somewhere in... blog

দর্শনের গোল

২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দর্শন কি? এই প্রশ্ন মোটামুটি ভিরমি খাবার মতো অবস্থা তৈরি করে। প্রযুক্তির মতো ভয়ংকর বিস্ময় এসে উপস্থিত হয়েছে, অথচ মানুষ তার হাজারো মূল প্রশ্নের এখনো উত্তর পায় নাই। মানুষ কে? কেমন ক'রে এলো? কোথায় যাবে? এই গ্রহ নক্ষত্র এগুলো কেমন ক'রে এলো? এসব প্রশ্নের কী মীমাংসা? একেক মানুষ একেক জিনিশ বিশ্বাস করে, তা সে নতুন জানা তথ্য জানুক বা না জানুক। আদি কাল থেকেই নাস্তিক আস্তিক ভাগ চলে আসছে। আমরা জানি যে পৃথিবী'র পূর্ব সবসময়ই ছিল রহস্যময়, আর পশ্চিম কাঠখোট্টা। পূর্বে জন্মেছে নবী-রাসূল-অবতার এই ঐ, পশ্চিমে তা জন্মায়নি, আবার পশ্চিমে জন্মেছে জ্ঞান-বিজ্ঞান এইসব পূর্বে যা জন্মায়নি। আসল ব্যাপারটা এমন নয়, আসল ব্যাপারটা হলো একেক সময় একেক ঘরে একেক ভাবে একেকটা বিষয় এসছে বা উদ্ভূত হয়েছে। একেক সময় একেক জনের রাজত্ব। তবে গড়পড়তা প্রচারটা এমনই। আবার পৃথিবীতে এমনতো অনেক জায়গা আছে যেখানে অনেক কিছুই পৌছেনি। তবে একথা সত্য যে সবকিছুর সমস্ত সংজ্ঞা এখন পশ্চিমার দিকে চলে গেছে, আমরা নিজেদের তাদের চাইতে নীচু ভাবতে শিখে গেছি, অনেকদিন ধরে তা চলছে। জ্ঞান বিজ্ঞান প্রজ্ঞা আইন কানুন সৌন্দর্য যৌনতা সব কিছু্তেই তাদের আমরা ঠিক মনে করি। আমাদের এই নিজেদের হীন মনে করা আসলে নিজেদের উচু ভাবতে না পারার ফলাফল, পারলে আমরায়ো কেরদানি ফলাতাম। সাদা চামড়া দেখলে আমাদের ভেতর একটা ভক্তি চলে আসে। তবে পূর্ব পশ্চিমের এই বাধাবাধিতে আমরাই হারছি, পশ্চিমারাই জিতছে। তবে এই বাধাবাধির নিরসন চাই।

নাস্তিক আস্তিক কোনো দর্শনই ঠিক সত্য দিতে পারে নি, বা পারে না। যে কয়টা দর্শন বয়ান করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে সবই শেষতক কাদায় নিয়ে নামিয়েছে, যে কয়টা দর্শন রাজনীতিতে রাষ্ট্র চালাতে নেমেছে পরাজিত হয়েছে ভয়াবহভাবে, অধুনা যে দর্শনগুলো আসছে বা মানুষ ধারণা করছে বা বিশ্বাস করছে তায়ো। আর বিজ্ঞান-যুক্তি এগুলো খুব বেশিদূর মানুষকে নিয়ে যেতে পারবে না, কারণ মানুষ খালি প্রকৃতির বিরক্তিকর বা বিস্ময়কর ব্যাখ্যা দেবার জন্য জন্মায়নি। তার আরো নানা ঝামেলা আছে, চাহিদা আছে, তার নানা বিকার আছে। তার ঠিক ভালো ভুল খারাপ কী তা জানতে ইচ্ছা করে, এবং সে জানতে পায় না, বা পারে না, এবং না জেনেই মরে। এমনকি পশু হিশেবে তার যা প্রাপ্য তায়ো সে কখনো কখনো না পেয়েই মরে, সেখানে হ্যান ত্যান প্রসঙ্গ আকাশগুড়ুম সব। বিজ্ঞানবাদ-ধর্মবাদ-ভাববাদ-বস্তুবাদ-মার্ক্সবাদ-উত্তরআধুনিকতাবাদ-অস্তিত্ববাদ-টাল্টিবাদ-হুজুগবাদ-বালবাদ-আবালবাদ কিছুই তাকে মুক্তি দিতে পারেনি, কারণ কিছু্তেই সে তুষ্ট হতে পারেনি, কিছুই তাকে ধ্রুব'র সাধ দিতে পারে নাই। বারবার সে অনিশ্চয়তাকেই নানাভাবে নানান মোড়কে আবিষ্কার করেছে। মানুষের ধ্বংস অনিবার্য, এবং সব দিক দিয়েই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত (হয়তো)। তারপরো জয়তু মানব!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৫
৯৭০ বার পঠিত
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

১. ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯

সংগ্রামী অলস বলেছেন: আপনার লিখা হঠাৎ ক রেই শেষ হয়ে গেল।





বিজ্ঞানবাদ-ধর্মবাদ-ভাববাদ-বস্তুবাদ-মার্ক্সবাদ-উত্তরআধুনিকতাবাদ-অস্তিত্ববাদ-টাল্টিবাদ-হুজুগবাদ-বালবাদ-আবালবাদ কিছুই তাকে মুক্তি দিতে পারেনি, কারণ কিছু্তেই সে তুষ্ট হতে পারেনি, কিছুই তাকে ধ্রুব'র সাধ দিতে পারে নাই।



এক মত ন ই ।



কারণ প্রকৃ্তিগত ভাবে মানুষ তুষ্ট নয়। এটাই মানুষের ধর্ম।



অভাবের তাড়নায় মানব জাতি এখনো টিকে আছে।



২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:০৮

লেখক বলেছেন: তুষ্টি নাই বলেই........ লেখা শেষ হয়ে গেল। কারণ যতটুকু এসে ইতিহাস দর্শন দাড়িয়েছে আমি ততটুকু লিখেছি, তার বেশি কেমন ক'রে লিখবো!



এই প্রকৃতিগত ধর্ম নিয়ে কি আমরা গর্ব করবো না দুখ পাবো, তাই আমার প্রশ্ন?



আর মানবজাতি না হয় টিকে থাকলো, তা খুব আশার কথা। কিন্তু- ব্যক্তিমানুষ, সে যদি জানতে চায় তার কী হবে, তবে কি বলবেন???

২. ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:২২

ইশতিয়াক জিকো বলেছেন: আটপৌরে শব্দচয়ন। সুস্বাদু উপস্থাপনা। মেদহীন লেখা। পড়ে আনন্দ পেলাম।



একটা ব্যক্তি মানুষ। অনেক ইজম-দর্শনে পল্টি খেয়ে ভাবছে, তার কী হবে। কিম্বা এই জীবনফাঁদ থেকে মুক্তি পেতে একটা ইংরেজি গোল সেট করছে, নিজের জীবনের উদ্দেশ্যে বানিয়ে কিছুদিন মেতে থাকছে। শেষে ক্লান্ত হয়ে আবার ভাবতে বসা, আসলে তার কী হবে?



হ্যাঁ, এইসব জিজ্ঞাসার লেজ ধরে অস্তিত্ববাদের বাজার ছিল বহুদিন। তার ঝলক এসেছে আর্টে, সাহিত্যে। সার্ত্রে বেকেট আয়োনেস্কো কামু কাফকা কুন্ডেরা। ঘুরে ফিরে অ্যাবসার্ডিটি, ননসেন্স আর মিনিংলেসনেস অব হিউম্যান বিয়িং।



সব পড়ে-শুনে-দেখে-মেনে আবার ভাবতে বসা: আহ, আমার কী হবে? নিশ্চিতভাবেই এর কোনো শেষ নেই।



দর্শনের গোল বটে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিলিং মিশন শেখ হাসিনা , বাংলাদেশ

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬


বাংলাদেশে কোটার জন্য যে আন্দোলনটা হলো প্রকৃতপক্ষে সেটা কি আর কোটার আন্দোলন ছিলো⁉️ নাকি এটা প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত ছিলো‼️

আসুন ফিরে দেখি আন্দোলনের সময়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র শান্তির ধর্মের নাম কি?

লিখেছেন রাজীব নুর, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১৭



পৃথিবীতে কোনো ধর্মই শান্তি বয়ে আনে না।
ধর্ম মানেই ঝামেলা, ক্যাচাল এবং অশান্তি। ধর্ম থেকে দূরে থাকাই ভালো। যুগ যুগ ধরে ধর্ম মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীতের কিছু পুরোনো স্মৃতি

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৭

শীত শুধু একটা ঋতু নয়, অনেকগুলো আবেগ আর স্মৃতির জননী। প্রতিটি শীত আমাদের নতুন নতুন কিছু উপহার দেয়। কেড়েও নেয় অনেকের জীবন। আমাদের দেশের গরিব অসহায় মানুষদের শীতকালে কষ্টের কোনো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ভাবনার গভীরে অতীত দেয় হানা-২=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০২



৬। পূর্ণতা আসতো মনে, যদি দিতে উপহার;
তুষ্টি আসতো মনে, যদি করতে কর্মের প্রশংসা
সুখ ছুঁতো মন, যদি ইচ্ছেতে না দিতে বাঁধা;
ভালো থাকতাম সদা, সৃজনশীল কর্মে হতে যদি মুগ্ধ।

এসবের কিছুই নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই।

লিখেছেন শাহিন-৯৯, ২০ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


ছবি- নেট

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকার দারুণ একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নিচের লিংকে পড়তে পারেন।
পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কমিটি, সেন্ট মার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের

এই পদক্ষেপ যে এই সরকার নিয়েছে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×