ঐ বনে যাইনাই আমি,
ঐ বনে যাবার পথে বেশ্যা পাড়ার গল্প শুনছি অনেক
ঐ বনের মধুর গল্প শুনছি, গোলপাতার গল্প
বড় বড় লেন্সওয়ালা ক্যামেরার গল্প।
ঐ বনে যাইতে টাকা লাগে অনেক
ঐ বনে যাবার টাকা আমার জমা হয়ে ওঠে নাই।
তবে ঐ বনে সাদা চামড়ারা গেছে
এই দেশে আসলেই তারা ঐ বনে যায়
তারা “সভ্যতা” নিয়া গেছে, তারা ডকুমেন্টরি করছে।
ঐ বনে এনজিও গেছে
তারাও ডকুমেন্টরি করছে।
ঐ বনে শীতকালীন পর্যটক গেছে
তারাও অনেক ছবি তুলছে।
ক্লিক-ক্লিক-ক্লিক।
ঐ বনে, বলে কিছু কিংবদন্তী থাকে
তাগো নিয়া বড় বড় পত্রিকায় বড় বড় ছবি ছাপা হইছে।
ঐ বনে, বলে কিছু ডোরাকাটা জিনিস থাকে
তাগোরে গল্পে শুনছি, চিড়িয়াখানায় দেখছি
দূর্গন্ধ!
তবে সুন্দরও।
জাতীয় দলের জাতীয় জার্সিতে নানান ভঙ্গিতে দেখছি
উচা-নিচা হাউমাউ।
তবে ঐ বনে আমার যাওয়া হয় নাই।
কতকিছুই তো দেখি নাই আমি, না দেখলাম
সিডরে কত কত লাশ ফুইলা ভাইসা গেছে, দেখি নাই
তাজরিনে কত কত চামড়া পুইড়া ফাইট্টা গেছে দেখি নাই
রানা প্লাজায় কত কত মুখ থেতলাইয়া গেছে দেখি নাই
তবে ছবি তুলছি, ছবি তুইলা দেশে বিদেশে দিছি
পুরুষ্কার জিতছি, নর্থ সাউথ ইস্ট ওয়েস্ট।
আমিতো বিদ্যুৎ ও দেখি নাই,
কাপ্তাইয়ে বাধ দেখছি কিন্তু বিদ্যুৎ দেখি নাই।
সুন্দর লেক দেখছি, কিন্তু পানি ডুবা বাড়ীঘর দেখি নাই।
ফ্যান ঘুরে, আলো জ্বলে কিন্তু বিদ্যুৎ দেখি নাই।
কড়াৎ কইরা বাজ পরলে বাজ দেখছি, কিন্তু আমিতো মরি নাই।
আমার ডর কিসের, ঐখানে রিসোর্ট হইলে তারপর যামু
ঐখানে বিদ্যুৎ গেলে তারপর যামু
ঐখানে এসি হইলে তারপর যামু
বাড়ীর বিদ্যুতের বিল শোধ হইলে তারপর যামু
এ দেশে না থাকলে ঐ দেশে গিয়া যামু
আমার ডর কিসের, পোলায় জিগাইলে কমু বাঘ একটা ডাইনোসর আসিল
আমার ডর কিসের, মাইয়া জিগাইলে কমু ইলিশ একটা কুত্তা আছিল
আমার ডর কিসের, ভাতিজি জিগাইলে কমু জামদানী একটা তেনা আছিল
আমার ডর কিসের, আমিতো বাঘ না
আমি মানুষ, মানুষে সব খায়
নিজের মা’রে খায়, নদীরে খায়, সমুদ্ররে খায়, মেঘ রে খায়, নিজেরে খায়
আমার ডর কিসের, ভোটের ক্ষুধা লাগলে নাহয় কাইন্দা দিমু
আমার ডর কিসের, আমি তো বাঘ না
বাঘ তো আমার মত কানতে পারে না।