আকাশটা খুব মেঘলা। বেশ কিছুদিন ধরেই। এই রোদ আর এই বৃষ্টির এক খামখেয়ালি সময়। বাতাসটা বেয়াড়া, কখনো বা শান্ত। কিন্তু এই মাত্র যে বাতাসটা ছুঁয়ে গেলো- তা শান্তও নয়, আবার অশান্তও বলা যায় না। এ যেনো এক খবর নিয়ে এসেছে।
তার করতলে জমে আছে সীমানা পেরোনো দীর্ঘশ্বাস।
কণ্ঠস্বর ক্ষীণ।
ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু এক ঝোলায় যেনো কার চিঠি নিয়ে এসেছে আমার জন্য। কাছে এলো। আমি আতঙ্কিত হয়ে প্রশ্ন করলাম, কার চিঠি? ছায়াপিণ্ড দিলো না উত্তর। একটি কালো খাম এগিয়ে দিয়ে বললো- এ এক চেতনার চিঠি, বোধের চিঠি; স্বাক্ষরের প্রয়োজন নেই। খামটা হাতে দিয়েই চলে গেলো।
আমি স্থির চেয়ে রইলাম খামের দিকে। খামের উপরে রেখা ‘সাউথ কোলকাতা’। খুব ভেবে দেখলাম- কই, সেখানে তো আমার কোনো আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নেই, তবে কে পাঠালো এ চিঠি? চিঠিটা খুললাম, খুলে পড়তে লাগলাম।
তারপর। বৃষ্টি। এক আকাশ জুড়ে নেমে এলো কান্না। সে কী প্রবল কান্না, থামানো যায় না। যেনো থামবার নয়। বুক চাপড়ে সে বৃষ্টি বলে যাচ্ছে আমায়- তোমার চেতনার আত্মীয়, বোধের বন্ধু, বাঙালির নিরন্তর সহযোদ্ধা দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় আর নেই। ৭৬ বছর বয়সে গত ২ জুন, ২০১১ সালে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
আমি চমকে উঠলাম। দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় নেই? মুহূর্তেই কেঁপে উঠলো আমার অন্তর্লোক। ভেতরের গভীরতা থেকে উঠে আসলো নিজস্ব কণ্ঠস্বর। মোহনীয় প্রপাতের মতো হৃদয়জ উচ্চারণ- দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় আছেন এবং চিরকাল থাকবেন। বাঙালির হৃদয়ের মাঝেই তাঁর আসন রয়েছে পাতা। তুমি পাঠ করো তোমার হৃদয়ের সংবিধান, গাও তোমার চেতনার স্বরলিপিতে, সেখানেই বেঁচে আছেন দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়। আমি পাঠ করতে শুরু করলাম.. ..
দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়। যাঁর কণ্ঠের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো অনেক আগে, সে-ই ২০০০ সালে, বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর জহির রায়হানের (১৯৩৫-১৯৭২) নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র স্টপ জেনোসাইড (১৯৭১) এর একটি অংশে। সেখানে একটি বক্তব্য শুনতে পাই, যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত আরও বেশ কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্রের মাঝে শুনি। সে-ই বক্তব্যটি ছিলো- ‘যেহেতু পেশা সাংবাদিকতা, তাই প্রায়শই যেতে হয় সীমান্তে’। তারপর থেকেই সে বক্তব্যটি আমার কানে বাজতে থাকতো, আজও বাজে। হয়তো দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় সম্বন্ধে বলতে গেলে অন্য অনেকেরই মনে পড়বে- ‘খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়’- এই বক্তব্যটির চির নবীন আর অনন্ত আকর্ষণের কথা।
