somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেসিপি পোস্টঃ সবজি খিচুড়ি + গরুর গোশত ভূনা (সাথে সালাদ ফাউ):P

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিস থেকে ফিরে ড্রেস চেন্জ করেই রুটিন মত দিলাম একটা ঘুম। প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম সাড়ে দিন ঘন্টা পরে। কিচেনে গিয়ে দেখি রান্না করা কোন খাবার নাই। :(

ভীষন মন খারাপ। একটু পর মেজাজটাও খারাপ হয়ে গেল যখন কিচেনের ক্যাবিনেটে ঝোলানো রোস্টারে দেখলাম আজ রবিবার, তারমানে আজকে আমার রান্নার দিন।X((

এইবার খাবার না থাকার রহস্য বুঝলাম। কি আর করা! পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়েই রাধতেঁ বসে গেলাম।:(

শিরোনামহীন সবজি খিচুড়ী রান্না করার বুদ্ধি দিল। আমি বল্লাম সেই সাথে থাকুক ভূনা গোশত। ও সায় দিয়ে বল্ল পারলে সাথে সালাদও করো।:)



ফ্রিজে সবজি বলতে যা পেয়েছি, জেদ করে সব এনে জড়ো করে রাখলাম কিচেন ডেস্কে


ফ্রিজ থেকে গোশত বের করে কুসুম পানিতে ভিজিয়ে রাখলাম।


চপিং বোর্ড আর চাকু (এইটাকে চাকু না বলে চাপাতি বলাই ভাল:|)


সব সবজি থেকে একটু করে কেটে একটা প্লেটে গুছিয়ে রাখলাম। এখানে আছে, ফুলকপি; বেগুন; কুমড়ো; গাজর; লাল আর সবুজ ক্যাপসিকাম; মরিচ।


সালাদের ইনগ্রেডিয়েন্টঃ টমেটো, শসা, গাজর, মরিচ, পেয়াঁজ আর ধনেপাতা কুচি। শসাগুলো ইটালিয়ান স্টাইলে কাটা। সাথে অলিভ থাকলে ১৬ কলা পূর্ন হতো অবশ্য।
সাথে এক টুকরো লেবু আর মাঝে খানিকটা সরিষার তেল। সালাদে এ দুটো জিনিস মিশিয়ে দিলে সালাদের স্বাদ দ্বিগুন বেড়ে যায়। বিশ্বাস না হলে পরখ করেই দেখুন না!:P



আলু, ডাইস করে কাটা। ভূনা গোশতে আলু দিতে হয় না, কিন্তু আলু আমাদের বাসার সবার খুবই ফেবারিট। প্রতিদিনের কোন না কোন মেনুতে আমরা আলু রাখার চেষ্টা করি।



চারটে বড় সাইজের পেয়াঁজ কুচি, সাথে ৫টা মরিচ। খিচুড়ী আর গোশত উভয়ের জন্য।


৪ কাপ ধোয়া চাল; খিচুড়ীর জন্য


দেড় কাপ ধোয়া মসুর ডাল; খিচুড়ীর জন্য


গোশতের জন্য গরম মসলা


দু চা চামচ হলুদ, খিচুড়ীর জন্য


ছয় চা চামচ রাধুনিঁ গোশতের মসলা


২০০ গ্রাম পাম তেল,


১০০ গ্রাম আয়োডিনযুক্ত নুন



চালের উপর কাটা সবজিগুলোকে ছড়িয়ে দিয়েছি।



সবজি, চাল, তেল, নুন , পেয়াজ আর হলুদের মিক্সার
পানিঃ পরিমান মত



গোশতের উপর আদা-রসুন বাটা (দেড় চা চামচ করে), গরম মসলা মরিচ আর পেয়াজঁ।



এরপর রাধুঁনি মসলা, তেল আর নুন মিশিয়ে সোজা ঘুটা। (ব্যাচেলর অথবা এক্সপ্রেস পদ্ধতি)



আলু মেশানোর পর

এরপর চুলায় বসিয়ে দিন। মিনিট পাঁচেক পর হালকা নেড়ে দিয়ে পরিমানমত পানি দিয়ে ঢেকে দিন।



রাইস কুকারে খিচুড়ি হয়ে বসে আছে। সময় লেগেছে ২৭ মিনিট।



গোশতও হয়ে গেছে, (সময় খেয়াল করি নাই। চড়িয়ে দিয়ে ছবি আপলোড করতে বসে গিয়েছিলাম! একটু পর গিয়ে দেখি প্রায় হয়ে গেছে!:()

শিরোনামকে বলেছিলাম ১০ মিনিট পর আমাকে গোশত নেড়ে দেবার কথা মনে করিয়ে দিতে, সে দেয়নি। X( এইজন্য গোশতের নীচ দিয়ে হালকা লেগে গিয়েছিলো। সময় মত যাওয়াতে রক্ষা।



এই ছিলো আমার গত রবিবার রাতে নিজ হাতে রান্না করা ডিনার। :)


ছবিগুলো আম্মুকে দেখালাম। আম্মু তো বিশ্বাসই করতে পারছে না! করবে কিভাবে? দেশে থাকতে যে ছেলেকে এক গ্লাস পানিও আম্মুকে ঢেলে দিতে হয়েছে, সে ছেলে এমন দাবী করলে বিশ্বাস করাটা কষ্টই বৈকি!


