প্রিয়া ভাল করেই জানে সবপুরুষ তাকে নয় তার রূপকে ভালবাসে।রাজা ভাইয়ের চোখে কখনও তা দেখেনি।রাজা ভাই পাশে থাকলে সে সবচেয়ে নিরাপদ।একবার পথ হারিয়ে ফেলেছিল প্রিয়া রাজা ভাই তখন তাদের কো-অর্ডিনেটর ।অপরিচিত জায়গা তাকে ঘিরে কিছু পুরুষের ভীড় সবাই মজা নিচ্ছিল।হঠাৎ রাজা ভাইয়ের আগমন।তাকে দেখে দারুণ নির্ভার লাগছিল।ভীড় ধীরে ধীরে প্রশমিত হলো ।রাজা ভাই রাজকীয় স্টাইলে হাটছেন সাথে প্রিয়া ও হাটছেন।প্রিয়ার হাটতে দারুণ ভাল লাগছিল।সামনে একটা ছোট টি স্টল পড়ল।রাজা ভাই বললেন প্রিয়া ওখানে আখের গুড়ের চা পাওয়া যায়।ব্যতিক্রমী মজা খাবে নাকি ।সেদিন রাজা ভাইয়ের সঙ্গে বসে চা খাওয়ার স্মৃতি আজও মনে আছে প্রিয়ার।স্পষ্ট মনে পড়ে সেরাতে রাত ছিল পূর্ণিমা।দারুণ জোৎস্না রাত।রাজা ভাই পূর্ণিমা রাত খুব ভাল বাসেন।টি স্টলে গল্প করার সময় তার মুখ থেকেই তথ্যগুলো জানা । সারারাত ছাদে হাটেন।তার সহপাঠীদের কাছে এসবের গল্পও শুনেছেন।তাদের সবার আইকন রাজা ভাই।সে রাতে প্রিয়াও হলের ছাদে চাঁদের সঙ্গে হেটেছে কথা বলেছে ।সেই রাতের অনুভূতি ছিল অন্যরকম।প্রিয়া জানত রাজা ভাই ও ছাদে ওঠে চাঁদ দেখছিলেন।একবার ভাবলো রাজা ভাইকে ফোন দিবে।এটা জানানোর জন্য যে ঠিকমত হলে এসে পৌঁছেছে।রাজা ভাই নিজেই ফোন দিয়ে খবর নিলে প্রিয়ার খুব ভাল লাগতো।তবে রাজা ভাই যে তখন পূর্ণিমা জোস্না স্নানে ব্যস্ত সেটা নিশ্চিত।তার ফোন পাওয়ার সম্ভাবনা নাই ।চাঁদের অপরূপ রুপকে ঈর্ষা হচ্ছিল তার।আবার ভাল ও লাগছিল।নিজের উপর প্রিয়া কিছুটা বিরক্ত ও বটে।
কাওসার ফোন করেছে।কাওসারকে ইদানিং কেমন যেন মনে হয়। রাজা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার পর কাওসারকে পারফেকট ভেগাবন্ড মনে হয়।কিসের যেন কমতি।লম্বা স্লিম গায়ের রং ড্রেসআপ সব মিলিয়ে দারুণ সুন্দর কাওসার। চুলগুলো দারুণ পরিপাটি করে আচড়ানো।তারপরও কি যেন নেই।মনের মধ্যে এক রাজার বসবাস শুরু হয়েছে।সেখানে কোন প্রজা ঢুকাটা একটু কঠিনই বটে।ওর সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগছে না।প্রিয়া জানে কাওসারকেই তার বিয়ে করতে হবে।একেই বলে নিয়তি।যা চাই তা পাইনা।আর যা পাই তা চাইনা।
কাওসার সমস্যা আর রাজা ভাই সমাধান।কাওসার এক মেয়েকে টিজ করার দায়ে ব্যাপক বিড়ম্বণায় পড়তে হয় প্রিয়াকে।পরে রাজা ভাইয়ের হস্তক্ষেপে সমাধাণ।রাজা ভাই তখনো জানতো না কাওসারের সঙ্গে প্রিয়ার সম্পর্ক কি?প্রিয়াকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ।তার মধ্যে কাওসারের টিজ করা মেয়ের বয় ফ্রেন্ড।রাজা ভাই আসার পর প্রিয়াকে কাজের কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে গেল ছেলেরা টু শব্দটিও করেন নি । রাজা ভাই অবশ্য ব্যাপারটা বুঝেন নি।তিনি প্রিয়াকে বলেছিলেন বয়সের দূষ বুঝলে প্রিয়া তরুনী মেয়ে দেখলেই তরুণরা দল ধরে তার রূপ উপভোগ করতে হবে।কেউ সমস্যা করতে চাইলে আমাকে জানালেই হবে।প্রিয়া এক দৃষ্টিতে রাজা ভাইকে দেখছিল।রাজা ভাইয়ের চোখ তার চোখে পড়ল। কিছুটা অবাক হলেন রাজা ভাই।প্রিয়ার চোখে পানি।কাওসারের চারিত্রিক দৈন্যতা আর রাজা ভাইয়ের মনের ঐশ্বর্য ভেবে তার কান্না পাচ্ছিল খুব।রাজা ভাইয়ের চোখ ঝলমল করছে ।চোখ ভিজে ওঠেছে।রাজা ভাই প্রিয়াকে সান্তনা দিচ্ছে।সরি প্রিয়া আরও আগে আসা উচিৎ ছিল।ছেলেরা তোমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে তাই না।ওদের ক্ষমা করে দাও। প্রিয়াও বলছে বিড়বিড় করে রাজাজি সত্যি এত দেরীতে কেন আসলেন।আরো আগে কেন আসলেন না।তাহলে আমাকে এই অবস্থায় পরতে হতো না।প্রিয়ার চোখে অশ্রুধারা ;বর্ষার বারিধারার মতন টপটপ করে পড়ছে।রাজা ভাই অবাক হয়ে দেখছে।মনের অজান্তে তার চোখের জল মুছে দিচ্ছে।প্রিয়া রাজার খু্ব কাছে চলে এল।প্রিয়ার মনে কিছুই কাজ করছে না।সে আনমনে শুধু রাজাকে ই ভাবছে।প্রিয়ার খুব ভাল লাগছে।একান্ত কিছু সময়।দারুণ অনুভূতির ।দারুণ ভাললাগার।আজ রাজাতে বিলীন হওয়ার ইচ্ছা জাগছে খুব।অন্যরকম ভাললাগার একটা অনুভূতি।কাছে চাই রাজাকে।আরও কাছে চাই । অনেক কাছে।রাজার শ্বাস প্রশ্বাসও অনুভব করতে পারছে প্রিয়া।এই মুহুর্তে সে রাজাকে সবচেয়ে বেশি ভাল বাসে।রাজার মনে কি প্রেম আছে? নাকি সে শুধুই অপ্রেমে ?
প্রেম অপ্রেমের গল্প-৩
প্রেম অপ্রেমের গল্প-২
প্রেম অপ্রেমের গল্প-১
উৎসর্গ শ্রদ্ধেয় অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি ।২৯ মে তার জন্মদিন।আমার মত অগণিত দর্শকের অনেক আনন্দ ঘন মুহুর্ত উপহার দিয়েছেন তার অভিনয় শৈলীর মাধ্যমে।তার বিদেহীর আত্নার মাগফিরাত কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