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এক অনন্য এপিক। এই স্বাধীনতা যুদ্ধের মাঝেই আমাদের সামগ্রিক চেতনা দাঁড়িয়ে আছে এবং থাকবে। একাত্তরের সেই মুক্তিযুদ্ধে সারা বাঙলায় বিপ্লব আর প্রতিরোধের গান গেয়ে উঠেছিলো সাত কোটি বিপন্ন কোকিল। কেবল যে যুদ্ধক্ষেত্রে, তা নয়। বাঙালি ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়েছিলো প্রতিটি ক্ষেত্রে- সাহিত্যে, সংস্কৃতিতে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে এবং অন্য আরও নানাভাবে। সেই যুদ্ধেরই একটি অনিবার্য অংশ ছিলো বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। যদিও পরবর্তী সময়ে ‘বিপ্লবী’ কথাটি বাদ দিয়ে বলা হয় ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ এবং এখনো এ নামেই পরিচিত। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে যে কণ্ঠসৈনিকগণের দুর্জয় অবদান ছিলো তাঁদের অন্যতম এক কণ্ঠসৈনিক ছিলেন দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়- মুক্তিবাহিনীর কাছে এক অখ- অনুপ্রেরণার নাম। সেদিন বাঙলার ঘরে ঘরে, যুদ্ধের শিবিরে শিবিরে তাঁকে সবাই চিনতেন। হয়তো কেউ দেখেননি তাঁকে- কিন্তু সবাই চিনতেন। তাঁর কণ্ঠস্বরের মহিমা সবাইকে ইন্দ্রজালের মতো আবিষ্ট করে রাখতো, উদ্বুদ্ধ করতো নূতন যুদ্ধে নূতন প্রেরণায়।
কোলকাতার সাদার্ন এভিনিউতে তাঁর নিজ বাসভবন। সেখানেই চার তলায় থাকতেন তিনি। গত কয়েক বছর যাবত তিনি শুয়ে থাকতেন তাঁর ছোট্ট বিছানাতে। কারণ তিনি দুরারোগ্য পিএসপি বা প্রোগ্রেসিভ সুপ্রা নিউক্লিয়ার পলসি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেই দরাজ কণ্ঠ ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যাচ্ছিলো। ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রী কবি রুবি বন্দোপাধ্যায় মারা যান; আর তখন থেকেই তিনি বেশ নিষ্প্রভ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোক ছাড়া কারও সাথে তেমন সাক্ষাৎ করতেন না। মাঝে মাঝে হয়তো তাঁর অনুরাগীরা যেতেন, দু-চারটে কথা বলতেন তারপর আবার নিবিড় একাকীত্ব। আমার মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে- দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় কী একাকীত্বকে উপভোগ করতেন? নির্জন সময়ে ভাবতেন- বাঙলাদেশ নামক যে রাষ্ট্রটি এখন স্বাধীন, সে রাষ্ট্রের স্বাধীনতার জন্য তিনিও যুদ্ধ করেছেন। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা। স্মৃতির পালকে ভর করে কী আসতো আকাশবাণী কোলকাতার সেই অগ্নিগর্ভ দিনগুলো?
আমি যতোদূর জানি- দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়ের চিকিৎসা করছিলেন ডা. দেবব্রত দে এবং ডা. সঞ্জীব কাসেরা। বিভিন্ন সময় তাঁরা বলেছেন- এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মতিষ্কের কোষগুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এভাবেই ২০১০ সালের পর তাঁর অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং গতকাল (২ জুন, ২০১১ সালে) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ‘মতিষ্কের কোষগুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়’- কথাগুলো চিকিৎসাশাস্ত্রে অলঙ্ঘনীয়, কিন্তু হৃদয়ের শাস্ত্রে যে নান্দীপাঠ- সে তো মানতে চায় না এ সত্য। তার কাছে আরও যে সত্য ধরা পড়ে আছে। একাত্তরের স্মৃতি তো কখনোই ভুলেননি এই মানুষটি। তাই তাঁকে কোথাও কোনো কবিতা আবৃত্তি করতে বললেই তিনি স্মৃতির অলিগলি খুঁজে আবৃত্তি করতেন রবীন্দ্রনাথের ‘উদাসীন’ কবিতাটি। আমি তাঁর আবৃত্তি শুনিনি কখনো, কিন্তু বড্ডো জানতে ইচ্ছে হয়- কেমন হয়ে উঠতো সেই লাইনগুলো তাঁর কণ্ঠে? তখন তাঁর স্মৃতির আয়নায় কোন ছবি ভেসে উঠতো?
