দর্শন কি? এই প্রশ্ন মোটামুটি ভিরমি খাবার মতো অবস্থা তৈরি করে। প্রযুক্তির মতো ভয়ংকর বিস্ময় এসে উপস্থিত হয়েছে, অথচ মানুষ তার হাজারো মূল প্রশ্নের এখনো উত্তর পায় নাই। মানুষ কে? কেমন ক'রে এলো? কোথায় যাবে? এই গ্রহ নক্ষত্র এগুলো কেমন ক'রে এলো? এসব প্রশ্নের কী মীমাংসা? একেক মানুষ একেক জিনিশ বিশ্বাস করে, তা সে নতুন জানা তথ্য জানুক বা না জানুক। আদি কাল থেকেই নাস্তিক আস্তিক ভাগ চলে আসছে। আমরা জানি যে পৃথিবী'র পূর্ব সবসময়ই ছিল রহস্যময়, আর পশ্চিম কাঠখোট্টা। পূর্বে জন্মেছে নবী-রাসূল-অবতার এই ঐ, পশ্চিমে তা জন্মায়নি, আবার পশ্চিমে জন্মেছে জ্ঞান-বিজ্ঞান এইসব পূর্বে যা জন্মায়নি। আসল ব্যাপারটা এমন নয়, আসল ব্যাপারটা হলো একেক সময় একেক ঘরে একেক ভাবে একেকটা বিষয় এসছে বা উদ্ভূত হয়েছে। একেক সময় একেক জনের রাজত্ব। তবে গড়পড়তা প্রচারটা এমনই। আবার পৃথিবীতে এমনতো অনেক জায়গা আছে যেখানে অনেক কিছুই পৌছেনি। তবে একথা সত্য যে সবকিছুর সমস্ত সংজ্ঞা এখন পশ্চিমার দিকে চলে গেছে, আমরা নিজেদের তাদের চাইতে নীচু ভাবতে শিখে গেছি, অনেকদিন ধরে তা চলছে। জ্ঞান বিজ্ঞান প্রজ্ঞা আইন কানুন সৌন্দর্য যৌনতা সব কিছু্তেই তাদের আমরা ঠিক মনে করি। আমাদের এই নিজেদের হীন মনে করা আসলে নিজেদের উচু ভাবতে না পারার ফলাফল, পারলে আমরায়ো কেরদানি ফলাতাম। সাদা চামড়া দেখলে আমাদের ভেতর একটা ভক্তি চলে আসে। তবে পূর্ব পশ্চিমের এই বাধাবাধিতে আমরাই হারছি, পশ্চিমারাই জিতছে। তবে এই বাধাবাধির নিরসন চাই।
নাস্তিক আস্তিক কোনো দর্শনই ঠিক সত্য দিতে পারে নি, বা পারে না। যে কয়টা দর্শন বয়ান করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে সবই শেষতক কাদায় নিয়ে নামিয়েছে, যে কয়টা দর্শন রাজনীতিতে রাষ্ট্র চালাতে নেমেছে পরাজিত হয়েছে ভয়াবহভাবে, অধুনা যে দর্শনগুলো আসছে বা মানুষ ধারণা করছে বা বিশ্বাস করছে তায়ো। আর বিজ্ঞান-যুক্তি এগুলো খুব বেশিদূর মানুষকে নিয়ে যেতে পারবে না, কারণ মানুষ খালি প্রকৃতির বিরক্তিকর বা বিস্ময়কর ব্যাখ্যা দেবার জন্য জন্মায়নি। তার আরো নানা ঝামেলা আছে, চাহিদা আছে, তার নানা বিকার আছে। তার ঠিক ভালো ভুল খারাপ কী তা জানতে ইচ্ছা করে, এবং সে জানতে পায় না, বা পারে না, এবং না জেনেই মরে। এমনকি পশু হিশেবে তার যা প্রাপ্য তায়ো সে কখনো কখনো না পেয়েই মরে, সেখানে হ্যান ত্যান প্রসঙ্গ আকাশগুড়ুম সব। বিজ্ঞানবাদ-ধর্মবাদ-ভাববাদ-বস্তুবাদ-মার্ক্সবাদ-উত্তরআধুনিকতাবাদ-অস্তিত্ববাদ-টাল্টিবাদ-হুজুগবাদ-বালবাদ-আবালবাদ কিছুই তাকে মুক্তি দিতে পারেনি, কারণ কিছু্তেই সে তুষ্ট হতে পারেনি, কিছুই তাকে ধ্রুব'র সাধ দিতে পারে নাই। বারবার সে অনিশ্চয়তাকেই নানাভাবে নানান মোড়কে আবিষ্কার করেছে। মানুষের ধ্বংস অনিবার্য, এবং সব দিক দিয়েই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত (হয়তো)। তারপরো জয়তু মানব!
১. ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯ ০
বিজ্ঞানবাদ-ধর্মবাদ-ভাববাদ-বস্তুবাদ-মার্ক্সবাদ-উত্তরআধুনিকতাবাদ-অস্তিত্ববাদ-টাল্টিবাদ-হুজুগবাদ-বালবাদ-আবালবাদ কিছুই তাকে মুক্তি দিতে পারেনি, কারণ কিছু্তেই সে তুষ্ট হতে পারেনি, কিছুই তাকে ধ্রুব'র সাধ দিতে পারে নাই।
এক মত ন ই ।
কারণ প্রকৃ্তিগত ভাবে মানুষ তুষ্ট নয়। এটাই মানুষের ধর্ম।
অভাবের তাড়নায় মানব জাতি এখনো টিকে আছে।