(গল্পটা একটা ইংরেজী গল্পের ছায়ায় আমি বাংলা করলাম। এর অবশ্য একটা কারন আছে...)
সাইকোলজির টিচার ক্লাশে ঢুকেই বল্লেন
- আজ পড়াবো না।
সবাই খুশি। টিচার ক্লাশের মাঝে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসলেন। বাইরে বৃষ্টি, বেশ গল্পগুজব করার মত একটা পরিবেশ। ষ্টুডেন্ডদের মনেও পড়াশুনার কোন প্রেশার নাই। টিচার খুব আন্তরিকতার সাথেই পাশের মেয়েটাকে বল্লেন
- জননী তোমার কি বিয়ে হইছে?
মেয়েটা একটু লজ্জা পেয়ে বল্লো
- জ্বী স্যার। আমার একটা দুই বছরের ছেলে আছে।
টিচার চট করে দাড়াইলেন। খুব হাসি হাসি মুখ নিয়ে বল্লেন
- আমরা আজ আমাদেরই একজনের প্রিয় মানুষদের নাম জানবো।
এই কথা বলেই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বল্লেন
- মা আজকে তুমিই টিচার। এই নাও চক, ডাষ্টার। যাও তোমার প্রিয় দশ জন মানুষের নাম লেখো।
মেয়েটা বোর্ডে গিয়ে দশ জন মানুষের নাম লেখলো।
টিচার বল্লেন
- এরা কারা? তাদের পরিচয় ডান পাশে লেখো।
মেয়েটা এদের পরিচয় লেখলো। সংসারের সবার নামের পাশে দুই একজন বন্ধু, প্রতিবেশীর নামও আছে।
টিচার এবার বল্লেন
- লিষ্ট থেকে পাঁচ জনকে মুছে দাও।
মেয়েটা তার প্রতিবেশী, আর ক্লাশমেটদের নাম মুছে দিলো। টিচার একটু মুচকি হাসি দিয়ে বল্লেন। আরো তিন জনের নাম মুছো।
মেয়েটা এবার একটু ভাবনায় পড়লো। ক্লাশের অন্য ষ্টুডেন্টরা এবার সিরিয়াসলি নিলো বিষয়টাকে। খুব মনযোগ দিয়ে দেখছে মেয়ার সাইকোলজি কিভাবে কাজ করছে। মেয়েটার হাত কাঁপছে। সে ধীরে ধীরে তার বেষ্ট ফ্রেন্ডের নাম মুছলো। এবং বাবা আর মায়ের নামও মুছে দিলো। এখন মেয়েটা রিতিমত কাঁদছে। যে মজা দিয়ে ক্লাশটা শুরু হয়েছিলো, সেই মজা আর নাই। ক্লাশের অন্যদের মাঝেও টানটান উত্তেজন।
লিষ্টে আর বাকী আছে দুইজন। মেয়েটার হাজবেন্ড আর সন্তান। টিচার এবার বল্লেন, আরো একজনের নাম মুছো। কিন্তু মেয়েটা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। কারো নাম মুছতে সে আর পারছেনা। টিচার বল্লেন
- মা গো, এইটা একটা খেলা। সাইকোলজিক্যাল খেলা। জাষ্ট প্রিয় মানুষদের নাম মুছতে বলছি। মেরে ফেলতে তো বলি নাই!
মেয়েটা কাঁপা কাঁপা হাত নিয়ে ছেলের নামটা মুছে দিলো।
টিচার এবার মেয়েটার কাছে গেলেন বোর্ডের কাছে। পকেট থেকে একটা গিফ্ট বের করে বল্লেন
- তোমার মনের উপর দিয়ে যে ঝড়টা গেলো তার জন্য আমি দুঃখিত। আর এই গিফ্ট বক্সে দশটা গিফ্ট আছে। তোমার সব প্রিয়জনদের জন্য। এবার বলো, কেন তুমি কোন নামগুলো মুছলে।
মেয়েটা বল্লো-
প্রথমে বন্ধু আর প্রতিবেশীদের নাম মুছে দিলাম। কারন তবু আমার কাছে বেষ্ট ফ্রেন্ড আর পরিবারের সবাই রইলো। পরে যখন আরো তিন জনের নাম মুছতে বল্লেন, তখন বেষ্ট ফ্রেন্ড আর বাবা মায়ের নাম মুছে দিলাম। ভাবলাম, বাবা মা তো আর চিরদিন থাকবে না। আর বেষ্ট ফ্রেন্ড না থাকলে কি হয়েছে? আমার কাছে আমার পুত্র আর তার বাবাই বেষ্ট ফ্রেন্ড। কিন্তু সবার শেষে যখন এই দুইজন থেকে একজনকে মুছতে বল্লেন। তখন আর সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। পরে ভেবে দেখলাম, ছেলেতো বড় হয়ে একদিন আমাকে ছেড়ে চলে গেলেও যেতে পারে। কিন্তু ছেলের বাবাতো কোন দিনও আমাকে ছেড়ে যাবে না।
-০-
এবার মূল কারনটা বলি।
একজন বউ কখনোই স্বামীর বিরুদ্ধে কোথাও নালিশ দেয়না। কারন সব ছেড়ে ছুড়ে মেয়েটা তার স্বামীকেই সব কিছু ভেবে সংসারটা শুরু করে। আর এই বউ যখন স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার দেয়। তখন ব্যাক্তি আমি মনে করি অবশ্যই পুরুষটা দোষী। এই ঘটনার ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। কিন্তু এক্সেপশন কেন নট বি দা এক্সামপল।
আমার বউ যেদিন আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তুলবে। সেদিনই যেন আমার বন্ধু, বান্ধব সবাই আমাকে ত্যাগ করেন। দেশীয় আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে গেলেও। আপনাদের আদালত থেকে যেন আমার রেহাই না মিলে।
খুব কাছের একজন মানুষের অধঃপতন দেখে মনটা একেবারেই ভেঙ্গে গেছে। সংসার আমার কাছে সবার আগে। বন্ধু, বান্ধব, চাকরী, ব্যবসা সব..সব কিছুর আগে সংসার। এই সংসারের প্রতি যার সম্মান নাই, ভালোবাসা নাই। সেই মানুষদের ধংস হোক। নির্মম, নিষ্ঠুর ধংস।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৯