চৈত্র মাসে শুরু হয় এবং তা বৈশাখ হয়ে জ্যৈষ্ঠ মায়কি আষাঢ় পর্যন্ত চলতে থাকে । আমি তিলোত্তমা ঢাকা নগরীর পানি সঙ্কটের কথা বলছি । ওই সময়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গাতে পানির অভাব প্রকট হয়ে ওঠে । যারা এই সঙ্কটে পড়েছেন তারাই শুধু জানেন পানিহীন জীবন কি অবর্ণনীয় এবং জঘন্য কষ্টকর ।
ছবিঃকাটাশুর শেরে বাংলা রোড । শাহ আজিজ
গত কদিন দেখছি কাটাশুরের একাংশে একটি পানির গাড়ি দাড়িয়ে থাকে আর আশেপাশের বসবাসকারী লোকেরা বড় ড্রাম থেকে শুরু করে বদনা পর্যন্ত ভরে নিচ্ছেন । এই পানি দিয়ে রান্নাবান্না ,হাত মুখ ধোয়া , পায়খানা এবং মেপে মেপে পান করতে হবে । এই অব্যাবস্থা স্থায়ী হয়ে গেছে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে এবং এর স্থায়ী কোন সমাধান নেই নেই কোন উদ্যোগ । ঢাকার বিশাল এলাকা নলকূপের তোলা পানি সরবরাহের মাধ্যমে প্রয়োজন মেটানো হয় । এই শুস্ক মৌসুমে নাকি পানির স্তর নেমে যায় । ভাল কথা, কিন্তু আগাম প্রস্তুতি কি রাখা হয়েছে , আমার জানা নেই , ওয়াসাও মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে । পানি শোধন হচ্ছে কিন্তু অপর্যাপ্ত । শোধনাগারের আশ পাশ দিয়েই তা সাপ্লাই হয় । নতুন কুপ খননের মজাটাই আলাদা , ঠিকেদারের ব্যাবসা রমরমা । পানিতে মল মুত্র মিশে যাওয়ার ঘটনায় আমি স্থানীয় বাসিন্দাদের দুষবো । তারা নিয়ম ভেঙ্গে রাস্তা খুড়ে বাড়ির পানির লাইন রাস্তার মুল লাইনের নিচ থেকে নিতে গিয়ে ফাঁকফোকর রেখেই গর্ত বন্ধ করেন । কোথাও কোথাও সুয়ারেজ লাইন আর পানির লাইন ক্রস বা সমান্তরালে গেছে । সুয়ারেজ লাইন কখনোই পোক্ত করে বানানো হয়না ফলাফল লাইন ভেঙ্গে মলের পানিতে তলিয়ে থাকে সুয়ারেজের কানেকটিং বক্স গুলো । অযাচিত ভাবে পানির লাইনে রদবদলের ফুটো দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে মলের পানি ঢোকে পানির লাইনে। আমি এই কুকীর্তির জন্য সরকারকে দোষারোপ করবনা, করব তাদের যারা এই অকর্মটি করেন তারাই নিজ মলের পানি পান করেন ।এই ব্যাপারটি অনুসন্ধান করতে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা
দাড়িয়ে থেকেছি কারন খুজে বের করার জন্য । এই অবৈধ খোঁড়াখুঁড়ির সময়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেট মাটি ফুড়ে উদয় হন এবং দুহাজার থেকে পাচ হাজার নজরানা নিয়ে আবারো হাওয়ায় গায়েব হয়ে যান ।এলাকার কাউন্সিলররা কিছু বলেন না ভোট হারাবার ভয়ে । মিডিয়া বেশ মমতার সাথে গৃহবধূকে দেখান এবং সবশেষে দেখান ময়লা পানি । এ পানি তাদের নিজেদের মল মিশ্রিত , সরকার এখানে হাগতে আসেনা ।
আজম রোডে থাকতে পানি সরবরাহ বন্ধ হল নতুন কুপ খননের কারনে । বাড়িওয়ালা তার সদ্য বিবাহিত বৃদ্ধ ঘরজামাইকে নিয়ে পালালেন আত্নীয়ের বাড়িতে ।আমরা ওয়াসার পানি কিনে ট্যাঙ্ক ভরাতেই তারা আকাশ ভেঙ্গে ল্যান্ড করলেন । পয়সা দেওয়া দুরের কথা আমার কেনা পানি আমায় মেপে মেপে রেশনিং সিস্টেমে দিতে থাকলেন । পুরো একমাস সময় পানি নিজেই কিনেছি আর নির্লজ্জ বাড়িওয়ালা তার ঘরজামাইকে নিয়ে মহানন্দে জলকেলি করেছেন, মাইরি বলছি ।