২৪ জুলাই, ২০১৪
কথায় বলে, 'মক্কার মানুষ হজ্জ্ব পায়না।" আমার দশাও হয়েছে অনেকটা সেই রকম। আমার বাসার কাছেই হাঁটা পথেই পড়ে CN Tower . অথচ কানাডার টরন্টো শহরে আসার পর পৃথিবীখ্যাত এই CN Tower -এই যাওয়া হলোনা। এই দু:খ রাখি কোথায়?
তাই ঠিক করলাম, যত ব্যস্ততাই থাকুক, CN Tower -টা ঘুরে আসতেই হবে। কোথাও ঘুরতে যাবার আগে অবশ্য আমি আমার প্রিয় এক বড়ভাই, যার নাম 'মামুন ভাই', তাঁর থেকে পরামর্শ এবং তথ্য নিয়ে যাই ওই জায়গাটা সম্পর্কে। এবারও তার ব্যতিক্রম হলোনা। মামুন ভাই জানালেন, ডাউনটাউনের ইউনিয়ন সাবওয়ে স্টেশনে নেমে মিনিট দশেক হাঁটলেই ফ্রন্ট স্ট্রিট-এর ওপরেই Tower. আর ওখানটায় যাবার সবচাইতে ভালো সময় হলো বিকাল বা সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে। তাহলে সূর্য্যাস্তটা উপভোগ করা যাবে সুন্দরভাবে।
খুব কাছ থেকে তোলা CN Tower-এর ছবি
যাবার সময় দেখি টরন্টো ঘুরে দেখার জন্যে এই টুরিস্টবাসগুলোতে টুরিস্টদের সমাগম
যাবার পথে আইসক্রিমের গাড়ি থেকে আইসক্রিম কিনে নিলাম
CN Tower-এর খুব কাছাকাছি এসে পড়েছি
ওই গেইট দিয়ে ঢুকে পড়বো
CN Tower -এ ওঠার জন্যে আরও কিছুদূর যেতে হবে
টিকিট কাউন্টার
এই স্ক্যানার মেশিন দিয়ে সবাইকে চেক করে তারপর CN Tower -এ ঢোকানো হয়
এটা গিফ্ট শপ
এসকেলেটর দিয়ে CN Tower-এর উপরে উঠে গিয়েছি
CN Tower-এর ওপর থেকে দেখা টরন্টো শহর
CN Tower-এর ভেতরে
ছবির বাম দিকে 'বিলি বিশপ' এয়ারপোর্ট দেখা যাচ্ছে। আর নীল পানিটা কিন্তু লেক ওন্টারিও!
CN Tower-এর ওপর থেকে দেখা টরন্টো শহর
CN Tower-এর ওপর থেকে দেখা টরন্টো শহর
CN Tower-এর ভেতরে
CN Tower-এর ভেতরে
এইখানে এ্যাত ভীড় কেন জানেন? সবাই গ্লাস ফ্লোরের উপরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে, এজন্যে।
গ্লাস ফ্লোরের উপরে
এই বালিকারা গ্লাস ফ্লোরের উপরে শুয়ে ছবি তুলছে
গ্লাস ফ্লোরের উপরে
গ্লাস ফ্লোরের উপরে
CN Tower-এর ভেতরে
CN Tower-এর ভেতরে দেওয়ালের গায়ে এর ইতিহাস লেখা আছে
স্কাইপড-এ যাবার পথ
CN Tower-এর ভেতরে ঢোকার সময় আপনি চাইলে CN Tower ব্যাকগ্রাউণ্ডে রেখে ছবি তুলতে পারেন। টাওয়ার ভ্রমণ শেষ হলে যখন আবার এসকেলেটর দিয়ে নিচে নামবেন, তখন সেই ফটো আপনি এই দোকান থেকে ডলারের বিনিময়ে সংগ্রহ করতে পারেন।
এক নজরে CN Tower সম্পর্কিত কিছু তথ্য:
১. CN Tower-এর ওপর থেকে টরন্টো শহর এবং লেক ওন্টারিওর ১৬০ কি.মি. পর্যন্ত চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়।
২. ১৯৭৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ টাওয়ার হিসেবে পরিচিত ছিল।
৩. ১৯৭৩ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৯৭৬ সালে।
৪. পহেলা অক্টোবর, ১৯৭৬ সালে এটি দর্শকদের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
৫. এন্টেনার উচ্চতা 1,815.4 ft, ছাদের উচ্চতা 1,500.0 ft এবং সর্বোচ্চ ফ্লোরের উচ্চতা 1,464.9 ft.
৬. পৃথিবীর প্রথম গ্লাস ফ্লোর CN Tower-এ উন্মুক্ত করা হয় যা ১১২২ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট। এই গ্লাস ফ্লোর ১৪ টি জলহস্তির সমান ওজন বহন করতে সক্ষম।
৭. ২০১১ সালে ভুমি থেকে ১১৬৮ ফুট উচ্চতায় 'এজ ওয়াক' এর ব্যবস্থা করা হয় CN Tower-এ।
৮. আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সগণ ১৯৯৫ সালে CN Tower-কে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
৯. তখনকার সময়ে CN Tower বানাতে ৬৩ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার খরচ হয়েছিল। (বর্তমানে সেটি ২৪৯ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার)।
CN Tower ভ্রমণ শেষে বাইরে বের হয়ে তোলা ছবি
বাসায় যাবার সময় হয়ে এলো
ওই যে দেখেন, স্পাইডার ম্যান!
ডাউন টাউন টরন্টো
ডাউন টাউন টরন্টো
রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ খাবার গাড়ি থেকে বার্গার আর কোক কিনে খেতে খেতে রওনা দিলাম বাসার পথে।
তথ্যসূত্র: CN Tower -এর ভেতরের তথ্যচিত্র এবং উইকিপিডিয়া