও কড়া প্রতিবাদ পাবার পর এরপর পাকিস্তান সহজে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে বলে মনে হয়না। তখন এসব লোক, যারা তাদের বিশ্বাসের ঝুড়িটা পাকিস্তানেীদের নিকট বর্গা দিয়ে রেখেছে, সেখান থেকে তারা যতটুকু যেভাবে দিবে ততটুকুই গলাধকরণ করবে, তাদের কি অবস্থা হবে সেটা স্বচক্ষে দেখার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে আমাদেরকে।