কদিন আগে ইউনাইটেড হাসপাতালে ১ মাস এক
রোগীকে আটকে রেখে মেরে ফেলে ৩১ লাখ টাকা
বিল বানাতে দেখেছিলাম। তখন বুঝতে পারছিলাম
না কিভাবে এত টাকা বিল বানাল।
তবে আজকে ব্যাপারটা একেবারেই পরিস্কার ।
আর আপনাদেরকেও পরিস্কার করে জানিয়ে দিচ্ছি।
ঘটনাঃ১
ইরাক ফেরত গাজীপুর নিবাসী নাজিমুদ্দিনের বাইপাস
সার্জারির প্রয়োজনে কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরে ছিল
যেখানে বাইপাস সার্জারির ফি ছিল
১। ইউনাইটেড- ২,২৫০০০
২। এপোলো -২,১০,০০০
৩। ল্যাবএইড -২,০২,০০০
৪। স্কায়ার -১,৯৩,০০০
৫। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেসন- ১,২০,০০০
অবশেষে তিনি ভারতের বেঙ্গালুর থেকে সফলভাবে অপারেশান
করিয়ে আনেন সব ধরনের খরচসহ মাত্র ৯৩ হাজার টাকায়।
ঘটনাঃ২
মার্চ মাসে বনানীর এক স্কুলছাত্রী হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায়
তাকে গুলশানের বহুল আলোচিত একটি হাসপাতালে ভর্তি করা
হয়। ডাক্তাররা তার কোনো রোগই নির্ণয় করতে পারছিলেন না।
অথচ দিন দিনই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে।
হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয় তাকে। নয় দিনেই বিল
পরিশোধ করতে হয় ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীর স্বজনরা তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যান।
সেখানে ডাক্তাররা রোগীর ‘ই’ ভাইরাস চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেন।
মাত্র ১১ দিনেই সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় দেশে আসে ওই ছাত্রী।
সিঙ্গাপুরের পুরো চিকিৎসায় খরচ হয়েছে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
ঘটনাঃ৩
ল্যাবএইড হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
মেধাবী ছাত্রের পঙ্গুত্ব বরন , ধাবি ছাত্রদের আন্দোলন অতঃপর
টাকার বিনিময়ে সমঝতা ।
ঘটনাঃ৪
রাংপুর সিটি মেয়র ঝান্টুকে অহেতুক মাইনর অপারেশানের
নামে ৫ লাখ টাকা আদায় এপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা।
অতঃপর সমঝতা।
কারন সমুহ:
অভিজাত হাসপাতালগুলোয় ডাক্তারদের কোনো
বেতন নেই, আছে শুধু কমিশন।
১।শতকরা ২০ থেকে ৪০ ভাগ কমিশন হাতানো ডাক্তাররা
হাসপাতালগুলো ঘিরে মহাবাণিজ্য ফেঁদে বসেছেন।
২।অভিজাত হাসপাতালগুলোয় রোগী একবার ঢুকলেই হলো,লাখ
টাকা বিল না দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার যেন কোনো উপায় থাকে না।
৩।ডাক্তাররা এখন সামান্য জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশির জন্যও ডজন
ডজন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা লিখে দিচ্ছেন।
৪।প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক, একগাদা শারীরিক পরীক্ষা-
নিরীক্ষা, হাসপাতালে ভর্তি, ছোট-বড় অপারেশনের মুখোমুখি
করিয়ে লাইফ সাপোর্টের পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।
৫।সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে
অভিজাত হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলেই শতকরা ৪০ ভাগ
‘ভর্তি ফি’ সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পকেটে ঢোকে।
৬।ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পান শতকরা
৩০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত কমিশন।
৭।অত্যধিক ভাড়ার বেড-কেবিনে রোগী রাখার ক্ষেত্রেও ডাক্তারকে
শতকরা ২০ থেকে ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমিশন দেওয়ার নজির রয়েছে।
৮।তথাকথিত স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিজস্ব ফার্মেসি থেকে
প্রতিটি ওষুধের প্যাকেটে লেখা খুচরা দামের চেয়ে শতকরা ২০ ভাগ
বেশিতে রোগীদের ওষুধ দিয়ে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।