মন- দেয়া- নেয়া অনেক করেছি,
মরেছি হাজার মরণে--
নূপুরের মতো বেজেছি চরণে
চরণে।
আঘাত করিয়া ফিরেছি দুয়ারে দুয়ারে,
সাধিয়া মরেছি ইঁহারে তাঁহারে উঁহারে--
অশ্রু গাঁথিয়া রচিয়াছি কত মালিকা,
রাঙিয়াছি তাহা হৃদয়-শোণিত-
বরনে।
মন-দেয়া-নেয়া অনেক করেছি,
মরেছি হাজার মরণে
নূপুরের মতো বেজেছি চরণে
চরণে।
দেবদুলাল ১৯৬৩ সাল থেকে আকাশবাণী রেডিও কেন্দ্রে চাকরি করেছেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তাঁর বাচনভঙ্গী ও উচ্চারণ শৈলী ছিলো অনেকেরই অনুকরণীয়। সে সময় কোলকাতার নবীন আবৃত্তি শিল্পীরা বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে দেবদুলালের উচ্চারণ শৈলীর ভূয়সী প্রশংসা করতেন। আকাশবাণী রেডিও কেন্দ্র থেকেই তিনি অবসর নেন ১৯৯৪ সালে। দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও বক্তৃতায় বলেছেন, তাঁর পেশাগত জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়টা।
একটি সাক্ষাৎকার থেকে সরাসরি উদ্বৃত করছি, ‘আকাশবাণীর খবর পড়তে গিয়ে মাঝেমধ্যে নিজেকে আর সংবরণ করতে পারিনি। মনে হতো, আমিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেদিন আমার বুকের ভেতরের সব লুকানো আবেগ আর উত্তেজনা ঢেলে দিয়েছিলাম আকাশবাণীর সংবাদ, সংবাদ-পরিক্রমা বা সংবাদ-সমীক্ষা পড়তে গিয়ে। রণাঙ্গনের খবর যখন পড়তাম, তখন মনে করতাম, আমিও সেই রণাঙ্গনের সৈনিক, যখন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের কথা পড়তাম, তখন আমার মনের সমস্ত উল্লাস উচ্ছ্বাস নেমে আসতো আমার কণ্ঠজুড়ে। যখন করুণ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা পড়তাম, তখন কান্নায় জড়িয়ে আসত গলা। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকটায় যেনো নেশায় পেয়ে বসেছিল আমাকে। উত্তেজনা আর প্রবল আগ্রহে অপেক্ষা করতাম, কখন পড়বো বাঙলাদেশের খবর। এই খবর পড়ার জন্য কখনো কখনো রাতে বাড়িও ফিরিনি। রাত কাটিয়েছি আকাশবাণী ভবনে। ভোরের খবর পড়তে হবে যে!’
শুধু একাত্তর নয়, সে-ই ১৯৬৮-৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি পড়েছেন বাঙলাদেশের খবর। তখন কী তিনি জানতেন, এই অভ্যুত্থানের পথ বেয়ে বাঙলাদেশ হবে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালিদের রাষ্ট্র! পৃথিবীর বুকে বাঙালিদের জন্য তৈরি হবে একটি স্বাধীন আবাসভূমি। বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি তার স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে, স্বাধীন বাঙলার আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে প্রাণ ভরে গাইবে- ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় এক বক্তৃতায় স্মৃতি থেকে এনে বলেছিলেন- ‘অদেখা পূর্ববঙ্গের অচেনা বঙ্গভাষীর প্রতি নৈকট্য বোধে মন আপ্লুত হয়েছে আমার বারবার। আর কল্পনায় গড়ে তুলেছিলাম বাঙলাদেশ নামের একটি মানসী মূর্তিকে’ ।
স্বাধীন বাঙলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করার সেই মাহেন্দ্রক্ষণের কথা তিনি কখনোই ভুলতে পারেননি। দিনটি ছিলো ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি কারাগার থেকে ফিরে এসেছেন স্বাধীন স্বদেশভূমি বাঙলাদেশে। ওই সময় আগত বিদেশী সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। তাঁদের মাঝে দেবদুলাল বন্দোপাদ্যায়ও ছিলেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে এসেছিলেন তাঁরা। উঠেছিলেন হোটেল পূর্বাণীতে। সেদিনই বেতার সাংবাদিক হিসেবে তিনি প্রথম পা রাখেন ঢাকায়। বঙ্গবন্ধু যখন বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন হঠাৎ বলে উঠলেন, কোথায় আমাদের সেই দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়? তিনি তখন উঠে এগিয়ে যান। এরপর তিনিই বলে গেছেন আবেগমথিত শব্দচয়নে- ‘বঙ্গবন্ধু আমাকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন’।