somewhere in... blog

আঁস্তাকুড়ে মরে পড়ে থাকা বেড়াল

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৪:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই কখন থেকে ডাকছি! কোনো সাড়া নেই!

রাস্তার পাশে আঁস্তাকুড়ে মরে পড়ে থাকা একটি বেড়াল। বাঁকানো শরীর। শক্ত হয়ে আছে। দেখলেই বোঝা যায়। মুখটা হা করা। পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে ব্যস্ত হয়ে উঠছে সবার ডান হাত। আর আমি অবাক হয়ে ভাবছি দুনিয়ার সব বামহাতি গেল কই! ধন্য মৃত্যু তোমার, চোখ উল্টানো নিথর-ঘুমমগ্ন বেড়াল হে!

আঁস্তাকুড়টা ঘনক হতে পারে নি। উপরে ছাদ নেই। তারউপর মেইনগেইটটা আজীবন খোলা। গেইটে দরজা নেই। শেওলা ধরা কংক্রিটের দেয়ালটা ওখানে আর জোড়া লাগে নি। সেই গেইট দিয়ে ভুড়ির মতো বেড়িয়ে আছে সমস্ত আবর্জনা। একটা শিল্পিত ভঙ্গীতে। আহ! উপরে ছাদ নেই!

দেয়ালগুলো কাকের আড্ডাখানা। শেওলাগুলো স্থায়ীবাসিন্দা। কা কা, কা কা। দুএক কদম টুকরো টুকরো লাফ। ঠিক কাকের মতো করে ঘাড় বাঁকানো। ডানে। বায়ে। কাকগুলো দেখতে সত্যিই কাকের মতো।

ঠিক সাড়া না। তবে ভেতরে নড়াচড়ার শব্দ। খুব মৃদু! কড়া নেড়েই চলেছি। সম্ভাবনায় বেড়ে যাওয়া দ্রুততায়।

কাকটার মসৃণ ল্যান্ডিং ছাদহীন ঘনকের ভেতর। আরও কয়েক কদম টুকরো লাফ। ছোট্ট ছোট্ট। সামনে এগোনো। পেছনে ফেরা। আলুর খোসায় কয়েকটা ঠোকর। কয়েক কদম টুকরো লাফ। সামনে-পেছনে। ছোট্ট ছোট্ট। মাছের আইশ, পাকস্থলী-নাড়িভুড়ি। কিছুক্ষণ প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান।

বেড়ালটা তখনও ঘুমে। শক্ত শরীরে। পাশ দিয়ে তখনও ব্যাস্ত ডানহাতিরা। মাঝে মাঝে দুএকটা মোটর সাইকেল। একই লয়ে স্যান্ডেলের ঘষার আওয়াজ, আঁস্তাকুড়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বেড়ে যাওয়া লয়। অনেক বিরতী দিয়ে একটা দুটো রিক্সার বেল। খসে পড়া নারকেল গাছের খোসার আওয়াজ। মাথার উপর কয়েক ডাল পাতা। তার ফাঁকে স্কুল পালানো সূর্যদুপুর। বেড়ালটা ঘুমে। শক্ত শরীরে। এক ঝাঁক মাছিদের নিয়ে। মাছিরা ব্যস্ত সিম্ফনি রচনায়। স্ট্রিং ছাড়া বুড়ো অর্কেস্ট্রায়।

বিছানা থেকে নামার শব্দ। চুড়ির মৃদু হাসি। কল্পনায় চুলের মধ্যে হাত চালানো। এলোচুলকে বশে আনা। মেঝেঘষা শাড়ির আঁচল। ঘষাহাঁটার ক্রমশ ফেইডইন। কড়া নাড়ানোর থেমে যাওয়া।

কড়া নাড়ানোর থেমে যাওয়া।

বেড়ালটা তখনও ঘুমে। শক্ত শরীরে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১:৪৪
৯৭০ বার পঠিত
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিলিং মিশন শেখ হাসিনা , বাংলাদেশ

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬


বাংলাদেশে কোটার জন্য যে আন্দোলনটা হলো প্রকৃতপক্ষে সেটা কি আর কোটার আন্দোলন ছিলো⁉️ নাকি এটা প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত ছিলো‼️

আসুন ফিরে দেখি আন্দোলনের সময়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র শান্তির ধর্মের নাম কি?

লিখেছেন রাজীব নুর, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১৭



পৃথিবীতে কোনো ধর্মই শান্তি বয়ে আনে না।
ধর্ম মানেই ঝামেলা, ক্যাচাল এবং অশান্তি। ধর্ম থেকে দূরে থাকাই ভালো। যুগ যুগ ধরে ধর্ম মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীতের কিছু পুরোনো স্মৃতি

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৭

শীত শুধু একটা ঋতু নয়, অনেকগুলো আবেগ আর স্মৃতির জননী। প্রতিটি শীত আমাদের নতুন নতুন কিছু উপহার দেয়। কেড়েও নেয় অনেকের জীবন। আমাদের দেশের গরিব অসহায় মানুষদের শীতকালে কষ্টের কোনো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ভাবনার গভীরে অতীত দেয় হানা-২=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০২



৬। পূর্ণতা আসতো মনে, যদি দিতে উপহার;
তুষ্টি আসতো মনে, যদি করতে কর্মের প্রশংসা
সুখ ছুঁতো মন, যদি ইচ্ছেতে না দিতে বাঁধা;
ভালো থাকতাম সদা, সৃজনশীল কর্মে হতে যদি মুগ্ধ।

এসবের কিছুই নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই।

লিখেছেন শাহিন-৯৯, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


ছবি- নেট

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকার দারুণ একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নিচের লিংকে পড়তে পারেন।
পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কমিটি, সেন্ট মার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের

এই পদক্ষেপ যে এই সরকার নিয়েছে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×