somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিরোনামহীন শোক--কবিতা নয়, মনের স্তব্ধতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দুঃখরা কেন এভাবে মিছিল করে আসে
খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জীবনের স্পন্দন থামিয়ে দিয়ে ?

দুঃখরা কেন বার বার ওদেরকেই ভালোবাসে
ওদের হাসি-কান্নায় ভরপুর জীবনকে স্তব্ধতায় ঢেকে দিয়ে ?

ওদের ছোট ছোট স্বপ্নগুলো সুখের ঠাস বুননে
জড়ো হচ্ছিল কর্মমুখর সময়ের হাত ধরে।
ওরা ভালো বেসেছিল স্বজনকে
ভালোবাসা পেয়েছিল প্রিয়জনের কাছ থেকে
ওরা একজনের স্বপ্ন দিয়ে আরেক জনের
সুখের পথ তৈরী করতে চেয়েছিল।

ওদের নিজেদের ঘামে গড়া স্বপ্নভূমে
প্রতিদিন ভোর নামত নতুন আশার বারতা নিয়ে।
প্রতিদিন একটি নতুন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে
ওরা ছুটে কর্মব্যস্ত সময়েল ঘন্টাধ্বনি অনুসরণ করে।
চোখে স্বপ্ন, মুখে স্বপ্ন, বুকে স্বপ্নের মাতামাতি
দিনশেষের আলোয় প্রিয়জনের বুকে খোঁজে নিত সুখের ঠিকানাখানি।

সেই তো একই ভোর এলো চব্বিশে এপ্রিলে
ওরাও বেরিয়ে গিয়েছিল নিত্য দিনের রুটিনে।
কিন্তু ওদের হাতের ছোঁয়ায সময়ের চাকা ঘুরতে না ঘুরতেই
জীবনের চাকা ওদের থেমে গেল রুদ্ধ কপাটে।

চারপাশে ছড়ানো সুখের স্বপ্নগুলো হঠাৎ নেমে আসা
কি এক প্রচন্ড নিনাদে
পথ হারিয়ে ফেলল সেখানেই।
স্নেহ-ভালোবাসার সুতোয় গাঁথা
উচ্ছাস মুখর জীবনের ছবিগুলো
চিরদিনের মতো স্তব্ধ হয়ে যায় মুহূর্তেই।

একটি স্নিগ্ধ সকাল ভয়ংকর বিভীষিকা হয়ে
নেমে এলো ওদের জীবনে।
এরপর শুধু লাশের মিছিলে যোগ হওয়া
নতুন আর একটি লাশ গুণার পালা।
ইট-বালির আস্তরণ আর কংক্রীটের তলায় চাপা পড়া
মানুষের বেঁচে থাকার করুণ আর্তি।
স্বজন হারাদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে সাভারের বাতাস।

উদ্ধারকর্মীদের প্রাণপণ চেষ্টা
মৃত্যুর মিছিলকে আর বাড়তে না দেয়া।
তাদের স্বপ্ন-সাধনা জীবনের মায়া ত্যাগ করা চেষ্টায়
হয়তো জীবন নিয়ে বেরিয়ে আসে একটি মানুষ।
কিন্তু বেশীর ভাগই প্রাণহীন নিথর দেহ।

এরপরও রয়ে যাচ্ছে আটকে পড়া আরও শত শত মানুষ।
কি হবে ওদের ?
নিয়তির কেন এমন নিষ্ঠুরতা ?

কিন্তু সত্যিই কি তাই ?
রানা প্লাজার এই ভয়াবহতা শুধু কি নিয়তির খেলা ?

মানুষের বিবেক বলে, ‌'না'।
বাস্তবতার নিরিখে সেখানে উঠে আসে
অর্থলোভী কিছু পিশাচের বিকৃত মুখচ্ছবি।
খেটে খাওয়া মানুষগুলোর প্রাণের বিনিময়ে
ওরা ওদের স্বপ্নের সৌধ বানাতে চেয়েছিল।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, ওরাই দায়ী। ওরাই দায়ী।

ওদের এই অপরাধের কোন ক্ষমা হতে পারে না
অতীতের ক্ষমা পাওয়া অপরাধের ঘটনাকে
এক সূতোয় বেঁধে ওরা যেন আর
পার পেয়ে যেতে না পারে।
তাই শোকে স্তব্ধ হয়ে থাকার সময় এখন নয়।
এখন সময় এই নর ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী তোলার।