এই পোস্টা দেয়ার কথা ছিলো তিন দিন আগে। রান্না করে ছবি তুলে রিসাইজ করে অর্ধেক আপলোড করার পর পিসির যান্ত্রিক গোলযোগের কারনে পোস্টাতে পারিনি। পোস্টানো তো দূরের কথা, তিন দিন নেটেই ঢুকতে পারিনি। তাই টাটকা টাটকা ছবি দিয়ে এই বাসি পোস্ট।:(

বিলিভ ইট অর নট, জীবনে প্রথম এই আইটেম রান্না করলাম। রান্না শেষে শুধু খাবারের ঘ্রান শুকেঁই রুমমেট দুইজন ১০ মুখে প্রশংসা করল। খাবার সময় তারা কোন কথা বলেনি। শুধু গোগ্রাসে গিলেছে। পরে দেখি আমার ভাগের অংশ নিয়েই প্রায় টানাটানি পরে যাবার মত অবস্থা! তাই সুযোগ বুঝে আমিও তাদের সাথে প্লেট নিয়ে বসে পড়ি।:D

এরপর ভাবলাম, পেট পূজো তো জম্পেশ হলো, এইবার এইটা দিয়ে একটা পোস্ট লিখে ফেলি। তাছাড়া, শিরোকে যখন খাবারের ডেসক্রিপশন দিচ্ছিলাম, তখন নাকি ওর জীভ জলে টইটুম্বুর! তাই ভাবলাম, রেসিপি দিয়ে সচিত্র একটা পোস্ট দিই। বেচারী দুধের (খিচুড়ী+গোশত) স্বাদ ঘোলে (ছবিতে) মেটাক!:D


উল্লেখ্য, এরাগে ব্লগে এইরকম প্রতিটি প্রসেস পয়েন্টে ছবি দিয়ে আর কেউ রেসিপি পোস্টাইনি। আমিই প্রথম।B-)


সেফঃ প্রলয় হাসান
ছবিঃ প্রলয় হাসান
মেন্যু আইডিয়াঃ ব্লগার শিরোনামহীন + প্রলয় হাসান


এটা হলো আমার ব্লগ জীবনের ২য় রেসিপি। প্রথম রেসিপির লিংক নীচে দেয়া হলো। এটাও ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিলো।

Click This Link


ব্লগার পুসকিকেও একটা টেনকু দিয়ে রাখি এই ফাকেঁ, কারন ওর দেয়া ওরে পিয়া (আজা নাচলে) গানটা পোস্ট লিখার পুরোটা সময় শুনেছি। গানটা ভীষন ভাল লেগেছে। বিকেল থেকে শুনছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৮
৪৯টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রসঙ্গঃ ডক্টর ইউনুস স্যারের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:০৪

প্রসঙ্গঃ ডক্টর ইউনুস স্যারের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য...

জাপান সফরে ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস স্যার উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন- "দেশের একটামাত্র দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়"।


কথাটা আংশিক সত্য।
কারণঃ
★ দেশে রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কৃমির হাজার বছরের ঘুম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:০৬




রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার পারমাফ্রস্টে ৩০০টি প্রাগৈতিহাসিক কৃমি আবিষ্কার করেছেন, যার মধ্যে দুটিকে সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হয়েছে। এই কৃমিগুলি হাজার হাজার বছর ধরে বরফে আটকা পড়ে ছিল, তবুও গলানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বাচন চাইলে নির্বাচন কমিশনের কাছেই চাইতে হবে, ড. ইউনুসের কাছে নয়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ৩০ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:১৯


বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে আসছে—বিএনপি আসলে নির্বাচন চায় কার কাছে? সম্প্রতি নানা বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, দলটি যেন নির্বাচন চাচ্ছে ড. ইউনুসের (অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টার) কাছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভাবে মটরবাইকে স্বস্ত্রীক ট্যুর দেই

লিখেছেন অপলক , ৩০ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫০



আসলে আমি ফ্রিডম পছন্দ করি। আদেশে নয়, অনুরোধে মন গলে আমার। শহুরে হট্টগলের চেয়ে প্রকৃতি ভাল লাগে। দল বেঁধে ট্যুর দেবার চেয়ে একাকি ট্যুর দিতে ভাল লাগে। বনের কুকুররা... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....


বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হতে হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। হতে হবে সকল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের এই দর্শনের নিহিত রয়েছে আত্মসামাজিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×