somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সহবাস-একটি ছোটগল্পের কাগজের জন্য এলিজি

১১ ই মার্চ, ২০০৭ সকাল ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক.
তখন আমাদের কিছুই ছিল না।ধমনীতে তারুণ্যের গরম রক্ত, যদিও নাগিনীর বিষাক্ত নি:শ্বাসে স্থবির ফুসফুস।সময় ক্রমাগত পিছিয়ে দিচ্ছিল আমাদের,জমাট অন্ধকারে দমবন্ধ হয়ে আসছিল খুব।তবু সেই মধ্যবিত্ত রক্তে সৃষ্ঠির তুমুল জোয়ার।

আমাদের অস্তিত্বের মতো,সন্তানের মতো তুমুল মমতায় কাগজের গায়ে আঁকাআঁিক।আমরা সময়ের অভিশপ্ত সন্তান,কালজয় করে অস্তিত্ব জানান দিতে পারবো না পরের প্রজন্মে।তবু নিজের সময়ে বেচেঁ থাকার কী এক তীব্র আকুতি আমাদের।

আর সেই আকুতি থেকেই একটা ছোট্ট প্রচেষ্ঠা-'সহবাস'। বাংলা ছোটগল্পকে ধারন করার এক ছোট্ট প্রয়াস।এক গভীর রাতে,স্টেডিয়ামের অন্ধকার আর নির্জন কোনে আড্ডা মারতে মারতে যার স্বপ্ন বোনা শুরু...।

দুই.
আহা,কী দূ:স্বপ্ন গেছে আমাদের।প্রচন্ডতম গোয়াতর্ুমিতে প্রথমেই ঘোষনা,আমরা বিজ্ঞাপন নেব না।

হাত বাড়ালেই যে অগ্রজ বন্ধু হাতে গুজে দিয়েছেন সাহস,সেই নীলাঞ্জন দাস টুকুর আড়তে হানা দেয়া। সাধ্যমতো পকেট থেকে বের হলো কিছুটা। সিগারেট রেশন করে আর টুকিটাকি সঞ্চয়ের সবটুকু আমি দিলাম। হাসান মোরশেদ,মান্না আর আসিফ মনি জোগাড় করতে চায় বাকিটুকু। কিন্তু আমাদের সবার ঝুলি ঝেড়েও অর্ধেক কুলায় না। পাথর যখন গড়িয়ে পড়ে,তার সাথে জুটে যায় সহযোদ্ধা বাকিরাও। ড্রয়ার ঝেড়ে উজাড় করে নিয়ে আসে নজমুল আলবাব,অর্না,জাকির চৌধুরী....।

কোন এক দুপুরে ছাপাখানা থেকে বেরিয়ে আসে ঝকঝকে 'সহবাস'।
আমাদের সকলের মিলিত সন্তান। আহ্,কী ছিমছাম তার শরীর।কী সুন্দর অফসেট কাগজে রায়হানের প্রচ্ছদ।কী গাথুনিতে হাসান মোরশেদ এর সম্পাদকীয়...।

বেরুবার 15 দিনের মাথায় প্রথম সংখ্যা শেষ হয়ে যায় সাহিত্যামোদীদের উৎসাহে।

তারপর আরো কয়েকটি সংখ্যা পর পর...। বইমেলার লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে চাটাই বিছিয়ে বসে পড়া। 80 কপি বিক্রী করলাম 6 দিনে। মোরশেদকে বলি আরো কপি পাঠা,হেসে বলে 'আর নাই।মার্কেট আউট।'



....তারপর দিন গড়ায়। বাঙ্গালির নদী আর বাঙ্গালির দল,সহসাই ভেঙ্গে পড়ে।

স্কলারশিপ নিয়ে হাসান মোরশেদ রওনা হয় ভারতে।
আমি গুটিয়ে নেই নিজেকে।
আসিফ মনি চাকরি নিয়ে চট্টলা।
অর্না ব্যস্ত পড়াশোনায়,জাকির ব্যস্ত বিদেশ যাওয়ার পথ খুজতে,নজমুল আলবাব ব্যস্ত কঠোর জীবন যুদ্ধে আর অর্জুন মান্না তখন নিজেকে নিয়েই বুঝি মগ্ন।

আর আমাদের সাহসের উৎস,আমাদের কমরেড,টুকুদা তখন বড়ো বেশি একা হয়ে যান...।

তিন.