আমরা শাস্তি চাই,
বিচার চাই এই নর ঘাতকদের।
আমাদের শোকের স্তব্ধতার আড়ালে
এই নরঘাতকদের আড়াল করা চলবে না।
এক্ষুণি, এই মুহূর্তে আমরা ওদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বিচার চাই।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

১. ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

আমরা শাস্তি চাই,

বিচার চাই এই নর ঘাতকদের।

আমাদের শোকের স্তব্ধতার আড়ালে

এই নরঘাতকদের আড়াল করা চলবে না।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০১

লেখক বলেছেন: আসুন, আওয়াজ তুলি। আওয়াজ তুলি বার বার।



আমাদের শোকের স্তব্ধতার সুযোগে এই নরঘাতকদের আড়াল করা চলবে না।

২. ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০৬

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: চারদিকে লাশের মিছিল! আমার প্রিয় হাস্নাহেনা ঝাড়টাতে লাশ পঁচা গন্ধ! আমার আমার প্রিয় কবিতার বইটাতেও লাশ পঁচা গন্ধ! আর এই লাশ গুলো আমার বাই বোনেদের! :( আমি তাদের বাঁচাতে পারি নাই! :(

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:০৯

লেখক বলেছেন: আমার সমস্ত অনুভূতিকে আকীর্ণ করে বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠে দুটি চোখ। এনটিভিতে দেখানো সে চোখ দুটি আমার এক বোনের। তার সমস্ত শরীর চাপা পড়েছিল ধ্বংসস্তূপের নিচে। উদ্ধারকর্মীদের টর্চের আলো দেখে সেই চোখ দুটিতে জেগে উঠেছিল বাঁচার আকুলতা। বলেছিল, আমাকে বাঁচান ভাই। কিন্তু সেই মুহূর্তে অসহায় টর্চহাতে সেই উদ্ধারকর্মী। জানিনা এরপর আমার সেই বোনটিকে জীবন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল কি না।



এমনি আরও বহু ট্র্যাজেডিক গল্পে এই মুহূর্তে ছেয়ে আছে বাংলাদেশ। আমাদের সকলের লেখনী সচল হোক ওদের বিরুদ্ধে যারা এর জন্য দায়ী।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোটা না মেধা ? সুপারিশ ! সুপারিশ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭


জুলাই অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কম সমালোচনার শিকার হয় নি। বিএনপি শুরু থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সমন্বয়ক দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । শেখ হাসিনার পতনের পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য কত টাকার প্রয়োজন?

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

আপনি নিজে যদি দরিদ্র-ঘরে জন্মগ্রহণ করে না থাকেন, তাহলে বুঝবেন না দারিদ্র্য কাকে বলে। একজন হাড়-বেরুনো বৃদ্ধা ভিখারিনীর দুঃখ দেখে সমব্যথী হতে পারেন, কিন্তু তার ক্ষুদায় আর্ত পেটের বেদনা অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

করোনার দিনে জার্নাল

লিখেছেন সাজিদ উল হক আবির, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৫০

সরকারী ঘোষণা আসার পর , গতকাল ১৪ দিনের জন্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলো। কারণ, করোনা ভাইরাস। সরকারী ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় নোটিস দিয়েছিল - সকল ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হায়রে কপাল মন্দ..........

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৫৪


চোখ থাকিতেও অন্ধ: এই গানটি খুব সম্ভবত বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে শুনেছিলাম। ইহা একটি প্রেমের সংগীত হবে হয়তো। কিন্তু হটাৎ এই গান পড়ছে কেন ?... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত প্রেম/ভারত বিরোধীতা- কোনটাই অতিরিক্ত করার দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:৪০



অনেকে ভারত প্রেম বেশী করতে গিয়ে দেশের বিরোধীতা করে। অনেকে ভারত বিরোধীতা করতে গিয়ে অনেক বড় প্রতিপক্ষের মোকাবেলার পরিবেশ তৈরী করে।ভারত-আমেরিকার মোকাবেলা করতে গিয়ে আমরা আমাদের কাজটা ঠিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×