somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেশিন ম্যান তৃতীয়মাত্রা অথবা আয়রনম্যান থ্রীডি

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নানান ভাবচক্কর ইতং বিতং কইরা সঙ্গী সাথী পশু পাখী না পাইয়া স্টার সিনেপ্লেক্সে না যাইয়া অবশেষে ল্যাপীতেই দেখতে বসলাম এই সিনেমাটা। রবার্ট ডাউনি মালটারে আমার পছন্দ বেশ আগে থেইকাই, ওর এটিটুড এর কারণে আর একটা কারণ জনি ডেপের মত প্রথম যৌবনে সাফল্য পাইয়াও মাঝখানের সময় কাটছে নানান এক্সপেরিমেন্টে (ড্রাগ, এডভেঞ্চার, প্রেম আরো অনেক কিছু)। পরে যখন ব্যাক করছে তখন আরো পরিণত আরো জোশ, লেভেলে গেছে।

যাউগ্গা। ভাঙ্গারী মানব সিরিজের প্রথম পর্বের পর থেকেই একটা সংকট দেখা দেয়, সেটা হল কেন্দ্রীয় চরিত্ররে অতিমানব এবং মানব এই দুইটার ভারসাম্য রক্ষা করার। একদিকে ডাউনির ক্যারিশমা; তারে ব্যক্তিত্ব হিসেবেই অনেক আকর্ষনীয় করে রাখে, একসেন্ট্রিক প্লেবয় জিনিয়াস তার উপর লৌহ বর্ম। এই লৌহ বর্ম তারে নতুন নতুন উচ্চতায় নেয়, বিশেষত প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীর গড হিসেবে।

খেয়াল করে দেখবেন এভেঞ্জারে আমেরিকান হিরোইজমের চূড়ান্ত দাম্ভিকতায় সবচেয়ে বড় বীর কিন্তু এই লৌহমানব। থর, হাল্ক এদের পিছনে ফেলে মহা বীর হিসেবে আধুনিক উত্তর আমেরিকাকে ধারণ করে আয়রনম্যান। যে এরোগেন্ট কিন্তু শেষ পর্যন্ত "সবার" জন্য জীবন উৎসর্গ পর্যন্ত করতে পারে। ক্যাপ্টেন আমেরিকা হল, বীর হৃদয়ের; আর তার কাজ মাঠে, তার প্যাটার্ণটা অনেক বেশি ডিফেনসিভ, রক্ষাকারীর ভূমিকায়, দেশপ্রেম, নিজের মাটি বিষয়টা প্রবল।

বেশি সিরিয়াস না হই। প্রথম পর্বে স্টার্কের উত্থান আমরা দেখি এবং দ্বিতীয় পর্বে দেখি তার আত্মকেন্দ্রীক, খেয়ালী, স্বার্থপর রূপকে। দ্বিতীয় পর্বের স্টার্ক অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর। এই প্রিলিউডটা জরুরী কারণ তৃতীয় পর্বে ডাইরেক্টরের উদ্দেশ্য ছিল স্টার্করে মানবিকতর করে তোলা। এই জন্য প্রাথমিক টেক গিক পর্বের পরই, স্টার্কের ব্যক্তিগত জীবন নায়িকাকে হারানোর শংকা, কিছুটা ইতিহাস, শিশুর সাথে সময় কাটানো, নিজের বাড়ী ধংস হয়ে যাওয়া, সব সাপোর্ট হারিয়ে ফেলা এমন কোন মশলা নাই যে দেয়া হয়নি।

তবে টুইস্ট করতে যেয়ে বেন কিংসলির চরিত্রটাকে পুরা সাজানো বানানোটা; গল্পের জন্য সেই হিরোইক হিরোর বিপরীতে ভয়ানক ভিলেনের অস্তিত্বকে খারিজ করে দেয়। কিন্তু একই সাথে সত্য কথাটা বলেও ফেলে, "আমেরিকা তার নিজের সাথেই নিজের স্বার্থে যুদ্ধ করে"। আমেরিকার শত্রুও সে নিজেই, কি এরোগেন্স!

যাউগ্গা! ভিলেন এর জন্য যে লোহা গলানীর পাওয়ার বরাদ্দ থাকবো এইটা বোঝা কঠিন কিছু ছিল না। তা না হইলে সে ভাঙ্গারী ম্যান সিনেমার ভিলেন হবে কিভাবে? গাই পিয়ার্স ভালৈ করছে। আসলে বেশ ভালো করছে। এক চরিত্রে মহানায়কদের মেয়াদ ৩ পর্ব এটা তো বেশ ভালৈ বোঝা যায়। আর এখানেই মেশিন ম্যান তৃতীয়মাত্রার ব্যার্থতা।

তুলনা একটাই ব্যটম্যান সিরিজের তৃতীয় পর্ব; যাই করুক; অন্তত হতাশ করেনি তার কারণ ঘটনার ধারাবাহিকতা এবং চরিত্রের মানবিকতাকে তৈরি করার ক্ষেত্রে ভীষণ যত্ন। এক্ষেত্রে ব্যাটম্যানের সুবিধা একটু বেশি কারণ সে ২য় পর্বে অসামান্য ভিলেনের সাহায্য পেয়েছিল। আর ৩য় পর্বে সুন্দরী প্রতারক এবং শক্তিশালী ভিলেন ও প্লট। ফলে সিনামাটা তৃতীয়মাত্রার ক্যাচালে কলিজু কলিজু হয়ে উঠেনি।

এদিকে লইট্টা ফিশ রূপী বেন কিংসলে অন্যদিকে ভাঙ্গাচূড়া বর্ম এবং গিনেথ পেল্ট্রোর ননচার্ম (অর্থাৎ বিকর্ষণ) অন্যদিকে গাই পিয়ার্সের চার্ম এবং শার্পনেস সব মিলিয়ে রবার্ট ডাউনিরে পুরা মাইনকার চিপায় ফালায় দিসে। সিনেমা চলসে মূলত ডাউনির চার্মে আর এটিটুড এ। কিন্তু বাজে স্ক্রীপ্ট সিনেমায় মানবিক আর অতিমানবিক আয়রনম্যান এর ভারসাম্য তৈরি করতে পারেনি। ফলে সিনেমাটা খাওয়া যায় একবার কিন্তু আর ভুলেও দ্বিতীয়বার দেখার আশা আমি করিনা। বিশেষত দেশে যখন, মেশিন ম্যান আর তৃতীয় মাত্রার নাটক নিয়া আমরা অলরেডি ক্লান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০০
২৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×