রোটাং পাস
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
রোটাং পাস
হিমকন্যা হিমাচল। সব অর্থেই সে অনন্যা। আছে বরফের সীমাহীন সমারোহ। পাহাড়ের আন্তরিক উপস্থিতি। সঙ্গে ফুলে ফুলে রঙিন রূপকথা। আছে পাইনের হাতছানি। আছে শিশুর ঠোঁটে স্বর্গীয় হাসি। হিমাচলের জনপ্রিয় হিলস্টেশন মানালি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে রোটাংপাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ৪১২০ মিটার। রোটাংপাসের যাওয়ার পথটি সুন্দর। নদীর সঙ্গে আছে নিবিড় সখ্যতা। আর মনে আছে বরফ ছোঁয়ার আনন্দ। চনমনে ঠান্ডা। এ পথ চলাতেই আনন্দ। আকাশমুখী রাস্তার ধারে ধারে ছোট্ট ছোট্ট বাড়ি। আর নিচে বয়ে চলেছে বিপাসা নদী। গাছপালা ক্রমশঃ কমতে থাকে। রাস্তায় সদ্য গলে যাওয়া বরফের চিহ্ন। চারপাশে ঝঁুকে পড়া তুষারচূড়ার মাঝে মনছোঁয়া নিসর্গের নেশায় বুঁদ হয়ে এগিয়ে চলা। দূরে তাকালে মনে হয় সারিবদ্ধ পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে মেঘেরা হামাগুড়ি দিচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে অতিরিক্ত তুষারপাত এবং ঝোড়ো আবহাওয়ায় পথ দুর্গম হয়ে যায়।
চলতে চলতেই সামনে রাহালা জলপ্রপাত। পাহাড়ের গা বেয়ে প্রবলবেগে নেমে আসছে জলধারা। রাহালা ছাড়িয়ে মারহি পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া কিন্তু একদম বদলে যায়। এখান থেকে রোটাং মাত্র ১৬ কিলোমিটার। মে মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেশ জমজমাট। তবে বিকেলের পর এখানে লোক আর পাওয়া যায় না। তখন গোটা মারহিতে রাজ করে মেঘ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে হ্যাং গ্লাইডিং।
৮ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে বাঁক নিতে হবে। আর খানিকটা এগোলেই সবুজ স্বর্গ। সোলাং ভ্যালি। রোটাং-এর রাস্তার প্রতিটি বাঁক-ই অনুভূতির ছোঁয়ায় নতুন। ক্রমশঃ বেরিয়ে আসে তুষারচূড়া। চারদিকে অপরূপ বৈচিত্র্যের সমাহার। খানিকটা দূরে, যেখানে পাহাড়ের ঢালে পুরু বরফের আস্তরন, সেখানে গাড়িতে পৌঁছনো যাবেনা। যেতে হবে ঘোড়ায়। পৌঁছনো গেল একেবারে তুষারক্ষেত্রে। সেখানে বরফ খেলার আয়োজন। স্নো স্কুটারও চলছে তীর বেগে। আছে স্লেজ গাড়ি। ইয়াকের পিঠে চড়ে ছোটরা মজা পায়।
গরমের ছুটিতে উপভোগ করার অনন্য স্থান রোটাংপাস। রোটাঙের আবেশভরা হিমেল ছোঁয়া অনেক বড় পাওনা। বিকেলের কনে দেখা আলোয় মানালি ফিরে আসতে আসতে মনে হবে যেন স্বপ্নের ঘোরে কোথা থেকে একটা দিন পার হয়ে গেল।
রোটাং পাস থেকে দেখে নেওয়া যায় লাহুল -স্পিতির। কাছাকাছি আছে গ্রামফু। দেখে নেওয়া যায় তান্ডি, কেলং ছঁুয়ে লাদাখের লে। এছাড়াও মানালিতে দেখার জায়গা অনেক।
কলকাতা থেকে চন্ডীগড় হয়ে মানালি। হাওড়া স্টেশন থেকেও কালকা মেলে চন্ডীগড়। সেখান থেকে সড়ক পথে মানালি ৩১০ কিমি। হিমাচল প্রদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট এবং ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের লাক্সারি বাস যায়। সুমো বা কোয়ালিসও আছে। দিল্লি থেকেও বাসে সরাসরি মানালি যাওয়া যায়। বিমানে চন্ডীগড় ও দিল্লি থেকেও কুলু পর্যন্ত। সেখান থেকে বাসে ৩৮ কিলোমিটার।
রোটাংপাসে থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। মানালিতেই আছে অনেক হোটেল, রিসর্ট। এছাড়া পাশের অ্যালিওতে আছে সুন্দর থাকার ব্যবস্থা। কলকাতা থেকেও বুক করা যায়। মানালি ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে রোটাংপাসের যাওয়া সেরে ফেলতে হয়। সকালে বেরিয়ে বিকেলেই ফেরা।
উপযুক্ত সময় এপ্রিল থেকে জুূন এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর।
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।
ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং
ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ
চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।
সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............
শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে
শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার করছেন। ভারত চাচ্ছে বাংলাদেশে একটি অশান্তি হোক। কারণ ভারত একটি মসনদ হারিয়েছে। সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রতিদিন একটি সোনার ডিম পেড়ে নরেন্দ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন