নিজের শরীরটাকে কষ্ট দিই ।মনটাকেও ।মাথার মধ্যে অজস্র পোকা কিটকিট করে।মনের মধ্যে ব্যথার সাগর।সেখানে বিশাল নীল রঙের ঢেউগুলো আছড়ে পরে। কখনো জলোচ্ছ্বাস হয় ।সবকিছু ভেঙে চূড়েএককার করে ফেলে।জাগতিক কোন কিছু আমাকে স্পর্শ করেনা ।প্রায়ই না খেয়ে থাকি। নিজেকে কষ্ট দেই ।রাস্তায় হাটি হাটতেই থাকি।পা ব্যথা হয়ে যায়,ফুলে যায় শক্তি নিঃশেষ হয়ে আসে । তারপর ও হাটতে থাকি। সিলেটে আসাতে দারুণ সুবিধা হয়েছে। বাবা-মার চোখ ফাঁকি দিয়ে কষ্টকষ্ট খেলা দারুণ খেলছি।
মনে পরে হসপিটালে আম্মুকে নিয়ে গেলাম তখন আমার হাটুতে মোচর খেয়েছি । পা ফুলে গেছে ।ডাক্তারআমার পা ধরে জোরে মোচর দিলে ব্যাথায় চেচিয়ে ওঠি ।আম্মু দেখে কান্না শুরু করে দিলেন আম্মুর জন্য দারুণ কস্ট হলো ।পরের মোচরে আরো ব্যথা ।পাহাড় সম ব্যথা হজম করে ফেললাম ।মুখের মানচিত্র একটু ও চেন্জ করিনি আম্মু ঠিকই অভিযোগ করলেন আমি সব ব্যথা হজম করেছি ।এখানে দেখার কেউ নেই ।আমার একমাত্র পাপ প্রিয়াকে ভালবেসেছি ।আর ও আমাকে অবজ্ঞা করেছে ।
কত কথাই শুনি। ওর নাকি রুপমের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগে। গোপনে । কাউকে জানায় নি। ওকে কক্সবাজারে রুপমের সঙ্গে পাওয়া গেছে।তারই প্রেমে পরা আরএকজন বলেছে। ওটা দেখে সেই প্রেমিক প্রেম বন্ধ করে আগের প্রেমিকার সঙ্গে আবার ফিরে এসেছে । তারমানে প্রেমের মধ্যে ও প্রেম হয়!!আর আমার অপ্রেমের ইতিহাস তাই প্রিয়ার কাছে কোন গুরুত্ব নাই। যে প্রেমে বিয়ে নাই সেটা অসভ্যতা।একসাথে দুই প্রেম অবৈধ পরকীয়া কিংবা বেশ্যাবৃত্তি !
আমার মহাসমস্যা আমি কোন কিছু শুরু করলেএর শেষ করে থাকি। পেইন্ট ইউর ওয়াগন ছবির ক্লিন্টইস্ট ওডের ক্যারেকটারটার মতন।যাক এই প্রেমের তো শেষ নাই তাই নিজেকেই শেষ করতে চাই ।আম্মুর কথা খুব মনে পরে।মনে পরে বাবার কথাও।তাদের অতি আদরে মানুষ। চেয়েছি তাদের কাছ থেকে পাইনি এমনটি কখনো হয়নি।
তাই হয়তো এমন জিদ্দি হয়েছি।প্রিয়া আমার পা ছুয়ে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছিল।আমি পা সরিয়ে নিয়েছি। ও যে আমার একমাত্র চাওয়া যাকে ছাড়া বেঁচে থাকা যায়না।
অক্সিজেনের মতন।সব ছাড়তে পারি ওকে নয়। ও আমার এডিকশন। মহাএডিকশন।এ নেশা বুঝানোর মত নয়। ওকে ছেড়ে দিলে আমার হৃদয়টা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যাবে ফলাফল নির্ঘাত মৃত্যু। অন্যভাবে আমি তাকে চাই নি।না ওকে স্পর্শ করিনি। সেটি বেশ আগের কথা ।
তারপরও সারাদিন ওকে নিয়েই থাকি । স্বরণে স্বপণে সবসময়।তাকে ছাড়া থাকি কিভাবে? তাই বলেছিলাম তুমি আমার । স্রেফআমার! আমার ভাগ্যদেবী।যেদিন ও রাগ করতো সেদিন দূর্ভাগ্য আমার ওপর ভর করতো ।তার অনেকগুলি প্রেমের মধ্যে হয়ত আমি তলিয়ে যেতাম।কিংবা বুদবুদের মতন হাওয়ায় মিলিয়ে যেতাম।আমার ভূবনে সে একাই ।প্রিয়া আমার পৃথিবী।
------------------------------------------------------------
কাঁচা বাজার আমি করছি আর তিনি খাচ্ছেন।বাসাটা আমাকে ছেড়ে দিয়ে তার চলে যাওয়ার কথা ।অথচ যাওয়ার নামটি নেই।বাসা ভাড়া আমি দিচ্ছি। তার বউ অন্তসত্তা ।মিয়া-বিবির বাবা-মা হওয়া কাহন আমার সঙ্গেই শেয়ার করেন। বউ এর ব্যাপারে নিষ্ঠুর কমেন্ট করতে ছাড়েন না আর তার লাগাতার উপদেশ ।কেমন মেয়ে বিয়ে করব।মোটা মেয়ে বিয়ে করা যাবে না।শারীরীক ঝামেলা। তার অনাগত সন্তান তার স্ত্রীর পেটে কয়টা লাথি মারল সেই সব। বা কয়বার নড়াচড়া করলো ।তার বাচ্চাটা খুব দুষ্ট হবে এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত!
কথা বার্তায় দারুণ আমার জন্য পাত্রী খোজা শুরু করেছেন।আরো কতকি? অথচ তিনি বাড়ী ছাড়ছেন না। আর লাগাতার উপদেশ ।তার সহকর্মীদের সঙ্গে যেন কথা না বলি।ব্লা ব্লা ব্লা ।
অফিসে সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি ।বাসায় ফিরি ।রাতের বেলা তার নতুন নতুন কিপ্টেমি দেখে মজা পাই ।তিনি প্রেম করে বিয়ে করলেন বিভাবে ভাবি । হয়ত ডেটিংএর সব খরচ তিনি বহন করতেন না। তার প্রেমিকা বহন করতো।তা না হলেএই প্রেম টিকার কথা বা পরিণয় হওয়ার কোনভাবেই সম্ভব হতো না। তিনি নতুন টিউশনি খুঁজে পেয়েছেন ।চাকুরী টিউশনি দারুণ ইনকাম খরচের বেলায় ঠনঠন।
আমি তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। জগে পানি খাওয়া ,বাজারে গিয়ে ছোটমাছ কিনা, কিংবা শুধু ডিম।ফ্যান বন্ধ রাখি।পেস্ট শেষ হয়ে গেলে সেটা চিপড়ে তিন চারদিন চালিয়ে দিই।
তার দুঃখের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো ।এক ছাত্র নেতা তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা মেরে দিয়েছে।এই করুনইতিহাস প্রায়ই শুনতে হয়।বখিলের ধন পিপড়ায় খায় বেচারা !তিনি বালিশ ছাড়া ঘুমান।আমিও চেষ্টা করি মাঝে মাঝে । স্ত্রীকে কালে ভদ্রে কল করেন।স্ত্রীই তাকে কল করে।বেশি কল করলে ও তার বিরক্ত লাগে।অনর্থক অপচয়। স্ত্রীকে সিলেট আনেন না এতে অনেক খরচ হবে ।তার বাচ্চা হবে তার কাছে ঢাকায় ও যান না খরচ বেশি হবে তাই ।এই লোকের প্রেমের বিয়ে?মেয়ে ইংরেজীতে মাস্টার্স । অবশ্য তার চেহারা সুরত ।মাশাআল্লাহ। পোশাকআষাকে ও বেশ। দেখলে যে কেউ মনে করবে তিনি সম্রাট শাহজাহান হোটেলের শাহী খাবার তার নিত্য খাওয়া ।
আমি নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি জালাচ্ছি পোড়াচ্ছি শেষ করছি ।অঙ্গার করছি।বি সিএস কোচিং করছি ।সেখানে একটি মেয়ে খুব সিরিয়াস ।গণিতে কিছুটা দূর্বল।শ্যামলা ,স্লীম সুন্দর লম্বা ।দারুণ দেখতে ।তবে খুব ঢঙ্গি আমার সঙ্গে খাতির জমানোর চেষ্টা ।গণিতে তাকে যদি একটু সাহায্য করি। তার বাসায় দাওয়াত করল আমাকে। তিনি বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞের মেয়ে। একমাত্র মেয়ে ।এ ধরণের মেয়ে সুখে থাকতে থাকতে ভুতের নিয়ন্ত্রণে চলতে থাকে। হাসিটা খুব চমৎকার ।
সেদিন পূর্ণিমা রাত। চাদের জোৎস্নায় আলোকিত সারা পৃথিবী। এমন চাদের রাতে কার না প্রেম ওঠে। মনের মধ্যে দারুণ ব্যাকুলতা ভর করে। আজ চাঁদ সূর্যের প্রেমে সাগরে জোয়ার আসবে । চাদের আলোয় ব্যাকুল হয়ে গেলাম। মনে হচ্ছিল বনে চলে যাই। সেখানে গিয়ে জোৎস্না স্নান করি। জোৎস্না পান করি। প্রিয়া কথা কুব মনে পড়ছিল। কিন্তু সে তো আমার কেউ নয়। কেউ না ।হয়তো অন্যকারো হাত ধরে কোন রেস্টোরেন্টে সুখের সময় কাটাচ্ছে ওকি এখন আর চাদ ভালবাসে ।পূর্ণিমার চাঁদ । আমি তাকিয়ে দেখি। হয়ত ও চাঁদ দেখছে। হয়ত দেখছে না ।মোবইলটা বেজে ওঠলো । পরিচিত নম্বর>>>>>
প্রেম অপ্রেমের গল্প -১
------------------------------------------------------
উৎসর্গ- অভিনয় রাজ হুমায়ূন ফরীদি তার জন্মদিন ২৯ মে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:৫৬