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশী গণমাধ্যমগুলো বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। অবশ্য সব গণমাধ্যম নয়। যেমন ভয়েস অব আমেরিকাই খুব একটা কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান হাতিয়ার ছিল আকাশবাণী আর বিবিসি রেডিও। এই আকাশবাণীতেই সংবাদ, সংবাদ-সমীক্ষা ও সংবাদ-পরিক্রমা পড়তেন দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রণবেশ সেন লিখতেন সংবাদ-সমীক্ষা আর পরিক্রমা। তিনিও আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। সংবাদ-পরিক্রমা প্রযোজনা করতেন উপেন তরফদার। আমার খুব ইচ্ছে রইলো এই দুজন মানুষকে নিয়ে দুটি ভিন্ন লেখা তৈরি করার।
তখন পাকিস্তান সরকার আকাশবাণীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাঙলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ গোপনে, এমনকি জঙ্গলে গিয়েও শুনেছেন আকাশবাণী বা বিবিসির খবর। আর আকাশবাণীর সেই খবর হূদয় দিয়ে পড়েছেন দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ সালে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছিলো ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘পদ্মশ্রী’’। কিন্তু আমাদের আক্ষেপ বাঙলাদেশ স্বাধীনতার চল্লিশ বছরেও এই মহান মানুষটির জন্য কিছুই করেনি। এ দেশে কতো গৌণ লোকেরা নানা রকম পদক নিয়ে বেড়ায়; কিন্তু দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়ের মতো মানুষ এ দেশ থেকে কোনো সম্মাননা পাননি। কেবল সম্মাননা কেনো? খুব করে খুঁজেও দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়ের উপর কোনো বই বা সমর্থিত সূত্রের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই কষ্টটা বোধ হয় নূতন প্রজন্মেরই মোচন করতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নূতন প্রজন্মের কাজ চারপাশে নানা প্রশংসা এবং ঋদ্ধতায় পরিপূর্ণ হচ্ছে। তাই এ দায়িত্বটিও তাঁদেরই নেয়া উচিত।
দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়ের কন্যা দেবারতী বন্দোপাধ্যায় এবং পুত্র দেবরাজ বন্দোপাধ্যায়। আমি শুনেছি দেবরাজ বন্দোপাদ্যায় কোলকাতার ২৪ ঘণ্টা নিউজ চ্যানেলে কাজ করেন। এ তথ্যটি যদি ঠিক হয়, তাহলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে এই মহান মানুষটির উপর আরও তথ্য যোগাড় করা যেতে পারে- এবং এই মানুষটিকে নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থও বের করার উদ্যোগ নেয়া উচিত।
দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় একদিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন- ‘সেদিন আমি প্রাণভরে আমার যৌবন উজাড় করে দিয়েছিলাম বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য। এমন ঘটনা তো সবার ভাগ্যে ঘটে না! আমি তো সেই ঘটনার ভাগ্যবান ব্যক্তি। পেয়েছি কোটি বাঙালির ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরে আমি মরতে চাই’।
প্রিয় দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার আরতি নিবেদন করে বলতে চাই- বাঙালির ভালোবাসা চিরদিন আপনাকে ঘিরে থাকবে। আমি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের একজন বাঙালি। একাত্তর আমি দেখিনি; কিন্তু একাত্তরের উত্তাপ আমি বক্ষে ধারণ করে রাখি সর্বক্ষণ- এ আমার এক অপ্রতিরোধ্য অহঙ্কার। আমার হৃদয়ের অমল ভালোবাসাটুকু আপনার জন্য উৎসর্গ করলাম- দেবদুলাল বন্দোপাদ্যায়; এটুকু জেনে রাখবেন- আমার মতো এ রকম বাঙালি তরুণের সংখ্যা পুরো বাঙলাদেশ জুড়ে রয়েছে অগণিত। আমাদের একাত্তরে আপনার যে অবদান, তার জন্য আমাদের হৃদয়ে আপনি সর্বোচ্চ আসনে আসীন। আমি এটাও জানি- বাঙলাদেশের যে কোনো রাষ্ট্রীয় পদকের চেয়ে এ প্রাপ্তিটুকুই আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য- কেননা আপনিও তো চির তরুণ আর শাশ্বত মিছিলেরই সৈনিক।
১. ০১ লা আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:৪৩ ০
শুনেছি তাঁর কন্ঠ সে সময়ে,
বোঝা হয়নি তেমন করে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।