মাঝখানে চলে গেছে 9 টি ক্যালেন্ডার।

হাসান মোরশেদ এখন বাচ্চার বাপ, বিলাতে ভালোই কামায় ।
আসিফ মনি এখন মার্কস লাইনের কর্পোরেট কর্মকর্তা,ডলারে বেতন পায়।
আমি আজ বেনিয়া।
অর্জুন মান্না আর নজমুল আলবাব সাংবাদিক।
জাকির কাজ করছে আয়াল ল্যান্ডে।
অর্না এখন বিদেশি দুতাবাসের এডভাইজর না কি যেন।

ইচ্ছে হলেই ,আমাদের যে কোন একজনের পক্ষেই এক সংখ্যা সহবাস বের করা সম্ভব আবার। কোন ক্লেশ ছাড়াই কয়েক হাজার টাকা প্রেসে থোক ঝেড়ে দিতে পারবে আমাদের যে কোন জন।
তবু আর 'সহবাস' বের হয় নি আজো।

চার.
কাল মাঝরাতে টুকুদার ফোন পেয়ে তন্দ্রা টুটে।আবার কি 'সহবাস' বেরুতে পারে? তার কন্ঠে শুনি হারানো সোনালি দিনের আকুতি।
আমি নষ্টালজিক হই।

পাচঁ.
হাসান মোরশেদ তার প্রথম সংখ্যা সম্পাদকীয়তে এক জায়গায় লিখেছিল,'পথ চলা শুরু হয়েছে যখন,দেখা হবে আবার;কথা হবে দীর্ঘতর-যদিনা ইত:মাঝেই পথের মানুষরাই বরণ করে নেন চার দেয়ালের সুখশিকল।'

কেমনে বুঝেছি িরে মোরশেদ?
কেন আজ এই কয়টা দিন পরেই তোকে ,আমাকে;আমাদের সবাইকেই দেখছি সোনার খাচায় বসে বসে ঝিমুতে ...

আরিফ জেবতিক।
11.03.07
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪৫৬ বার পঠিত
৩২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুক্তিযুদ্ধ’ তাহলে আওয়ামী লীগের নিজস্ব সম্পত্তি আবারো প্রমাণ হলো!

লিখেছেন এ আর ১৫, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ ভোর ৫:৪১

মুক্তিযুদ্ধ’ তাহলে আওয়ামী লীগের নিজস্ব সম্পত্তি আবারো প্রমাণ হলো!
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যবসা করেছে মিথ্যা নয়। ডান/বামদের দাবী মুক্তিযুদ্ধের ‘আওয়ামী ন্যারিটিভ’ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের দলীয় ইতিহাস বানিয়ে ফেলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিরাট ব্যাপার-স্যাপার | রম্য =p~

লিখেছেন জটিল ভাই, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নিজের মোবাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাই সরাসরি দুইস্তর বিশিস্ট প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার

লিখেছেন বিদ্রোহী ভৃগু, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪

ভূমিকাঃ

ছাত্র-জনতার সফল জুলাই বিপ্লবের পর আজ বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার, আইনের শাসন ও প্রকৃত উন্নয়নের এক নতুন পথে যাত্র শুরু করেছে। নোবেল লরিয়েট ড। ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=শোকর গুজার প্রভুর তরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:১৪



প্রভু তোমার দয়ার কথা, বলে হয় না শেষ তো
কত রিযিক আহার দিয়ে, রাখছো মোদের বেশ তো!
তোমার সৃষ্টির কেরামতি, নেই কো বুঝার সাধ্য
তোমার বান্দা তোমার গোলাম, শুধু তোমার বাধ্য!

গাছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুপার সানডে : সংঘর্ষ ও নৈরাজ্যের পথে বাংলাদেশ!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭


আজকের দিনটি বাংলাদেশের সচেতন মানুষের দীর্ঘদিন মনে থাকবে। এত সংঘর্ষ ও মারামারি অনেকদিন পর ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মানুষ আগে থেকেই উদ্বিগ্ন তার উপর বিভিন্ন অবরোধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×